যুদ্ধ বন্ধের পথ খুঁজতে রিয়াদে আরব-ইসলামি শীর্ষ সম্মেলন

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিন ও লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের পথ খুঁজতে মুসলিম ও আরব বিশ্বের দেশগুলোকে নিয়ে একটি শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করেছে সৌদি আরব। সোমবার (১১ নভেম্বর) দেশটির রাজধানী রিয়াদে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এ সম্মেলনের অংশ নিতে ইতিমধ্যে আরব লিগ এবং অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি, ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মোস্তফা, আলজেরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ আত্তাফ, গিনির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মরিসান্দা কাউয়েতে, সেনেগালের প্রেসিডেন্ট বাসিরু দিওমায়ে ফায়ে, চাদের প্রেসিডেন্ট মাহামত ইদ্রিস ডেবি ইতনো, তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রহমান, নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ মনসুর বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান, উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাভকাত মিরজিওয়েভ; সুদানের অন্তর্বর্তী সার্বভৌম পরিষদের সভাপতি আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান; সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদ; ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানী, বাহরাইনের উপ-প্রধানমন্ত্রী শেখ খালিদ বিন আবদুল্লাহ আল-খলিফা; এবং মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ এল-সিসি রিয়াদে পৌঁছেছেন।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া রিয়াদে পৌঁছেছেন, জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান, কাতারের শাসক শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি, কুয়েতের ক্রাউন প্রিন্স শেখ সাবাহ আল-খালেদ আল-হামাদ আল-সাবাহ, ইরানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ এবং ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ বদর। বিন হামাদ বিন হামুদ আলবুসাইদি, নাইজারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বাকারি ইয়াউ।

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফও এতে যোগ দেবেন।

বিজ্ঞাপন

এরআগে দ্বি-রাষ্ট্রীয় ভিত্তিতে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘাত বন্ধে ‘আন্তর্জাতিক জোটের’ প্রথম বৈঠকের সময় সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সম্মেলনের ঘোষণা দেন।

এক প্রতিবেদনে সৌদি প্রেস এজেন্সি বলেছে, গাজা এবং লেবাননে ইসরায়েলের ‘আগ্রাসন’ আরব ও ইসলামিক নেতাদের জরুরি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে।

সৌদি প্রেস এজেন্সি জানায়, আরব-ইসলামি শীর্ষ সম্মেলনের মূল লক্ষ্য গাজা-লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করা, বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করা, ফিলিস্তিনি ও লেবাননের জনগণকে সমর্থন প্রদান, ইসলামিক দেশ গুলোর মধ্যে ঐক্য স্থাপন, চলমান হামলা বন্ধ করতে এবং স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর চাপ প্রয়োগ করা।

লেবাননের সম্প্রচারমাধ্যম আল-মায়েদিন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ত থাকায় সম্মেলনে অংশ নিতে না পারলেও গতকাল রোববার (১০ নভেম্বর) সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে ফোনে কথা বলেছেন। ফোনালাপে পেজেশকিয়ান বলেছেন, ইরানের প্রতিনিধি হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ সম্মেলনে যোগ দেবেন। তিনি গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসনের শেষ করার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন।

এ সময় সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) ইরানি জনগণকে ভাই বলে সম্বোধন করে তাদের সাফল্য কামনা করেছেন। তারা দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক পর্যালোচনার পাশাপাশি তেহরান ও রিয়াদের মধ্যে ভবিষ্যতে সহযোগিতার ব্যাপারে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন।

সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, আরব দেশগুলোর জোট আরব লীগ ও বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর জোট ইসলামি সম্মেলন সংস্থা বা ওআইসি গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলি পদক্ষেপকে "বর্বর" বলে নিন্দা জানিয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ থিঙ্ক ট্যাঙ্কের সিনিয়র উপসাগরীয় বিশ্লেষক আনা জ্যাকবস বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে দ্বিতীয় মেয়াদে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ের পর এই শীর্ষ সম্মেলনটি ট্রাম্প প্রশাসনকে একটি বার্তা। তারা হয়তো চায় এই অঞ্চলে ইসরায়েলি আধিপত্য কমাতে মার্কিন প্রশাসনের সাথে একটা সংলাপ হোক।

বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌদি রাজনীতির বিশেষজ্ঞ উমর করিম বলেছেন, রিয়াদ সোমবারের শীর্ষ বৈঠকটি আগত ট্রাম্প প্রশাসনকে একটি বার্তা দেবে। বার্তাটি হল বিশ্বে তাদেরও একটি শক্তিশালী অংশীদার রয়েছে।

এ বার্তার মধ্যে অন্তর্নিহিত বার্তাটি হ'ল ট্রাম্প "মুসলিম বিশ্বের প্রতিনিধি হিসাবে সৌদিদের উপর নির্ভর করতে পারেন। এই অঞ্চলে আমেরিকান স্বার্থ প্রসারিত করতে চাইলে সৌদি আরবই আমেরিকার একমাত্র ভরসা।

২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলার পর গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা শুরু করে। ইসরাইয়েলের হামলায় এ পর্যন্ত গাজায় ৪৩ হাজার ৬০০এরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক।

গাজায় হামলার প্রতিবাদ করায় লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকেও টার্গেট করে ইসরায়েল। দেশটিতে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৩ হাজার ১০০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।