দুই বছরের মাঝে আসছে ‘জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড’ মানবশিশু
একটি নতুন সায়েন্টিফিক পেপারের তথ্যানুসারে আগামী দুই বছরের মাঝে নৈতিকতার সাথে তৈরি হতে যাচ্ছে বহুল আকাঙ্ক্ষিত ও রোগের হাত থেকে আগামী প্রজন্ম রক্ষা করার ‘জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড বেবিস’।
‘বায়োএথিক্স’ নামক জার্নালে গত সপ্তাহে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়- স্কটল্যান্ডের অ্যাবার্টা ইউনিভার্সিটির অ্যানালিস্ট কেভিন স্মিথ জানিয়েছে, বর্তমানে মানব ভ্রূণতে ‘জিন এডিটিং’ এর ঝুঁকি আগের চাইতে তুলনামূলক অনেকটা কমে গেছে। জেনেটিক মেকআপ সমৃদ্ধ মানব ভ্রূণ তৈরির উদ্দেশ্য হলো জিন সম্পর্কিত রোগকে প্রতিহত করা।
তবে এমন প্রথা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। কারণ অনেকেই আশঙ্কা করছে, এই প্রথা থেকে নন-থেরাপিউটিক উদ্দেশ্যে ‘ডিজাইনার বেবিস’ এর জন্য জিন এডিট করার প্রথা শুরু হবে।
২০১৮ সালের নভেম্বরে চীনের বিজ্ঞানী হি জিয়ানকুই পৃথিবীর সর্বপ্রথম জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড মানবশিশু তৈরির বিষয়টি প্রকাশ করে তোপের মুখে পড়েন। মানব ভ্রূণকে এডিট করে এইচআইভি রেসিস্ট্যান্ট করে তৈরি করা হয়েছিল সে ভ্রূণ।
বিতর্কিত জেনেটিক মোডিফিকেশন থেকে চিকিৎসকরা খুব সহজেই ভবিষ্যৎ সময়ে হৃদরোগ, ডিমেনশিয়া ও ক্যানসারের মতো কমন ও বড় ধরনের রোগকে প্রতিরোধ করতে পারবে। এ বিষয়ে স্মিথ বলেন, ‘জেনেটিক্যাল মোডিফিকেশনের মাধ্যমে এ ধরনের রোগকে প্রতিরোধ বা বিলম্বিত করা গেলে, মানুষের এভারেজ-ডিজিজ-ফ্রি লাইফস্প্যান তথা রোগবিহীন আয়ুকে যথেষ্ট পরিমাণ বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।’
এদিকে এই আবিষ্কারের প্রতি আস্থা রাখতে পারছে না অনেকেই। মার্কিন যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন ইন্সটিটিউট ফোর উইমেনস হেলথে কর্মরত জয়সি হারপার বলেন, ‘এই টেকনোলজিটি প্রয়োগের জন্য পুরোপুরি ‘নিরাপদ’, সেটা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট গবেষণা ও পরীক্ষা করা হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস হয় না।’
যদিও অবশ্য এই মুহূর্তে জেনেটিক মোডিফিকেশনকে সহজলভ্য করতে স্মিথ নিজেও নারাজ। কারণ বেশিরভাগ মানুষ এখনও এর বিপক্ষে মতামত দিচ্ছে। তবে তিনি বিশ্বাস করেন আগামী দুই বছরের মধ্যে নৈতিকভাবে সর্বসম্মতিক্রমে জনসাধারণের জন্য এই কাজটি শুরু করতে পারবেন তিনি।