কানাডায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হত্যার ষড়যন্ত্রের পেছনে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জড়িত বলে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে নয়াদিল্লি। এই অভিযোগকে ‘অযৌক্তিক এবং ভিত্তিহীন’ দাবি করে শুক্রবার দিল্লিতে নিযুক্ত কানাডার এক কূটনীতিককে তলব করে ভারত। খবর এনডিটিভি।
শনিবার (২ নভেম্বর) এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, শুক্রবার কানাডিয়ান হাইকমিশনের একজন প্রতিনিধিকে তলব করা হয় এবং একটি কূটনৈতিক নোট হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নোটে জানানো হয়েছে, কানাডার উপমন্ত্রী ডেভিড মরিসনের কমিটির কাছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোলা অযৌক্তিক এবং ভিত্তিহীন অভিযোগের কঠোর প্রতিবাদ জানায় ভারত সরকার।’
অমিত শাহর বিরুদ্ধে তোলা কানাডার অভিযোগের বিষয়ে প্রথমে সংবাদ পরিবেশন করেছিল মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট। কানাডার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড মরিসন এক পার্লামেন্টারি প্যানেলে বলেছেন, তিনি মার্কিনভিত্তিক সংবাদপত্রকে বলেছেন যে অমিত শাহ এই চক্রান্তের পিছনে ছিলেন।
মরিসন কমিটিকে বলেন, ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার সাংবাদিক আমাকে ফোন করে জানতে চান, তিনি (শাহ) সেই ব্যক্তি কিনা। আমি নিশ্চিত করেছি যে এটি সেই ব্যক্তি। তবে মরিসন এর বেশি কোনো তথ্য বা প্রমাণ দেননি।
এই বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এটা প্রমাণ করে যে, উচ্চপদস্থ কানাডীয় কর্মকর্তারা ইচ্ছাকৃতভাবে গণমাধ্যমে ভিত্তিহীন দাবি ফাঁস করেছেন। জয়সওয়াল সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ভারত ও কানাডার সম্পর্কের জন্য ‘গুরুতর পরিণতি’ ডেকে আনবে।
রণধীর জয়সওয়াল বলেন, কানাডার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ভারতকে অসম্মানিত করার এবং অন্যান্য দেশকে প্রভাবিত করার সচেতন কৌশলের অংশ হিসেবে ইচ্ছাকৃতভাবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ভিত্তিহীন দাবি ফাঁস করেছেন। এটি দীর্ঘদিন ধরে ভারতের সরকার বর্তমান কানাডীয় সরকারের রাজনৈতিক এজেন্ডা ও আচরণ সম্পর্কে যে ধারণা পোষণ করেছে, তা নিশ্চিত করছে। এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য গুরুতর পরিণতি বয়ে আনবে।
কানাডার ন্যাশনাল সাইবার থ্রেট অ্যাসেসমেন্টে চীন, উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া এবং ইরানের পাশাপাশি ভারতকে ‘প্রতিপক্ষ’ হিসেবে নাম দিয়েছে এমন প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় রণধীর জয়সওয়াল বলেন, এটি প্রমাণ ছাড়াই অভিযোগের আরেকটি উদাহরণ।
তিনি আরও বলেন, ভারতের কিছু কনস্যুলার কর্মকর্তাকে কানাডিয়ান সরকার অবহিত করেছে যে তারা নজরদারির মধ্যে রয়েছে, যা কূটনৈতিক কনভেনশনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। তিনি এটাও স্পষ্ট করেছেন যে নয়াদিল্লি এই পদক্ষেপকে হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শন হিসেবে দেখে।