আকস্মিক রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনার জন্য মস্কোতে গেলেন স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো। এ নিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইউরোপের তৃতীয় কোনো নেতা মস্কো সফর করেছেন। এর আগে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নীতির তোয়াক্কা না করে পুতিনের সাথে সাক্ষাৎ করা বাকি দু’জন হলেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান এবং অস্ট্রেলিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহমার।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় বিবিসি।
বিবিসি জানায়, ফিকো এই যুদ্ধে কিয়েভের ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থনের একজন সোচ্চার সমালোচক। ইউক্রেন হয়ে রাশিয়ান গ্যাস জায়ান্ট গ্যাজপ্রম থেকে স্লোভাকিয়ায় জ্বালানি সরবরাহের একটি চুক্তি রয়েছে। সেই চুক্তিটির মেয়াদ এই বছরেই শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু নতুন করে চুক্তি নবায়ন করতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ইউক্রেন। কিয়েভ জ্বালানি সরবরাহে তাদের ভূমি ব্যবহার করতে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এতেই বিষয়টি নিয়ে পুতিনের সঙ্গে আলোচনার জন্য মস্কো সফরে গিয়েছেন ফিকো।
পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতে ফিকো বলেছেন, ভ্লাদিমির পুতিনকে পশ্চিমারা "ভুলভাবে আখ্যা" দিয়েছে। ফিকোর এমন সফর ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘কমন সিকিউরিটি এন্ড ডিফেন্স পলিসি’ থেকে তার সরে আসার ইঙ্গিত করে।
পুতিনের সঙ্গে আলোচনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে তিনি জানান, চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর ব্যাপারে পুতিন সম্মতি দিয়েছেন। কিন্তু ইউক্রেনের বিরোধিতার মুখে এ চুক্তি পুনবর্হাল করা অসম্ভব। কারণ, ইউক্রেনের ভূ-খণ্ড ব্যবহার করে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহের তীব্র বিরোধিতা করে আসছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
এদিকে ফিকোর রাশিয়া সফর’কে আড় চোখে দেখছে দেশটির বিরোধী দলগুলো। এছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), ন্যাটো জোট এবং চেক প্রজাতন্ত্রের মধ্যেও তার এই সফর ঘিরে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেছেন, এটি একটি "জটিল পরিস্থিতি"। তবে রাশিয়ান গ্যাস ইউরোপের কিছু দেশের অর্থনীতি স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয়।
পুতিনের সঙ্গে ফিকোর বৈঠকটি এমন সময় হয়েছিলো যখন ইতালি, সুইডেন, গ্রীস এবং ফিনল্যান্ডের নেতারা নিরাপত্তা বিষয়ক এক সামিটে যোগ দিয়েছিলেন।
ওই আলোচনায় ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতেরি ওরপো ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য রাশিয়াকে স্থায়ী ও বরাবরই বিপজ্জনক বলে মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি ইউক্রেনের জন্য আরও সামরিক ব্যয় বাড়ানো এবং সমর্থন বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।