গাজায় প্রথমদিনে ৭২ হাজার শিশুকে দেওয়া হয়েছে পোলিও টিকা
গাজায় ৩ দিনের মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রথমদিনে ৭২ হাজার শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যম ইয়েনিসাফাক এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, টেলিগ্রাম চ্যানেলে এক বার্তায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, পোলিও টিকা খাওয়ার প্রথম দিন রোববার গাজায় মোট ৭২ হাজার ৬শ ১১ জন শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়েছে।
তুরস্কের বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি (এএ) জানায়, ১০ বছর বয়সের নিচে শিশুদের নিয়ে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নাগরিক নির্ধারিত ভ্যাকসিনেশন সেন্টার গিয়েছেন।
খবরে জানানো হয়, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেইর আল-বালাহ অঞ্চলে শিশুদের পোলিও টিকা খাওয়ানো একটা বড় সমস্যা ছিল। এ অঞ্চলের কয়েকশ শিশু পুষ্টিহীনতায় ভুগছে।
গাজায় তিনদিনের মানবিক যুদ্ধবিরতিতে মোট ৬ লাখ ৪০ হাজার শিশুকে ১৩ লাখ পোলিও ডোজ খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রোববার মোট ৭২ হাজার ৬শ ১১ জন শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়েছে।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৩ দিন গাজা উপত্যকায় ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন চালানোর উদ্যোগ গ্রহণ করে জাতিসংঘের বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এই ৩ দিন মানবিক যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েল রাজি হওয়ার পর বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা গাজায় শিশুদের পোলিও টিকা খাওয়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করে।
১০ বছর বয়সের নিচে মোট ৬ লাখ ৪০ হাজার শিশুকে পোলিও ডোজ খাওয়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন ২ হাজার স্বেচ্ছাসেবী।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, ২৫ বছর পর গাজায় এবারই প্রথম ১০ বছর বয়সের এক শিশুকে পাওয়া গেছে, যে পোলিও রোগে আক্রান্ত। সে এখন পায়ের প্যারালাইসিসে ভুগছে।
সংস্থাটি জানায়, ধারণা করা হচ্ছে, গাজায় উপসর্গবিহীন শতাধিক পোলিও আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। বেশির মানুষেরই পোলিও রোগের উপসর্গ সম্পর্কে ধারণা নেই। অনেকেই হয়ত সপ্তাহখানেকের মধ্যে সুস্থ হয়ে যান। পোলিও রোগে আক্রান্ত হলে শেষমেষ রোগী পঙ্গুত্ববরণ করে। এ রোগ শ্বাসপ্রণালীর মাংসপেশিকে আক্রান্ত করে।
সংবাদ মাধ্যম জানায়, গাজা উপত্যকায় পোলিও টিকা খাওয়ানো একেবারে সহজসাধ্য কাজ নয়। কারণ হিসেবে বলা হয়, গাজার রাস্তা, হাসপাতালসহ ঘরবাড়ি ভীষণ খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আছে। এছাড়া স্থানীয় বাসিন্দারা বাস্তুচ্যুত হয়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছেন।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, সংস্থাটি গাজার শিশুদের পোলিও ভ্যাকসিন খাওয়ানোর জন্য ইসরায়েলের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছেছে। তবে এ মানবিক যুদ্ধবিরতিতে তাদের অনেক সমস্যায় পড়তে হবে। কারণ গাজার ৯০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়েছেন।
ফিলিস্তিন অঞ্চলের বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডা. রিক পিপারকর্ন শনিবার বলেন, রোববার সকাল ৩ দিন সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত পোলিও ভ্যাকসিন খাওয়ানোর ক্যাম্পেইন চলবে।
রামাল্লাভিত্তিক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, নির্ধারিত ৪০০টি কেন্দ্র থেকে পোলিও ভ্যাকসিন খাওয়ানো হবে। এর মধ্যে বেশির ভাগই খান ইউনিসে। এর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং মাঠপর্যায়ের হাসপাতালও রয়েছে।
এখানে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি এবং এখানেই ১০ বছরের নিচে ২৩ লাখ ৯শ শিশু রয়েছে।