হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত, দাবি ইসরায়েলের

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

লেবাননের সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বিমান হামলায় হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করতে সিএনএন যোগাযোগ করলেও হিজবুল্লাহ কোনো মন্তব্য করেনি।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

আইডিএফের এক্স অ্যাকাউন্টে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হাসান নাসরাল্লাহ আর বিশ্বে সন্ত্রাস করতে সক্ষম হবেন না।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হাসান নাসরাল্লাহ ছাড়াও নিহত হয়েছেন হিজবুল্লাহর দক্ষিণ ফ্রন্টের কমান্ডার।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহর সদর দফতর লক্ষ্য করে চালানো এ হামলায় সংগঠনটির প্রধান হাসান নাসরুল্লাহর নিহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

শুক্রবারের ব্যাপক বোমা হামলার পর নাসরুল্লাহর ভাগ্য সম্পর্কে তাৎক্ষণিক কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, হিজবুল্লাহ প্রধান বেঁচে আছেন এবং ভালো আছেন।

ইসরাইলের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। হামলার কয়েক ঘণ্টা পার হওয়ার পরও হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের প্রধানের অবস্থান জানিয়ে কোন বিবৃতিও দেওয়া হয়নি।

ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, নিরাপদে আছেন হিজবুল্লাহপ্রধান। ইরানের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, তেহরান তার অবস্থান জানার চেষ্টা করছে।

ইসরাইলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিটের কমান্ডার মোহাম্মদ আলী ইসমাইল এবং তার ডেপুটি হোসেইন আহমেদ ইসমাইলকে হত্যা করেছে।

১৯৬০ সালে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে জন্মগ্রহণ করেন হাসান নাসরুল্লাহর (৬৪)। বেড়ে উঠেছেন বৈরুতের পূর্বাঞ্চলীয় উপকণ্ঠের বুর্জ হামুদ এলাকায়। বাবা আবদুল করিম ছিলেন একজন সাধারণ সবজি বিক্রেতা। তার ৯ সন্তানের মধ্যে নাসরুল্লাহ ছিলেন সবার বড়।

১৯৭৫ সালে লেবানন গৃহযুদ্ধের মুখে পড়লে হাসান নাসরুল্লাহ শিয়া মুভমেন্ট ‘আমাল’–এ যোগ দেন। পরে কিছুকাল ইরাকের নাজাফে শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাটান। সেখান থেকে লেবাননে ফিরে আবার আমালে যোগ দেন। ১৯৮২ সালে আরও কয়েকজনের সঙ্গে দলটি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। এ ঘটনার কিছুদিন আগে লেবাননে আগ্রাসন চালায় ইসরায়েল।

আমাল থেকে দলছুট হয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘ইসলামিক আমাল’। দলটি প্রতিবেশী দেশ ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কাছ থেকে উল্লেখ করার মতো সামরিক ও সাংগঠনিক সহায়তা পায়। লেবাননের বেকা ভ্যালিভিত্তিক দল ‘ইসলামিক আমাল’ পরবর্তী সময়ে শিয়া মিলিশিয়াদের সবচেয়ে পরিচিত ও কার্যকর দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে। একপর্যায়ে এটিই সশস্ত্র হিজবুল্লাহ সংগঠনে রূপ নেয়।

১৯৯২ সালে মাত্র ৩২ বছর বয়সে হিজবুল্লাহর প্রধান হন নাসরুল্লাহ। এর আগে ইসরায়েলের এক হেলিকপ্টার হামলায় নিহত হন তার পূর্বসূরি আব্বাস আল–মুসাবি।