হামাস প্রধান সিনওয়ার হত্যা: যে বর্ণনা দিলেন ইসরায়েলি সেনা

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

গত এক বছর ধরে লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। শুধু তাই নয়, অভিযান শেষে ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মরদেহ থেকে আঙুল কেটে নেয় ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)।

এমন দুঃসাহসিক অপারেশনের বর্ণনা দিয়ে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন এক ইসরায়েলি সেনা। সিনওয়ারের মরদেহের সঙ্গে কয়েক মিনিট কাটাতে হয়েছে তাকে। পোস্টে যার বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

আইডিএফের ওই সৈনিকের নাম ইতামার ইটাম। বর্তমানে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে রয়েছেন তিনি। শেষ সময়ে ভাঙা চেয়ারের ওপর পড়েছিলেন সিনওয়ার, জানিয়েছেন ইটাম। হামাস প্রধানকে ‘বেঁটে, কুৎসিত ও ভগ্ন স্বাস্থ্যের’ অধিকারী বলে উল্লেখ করেছেন এই লেফটেন্যান্ট কর্নেল।

আইডিএফের থেকে বাঁচতে দক্ষিণ গাজার শহর রাফাকেই ‘নিরাপদ’ বলে মনে করেছিলেন সিনওয়ার। সূত্রের খবর, তার গোপন ডেরার হদিস মিলতেই সেখানে অভিযান চালায় ইসরায়েল। কয়েক ঘণ্টার অপারেশনে হত্যা করা হয় হামাস প্রধানের।

বিজ্ঞাপন

সিনওয়ারের মৃতদেহ শনাক্তকরণের পর সমাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইটাম। তিনি লিখেছেন, সবেমাত্র রাফা ছেড়েছি। খুব বেশিক্ষণ হবে না। আমি ওকে দেখেছি... সিনওয়ার... নিজের চোখে ওর মৃতদেহটা দেখেছি।

এর পরই জঙ্গি নেতার মৃতদেহের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলোর বর্ণনা দিয়েছে আইডিএফের এই সৈনিক। আমি কয়েক মিনিট ওর সঙ্গে কাটিয়েছি। তখন সম্পূর্ণ একা ছিলাম। আমি ওকে দেখেছি। বেঁটেখাটো, কুৎসিত ও ভগ্ন স্বাস্থ্যের একটা মানুষ। ভাঙাচোরা একটা চেয়ারে ওর দেহ পড়েছিল। পোস্টে লিখেছেন ইটাম।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হওয়া ভয়ঙ্কর হামলায় প্রাণ হারান প্রায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েল। আইডিএফের দাবি, গোটা ঘটনার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন সিনওয়ার। এক বছরের মাথায় যাকে হত্যা করল বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার।

হামাস প্রধানের মৃত্যুতে এক বছর আগের সেই জঙ্গি হামলার কথা উল্লেখ করেছেন আইডিএফের ওই লেফটেন্যান্ট কর্নেল লিখেছেন, এই মানুষটা কত যন্ত্রণা দিয়েছে। যখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া শহরের দিকে তাকাই, তখন সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য কষ্ট হয়। তবে সব কিছুর চেয়ে যেটা বেশি, তা হল ঈশ্বরের হয়ে অপমানিত বোধ করছি।

তার লম্বা পোস্টের দ্বিতীয় অংশে কিছুটা আবেগপ্রবণ ছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইটাম। সিনওয়ারও একটা সময়ে শিশু ছিল। ওর হয়তো একটা স্বপ্ন ছিল। বড় হয়ে সে শুধু খারাপটাই বেছে নিল। দুর্বৃত্তপনায় হাত পাকাল। বিকৃতমনস্ক একটা মানুষ! লিখেছেন আইডিএফের ওই লেফটেন্যান্ট কর্নেল।

লেখার একেবারে শেষ অংশে যুদ্ধজয়ের কথা বলেছেন ইটাম। হামাস প্রধানের মৃত্যুতে বিশ্বে শান্তি ফিরেছে বলে দাবি করেছেন তিনি। এই লেফটেন্যান্ট কর্নেলের কথায়, ‘আজকের দুনিয়াটা কত সুন্দর। আমরা বিভ্রান্ত হব না। আশাও ছাড়ব না। আমরা একসঙ্গে জিতব।