গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার সু চির
মিয়ানমারের রাখাইনে গণহত্যা, গণধর্ষণ ও জাতিগত নির্মূল অভিযানের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি।আইসিজেতে অভিযোগকারী গাম্বিয়ার দেওয়া তথ্যকে বিভ্রান্তিকর বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে নিজ দেশের পক্ষে বক্তব্য রাখেন তিনি।
অং সান সু চি বলেন, আরাকানে কয়েকশো মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। অভ্যন্তরীণ তদন্ত ও বিচারব্যবস্থা এ নিয়ে কাজ করছে। জাতিগত সংঘাতে নয়, সশস্ত্র গোষ্ঠীর আধিপত্যের কারণে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া এবং রাখাইনে সংঘটিত সব অপরাধের দায় আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (এআরএসএ) ওপর চাপান তিনি।
বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী মিয়ানমার স্বেচ্ছায় এবং সম্মানের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনে তার দেশ প্রস্তুত রয়েছে বলেও আইসিজেতে দাবি করেন সু চি।
রাখাইনে কোনো ধরনের বৈষম্য করা হবে না জানিয়ে সু চি বলেন, মুসলমান ছাত্রছাত্রীদের জন্য বৃত্তি চালু করা হচ্ছে। তিনটি আইডিপি শিবির বন্ধ করা হয়েছে। দেশান্তরিতদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির দোষারোপ করে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর বলেন, রাখাইন একটি সন্ত্রাসী আক্রমণের মধ্যে রয়েছে। এর কারণে রাখাইনের আশেপাশেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা আমাদের নাগরিকদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে চাই।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টায় দ্বিতীয় দিনের শুনানি শুরু হয়। আদালতে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি নিজ দেশের আইনজীবী দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
মঙ্গলবার আইসিজেতে ১৭ জন বিচারপতির উপস্থিতিতে প্রথম দিনের শুনানি হয়। প্রথম দিনে অভিযোগকারী দেশ গাম্বিয়ার আইনমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু মানবতাবিরোধী নৃশংসতার অভিযোগগুলো তুলে ধরেন।
আইনমন্ত্রী তামবাদু বলেন, আমরা চাই আইসিজে মিয়ানমারকে বলুক যে এখনই রোহিঙ্গা শিশুদের হত্যা বন্ধ করতে হবে, নৃশংসতার অবসান ঘটাতে হবে।
গাম্বিয়ার পক্ষে আদালতে গণহত্যার উদ্দেশ্য, গণহত্যার কার্যক্রম, ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতা, গাম্বিয়া এবং মিয়ানমারের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টির পটভূমি, আদালতের এখতিয়ার এবং অন্তর্বর্তী পদক্ষেপ হিসেবে কী কী ব্যবস্থা প্রয়োজন, সেগুলো তুলে ধরেন আরও সাত আইন বিশেষজ্ঞ।
শুনানির দ্বিতীয় দিন বুধবার মিয়ানমারের বক্তব্য শোনা হবে। শুনানির শেষ দিন বৃহস্পতিবার সকালে গাম্বিয়া ও বিকেলে মিয়ানমার যুক্তি খণ্ডন করার সুযোগ পাবে।
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া গত ১১ নভেম্বর দ্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ দায়ের করে।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে বক্তব্য দিচ্ছে মিয়ানমার