বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত নৌপথ পানামা খাল নিয়ন্ত্রণে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তার এই হুমকিকে 'অবাস্তব' বলে মন্তব্য করেছেন পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো ।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পানামার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজগুলোর উপর অতিরিক্ত শুল্কারোপের অভিযোগ তুলে পানামা খাল নিয়ন্ত্রণে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেন, পানামা গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিতে খালটি পরিচালনা না করলে এর নিয়ন্ত্রণভার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তরের দাবি জানাবেন তিনি।
বুধবার তার ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক বার্তায় ট্রাম্প লিখেছেন, চীনের বিস্ময়কর সৈন্যদের যারা অবৈধভাবে পানামা খাল পরিচালনা করছে, তাদের সবাইকে বড়দিনের শুভেচ্ছা।
পানামার প্রেসিডেন্ট মুলিনো এই ট্রাম্পের এই দাবিকে 'অবাস্তব' বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, খালে একেবারেই কোন চীনা হস্তক্ষেপ নেই। এমনকি একজন চীনা সৈন্যও সেখানে নেই।
মুলিনো বলেন, পানামা খাল ও এর-সংলগ্ন এলাকার প্রতি বর্গমিটার পানামার স্বত্বাধীন। আর তা পানামার স্বত্বাধীনই থাকবে। এই বাস্তবতাকে ঘিরে কোনো ধরনের আলোচনার কোনো সম্ভাবনা নেই।
লাতিন আমেরিকার দেশ পানামা যুক্তরাষ্ট্রের একটি মিত্ররাষ্ট্র। পানামা খাল খননের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ভূমিকা ছিল। মূলত যুক্তরাষ্ট্রই খালটি নির্মাণ করে বেশ কয়েক দশক ধরে এটির আশপাশের এলাকায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করেছে। এরপর কিছুদিন পানামার সঙ্গে যৌথভাবে খালটি পরিচালনা করে। ১৯৯৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকার খালটির নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি ছেড়ে দেয়। খাল পরিচালনার দায়িত্ব নেয় পানামা।
পানামা খাল আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরকে যুক্ত করেছে। খালটির দৈর্ঘ্য ৮২ কিলোমিটার। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি জাহাজ চলাচলকারী কৃত্রিম খালের একটি। অন্যটি হচ্ছে সুয়েজ খাল। পানামা খাল না থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব থেকে পশ্চিম উপকূল অভিমুখে যাত্রাকারী যেকোনো জাহাজকে দক্ষিণ আমেরিকার কেইপ হর্ন হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে অতিরিক্ত ১৫ হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হতো।