ন্যাটোয় বিভক্তির সুর, মাক্রোঁ’র সমালোচনায় ট্রাম্প  

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক,বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃৃহীত

ছবি: সংগৃৃহীত

নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অরগানাইজেশন (ন্যাটো) কে ‘অচল মস্তিষ্ক বা অকার্যকর (ব্রেইন ডেড)’ সংস্থা হিসেবে উল্লেখ করায় ফরাসি প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফরাসি প্রেসিডেন্টের মন্তব্যকে ন্যাটোর অন্যান্য সদস্যের প্রতি অসম্মানজনক ও অপ্রীতিকর হিসেবে উল্লেখ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

নভেম্বর প্রথম সপ্তাহে একটি সংবাদমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে ন্যাটোকে ‘অকার্যকর’ হিসেবে উল্লেখ করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ। যৌথভাবে শত্রুকে প্রতিহত করা নিয়ে ন্যাটোর প্রতিষ্ঠাতা প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর না করে ইউরোপের মিত্রদের একত্রিত হয়ে ‘ভূ-রাজনৈতিক শক্তি’ হিসেবে নিজেদের নিয়তির নিয়ন্ত্রণ নিতে আহ্বান জানান মাক্রোঁ।

ওই সাক্ষাৎকারে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইউরোপীয় মিত্রদের যুক্তরাষ্ট্রের ওপর বেশি নির্ভর না করার জন্য সতর্ক করে দেন। মাক্রোঁ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতির আলোকে আমাদের পুনর্বিবেচনা করা উচিত ন্যাটো বর্তমানে কোন অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) লন্ডনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘এটা খুবই অপ্রীতিকর মন্তব্য। লন্ডনে ন্যাটোর ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন সদস্য দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা।’

১৯৪৯ সালে সোভিয়েত রাশিয়ার আগ্রাসনের ভয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলো গঠন করে ন্যাটো। এ সামরিক মিত্র জোটের নিয়ম অনুযায়ী কোনো সদস্যের ওপর অন্য কোনো দেশ আগ্রাসন চালালে একে অপরের সহযোগিতায় এগিয়ে আসবে। প্রথমে ১২ সদস্য নিয়ে ন্যাটো গঠিত হলেও এখন এ সংখ্যা পৌঁছেছে ২৯-এ। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া তুরস্ক একমাত্র ইউরোপের বাইরের দেশ।

মাক্রোঁ’র মন্তব্যকে ন্যাটোর সদস্য দেশের জন্য অসম্মানজনক উল্লেখ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘অন্য যে কোনো সদস্যদের চেয়ে ন্যাটোকে ফ্রান্সের বেশি প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্রের লাভ এতে খুবই কম। তাদের (ফ্রান্সের) এ ধরনের মন্তব্য করা খুবই বিপজ্জনক।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমি তার দিকে দেখছিলাম আর বলছিলাম, অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে তার দেশের বেশি নিরাপত্তা দরকার। আমি উপলব্ধি করছি, সে ন্যাটো থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। তাই আমি কিছুটা বিস্মিত।’

মাক্রোঁ’র মন্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছে জার্মানি, তুরস্কও। এর আগে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান উল্টো মাক্রোঁ’কে ‘অচল মস্তিষ্কের’ ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন। মাক্রোঁ’র সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ধারণাও কম রয়েছে বলে মন্তব্য করেন এরদোয়ান।

তবে তুরস্কেও ন্যাটোর অন্য সদস্যদের সঙ্গে মতের অমিলের বিষয়টি প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে। সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে দাবি করে কুর্দি গোষ্ঠীদের বিরুদ্ধে তুরস্কের চালানো যুদ্ধে ন্যাটো সমর্থন না দিলে, তারাও বাল্টিক অঞ্চল নিয়ে সংগঠনের পরিকল্পনা মঞ্জুর করবে না। লন্ডনে আসার আগে এরদোয়ান জানান, পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া ও এস্তোনিয়াকে সম্ভাব্য রুশ হামলা থেকে রক্ষার জন্য ন্যাটোর পরিকল্পনাকে অনুমোদন দেবে না তুরস্ক যদি না জোটটি কুর্দি ওয়াইপিজিকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত না করে।

সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসকে (এসডিএফ) নেতৃত্ব দিচ্ছে ওয়াইপিজি। আর এর প্রতি সমর্থন রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সিরিয়ার সরকারবিরোধী জোটের। মধ্যপ্রাচ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য প্রত্যাহারের পর তুরস্ক এ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে পরামর্শ না করে সৈন্য প্রত্যাহার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।