করোনায় বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করা কঠিন হবে

  • আবদুল্লাহ আল মামুন, নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) চীনে মহামারি আকার ধারণ করেছে। যা দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ব্যাহত করছে। আর বিশ্বব্যাপী এটি মহামারি আকারে দেখা দেওয়ায় ২০২০ সালের বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করা কঠিন হবে।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এ সতর্কবার্তা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

বিজ্ঞাপন

জি-২০ দেশের অর্থমন্ত্রী ও ব্যাংকারদের উদ্দেশে আইএমএফ’র দেওয়া এক বার্তায় জানানো হয়, বড় অর্থনীতির দেশগুলো মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে। এছাড়া এ ভাইরাসের ফলে বিশ্বের দুই বৃহৎ অর্থনীতির দেশ চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা আবার বাড়তে পারে। পাশাপাশি জলবায়ু সম্পর্কিত দুর্যোগগুলোর কারণেও অর্থনীতিতে পরিবর্তন আসেত পারে।

জাতিসংঘ কর্তৃক অনুমোদিত স্বায়ত্তশাসিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইএমএফ আরও জানায়, বৈশ্বিক অর্থনীতি যদি সঠিকভাবে পুনরুদ্ধার না করা যায় তাহলে আবার বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হবে। করোনার ফলে কমে গেছে চীনের উৎপাদন। অন্যান্য দেশের পর্যটন ব্যবস্থায়ও এর প্রভাব পড়েছে। যার ফলে পণ্যর দাম আরও বাড়তে পারে। এছাড়া সাইবার আক্রমণ, মধ্য প্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, জলবায়ু সম্পর্কিত বিপর্যয় এবং অসাম্যতার কারণে সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা বৈশ্বিক অর্থনীতিকে আরও ঝুঁকিতে ফেলবে ।

বিজ্ঞাপন

আইএমএফ’র পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভা সংগঠনটির ওয়েবসাইটে এক পোস্টে লিখেন, করোনার প্রাদুর্ভাব অর্থনীতির নাজুক অবস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য হুমকিস্বরূপ। তিনি জি-২০ নীতিনির্ধারকদেরকে বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বৈষম্যের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য অনিশ্চয়তা কমাতে এক সঙ্গে কাজ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

জর্জিভা আরও লিখেন, অনিশ্চয়তা এখন একটি সাধারণ ব্যাপার হয়ে উঠছে। কিছু অনিশ্চয়তা আমরা এড়াতে পারি না। যেমন রোগ বালাই। কিন্তু নিজেদের সৃষ্ট নতুন অনিশ্চয়তা আমাদের তৈরি করা উচিত নয়। আমাদের তা এড়িয়ে চলা উচিত।

আইএমএফ’র পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভা

চলতি সপ্তাহে সৌদি আরবের রিয়াদে বিশ্বের শিল্পোন্নত ২০টি দেশের অর্থমন্ত্রী এবং সেন্ট্রাল ব্যাংকাররা জড়ো হবেন।

আইএমএফ’র ধারণা, করোনার প্রকোপ সত্ত্বেও জানুয়ারি মাসের ৩.৩ শতাংশ বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির যে পূর্বাভাস তারা দিয়েছিল, সে লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়েছে। যা ২০১৯ সালের ২.৯ শতাংশের উপরে।

চীন বলেছে যে মহামারি সত্ত্বেও তারা ২০২০ সালের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারবে। আর জর্জিভা বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব দীর্ঘায়িত হলেও চীনের উৎপাদন আরও কমে যাবে।

আইএমএফ’র ওয়েবসাইটে জর্জিভা আরও জানান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের বাণিজ্য চুক্তি কিছুটা উত্তেজনা দূর হয়েছে। যার ফলে ২০২০ সালের বৈশ্বিক জিডিপি ০.২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। আর জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রতিটি দেশের অর্থনীতির ০.৪ শতাংশ ক্ষতি হবে। নীতিনির্ধারকদের বৈচিত্র্যকরণ এবং স্থিতিস্থাপক পরিকাঠামোয় বিনিয়োগে মনোনিবেশ করা উচিত।

তিনি বলেন, মন্ত্রীরা এই সপ্তাহে রিয়াদে যে বৈঠক করবে তাতে তাদের শিক্ষা, গবেষণা এবং ডিজিটালাইজেশনে বিনিয়োগ সম্পর্কে আলোচনা করা উচিত। যার ফলে জীবনযাত্রার মান বাড়বে এবং ভাল কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।