অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রতিবাদে আর্জেন্টিনায় ব্যাপক বিক্ষোভ
আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ার মিলেইর প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রতিবাদে দেশটিতে তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, দেশটিতে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের বুধবার (১২ জুন) তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। বিক্ষোভ দমাতে শত শত পুলিশ সেখানে কাঁদুনে গ্যাস ও মরিচের গুড়া এবং জলকামান ব্যবহার করেছে।
সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে কংগ্রেসে বিতর্ক চলার সময় বাইরে বিক্ষোভকারীরা এ নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ শুরু করে। এ সময় কংগ্রেস ভবনের বাইরে দুটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
বিক্ষোভকারীরা বেড়া টপকে সেখানে ঢোকার চেষ্টা করলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা নিরাপত্তা রক্ষীদের লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়লে তারাও মরিচের গুড়া ছুড়ে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মরিচের গুড়ার কারণে সাতজন বিক্ষোভকারীকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজনই আইনপ্রণেতা বলে জানা গেছে। ঘটনাস্থলে আরও বেশ কয়েকজনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বিক্ষোভকারী বুধবার রাতে দুটি গাড়ি উল্টে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর মধ্যে একটি স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের গাড়ি।
আর্জেন্টিনার নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, সঘের্ষে নয় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন এবং অন্তত ১০ জনকে আটক করা হয়েছে।
আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে এক এক্স বার্তায় বলা হয়েছে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো লাঠি, পাথর, এমনকি গ্রেনেড নিয়ে বিক্ষোভে নেমেছে। তারা অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টায় আছে।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট হাভিয়ার মিলেইর অর্থনৈতিক সংস্কারের বিল নিয়ে কংগ্রেসের ভেতরে সিনেটররা তুমুল বিতর্ক করেছেন। তারা মূল বিলটি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
গত এপ্রিলে বিলে বড় পরিবর্তন এনেছিলেন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের সদস্যরা। সেটার অনুমোদন দিয়েছেন সিনেটররাও।
প্রেসিডেন্ট হাভিয়ার মিলেইর প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক সংস্কারে রয়েছে এক বছরের জন্য দেশটিতে অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর কার্যক্রম গুটিয়ে নিতে প্রেসিডেন্ট মিলেইকে ক্ষমতা দেওয়া, রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থাসহ কয়েক ডজন সরকারি প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া। এছাড়া ন্যূনতম অবসরকালীন ভাতা পাওয়ার সুযোগও সীমিত করা হয়েছে।
বামপন্থীদের দাবি, প্রেসিডেন্ট হাভিয়ার মিলেইর প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক সংস্কারে শিক্ষানবীশকালের মেয়াদ বাড়িয়ে শ্রম অধিকার দূর্বল করা হয়েছে।
অন্যদিকে, সিনেটের আলোচনায় বিরোধী আইনপ্রণেতারা এ সংস্কার কার্যক্রম আর্জেন্টিনার অগ্রগতিকে কয়েক দশক পিছিয়ে দিতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন।
বিলটির বিরোধিতায় রয়েছে সামাজিক সংগঠন, বামপন্থী রাজনৈতিক দল, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো।