‘গাজা নীতি যুক্তরাষ্ট্রকে ঝুঁকিতে ফেলেছে’

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ধ্বংসস্তূপের ওপর বসে আছে ফিলিস্তিনি শিশু/ছবি: সংগৃহীত

ধ্বংসস্তূপের ওপর বসে আছে ফিলিস্তিনি শিশু/ছবি: সংগৃহীত

প্রায় নয় মাস ধরে গাজায় চলছে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক নির্বিচার হামলা। আর এই সংঘাতে ইসরায়েলের প্রতি নীতিগত অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন জো বাইডেন প্রশাসন। এতে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।

গাজা নীতির প্রতিবাদে পদত্যাগ করা বাইডেন প্রশাসনের সাবেক ১২ জন কর্মকর্তা যৌথ এক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করেছেন বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তারা বলেছেন, গাজায় নির্বিচারে ইসরায়েলের হামলার বিষয়ে মার্কিন সরকারের পদক্ষেপগুলো দেশটির জাতীয় নিরাপত্তাকে বিপন্ন করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মার্কিন নীতিগুলো এই অঞ্চলকে আরও অস্থিতিশীল করেছে এবং আমেরিকাকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে।

বাইডেন প্রশাসনের সাবেক ১২ কর্মকর্তার মধ্যে একজন মঙ্গলবার (২ জুলাই) মার্কিন স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে পদত্যাগ করেছেন।

বিজ্ঞাপন

তবে, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর গাজায় বেসামরিক হতাহতের সমালোচনা এবং মানবিক সহায়তা বাড়ানোর প্রচেষ্টার দিকে ইঙ্গিত করে এই ধরনের দাবি অস্বীকার করেছে।

যৌথ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আমেরিকার কূটনৈতিক নিরবতা এবং ইসরায়েলে অস্ত্রের ক্রমাগত প্রবাহ গাজায় অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর হত্যায় আমাদের জড়িত থাকা নিশ্চিত করেছে।

সাবেক মার্কিন কর্মকর্তাদের এই ধরনের বিবৃতি এটিই প্রথম নয়। তবে এটির গুরুত্ব বেশি হওয়ার কারণ মার্কিন স্বরাষ্ট্র দফতরের বিশেষ সহকারী মরিয়ম হাসানাইনের পদত্যাগের পরপরই আসায়। কারণ তিনিও বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন।

সাবেক এই কর্মকর্তারা মার্কিন সরকারকে একটি ‘ব্যর্থ নীতি’ আঁকড়ে থাকার জন্য অভিযুক্ত করেছেন। যা কেবল ফিলিস্তিনি জনগণের জন্যই ধ্বংসাত্মক নয় বরং ইসরায়েলিদের বিপন্ন করেছে, বাকস্বাধীনতাকে রুদ্ধ করেছে এবং একটি নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার প্রতি প্রতিশ্রুতিতে মার্কিন বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষুন্ন করেছে।

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড সত্ত্বেও চলমান অস্ত্র হস্তান্তর মধ্যপ্রাচ্যকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলেছে এবং আমেরিকাকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই অঞ্চলজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থগুলো উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। মার্কিন বিশ্বাসযোগ্যতা বিশ্বব্যাপী গভীরভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে এমন সময়ে যখন আমাদের এটি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন- জোশ পল, যিনি অস্ত্র স্থানান্তরের বিষয়ে কংগ্রেসের সম্পর্ক তত্ত্বাবধান করতেন। অক্টোবরে তিনি পদত্যাগ করেন।হোয়াইট হাউসের একজন সাবেক কর্মকর্তা, দুইজন সাবেক বিমানবাহিনী বিভাগের কর্মী এবং প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তাও বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন।

সাতজন বর্তমান ও সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলার পর ইসরায়েলের প্রতি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের চাপ পর্যাপ্ত হয়নি। যা গাজায় মানবিক সংকট রোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে ।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গত বছরের ৭ অক্টোবর নজিরবিহীন হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ইতোমধ্যেই প্রায় ৩৮ হাজারে পৌঁছেছে। অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডজুড়ে মানবিক সংকট গ্রাস করেছে। এই পরিস্থিতিতে মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং অন্যান্য সমালোচকরা ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ করার জন্য এবং ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনের পক্ষাবলম্বনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করছেন।