ইউক্রেন সরকার ও রুশপন্থী বিদ্রোহীদের বন্দী বিনিময়
পাঁচ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ইউক্রেন সরকার ও পূর্বাঞ্চলীয় রুশপন্থী বিদ্রোহীরা একে অপরের সামরিক সদস্য আটক করেন। এদের অনেককে বিভিন্ন সময় ছেড়েও দেওয়া হয়। এবার উভয়পক্ষ নিজেদের কাছে আটক থাকা সব বন্দীদের মুক্তি দেওয়া শুরু করেছে।
রাশিয়ার সংবাদ সংস্থার বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানায়, রোববার (২৯ ডিসেম্বর) আটক থাকা বাকি সব বন্দীদের মুক্তি দেওয়া শুরু করেছে ইউক্রেনের সরকার ও ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার সমর্থিত বিদ্রোহীরা।
ইউক্রেনের সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ রেখা হিসেবে পরিচিত হরলিভকা শহরের কাছে মায়েরস্ক তল্লাশি চৌকিতে বন্দীদের বিনিময় হচ্ছে বলে আল-জাজিরা জানায়। বন্দী বিনিময়ের ঘটনাকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি।
তবে, উভয়পক্ষ কতজন করে বন্দীকে ছেড়ে দেবে সেটি সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়নি। মস্কো থেকে আল-জাজিরার প্রতিবেদক জানিয়েছে, পূর্বাঞ্চলীয় দোনেতস্কের বিদ্রোহীরা ৫৫ জনের বেশি বন্দীকে ছেড়ে দেবে। এদের বিনিময়ে কিয়েভের কাছ থেকে ৮৭ জন বিদ্রোহীর মুক্তি আশা করছে বিদ্রোহীরা।
এ বন্দী বিনিময়ের জন্য উভয়পক্ষই তাদের তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের মুক্তি প্রত্যাশা করছে। নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় মুক্ত ব্যক্তিদের নেওয়ার আগে তাদের পরিচয় যাচাই-বাছাই করছে উভয়পক্ষই।
প্যারিসে ৯ ডিসেম্বর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমেয়ের জেলেনস্কির প্রথম মুখোমুখি বৈঠকের পর ঢালাওভাবে এ বন্দী বিনিময় হচ্ছে। গত তিন বছরের মধ্যে এটিই ছিল দুই নেতার প্রথম বৈঠক। প্যারিস বৈঠকের পেছনে মধ্যস্থতা করে জার্মানি ও ফ্রান্স। ৫ বছর ধরে চলা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান ঘটাতে আগ্রহী জেলেনস্কি গত মে মাসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
২০১৪ সালে রাজধানী কিয়েভে জনবিক্ষোভের মুখে রুশপন্থী সরকারের পতন ঘটে। ইউক্রেনের জাতীয়তাবাদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ওই বছরে পূর্বাঞ্চলে স্বাধীনতার ডাক দিয়ে বিদ্রোহ শুরু হয়। রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সঙ্গে ইউক্রেনের সরকারি বাহিনীর যুদ্ধে ১৩ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়।