অজিতকে জোটে নিয়ে দর কমেছে বিজেপির : আরএসএস

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

এনডিএ জোটে এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ারের অন্তর্ভুক্তিতে বিজেপির বাজারদর এক ধাক্কায় নেমে গেছে বলে অবিযোগ করেছে আরএসএস। এতো দিন আরএসএস নেতারা যে বক্তব্য ঘরোয়াভাবে দিচ্ছিলেন, এবার দলের মুখপত্রে তা লিখে বিজেপিকে আক্রমণ করলেন তারা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সঙ্ঘ ও বিজেপির মধ্যে যে দূরত্ব বাড়ছে তা ফের স্পষ্ট করে দিয়েছে আরএসএসের ওই নিবন্ধটি।

বিজ্ঞাপন

দিন কয়েক আগে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সার্বিক দোষ-ত্রুটি নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। এবার মহারাষ্ট্রে এনডিএ’র সার্বিক খারাপ ফলের জন্য অজিত পাওয়ারের এনসিপি’র সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের হাত মেলানোকে দায়ী করলো আরএসএস।

মহারাষ্ট্রে ৪৮টি আসনের মধ্যে এনডিএ পেয়েছে ১৭টি আসন। বিজেপি সাতটি, দুই শরিক শিবসেনা (শিন্দে) ও এনসিপি (অজিত) গোষ্ঠী যথাক্রমে জিতেছে ৯টি ও একটি আসন। পাঁচ বছরের আগের ফল থেকে প্রায় দুই ডজন আসন কম পেয়েছে এনডিএ জোট। প্রশ্ন উঠেছে, অজিতকে জোটে এনে আদৌ কী লাভ হয়েছে?

বিজ্ঞাপন

মহারাষ্ট্রে রাজ্যসভার দুটি আসনের মধ্যে একটিতে অজিতের স্ত্রী সুনেত্রাকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে বরামতী কেন্দ্র থেকে এনসিপি (শরদ) নেত্রী সুপ্রিয়া সুলের কাছে হেরে যাওয়ার পরেই সুনেত্রাকে রাজ্যসভায় আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গেরুয়া শিবিরের মতে, সুনেত্রার নাম নিয়ে আপত্তি থাকায় প্রকাশ্যে মুখ খুলে বিজেপি নেতৃত্বকে বার্তা দিয়েছে আরএসএস। এতে সার্বিকভাবে জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাওয়ায় শুক্রবার (১৪ ) এনসিপি নেতা প্রফুল্ল পাটেল বলেন, ‘আগামী নির্বাচন পর্যন্ত এনসিপি এনডিএ-তেই থাকবে।’

সঙ্ঘের মুখপত্রে বলা হয়েছে, অহেতুক রাজনীতির গুটি সাজাতে গিয়ে দল ভাঙানো বিজেপির পক্ষে হিতে বিপরীত হয়েছে, যার উদাহরণ মহারাষ্ট্র।

রাজ্যটিতে বিজেপি-শিবসেনা সরকারের প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও এনসিপি-তে ভাঙন ধরানো হয়, যার ফলে অজিত পাওয়ার এনডিএতে যোগ দেন।

নিবন্ধে বলা হয়েছে, অজিতের এনডিতে অন্তর্ভুক্তির ফলে গেরুয়া কর্মীরা মনঃক্ষুণ্ণ হন। কারণ, তারা বরাবরই কংগ্রেসের ভাবধারার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে এসেছেন। কংগ্রেসি ভাবধারার নেতা অজিতের এনডিএতে যোগদানে বিজেপি ব্র্যান্ডের বাজারদরও নেমে যায়।

নিবন্ধে এটাও বলা হয়েছে যে, আদি এনসিপি দলের নেতা শরদ পাওয়ার দু-তিন বছরের মধ্যে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে আসতেন। দলের নেতৃত্ব নিয়ে তুতো ভাই-বোনদের লড়াই এনসিপিকে আরও দুর্বল করে দিত।

সঙ্ঘের মতে, স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় যে দল প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে, সেই দলের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের সঙ্গে জোট করে বিশ্বাসযোগ্যতা হারায় বিজেপি। যার প্রভাব পড়েছে নির্বাচনে।

লোকসভা সির্বাচনের আগে থেকেই দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নেতাদের বিজেপিতে এবং এনডিএ জোটে অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়ে ঘোর আপত্তি ছিল আরএসএসের। কারণ, এতে বিরোধীদের ‘ওয়াশিং মেশিন’ তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। তৃণমূল স্তরে মানুষের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় সঙ্ঘ কর্মীদেরও।

আরএসএসের আপত্তির আর একটি কারণ ছিল, ওই সব বহিরাগত নেতাদের সঙ্ঘের আদর্শ সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকা। আরএসএসের পরামর্শ গ্রাহ্য না করে এ ধরনের নেতাদের টিকিটও দেয় বিজেপি। এই সব অসন্তোষের বিষয়গুলো এতো দিন ঘরোয়াভাবে বিজেপি নেতৃত্বকে জানিয়েছেন সঙ্ঘ নেতৃত্ব।

লোকসভা নির্বাচনের ফল বেরনোর পর বিজেপির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে প্রকাশ্যেই তাদের ভুলগুলো তুলে ধরা শুরু করেছে সঙ্ঘ পরিবার।