ফিলিপাইনে মাদক বিরোধী অভিযান নাকি বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড?

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিপাইনে মাদক কারবারি ও মাদক সেবনকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে। ২০১৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে মাদকের বিরুদ্ধে এ লড়াই শুরু করেন তিনি। ওই সময় তিনি ফিলিপাইনকে মাদকের রাজ্য হয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন। মাদক ও চোরাচালান বন্ধে সন্দেহকারীদের দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে।

তবে এই মাদক বিরোধী অভিযানে কতজন নিহত হয়েছে তা নিয়ে রয়েছে দ্বিধাদ্বন্দ্ব। সরকারি পক্ষ থেকে একেক সময় একেক সংখ্যা বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

অভিযানে নিহত সবাই কি মাদকের সঙ্গে জড়িত নাকি অন্যে কোন উদ্দেশ্যে তাদের হত্যা করা হচ্ছে তা নিয়েও রয়েছে তর্কবিতর্ক। এছাড়া টাকার জন্য দেশটির পুলিশ বাহিনী নিরাপরাধ মানুষকে মাদক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু তারা এই অভিযোগকে অস্বীকার করে আসছে।

মাদকবিরোধী ক্যাম্পেইনের নতুন প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট লেনি রব্রেদো। তিনি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, 'নিরপরাধ ও বিচার বহির্ভূত হত্যার অবসান ঘটাতে হবে।' তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট রদ্রিগোর সমালোচনা করে বলেন, 'রদ্রিগোর মাদক বিরোধী অভিযান কোন কাজেই আসছে না। আর সরকারি অর্থায়নে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটছে।'

বিজ্ঞাপন
 
রদ্রিগো দুতার্তে

এ বিষয়ে প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র সালভাদোর প্যানেলো আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা বিবিসিকে বলেন, 'সরকার কাউকে হত্যা করতে চায় না। এটা আমাদের উদ্দেশ্যেও না।'

মাদক বিরোধী অভিযানে কতজন নিহত হয়েছে তার জন্য ২০১৭ সালে হ্যাশটাগ 'রিয়েল নাম্বারস পিএস' নামে একটি ক্যাম্পেইন চালু করে ফিলিপাইন সরকার।

চলতি বছরের জুনে বলা হয়, মাদক বিরোধী অভিযানে মাদকের সঙ্গে জড়িত নিহত হয়েছে ৫ হাজার ৫২৬ জন। আর দেশটির সাবেক পুলিশ প্রধান একই মাসে বলেন, মাদক বিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছে ৬ হাজার ৭০০ জন। তবে সাবেক পুলিশ প্রধানের বক্তব্যকে অনিচ্ছাকৃত ভুল বলে জানায় প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র।

আর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে দেশটির হিউম্যান রাইটস কমিশন থেকে বলে হয়, মাদক বিরোধী অভিযানে প্রায় ২৭ হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। ২০১৯ সালের মার্চে পুলিশের বরাত দিয়ে দেশটির একটি স্থানীয় টেলিভিশন বলে অভিযানে ২৯ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে।

হিউম্যান রাইটসের তথ্য মতে, এই অভিযানে পুলিশ বেশিরভাগ দরিদ্র সম্প্রদায়কে টার্গেট করছে। এছাড়া তারা স্থানীয় কমিনিউটি নেতাদের মাদক তালিকায় জড়াচ্ছে।

এদিকে ২০১৮ সালে রদ্রিগো দুতার্তে এই বিচার বহির্ভূত হত্যাকে তার একমাত্র পাপ বলে উল্লেখ করেন।

এদিকে বিচার বহির্ভূত এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিসি) একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।