শর্ত সাপেক্ষে অ্যাসাঞ্জকে ক্ষমা করতে চেয়েছিল ট্রাম্প
উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে শর্ত সাপেক্ষে ক্ষমা করতে চেয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এমনটা দাবি করেছেন তার আইনজীবী। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) অ্যাসাঞ্জের মামলার শুনানিকালে এমনটা দাবি করেন আইনজীবী এডওয়ার্ড ফিৎসগেরাল্ড। যা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
রয়টার্স তাদের প্রতিবেদনে জানায়, ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে অ্যাসাঞ্জের উদ্ধৃতি দিয়ে আইনজীবী এডওয়ার্ড ফিৎসগেরাল্ড জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রিপাবলিকান প্রতিনিধি ডানা রোরাবাকার ২০১৭ সালে অ্যাসাঞ্জের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। ওই সময় তিনি ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনের সময় ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলার ক্লিনটনের ই-মেইল ফাঁসের সঙ্গে রাশিয়ার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না বলে অ্যাসাঞ্জ বক্তব্য দিলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে বলে অফার করেন। আর ওই অফার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে এসেছিল।
পরবর্তী সপ্তাহে অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হবে কি না তা নিয়ে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে আইনজীবীরা তার সঙ্গে কথা বলেন।
তবে অ্যাসাঞ্জের আইনজীবীর এই বক্তব্যকে অস্বীকার করেছে হোয়াইট হাউস। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র স্টিফেনি গ্রিসহ্যাম বলেন, তারা যেসব কথা বলছে তা অবান্তর। প্রেসিডেন্ট সাবেক কংগ্রেসম্যান রোরাবাকারকে তেমনভাবে চেনেন না। তিনি এ বিষয়ে তার সঙ্গে কোনো দিন কথাও বলেননি। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এদিকে ফিৎসগেরাল্ডের এই বক্তব্যকে অস্বীকার করেছেন রোরাবাকার। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, আমি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কোনোদিন এ ব্যাপারে কথা বলিনি। আমি নিজে অ্যাসাঞ্জকে সহযোগিতা করতে ট্রাম্পকে অনুরোধ করেছি। হিলারির ই-মেইলগুলো অ্যাসাঞ্জ কীভাবে পেয়েছেন তা প্রকাশ করলে তাকে ক্ষমা করার জন্য ট্রাম্পের কাছে সুপারিশ করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম আমি এবং যা আমি নিজ দায়িত্বেই করেছি।
হিলারির ই-মেইল ফাঁস নিয়ে তদন্ত করার পর মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ২০১৬ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকে জেতানোর জন্য রাশিয়া নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছিল। ট্রাম্পকে জেতাতে তারা হিলারির ই-মেইল হ্যাক করে সেগুলো প্রকাশ করেছিল।
আগে থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে রাশিয়া। আর ট্রাম্পও মস্কোর হস্তক্ষেপ অস্বীকার করে আসছে। তবে মার্কিন বিশেষ কাউন্সিলর রবার্ট মুয়েলারের তদন্তে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ প্রমাণিত হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গোপন নথি ফাঁস করে ২০১০ সালে সবার সামনে আসেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। ২০১২ সালে দেশচ্যুত হন অস্ট্রেলিয়ার বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক অ্যাসাঞ্জ। দীর্ঘ সাত বছর তিনি যুক্তরাজ্যের ইকুয়েডর দূতাবাসে অবস্থান করেন। গত বছরের এপ্রিলে ধর্ষণ মামলায় তাকে দূতাবাস থেকে গ্রেফতার করে লন্ডন পুলিশ। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ১৮টি মামলা দায়ের রয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে তার কয়েক দশকের জেল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।