উত্তর ইসরায়েলের গভীরে রকেট হামলার দাবি হিজবুল্লাহর

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: আল জাজিরা

ছবি: আল জাজিরা

লেবাননে হামলায় বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার প্রতিবাদে উত্তর ইসরায়েলের গভীরে রকেট হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ। সশস্ত্র সংগঠনটির দাবি ওই অঞ্চলের হাইফা শহরের পূর্ব দিকের রামাত ডেভিড বিমান ঘাঁটি লক্ষ্য করে কয়েক ডজন রকেট হামলা চালানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে উত্তর ইসরায়েল জুড়ে সাইরেন সক্রিয় করা হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

হিজবুল্লাহর দাবি সত্যি হলে গত অক্টোবর থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি রকেট ও বিমান হামলা শুরু হওয়ার পর ইসরায়েলের সবচেয়ে গভীর এটাই ছিল সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রথম রকেট হামলা।

তবে এ হামলায় তাৎক্ষণিকভাবে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।

বিজ্ঞাপন

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী লেবানন থেকে ১০টি রকেট ছোড়ার কথা স্বীকার করেছে। তবে এসব রকেটের অধিকাংশই লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।

এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ লেবাননজুড়ে কয়েক শ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হিজবুল্লাহর সম্ভাব্য হামলা ব্যর্থ করতে এসব হামলা চালানো হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দেশের তৃতীয় বৃহত্তম শহর হাইফা সহ উত্তর ইসরায়েলে বড় জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

বৈরুত থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক আলি হাশেম শনিবার রাতে উত্তর ইসরায়েলে হিজবুল্লাহর হামলাকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘ (ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে) ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর এবারই প্রথমবারের মতো হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র (ইসরায়েলের অভ্যন্তরে) ২০ কিলোমিটারের বেশি দূর পর্যন্ত পৌঁছেছে। এবারই তারা প্রথমবারের মতো ৪৫ থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করছে। এরই মধ্যে আমরা হাইফা শহরের পূর্ব দিকের রামাত ডেভিড বিমান ঘাঁটিসহ বিভিন্ন এলাকায় রকেট জব্দ করার কথা শুনেছি।’

এক বিবৃতিতে হামলার কথা নিশ্চিত করে হিজবুল্লাহ জানায়, এবার তারা তথাকথিত ফাদিয়া-১ ও ফাদিয়া-২ রকেট ছুড়েছে। গত কয়েক মাসে তারা ইসরায়েলের দিকে যেসব রকেট ছুড়েছিল তা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার সোভিয়েত রাশিয়ার তৈরি কাতিউশা রকেট।

গত মঙ্গল ও বুধবার লেবাননজুড়ে হামাস সদস্যেদের ব্যবহার করা কয়েক হাজার তারহীন যোগাযোগযন্ত্র পেজার ও ওয়াকিটকিতে একযোগে বিস্ফোরের ঘটনা ঘটে। লেবানন সরকার ও হিজবুল্লাহর দাবি, ইসরায়েল বৈদ্যুতিক বার্তার মাধ্যমে এ বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। কিন্তু ইসরায়েল এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। দুই দিনের বিস্ফোরণে সাধারণ মানুষসহ সশস্ত্র গোষ্ঠীটির ৩৭ নিহত হয়েছে। আহত হয় প্রায় তিন হাজার।

এরপর গত শুক্রবার লেবাননের রাজধানী দক্ষিণ বৈরুতের শরতলিতে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে অন্তত ৩৮ জন নিহত ও কয়েক ডজন আহত হয়।

শুক্রবারের হামলায় হিজবুল্লাহর কমান্ডার ইব্রাহিম আকিলও নিহত হন। হামলার সময় বৈরুতের শহরতলির একটি ভবনে তিনি বৈঠক করছিলেন। হামলায় পুরো ভবনটি ধুলোয় মিশে যায়।

গত অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই ইসরায়েলে রকেট হামলা চালাচ্ছে হিজবুল্লাহ। জবাবে লেবাননে গোষ্ঠীটির বিভিন্ন স্থাপনায় বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।