হংকংয়ের রাস্তা পরিষ্কার করলো চীনের সেনারা!
হংকংয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো রাস্তায় নামলো চীনা সেনারা। তবে, তাদের হাতে নেই অস্ত্র, পরণে নেই সেনা পোশাকও। হাফ প্যান্ট ও হাফ-হাতা টি-শার্ট পরে রাস্তা পরিষ্কার করতে নেমেছে তারা। আন্দোলনকারীদের ব্যারিকেড সরিয়ে দিতে তাদের এই বেসামরিক আচরণ।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র আপলোড করা ভিডিওতে দেখা যায়, ব্যারিকেড তৈরিতে ব্যবহার করা ইট থেকে শুরু করে বিভিন্ন বস্তু তারা অতি উদ্যমে সরিয়ে ফেলছে। ঝাড়ু দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করার জন্য একটি ছোট প্যারেডও করেন তারা। সাধারণত পিপলস লিবারেশন আর্মির সদস্যরা শহরে তাদের ব্যারাক ছেড়ে বের হোন না।
গত জুন থেকে হংকংবাসী আন্দোলন করে আসছে। তাদের এ আন্দোলন মূলত রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত অভিযুক্ত বা অপরাধী প্রত্যাবাসনের এক সিদ্ধান্ত নিয়ে। চীন সরকার চায়, হংকংয়ে যারা রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে অভিযুক্ত হবে, তাদের মূল চীনে (মেইনল্যান্ড চীন) পাঠিয়ে দিতে। চীনের এ সিদ্ধান্ত হংকংয়ের বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতার প্রতি হস্তক্ষেপ ও ভিন্নমতাবলম্বীদের দমন করার চেষ্টা বলে মনে করেন হংকংবাসী।
হংকংবাসীর তুমুল বিরোধিতার মুখে কর্তৃপক্ষ অপরাধী প্রত্যাবাসন বিলটি গত সেপ্টেম্বরে প্রত্যাহার করে। তবে আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। আন্দোলনকারীরা এখন হংকংয়ে পুরোপুরি গণতন্ত্র দাবি করছে। আন্দোলনে পুলিশের হামলার তদন্তও চেয়েছে।
১৯৯৭ সালের আগ পর্যন্ত হংকং ব্রিটেনের উপনিবেশ ছিলো। ‘এক দেশ, দুই নীতি’ ব্যবস্থার মাধ্যমে চুক্তির ভিত্তিতে হংকংকে চীনের কাছে দেয় ব্রিটেন। সাবেক ব্রিটেশ উপনিবেশটি মূল চীন থেকে আলাদাভাবে শাসিত। চুক্তি অনুযায়ী, হংকং স্বায়ত্তশাসিত ও অধিবাসীরা মূল চীনের জনগণের চেয়ে বেশি অধিকার ভোগ করেন, বিশেষ করে মতপ্রকাশ ও রাজনৈতিক ভিন্নমত পোষণ করার ক্ষেত্রে।
গত কয়েক মাস ধরে আন্দোলনের কারণে হংকংয়ের অর্থনীতিতে ধস নেমেছে। গত এক দশকের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো অর্থনৈতিক মন্দা দেখছে হংকং। চলতি বছরের এপ্রিল-জুনের চেয়ে জুলাই-সেপ্টেম্বরে হংকংয়ের অর্থনীতি ৩ দশমিক ২ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে।