নতুন নিয়মে ব্রিটিশ ভিসা: ক্ষতির মুখে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বের হয়ে যাওয়ার পরেই নিজেদের ভিসা নিয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে ব্রিটেন। পয়েন্ট ভিত্তিতে নতুন নিয়মে, ব্রিটেনে কোনো অভিবাসী শ্রমিক নিতে হলে তাকে ৭০ পয়েন্ট পেতে হবে। আর এই ৭০ পয়েন্ট নির্ভর করে, ইংরেজি জানা, কর্মদক্ষতা, স্যালারি, স্পন্সর ও কর্মী নেই এমন খাতে কাজ করার ওপর।
যুক্তরাজ্যের নতুন এই নিয়মে দেশটিতে ব্যবসা করা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি বিপদের সম্মুখীন হবে। আর্থিক ক্ষতি ও শ্রমিক সংকটে পড়বে তারা। এমনকি ইইউ থেকে বের হওয়ার পর ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে সস্তায় শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে কঠোর বিধিনিষেধের মুখোমুখি হবে তারা।
ছোট ব্যবসায়ীদের সংগঠন ফেডারেশন অফ স্মল বিজনেসের (এফএসবি) এক সমীক্ষার তথ্য মতে, প্রায় ৪০ শতাংশ ফার্মগুলো জানিয়েছে, তারা গত বছর থেকে কর্মী নিয়োগের জন্য লড়াই করেছে। এর মধ্যে এক তৃতীয়াংশেরও বেশি ফার্ম জানায়, তাদের নিম্নমানের কাজ করতে যুক্তরাজ্যের নাগরিকরা রাজি নয়।
ব্রেক্সিটের পর যুক্তরাজ্য সরকার তাদের সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। আর এতে বরিস জনসনের সরকার কি কি অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে, ফেডারেশন অফ স্মল বিজনেসের সমীক্ষায় বিষয়টি উঠে এসেছে।
দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের অন্যান্য দেশের শ্রমিকদের ওপর নির্ভর করছে যুক্তরাজ্য। দেশটির নির্মাণ, কৃষি এবং সমাজ সেবামূলক কাজে নিয়োজিত আছেন বিদেশিরা। তবে বরিস সরকারের এ নতুন নিয়মের জন্য প্রস্তুত নয় ফার্মগুলো।
এফএসবির চেয়ারম্যান মাইক চেরি বলেন, ফার্মগুলো তাদের কর্মীদের দক্ষতা উন্নত করতে চায়। তারা উৎপাদনও বাড়াতে চায়। এর জন্য তাদের সহায়তা প্রয়োজন। কিন্তু নতুন নিয়মের সময়সীমাতে এটি আদৌ সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়।
চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের পর যুক্তরাজ্যে কোনো শ্রমিক আসতে চাইলে তাদেরকে পয়েন্ট ভিত্তিক মাপকাঠি পূরণ করে আসতে হবে। বর্তমানে ব্রিটেনে থাকা ইইউ নাগরিকরাও নতুন এই নিয়মের আওতায় পড়বে।
এফএসবি জানিয়েছে, পয়েন্ট-ভিত্তিক সিস্টেমটি কাজ করতে পারে তবে এ নিয়ে উদ্বেগও রয়েছে। স্থানীয়রা শ্রমিকরা স্বল্পতা পূরণ করতে পারবে না। কিন্তু বিদেশিদের নিয়োগও ব্যয়বহুল হয়ে যাবে। এছাড়া যেসব ফার্মগুলো আগে ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত কাগজপত্র জমা দেয়নি তাদের পক্ষে আরও বড় প্রশাসনিক বোঝা পড়তে পারে।
সমীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রায় অর্ধেক ফার্মগুলো জানিয়েছে, তারা ইইউ কর্মীদের নিয়োগের জন্য যে ফি দিতে দিতে হবে তা বহন করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আর এই পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ব্যবসায়ীরা খুব কম সময় পাবে।
চেরি আরও বলেন, প্রশিক্ষণ ও নতুন প্রযুক্তির জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য তহবিল বরাদ্দ করা উচিত।
২০১৮ সালের যুক্তরাজ্যের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা প্রি-ক্রাইসিস ট্রেন্ডের সময় থেকে ২০ শতাংশ কম ছিল। আর এর থেকে উত্তরণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্রমবর্ধমান ব্যবহার সাহায্য করবে বলে জানায় অর্থনীতিবিদরা।
আরও পড়ুন: অদক্ষ শ্রমিকদের ভিসা দেবে না যুক্তরাজ্য