মার্জিন অব এরর নিয়েই ভোটের দিনে যুক্তরাষ্ট্র

  হাতি-গাধার লড়াই ২০২৪
  • মাহমুদ মেনন, ওয়াশিংটন ডিসি থেকে
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

আরিজোনায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ৪৯% কমলা হ্যারিস ৪৫%, জর্জিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ৪৭% কমলা হ্যারিস ৪৮%,, মিশিগানে ডোনাল্ড ট্রাম্প ৪৮% কমলা হ্যারিস ৫০%, নর্থ ক্যারোলিনায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ৪৬% কমলা হ্যারিস ৪৮%, নেভাডায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ৪৬% কমলা হ্যারিস ৪৯%, পেনসিলভানিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ৪৯% কমলা হ্যারিস ৪৯%, উইসকনসিনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ৪৮% কমলা হ্যারিস ৫০%...ব্যটল গ্রাউন্ডগুলোর এই হচ্ছে চিত্র।

তেমনই এক টান টান প্রতিদ্বন্দ্বিতা, মার্জিন অব এরর নিয়েই আর মোটে কয়েক ঘণ্টা পরই চূড়ান্ত ভোট। যুক্তরাষ্ট্রে এটি ৬০তম প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচন। দিনভর ভোট। রাত হলেই ফলের অপেক্ষা। সে অপেক্ষা কতক্ষণের তা বলা মুশকিল।

বিজ্ঞাপন

তবে একটি কাঙ্খিত ফলের প্রত্যাশা নিয়ে, অনেকটা দ্বিধা বিভক্ত হয়েই ৫ নভেম্বর দিনটি শুরু করবে যুক্তরাষ্ট্রের ভোটারসহ সাধারণ মানুষ। মোটা দাগে ১৬ কোটি ভোটার, যার মধ্যে ৮ কোটির কাছাকাছি মানুষ আগাম ভোটেই তাদের দায়িত্ব সম্পন্ন করেছে। বাকিদের ভোট দেওয়ার দিন ৫ নভেম্বর। যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘ এক রীতি, প্রতি চার বছর পরপর নভেম্বরের প্রথম মঙ্গলবারটিই হয় ভোটের দিন।

ভোটের আগের দিন বেশ ছুটাছুটিতে কেটেছে কমলা হ্যারিসের। পেনসিলভেনিয়ার এমাথা ওমাথা চষে বেড়িয়েছেন। তার কর্মসূচির মধ্যে ছিলো তারকা শিল্পীদের নিয়ে ফিলাডেলফিয়ায় একটি কনসার্টও। লেডিগাগা, অরফা, রিকি মার্টিনের মতো তারাকারা তাতে উপস্থিত ছিলেন। জনসভাগুলোতে তার একটাই আহ্বান ঐক্য। প্রতিবেশির দিকে নজর দিন, তাদেরকে আন্তর্জাতিকতার চোখ দিয়ে দেখুন, আর একে অন্যের প্রতি এগিয়ে যাওয়ার সহযোগী হোন, এই ছিল তার আহ্বান।

বিজ্ঞাপন

ওদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প তিনটি সুইং স্টেটে ছোট ছোট জনসভা করেন। নর্থ ক্যারোলিনা ও পেনসিলভানিয়ায় জনসভা শেষে দিনের কর্মসূচি শেষ করেন মিশিগানের গ্র্যান্ড রেপিডসে জনসভার মধ্য দিয়ে। কমলা হ্যারিসের ওপর তার কথার বান ছিলো একই রকম তীব্র। 'কমলা হ্যারিস, তুমি এবার থামো, অনেক হয়েছে। তোমার পক্ষে আর সম্ভব নয়। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তুমি সবচেয়ে মন্দ ভাইস প্রেসিডেন্ট। তোমাদের প্রশাসন ছিলো যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে মন্দ প্রশাসন। কমলা হ্যারিস তুমি ফায়ারড।'

শেষ দিনে রিপাবলিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জেডি ভেন্স প্রচার চালান উইসকনসিন, মিশিগান, জর্জিয়া ও পেনসিলভেনিয়ায়। আর ডেমোক্র্যাট ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী টিম ওয়ালজ বক্তব্য রাখেন উইসকনসিন ও মিশিগানে।

তবে ভোটের দিনের আগেই কাটা হয়ে গেছে ৭৯.১ মিলিয়ন ব্যালট। ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়াসহ ৪৭ স্টেট থেকে এই ভোট কাস্ট হয়েছে। তবে এই ভোট গত নির্বাচনের চেয়ে অনেক কম। ২০২০ সালে মোট আগাম ভোট পড়েছিল ১১০ মিলিয়ন। যা ছিলো মোট ভোটারের ৭০ শতাংশ। এবার যা ভোট পড়েছে তা মোট ভোটের ৫০ শতাংশ।

নির্বাচন যে কেবল প্রেসিডেন্টের তা নয়। এই দিন ভোটাররা ভোট দেবেন কংগ্রেসের আইন প্রণেতা নির্বাচনের জন্যও। রিপাবলিকানরা এখন প্রতিনিধি সভায় সামান্য সংখ্যাগরিষ্ঠতায় রয়েছে। তারা তা ধরে রাখারই চেষ্টা করবে। সেখানে মোট আসন ৪৩৫টি। ওদিকে সিনেটে চেম্বারের ১০০টি আসনের মধ্যে ৩৪টির নির্বাচন হচ্ছে এবার। এখানে সামান্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা ডেমোক্র্যাটদের। তারাও তা ধরে রাখার চেষ্টায় রত।

এছাড়াও দেশের ১১টি স্টেটে গভর্নর পদে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। স্টেট লেজিসলেটিভেমর ৫,৮০৮টি পদেও প্রার্থীদের ভোট দেওয়া হবে এই দিনে।

এখন কথা হচ্ছে ভোটে যদি প্রতিনিধি সভা রিপাবলিকানদের থেকে ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে ঝুঁকে পড়ে আর সিনেট যদি ঝুঁকে যায় ডেমোক্র্যাটদের থেকে রিপাবলিকানদের দিকে, তাহলে তা হবে ২৩০ বছরের ধারাবাহিক ইতিহাসের ব্যত্যয়।

তবে কী ঘটতে চলেছে, সে নিয়ে আগাম মন্তব্য খুব কমই মিলছে এবার। ভোটের চূড়ান্ত গণনার আগে কেউ কিছুই বলতে পারছে না। দেখা যাক শেষ হাসি কে হাসে, ট্রাম্প নাকি হ্যারিস। ফল জানতে আর মোটে ২৪ ঘণ্টার অপেক্ষা।