নোবেল কমিটির ২ সদস্যের পদত্যাগ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
নোবেল পুরস্কার নির্ধারণী কমিটির দুই সদস্যের পদত্যাগ, ছবি: সংগৃহীত

নোবেল পুরস্কার নির্ধারণী কমিটির দুই সদস্যের পদত্যাগ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সুইডিশ একাডেমির সমালোচনা করে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার নির্ধারণী কমিটির দুই সদস্য পদত্যাগ করেছেন। ২০১৯ সালের সাহিত্য শাখা নোবেলজয়ী পিটার হান্ডকে ও এর আগে একটি যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ দুজন সদস্য পদত্যাগ করেছেন। সদস্যদের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সুইডিশ একাডেমি।

পদত্যাগীরা হলেন গুন-ব্রিত সুন্দস্ত্রম ও ক্রিস্তোফের লিয়ান্দোর। তারা দুজনই একাডেমির বাইরের সদস্য (এক্সটারনাল মেম্বার)। এ দুজনের দায়িত্ব ছিল প্রার্থী বাছাই ও চূড়ান্ত প্রার্থীর ভোটাভুটিতে নোবেল কমিটিকে সহায়তা করা। পদত্যাগের আগ পর্যন্ত তারাসহ সাহিত্যে নোবেল কমিটির সদস্য ছিল নয়জন। এদের চারজন সুইডিশ একাডেমির অভ্যন্তরীণ সদস্য ও বাকি পাঁচজন একাডেমির বাইরের সদস্য।

২০১৯ সালের পুরস্কারের জন্য পিটার হান্ডকে নির্বাচিত করার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেন নি গুন-ব্রিত সুন্দস্ত্রম। জার্মানভাষী এ অস্ট্রীয় সাহিত্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ১৯৯০-এর দশকে যুগোস্লাভিয়া যুদ্ধের সময় সার্বদের সমর্থন দিয়েছেন। নিজের সাহিত্যকর্মে ও মতামতধর্মী লেখায় সার্বিয়াকে আক্রমণের শিকার ও ভুক্তভোগী হিসেবে তুলে ধরেছেন হান্ডকে। ২০০৬ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচারাধীন সাবেক যুগোস্লাভের প্রেসিডেন্ট স্লোবদান মিলোসেভিচের শেষক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি।

যুদ্ধবাজ ও মানবতাবিরোধী শাসককে সমর্থন জানানোয় ব্যাপক সমালোচনার মুখে থাকা হান্ডকে পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করার পর কমিটি জানায়, হান্ডের কাজকে রাজনীতির বাইরে রেখে বিবেচনা করা হয়েছে। কিন্তু রাজনীতি থেকে সাহিত্যকে আলাদা করে দেখার ব্যাখ্যায় সুইডিশ একাডেমির সঙ্গে একমত হতে পারেন নি গুনত-বিত্র সুন্দস্ত্রম।

তার সঙ্গে পদত্যাগ করেছেন কমিটির অন্যতম সদস্য ক্রিস্তোফার লিয়ান্দোর। তবে, ক্রিস্তোফার লিয়ান্দোর পদত্যাগের বিষয়টি ২০১৯ সালের নির্বাচিত ব্যক্তিকে নিয়ে নয়, তা পরিষ্কার করে জানিয়েছেন। কমিটির এক সদস্যের স্বামীর বিরুদ্ধে ওঠা যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠার পর প্রয়োজনীয় সংস্কার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন এ সুইডিশ সাহিত্যিক। ২০১৮ সালে ওই অভিযোগ উঠেছিল। ওই বছর সাহিত্যে পুরস্কার ঘোষণা স্থগিত রাখে সুইডিশ একাডেমি। এরপর একাডেমির বিধানে পরিবর্তন এনে মূল কমিটিকে সহায়তার জন্য বাহির থেকে সদস্য রাখার ব্যবস্থা করা হয়।

এরপরও প্রয়োজনীয় সংস্কারের গতি নিয়ে অসন্তুষ্ট লিয়ান্দোর। সুইডেনের এক স্থানীয় পত্রিকায় লিয়ান্দোর লিখেছেন, ‘সময়ের ব্যাপারে একাডেমি ও আমার ভিন্নমত রয়েছে। এক বছর আমার জীবনের জন্য অনেক বড় একটা সময় কিন্তু একাডেমির জন্য তা খুবই সামান্যব্যাপ্তির।’

২৩৩ বছরের পুরো সুইডিশ একাডেমি এ দুই লেখকের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে এক বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি সাবেক দুই সদস্যের অবদানের কথা উল্লেখ করেছে। একাডেমির স্থায়ী সচিব বিবৃতিতে বলেছেন, ‘বছরজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ২০২০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার দেয়ার জন্য আমরা নোবেল কমিটির কাজ পুনর্বিবেচনা করছি।’

   

তাপ বাড়ছে লন্ডনে, জনগণকে ‘নতুন বাস্তবতা’ মেনে নেওয়ার আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

লন্ডনে গ্রীষ্মকালে স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ তাপমাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় সামনের দিনগুলোতে তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক থিঙ্কট্যাংক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর এনভায়র্নমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলেপমেন্ট (আইআইইডি)। এমন অবস্থায় শহরের মানুষদেরকে 'নতুন বাস্তবতার' সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

বুধবার (১ মে) আইআইইডির প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রবন্ধের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।

গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছে, লন্ডনের মানুষ গত তিন দশকে (১৯৯৩-২০২৩) ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা ছিল এমন ১১৬ দিন পার করছে। এর মধ্যে ৫৯ দিন ছিল গত ১০ বছরে। আর ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা দেখছে ৭ দিন। যার ৫ দিন ছিল গত পাঁচ বছরের মধ্যে। 

১৯৯০ থেকে ২০০০— এই দশ বছরের প্রতি বছরই গ্রীষ্মকালে অস্বাভাবিক উষ্ণ দিনের সংখ্যা বেড়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রবন্ধে। কিন্তু এ সময়সীমায় টানা উষ্ণতা বা তাপপ্রবাহের তেমন কোনো রেকর্ড পাওয়িা যায়নি। কিন্তু ২০১৭ সাল থেকে গ্রীষ্মকালগুলোতে টানা তিন বা তারও বেশি দিন ধরে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা দেখছে লন্ডনবাসী।

গবেষণা প্রবন্ধে আরও বলা হয়, এমন তাপমাত্রায় মানুষের স্বাস্থ্যের অবনতির পাশাপাশি হিটস্ট্রোকের সম্ভাবনাও রয়েছে। এমনকি কাজের ক্ষেত্রে মানুষ বাধার সম্মুখীন হতে পারে।

আইআইইডির জ্যেষ্ঠ গবেষক টাকার ল্যান্ডসমান এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘লন্ডনের জলবায়ু দিন দিন অধিকতর উষ্ণ হয়ে উঠেছে এবং জনগণ যেন পরিবর্তিত তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে, সেজন্য সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’

এমন পরিস্থিতিতে পরিবর্তিত সেই ‘নতুন বাস্তবতার’ সঙ্গে জনগণকে খাপ খাইয়ে নিতে আহ্বান জানিয়েছে তিনি।

;

গাজা গণহত্যায় মার্কিন সমাজে প্রতিবাদের জাগৃতি



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
গাজা গণহত্যায় মার্কিন সমাজে প্রতিবাদের জাগৃতি

গাজা গণহত্যায় মার্কিন সমাজে প্রতিবাদের জাগৃতি

  • Font increase
  • Font Decrease

ক্যাপিটালিজমের কেন্দ্রস্থল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বব্যাপী শোষণ, যুদ্ধবাজী ও দাদাগিরির জন্য অভিযুক্ত করা হলেও সে দেশের সমাজে মানবাধিকার, মুক্তচিন্তা ও প্রতিবাদের বহু স্মৃতি বিদ্যমান। গাজা গণহত্যায় মার্কিন সমাজে প্রতিবাদের সেই স্মৃতি আবার জাগ্রত হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে।

দৃশ্যত মার্কিন প্রশাসনের মদদে ও ছত্রছায়ায় আগ্রাসী ইসরায়েল চলমান-একতরফা আক্রমণে গাজায় প্রায় ৩৫ হাজার সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে, যাদের অধিকাংশই নারী, শিশু ও বৃদ্ধ। বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ ও নিন্দার মুখেও মার্কিন প্রকাশন হন্তারক ইসরায়েলের অব্যাহত গণহত্যার বিষয়ে ‘মানবিক অবস্থান‘ গ্রহণ করেনি। এই যখন পরিস্থিতি, ঠিক তখনই গর্জে উঠে মার্কিন যুব প্রজন্ম। অগ্নিগর্ভ আকার ধারণ করে সেখানকার নামজাদা বিশ্ববিদ্রালয়গুলো, যা বিগত শতাব্দীর ষাটের দশকে ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, জার্মানিরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রআন্দোলনের উত্তাল দিনগুলোকে মনে করিয়ে দেয়।

প্রধান প্রধান মার্কিন গণমাধ্যমসহ বিশ্বমিডিয়া মার্কিন ক্যাম্পাসগুলোর প্রতিবাদমুখর পরিস্থিতি তুলে ধরছে। মার্কিন সিভিল সমাজ ও বুদ্ধিজীবীগণ ছাত্রআন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছে। তারা বলছেন, ছাত্রআন্দোলন অহিংস বিধায় তাতে কোনরূপ বাধা দেওয়া যাবে না। তবে কোথাও কোথাও ছাত্রদের বিরুদ্ধে কঠোরতা প্রদর্শন করা হচ্ছে।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ও গাজা-গণহত্যার প্রতিবাদে সূচিত মার্কিন ছাত্রআন্দোলনের কয়েকটি দিক অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

১. মার্কিনসহ ইউরোপের দেশগুলোতে অন্যায় করার পরেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কিছুই না বলার আইনগত ও সংস্কৃতিগত প্রতিরোধ ভেঙে দিয়েছে ছাত্রআন্দোলন।

২. মার্কিন গণতান্ত্রিক সমাজের মর্মমূলে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের যে ধ্বনি, তাকে পুনরায় প্রতিধ্বনিত করেছে ছাত্রসমাজ।

৩. মুসলমানদের পক্ষে ন্যায়সঙ্গত কারণে কথা বললেও তাকে ইসলামফেবিয়া লেবেল দেওয়ার পাশ্চাত্য কৌশল প্রত্যাখ্যাত হয়েছে ছাত্রআন্দোলনের মাধ্যমে।

৪. ক্রমশ কর্তৃত্ববাদী হওয়ার পক্ষে ক্রমঅগ্রসরমান মার্কিন নীতি, নেতৃত্ব ও রাজনীতিকে চপোটাঘাত করেছে এই প্রতিবাদ।

৫. বিশ্বের মানবিক বিবেক যে অবলুপ্ত হয়নি, তা প্রমাণ করেছে মার্কিন দেশের এই তীব্র ছাত্রআন্দোলন।

৬. ছাত্র-যুব সমাজের প্রতিবাদের শক্তি ও অন্যায়ের বিরোধিতার স্পৃহা আবার ফিরিয়ে এনেছে এই আন্দোলন।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ও গাজা-গণহত্যার প্রতিবাদে সূচিত মার্কিন ছাত্রআন্দোলনের ফলে মার্কিন নেতৃত্ব ও প্রশাসন আগের মতো অন্ধভাবে ইসরায়েলের গণহত্যার সমর্থন করতে, অস্ত্র সাহায্য করতে বা জাতিসংঘে ইসরায়েলের নারকীয়তার পক্ষে দাঁড়াতে দুইবার ভাববে। কারণ, সামনেই মার্কিন নির্বাচন। জনমত প্রো-ইসরায়েল থেকে অ্যান্টি-ইসরায়েলের দিকে চলে গেলে এককভাবে নেতাদের পক্ষে ইসরায়েলের জন্য কাজ করা সহজ হবে না। এই আন্দোলন ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন নীতি তথা বৃহত্তর অর্থে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে নিশ্চয় কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। এতে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির পথ অনেকটা মসৃণ হবে বলেও আশা করা যায়।

অতীতে তীব্র ছাত্রআন্দোলনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ভিয়েতনামে বর্বরতা প্রদর্শনের নীতি থেকে ফিরিয়ে এনেছিল। মার্কিন আক্রমণে ভিয়েতমান যখন মৃতদের এক ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশে পরিণত হতে চলেছিল, ঠিক তখনই ফুঁসে উঠে মার্কিন ছাত্রসমাজ। তীব্র প্রতিবাদ ও আন্দোলনে মার্কিন প্রশাসন কোণঠাসা হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পরাজয় ও ভুল স্বীকার করে ভিয়েতনাম থেকে নত মুখে ফিরে আসতে বাধ্য হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

শুধু ভিয়েতনাম নয়, মার্কিন ছাত্রআন্দোলন দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী শাসনের অবসানে ও নেলসন ম্যান্ডেলার মুক্তির জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বর্ণবাদ ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধে এবং অভিবাসী মানুষের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রেও ছাত্রআন্দোলনের দৃশ্যমান অবদান মার্কিন দেশের ইতিহাসে লিপিবদ্ধ রয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও অতীতের নানা পর্যায়ে ইউরোপের দেশে দেশে ছাত্রআন্দোলন ইতিহাসের বদল ঘটিয়েছে। এবং ছাত্রআন্দোলন কখনোই পরাজিত হয় নি। শেষ বিজয় তাদেরই হয়েছে।

মার্কিন দেশেও তেমনই হবে। কারণ, সেখানকার বর্তমান আন্দোলন দাবানলের মতো এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। প্রশাসন যেখানে দমন করার চেষ্টা করছে, সেখানেই আন্দোলন আরো তীব্র হচ্ছে। ছাত্রদের পাশে শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী ও নাগরিক সমাজ এসে দাঁড়াচ্ছে। বলা যায়, ক্রমেই এই আন্দোলন বৃহত্তর সামাজিক আন্দোলনের চরিত্র ধারণ করছে।

বিশেষ করে, মার্কিন দেশের মিডিয়া, বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রশাসনে প্রবল শক্তিশালী ইসরায়েলি লবি সব সময়ই আরব ও মুসলিমদের চরিত্রহনন করে আসছে। এমনকি, হাজার হাজার গাজাবাসীকে হত্যা করার মতো নৃশংস গণহত্যাকেও বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছে তারা। তাদের কারসাজিতে মার্কিন তথা পশ্চিমা জনমনে ইসরায়েলের প্রতি অন্ধ সহানুভূতি ও আরব-মুসলিমদের প্রতি অহেতুক বিদ্বেষ বিরাজমান। এমন একটি পরিস্থিতি ভেঙে মার্কিন ছাত্রসমাজ মানবিকতা ও সত্যের পক্ষে দাঁড়ানোর ঘটনা প্রমাণ করে, কোনো ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারই প্রকৃত সত্যকে আড়াল করতে পারে না। প্রায় ৩৫ হাজার নিরীহ মানুষের মৃত্যুর ঘটনাও মার্কিন ছাত্রসমাজের চোখ খুলে দিয়েছে এবং তাদেরকে মানবিক সত্যের মিছিলে সমবেত ও আন্দোলন মুখর করেছে।

;

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বাসিন্দাদের আশ্রয় দেবে যুক্তরাষ্ট্র



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রায় সাত মাস চলমান। এ অবস্থায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন গাজার ১৭ লাখেরও বেশি বাসিন্দা। মানবিক সংকটে অনেকেই গাজা থেকে পালিয়ে জীবন রক্ষা করতে চাইছেন। এ পরিস্থিতিতে বাইডেন প্রশাসন জানিয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসতে চাইলে তাদের আশ্রয় দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে দেখছে তারা।

বুধবার (১ মে) সিবিএস নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন সরকারের অভ্যন্তরীণ নথিগুলোতে দেখা গেছে, মার্কিন নাগরিকদের সঙ্গে সংযুক্ত গাজা থেকে পালিয়ে আসা ফিলিস্তিনিদের ‘মার্কিন রিফিউজি অ্যাডমিশন প্রোগ্রাম’র মাধ্যমে আশ্রয় দেয়ার সম্ভাব্য বিকল্প উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি কেন্দ্রীয় সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সংক্রান্ত প্রস্তাবও পেশ করেছেন।

নথি অনুসারে, মার্কিন কর্মকর্তারা গাজা থেকে অতিরিক্ত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দেয়ার কথাও বিবেচনা করছেন। তবে প্রস্তাবটি মিশরের সঙ্গে সমন্বয়ের ওপর নির্ভর করবে। কারণ দেশটি এতদিন ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দিতে রাজি ছিল না।

মঙ্গলবার রাতে সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৮শ' টিরও বেশি আমেরিকান নাগরিক এবং তাদের পরিবারকে গাজা ছেড়ে যেতে সহায়তা করেছে। যাদের মধ্যে অনেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নির্দেশে আমরা এ সহায়তা করেছি। এছাড়াও কিছু বিশেষভাবে দুর্বল ব্যক্তিদের, যেমন গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন এবং ক্যান্সারের চিকিৎসা নিচ্ছে এমন শিশুদের এই অঞ্চলের নিকটবর্তী হাসপাতালে যত্ন নেওয়ার মতো সহায়তা আমরা করেছি এবং এটি অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। প্রায় সাত মাস ধরে চলা এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

;

ই-মেইলে বোমার হুমকি, দিল্লির ১০০ স্কুল বন্ধ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ই-মেইলের মাধ্যমে বোমার হুমকি পাওয়ায় ভারতের রাজধানী দিল্লি ও পার্শ্ববর্তী নয়ডা শহরের প্রায় ১০০ স্কুল খালি করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তল্লাশি শুরু করেছে। তবে এখন পর্যন্ত সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি।

বুধবার (১ মে) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

দেশটির বিভিন্ন টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সন্তানদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য দিল্লি ও নয়ডাজুড়ে স্কুলগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে অপক্ষো করছেন অভিভাবকরা। স্কুলগুলোতে পুলিশের বিশেষ দল, ডগ স্কোয়াড ও বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট তল্লাশি পরিচালনা করেছে।

দিল্লি পুলিশের মুখপাত্র সুমন নালওয়া এনডিটিভিকে বলেন, যেসব স্কুলে বোমা হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে সেখানে আমরা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছি। আমি অভিভাবকদের আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। এখন পর্যন্ত সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি।

আরেক পুলিশ অফিসার বলেন, এটা ভুয়া বলে মনে হচ্ছে। আতঙ্ক ছড়াতে এত বড় পরিসরে সব স্কুলে মেল পাঠানো হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, নিরাপত্তা সংস্থাগুলো সব ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। দিল্লির শিক্ষামন্ত্রী অতিশী লোকজনকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজন অনুযায়ী অভিভাবকদের সাথে যোগাযোগ করবে।

দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভি কে সাক্সেনা বলেন, পুলিশ বোমার হুমকি ই-মেলের উত্স খুঁজে পেয়েছে। এটি একটি প্রতারণা বলে মনে হচ্ছে। আমি দিল্লির নাগরিকদের আশ্বস্ত করছি এই বিষয়ে পুলিশ সতর্ক রয়েছে এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দিল্লি ও নয়ডার স্কুলে বোমার হুমকি দিয়ে করা ই-মেইলের উৎস রাশিয়া বলে জানিয়েছেন দিল্লির এক কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ভিপিএন ব্যবহার করে রাশিয়া থেকে ই-মেইল করা হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের মুখোমুখি করা হবে বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ। 

 

;