রাজা-বাদশাহ নয়, কাবার চাবি সংরক্ষণ করেন বনি শাইবা



মুফতি মাহফুজ আবেদ, অতিথি লেখক, ইসলাম
শায়খ সালেহ আল শাইবা কাবার দরজা খুলছেন, ছবি: সংগৃহীত

শায়খ সালেহ আল শাইবা কাবার দরজা খুলছেন, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা। মসজিদে হারামে মাগরিবের নামাজ শেষ করে একজন বয়স্ক মানুষ ধীরে ধীরে এগিয়ে যান পবিত্র কাবার দিকে। হাতে সোনালী কারুকাজ করা একটি সবুজ ব্যাগ। মক্কার ইমাম, নিরাপত্তা কর্মীসহ অন্যরাও আছেন। কিন্তু তিনি একাই কাবার গায়ে লাগানো বিশেষ কাঠের সিঁড়ি দিয়ে আস্তে আস্তে ওপরে উঠে পবিত্র কাবার দরজাটা খুললেন।

অথচ আমাদের কাছে পরিচিত দৃশ্য হলো, কোনো উপলক্ষে পবিত্র কাবার দরজা খোলা হলে সেখানে প্রচুর ভীড় থাকে। কিন্তু অনেকেরই এটা অজানা, কাবার দরজা খোলার সময় ওই বয়স্ক লোকটি থাকেন একেবারে একা। এভাবে একা কাবার দরজা খোলার রীতি চলে আসছে চৌদ্দশ’ বছর ধরে। বংশ পরম্পরায় তারা এই দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

কাবার দরজার তালা খোলার অধিকার শুধু তার। তার কাছে রক্ষিত থাকে পবিত্র কাবার দরজার চাবি। সৌদি আরবের বাদশাহ, মক্কার গর্ভনর, মসজিদে হারামের প্রধান খতিব, সরকারি কোনো কর্মকর্তা কিংবা অফিসে নয়- পবিত্র কাবার চাবি বহন ও সংরক্ষণ করেন তিনি।

হারামাইন প্রেসিডেন্সির চেয়ারম্যান ও মক্কার গভর্নর শায়খ সালেহের কাছে চাবি রাখার নতুন ব্যাগ হস্তান্তর করছেন, ছবি: সংগৃহীত

কে তিনি?
আর কেনইবা তার কাছে চাবি থাকে?
কী এমন রহস্য?

এই সৌভাগ্যবান মানুষটির নাম শায়খ সালেহ আল শাইবা। তিনি সাহাবি হজরত উসমান ইবনে তালহা (রা.)-এর ১০৮তম উত্তরসূরি। মক্কা বিজয়ের দিন হজরত মুহাম্মদ (সা.) হজরত উসমান ইবনে তালহার হাতে কাবার চাবি দেন এবং অনাগতকালে তার বংশেই কাবার চাবি সংরক্ষণের দায়িত্ব থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। চৌদ্দশ’ বছর পরেও নবী করিম (সা.)-এর সেই ওয়াদা বহাল আছে। এখনও ওই বংশের কাছেই কাবার চাবি থাকে। শায়খ সালেহ আল শাইবা ওই বংশের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি, তাই তিনিই এখন পালন করছেন কাবার চাবি সংরক্ষণের দায়িত্ব।

মক্কা বিজয়ের পর থেকে বিগত চৌদ্দশ’ বছরে অনেক শাসক, সুলতান, রাজা-বাদশাহ মক্কা-মদিনায় কর্তৃত্ব করেছেন। কিন্তু কাবার দরজা খোলার কর্তৃত্ব হজরত উসমান ইবনে তালহার বংশধররা করে আসছেন।

কীভাবে এ দায়িত্ব পেলেন?
মক্কা বিজয়ের দিন। মক্কার সবকিছুই সেদিন হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অধীন। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উসমানের কাছে কাবার চাবি চাইলেন। বরকতময় সে চাবি সঙ্গে সঙ্গে নবীর (সা.) হাতে তুলে দিলেন উসমান। চাবি নিয়ে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ হাতে বায়তুল্লাহর দরজা খুললেন। ভেতরে প্রবেশ করে দুই রাকাত নামাজ আদায় করলেন।

কাবার চাবি দেখাচ্ছেন শায়খ সালেহ, ছবি: সংগৃহীত

বাইরে তখন অপেক্ষমান জনতা। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হওয়ার পর সবাই সীমাহীন কৌতুহল নিয়ে তাকিয়ে রইলো তার দিকে। কাকে দেওয়া হবে কাবার চাবি, কে পাবে এই মোবারক দায়িত্ব?

হজরত আব্বাস (রা.) এবং হজরত আলী (রা.) উপস্থিত ছিলেন সেখানে। দু’জনই চাবি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করছিলেন। এমনকি তারা এ ব্যাপারে আবেদনও করেছিলেন রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে।

কিন্তু না, সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নবী করিম (সা.) দরাজ গলায় ডাকলেন উসমান ইবনে তালহাকে। তার হাতেই দিলেন কাবার চাবি। বললেন, ‘এখন থেকে এ চাবি তোমার বংশধরের হাতেই থাকবে, একেবারে কেয়ামত পর্যন্ত। তোমাদের হাত থেকে এ চাবি কেউ নিতে চাইলে সে হবে জালিম।’

উসমানের মনে পড়ে গেলো হিজরতের আগের ঘটনা। হিজরতের আগে প্রত্যেক সোম ও বৃহস্পতিবার কাবার দরজা খোলা হতো। এ দু’দিন লোকেরা আল্লাহর ঘরে প্রবেশের সৌভাগ্য লাভ করতো। একদিন নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকজন সাহাবাকে নিয়ে বায়তুল্লায় প্রবেশ করতে চাইলেন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ালেন উসমান ইবনে তালহা, তিনি তখনও মুসলমান হননি।

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ধৈর্যের সঙ্গে উসমানের বাধা মেনে নিলেন। সেই সঙ্গে বললেন, ‘উসমান! একদিন তুমি এই চাবি আমার হাতে দেখতে পাবে। আমি তখন যাকে ইচ্ছে চাবিটা দেব।’

বিভিন্ন সময় কাবায় ব্যবহৃত তালার চাবি, ছবি: সংগৃহীত

এর পর উসমান ইবনে তালহা ইসলাম কবুল করেন। ৪২ হিজরিতে তার মৃত্যু হয়। ইসলাম পূর্ব জাহিলী যুগ ও ইসলাম পরবর্তী যুগে কাবার চাবির রক্ষক বংশধররা। সেই ধারা এখনও চলমান। তাদের কাছ থেকে চাবি নিয়েই বিভিন্ন সময় সৌদি আরবের বাদশাহ এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ পবিত্র কাবা ঘরে প্রবেশ করে থাকেন। তারাই কাবার দরজা খুলে দেন।

সাহাবি উসমান ইবনে তালহার ‘বনি শাইবা’ গোত্রের কাছে কাবার চাবি থাকা নিয়ে আজ পর্যন্ত কোনো বিতর্ক হয়নি। ইনশাআল্লাহ কিয়ামত পর্যন্ত এই গোত্রের বংশধরদের কাছেই কাবার চাবি রক্ষিত থাকবে।

৫৮ বার কাবার তালা-চাবি বদলানো হয়েছে
এ পর্যন্ত অসংখ্যবার কাবার তালা-চাবি পরিবর্তন করা হয়েছে। কাবা ঘরের চাবি একটি বিশেষ ব্যাগে রাখা হয়। এই ব্যাগটি পবিত্র কাবা ঘরের গিলাফ নির্মাণ কারখানায় বানানো হয়। কাবা ঘরের চাবি কখনও হারায়নি। তবে বহু বছর পূর্বে এক ব্যক্তি এই চাবি চুরি করেছিল। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার নিকট হতে কাবা ঘরের চাবি ফেরত নেওয়া হয়।

আব্বাসী, আইয়ুবী, মামলুক ও অটোম্যান যুগে কয়েকবার কাবা ঘর মেরামত করা হয়েছে। তখন প্রয়োজন মতে নতুন তালা-চাবিও বানানো হয়েছে।

২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর সর্বশেষ কাবা ঘরের চাবি পরিবর্তন করা হয়। এখনও ওই তালা-চাবি ব্যবহার করা হচ্ছে। সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সির বরাতে একটি সূত্র জানিয়েছে, ২০০৯ সালে সৌদি বাদশাহ আবদুল আজিজ সিটি সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজিকে কাবা ঘরের পুরাতন তালাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।

পবিত্র কাবার দরজা তালা, ছবি: সংগৃহীত

এর প্রেক্ষিতে একটি বিশেষজ্ঞ দল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ২০১৩ সালের শেষের দিকে ৩০ বছরের পুরনো মরচে ধরা তালা পরিবর্তন করে। তারা ১৮ ক্যারট সোনা দিয়ে তৈরি একটি নতুন তালা বানিয়ে দেন। বর্তমানে ব্যবহৃত তালার চাবির দৈর্ঘ্য ৩৫ সেন্টিমিটার। এই তালার আগের তালাটি অটোম্যান বাদশাহ আবদুল হামিদ খানের নির্দেশে ১৩০৯ হিজরিতে বানানো হয়েছিল।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, বর্তমানে ব্যবহৃত তালা-চাবি বাদে বাকি ৫৭টি তালা ও চাবি অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। এর মধ্যে ৫৪টি চাবি রয়েছে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে ঐতিহাসিক তোপকাপি জাদুঘরে, ২টি চাবি ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের বিশ্বখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামে এবং আরেকটি মিসরের কায়রোর ইসলামিক আর্ট মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে।

ইসলামপূর্ব যুগেও কাবা ঘরের যেকোনো ধরনের সেবাকে সৌভাগ্যের কারণ মনে করা হতো। এ কাজে যারা নির্বাচিত হতেন সমাজে তারা পরিচিত হতেন সম্মানিত ও মর্যাদাবান হিসেবে। তখন কাবা ঘরের বিভিন্ন সেবা ভাগ করে দেওয়া হতো বিভিন্ন গোত্রের বিভিন্ন মানুষের মাঝে। যেমন, হাজিদের জমজমের পানি পান করাতেন হজরত আব্বাস (রা.)। কাবায় আলো জ্বালানোসহ আরও কিছু দায়িত্ব ছিলো নবীজীর চাচা আবু তালেবের ওপর। এরই ধারাবাহিকতায় কাবা ঘরের চাবির দায়িত্বে ছিলেন উসমান ইবনে তালহা।

করোনাভাইরাসের কারণে এখনও মসজিদে হারামের জামাতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়নি। সীমিত মানুষের অংশগ্রহণে মসজিদে হারামে জামাত ও জুমা চালু রয়েছে। তবে রীতি অনুযায়ী সবকাজ সম্পন্ন করা হয় নিয়ম মেনে। এরই ধারাবাহিকতায় ৩ সেপ্টেম্বর, রাতে কাবা ধোয়ার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সর্বশেষ ওই দিন খোলা হয় কাবার দরজা। আর দরজা খুলে দেন শায়খ সালেহ আল শাইবা।

   

উমরা ভিসায় হজ নয়, না মানলে কঠোর শাস্তি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
উমরা ভিসায় হজ নয়, না মানলে কঠোর শাস্তি, ছবি: সংগৃহীত

উমরা ভিসায় হজ নয়, না মানলে কঠোর শাস্তি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

উমরার পারমিট বা ভিসা দিয়ে হজপালন করা যাবে না বলে জানিয়েছে সৌদি আরবের হজ ও উমরা বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে আগামী ২৪ মে (১৬ জিলকদ) থেকে ২৬ জুন (২০ জিলহজ) পর্যন্ত হজের স্থানগুলোতে দেশটি কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে। এ সময়ে শুধুমাত্র হজের অনুমোদন নিয়েই কেবল হজ করা যাবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত হজযাত্রীদের শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। গত ১৯ মে সৌদি গেজেটের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজ পারমিট ছাড়া মক্কায় প্রবেশে স্থানীয় নাগরিক, দর্শনার্থী ও প্রবাসীদের বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। পবিত্র মক্কা শহর, সেন্ট্রাল হারাম এলাকা, মিনার, আরাফাত, মুজদালিফা, রুসাইফার হারামাইন ট্রেন স্টেশন, নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র এবং হজযাত্রীদের গ্রুপে হজের অনুমতি ছাড়া ধরা পড়লে জরিমানা করা হবে। আর নির্দেশনা লঙ্ঘন করে মক্কায় প্রবেশ করলে ১০ হাজার রিয়াল জরিমানা করা হবে।

আগামী ২ জুন (২৫ জিলকদ) থেকে ২০ জুন (১৪ জিলহজ) পর্যন্ত এ নির্দেশনা থাকবে। এ সময়ে নিয়ম লঙ্ঘনকারী বাসিন্দাদের তাদের দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে এবং সৌদি আরবে পুনরায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে। তা ছাড়া এ নির্দেশনা বারবার লঙ্ঘন করলে পুনরায় ১০ হাজার সৌদি রিয়াল (২ লাখ ৯২ হাজার ৭৯৪ টাকা) জরিমানা করা হবে।

সৌদি বার্তা সংস্থা আরও জানায়, আর বিনা অনুমতিতে হজ করে হজবিষয়ক নির্দেশনা লঙ্ঘনকারীদের পরিবহন করে ধরা পড়লে ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডসহ ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল (১৪ লাখ ৬৩ হাজার ৯৭২ টাকা) জরিমানা করা হবে এবং ব্যবহৃত গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হবে।

তা ছাড়া পরিবহন করা মানুষের সংখ্যার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জরিমানার পরিমাণ আরো বাড়বে। আর নির্দেশনা লঙ্ঘনকারী প্রবাসী হলে সাজাভোগের পর তাকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর ২০ লাখের বেশি মানুষ হজপালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

;

হাজিদের সচেতনতায় বিশেষ প্রচারণা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হাজিদের সচেতনতায় বিশেষ প্রচারণা, ছবি: সংগৃহীত

হাজিদের সচেতনতায় বিশেষ প্রচারণা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় হজসংক্রান্ত নিয়ম-কানুন মেনে চলা এবং বৈধ অনুমতি বা ভিসাব্যতীত হজপালন করা থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিশ্বের বহুল ব্যবহৃত ও প্রচলিত ১৫টি ভাষায় একটি আন্তর্জাতিক সচেতনতা ও শিক্ষামূলক প্রচারণা শুরু করেছে।

এ বছর হজপালনে আগ্রহী সবার কাছে সচেতনতামূলক বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য ২০টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, বিভিন্ন ইসলামি কেন্দ্র ও ব্যক্তিদের সঙ্গে সমন্বয় করে ডিজিটাল ও প্রচলিত মিডিয়ার মাধ্যমে হজসংক্রান্ত নির্দেশনাবলী ও বিধিবিধানের প্রচার-প্রসারই এই প্রচারাভিযানের লক্ষ্য।

হজযাত্রীরা পবিত্র ভূমিতে যাত্রাপথে বিমানে বসেই নিজ নিজ ভাষায় হজসংক্রান্ত বিষয়ে ধারণা পাওয়ার জন্য মন্ত্রণালয় সৌদি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটগুলোতে হজ ও উমরা চ্যানেল চালু করেছে।

সৌদি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে হজ ও উমরার চ্যানেলে রয়েছে, ২৩টি শিক্ষামূলক ক্লিপ, ১৪টি ভাষায় ১৩টি সচেতনতামূলক নির্দেশিকা, ৯ ভাষায় ১টি ডকুমেন্টারি, ৭ ভাষায় ৬টি ফিল্ম, ৭ ভাষায় ইহরাম পরার ১টি ভিডিও। ভাষাগুলো হলো- সিংহলি, মালয়েশিয়ান, আরবি, ইংরেজি, বাংলা, ফ্রেঞ্চ, হাউসাবিয়া, ফারসি, ইন্দোনেশিয়ান, তুর্কি, স্প্যানিশ, উর্দু, আমহারিক ও রুশ।

এছাড়া দেশটির হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পেজে ধারাবাহিক পোস্টে বলেছে, হজে যাওয়ার পথে, বিধিবদ্ধ সচেতনতা নির্দেশিকা পড়ুন, আপনার ঈমানি সফরে আপনার অধিকার ও বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে জানুন। হজ-উমরা চ্যানেলের বিষয়বস্তু অনুসরণ করে যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে আপনার যাত্রা শুরু করুন।

হজ বিষয়ক সচেতনতার বিষয়গুলো বিস্তারিত জানার জন্য মন্ত্রণালয় নিম্নের লিঙ্কে https://www.haj.gov.sa/Guides আল্লাহর মেহমানদের প্রবেশ করার সুযোগ প্রদান করেছে। যাতে হজযাত্রী অতি সহজে হজপালন, বিভিন্ন পদক্ষেপ, সময়সূচি ও পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারেন।

হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় তার প্ল্যাটফর্মের ওয়েব প্যানেলের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি ব্যাখ্যামূলক নির্দেশিকা প্রদান করেছে, যার মধ্যে রয়েছে- মসজিদে হারাম গাইড, মসজিদে নববি গাইড এবং মসজিদে নববি পরিষেবা গাইড।

;

সৌদি পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩ লাখ হজযাত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সৌদি পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩ লাখ হজযাত্রী, ছবি: সংগৃহীত

সৌদি পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩ লাখ হজযাত্রী, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজফ্লাইট শুরুর পর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৩ লাখ হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। হজযাত্রীরা মক্কা এবং মদিনায় অবস্থান করছেন। এসব হজযাত্রীর মধ্যে ৩২ হাজারের বেশি বাংলাদেশি হজযাত্রী রয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ মে) সৌদি প্রেস এজেন্সির সূত্রে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবের ডিরেক্টর জেনারেল অফ পাসপোর্ট অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, এ পর্যন্ত বিমান, স্থল এবং সমুদ্রপথে সৌদি আরব পৌঁছেছেন ২ লাখ ৯৭ হাজার ৬৫৭ জন হজযাত্রী।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির পাসপোর্ট অধিদপ্তর জানিয়েছে, হজযাত্রীদের প্রবেশের পর প্রাপ্ত তথ্য থেকে এ সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ সংখ্যা ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাড়ছে।

খবরে আরও বলা হয়, হজযাত্রীদের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিগত সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। প্রবেশ পথগুলোতে সম্পূর্ণ প্রশিক্ষিত ও বিভিন্ন ভাষায় দক্ষ কর্মীরা তাদের স্বাগত জানাচ্ছেন।

জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছর হজের আনুষ্ঠানিকতা ১৪ জুন শুরু হয়ে ১৯ জুন শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

হজযাত্রীদের বহনকারী ফ্লাইট ৯ মে থেকে সৌদি আরব আসা শুরু করে। তখন থেকে ২১ মে মধ্যরাত পর্যন্ত ৩২ হাজার ৭১৯ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন বলে হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টালের সবশেষ বুলেটিনে জানানো হয়। এছাড়া এখন পর্যন্ত হজে গিয়ে দুইজন বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ৮২টি ফ্লাইটে এসব হজযাত্রী সৌদি পৌঁছেছেন।

এর আগে, গত ৯ মে বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রথম ডেডিকেটেড ফ্লাইট ৪১৫ জন হজযাত্রী নিয়ে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এর মাধ্যমে চলতি বছর হজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। শেষ হবে ১০ জুন।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৫ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ২০ জুন এবং শেষ হবে ২২ জুলাই।

;

হজযাত্রীদের জন্য বিশেষ ছাতা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজযাত্রীদের জন্য বিশেষ ছাতা, ছবি: সংগৃহীত

হজযাত্রীদের জন্য বিশেষ ছাতা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজযাত্রীদের জন্য বিশেষ ছাতার ব্যবস্থা করেছে সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (২১ মে) ইসলামিক ইনফরমেশনের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশেষভাবে ডিজাইন করা ছাতাগুলো হজযাত্রীদের সূর্যের আলো থেকে বিশেষ সুরক্ষা প্রদান করবে। যেহেতু ২০২৪ সালে হজের সময় প্রচণ্ড গরম থাকবে, তাই বিশেষ এই ছাতার প্রবর্তন করা হয়েছে। এতে হজযাত্রীদের জন্য হজের আমলগুলো করা সহজ হয়ে যাবে।

বিশেষ এই ছাতাগুলোর বৈশিষ্ট্য হলো, এটি পরে দীর্ঘসময় সূর্যের নিচে থাকলেও আলো থেকে তা সুরক্ষা প্রদান করবে। এ ছাড়া প্রতিটি ছাতার মধ্যে একটি পকেট রয়েছে। এতে হজযাত্রীরা নিজেদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে রাখতে পারবেন। বিশেষ করে পানির বোতল ও জায়নামাজ বহন করতে পারবেন- যা হজযাত্রীদের ইবাদত-বন্দেগির জন্য সহায়ক হবে।

ছাতাগুলোর আরেকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এগুলোকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যেন তা মাথায় থাকা অবস্থায়ও মুসল্লি সেজদা করতে পারে। সহজের চলাচল করতে পারবে। বাতাসে তা উড়ে যাবে না।

হজযাত্রীরা ছাতাগুলো মক্কা, মিনা ও আরাফাতের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।

উল্লেখ্য যে, আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া হজের সময় সৌদি আরবের তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকতে পারে। এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন সৌদি ন্যাশনাল সেন্টার অব মেটিওরোলজির প্রধান আয়মান গোলাম।

আসন্ন হজে উচ্চ তাপমাত্রার জন্য সতর্ক করে প্রস্তুতি গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আয়মান গোলাম বলেছেন যে, এ বছর হজের মৌসুম চলবে জুনের মাঝামাঝিতে। হজের মৌসুম সৌদি আরবে বছরের সবচেয়ে গরম সময়ের সঙ্গে মিলে গেছে।

বছরের এই সময়ে সাধারণত সৌদি আরবে তাপমাত্রা এবং বাতাসের আর্দ্রতা দুটোই অনেক বেশি থাকে। ফলে হজে অংশগ্রহণকারীদের সতর্ক থাকতে অবহিত করা হয়েছে।

;