পোল্যান্ডের মানুষ ক্রমশ ইসলামের দিকে ঝুঁকছে



ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, অতিথি লেখক, ইসলাম
পোল্যান্ডের একটি মসজিদ, ছবি: সংগৃহীত

পোল্যান্ডের একটি মসজিদ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

৩,১২,৬৭৯ বর্গকিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট পোল্যান্ড ইউরোপের নবম বৃহত্তম দেশ। দেশটিতে মুসলমানদের সংখ্যা একেবারে কম। চার কোটি জনঅধ্যুষিত পোল্যান্ডে মুসলমানদের সংখ্যা মাত্র ৫০ হাজার। তন্মধ্যে তাতার ও বিদেশি অভিবাসীর সংখ্যা বেশি।

আমার কথা হলো দেশটিতে মুসলমানের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাতার জনগোষ্ঠী আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারী। মিসর, সিরিয়া, ফিলিস্তিন, আলজেরিয়া, ইরাক, তিউনিসিয়া, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, সোমালিয়া, চেচনিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে মুসলমানরা রাজনৈতিক বিপর্যয়ের ফলে দেশত্যাগ, উচ্চতর শিক্ষা, উন্নত জীবনের প্রত্যাশ, ব্যবসায়-বাণিজ্য প্রভৃতি কারণে পোল্যান্ডের বিভিন্ন শহরে আসতে থাকেন। এ দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টান এবং ইসলাম সম্পর্কে তাদের ধারণা অস্পষ্ট।

২০১৮ সালে ডানপন্থী কট্টর ক্যাথলিসিজম ও সেক্যুলার লিডার ক্যাম্প পোল্যান্ডে কথিত ‘ইসলামোফোবিয়া’ ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের প্রচেষ্টা চালায়। ২০১০ সালে রাজধানী ওয়ারশর অচোটা জেলায় একটি মসজিদ নির্মাণ করতে গেলে উগ্র জাতীয়তাবাদীরা বিরোধিতা ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এতদসত্ত্বেও মুসলমানরা মসজিদ নির্মাণ সম্পন্ন করেন। প্রথম প্রথম মুসলিম নারীরা হিজাব পরে চলাফেরা করতে কিছুটা বিড়ম্বনার শিকার হলেও ধীরে ধীরে পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে।

 পোল্যান্ডের একটি হালাল দোকান, ছবি: সংগৃহীত

বিগত সাত শ’ বছর ধরে মুসলমানরা পোল্যান্ডের জনগণ ও রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে আসছেন। ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের সঙ্গে ইসলামের অনুসারীদের বাহ্যত কোনো বিবাদ নেই। চতুর্দশ শতাব্দীতে গ্র্যান্ড ডিউক উইহোল্ডের শাসনামলে তাতাররা পোল্যান্ডে থাকার অনুমতি পান এবং সামরিক বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৩৯ সালে পোল্যান্ডের অখণ্ডতা রক্ষার্থে মুসলমানরা জার্মানি ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেন। জোসেফ বেন (ইউসুফ পাশা) নামক এক জেনারেল পোলিশ সেনাবাহিনীর অধীনে আগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। ওয়ারশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামতত্ত্ববিদ আগাটা নালবোরচিক জানান, সাতশ’ বছর আগে ইসলাম ধর্মাবলম্বী তাতার জাতিগোষ্ঠীর মানুষ এশিয়া, বিশেষ করে তুরস্ক থেকে পোল্যান্ডে এসেছিলেন। তুরস্কের বিরুদ্ধে জয়ী হতে পোল্যান্ডের রাজা ইওহানেস সোবিস্কিকে সাহায্য করেছিলেন যুদ্ধে পারদর্শী মুসলিম তাতাররা। রাজা তাদের প্রতি ছিলেন সহানুভূতিপ্রবণ এবং তাদের দেখভালের দিকে লক্ষ রেখেছিলেন। সেই থেকে তারা সেখানে বসবাস করতে শুরু করেন।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাতাররা পোল্যান্ডের সমাজে মিশে যান। তারা নিজেদের ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন। তারা পোলিশ ভাষায় কথা বলেন। কিন্তু নিজেদের ধর্ম তারা হারাননি। তখন থেকে মুসলিম তাতাররা প্রতিবেশী ক্যাথলিকদের সঙ্গে শান্তিতে বসবাস করছেন। ১৯৩৬ সালে ইসলাম ধর্মকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং স্কুলে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে পড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়। শিক্ষার্থীরা আরবি ভাষা শেখারও সুযোগ পায় (রায়হানা বেগম, ডয়চে ভেলে, ৩০ ডিসেম্বর-২০০৯)।

আন্তঃধর্মীয় সংলাপ
১২ বছর আগে ক্যাথলিক ও মুসলমানরা আন্তঃধর্মীয় সংলাপের লক্ষ্যে যৌথ এক পরিষদ গড়ে তোলেন। পোল্যান্ডের গির্জার বিশপ ও সৌদি আরবের বাদশাহ এই পরিষদকে সহযোগিতা করছেন। ইউরোপে এরকম আর দ্বিতীয়টি নেই। পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আগাটা নালবোরচিক জানান, ‘আমাদের লক্ষ্য খ্রিস্টানদের ইসলাম আর মুসলমানদের খ্রিস্টধর্মের কাছাকাছি নিয়ে আসা। প্রথমে আমাদের পরস্পরের সঙ্গে পরিচিত হতে হবে। ইসলাম সম্পর্কে অনেক কিছু বলা হচ্ছে। সব মুসলিমই সন্ত্রাসী ও কট্টরপন্থী নয়, সেটা সুস্পষ্ট করতে কাজ করে যাচ্ছি।’

দুই ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে সংলাপ জোরদার করতে পরিষদের পক্ষ থেকে আয়োজিত হচ্ছে সম্মেলন ও আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রকাশিত হয় বইপুস্তক এমনকি ক্যাথলিক ও মুসলিমদের এক সঙ্গে প্রার্থনারও আয়োজন করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বে রয়েছেন ক্যাথলিক খ্রিস্টান ও ইসলাম উভয় ধর্মের অনুসারীরা, যাতে দুই ধর্মেরই সমমর্যাদা প্রকাশ পায়। মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব করছেন আর্তুর কনোপাকি। তিনি বলেন, ‘আলোচনা অনুষ্ঠানে আমরা আমাদের ধর্মের নানা দিক তুলে ধরি। বাস্তবে খ্রিস্টধর্ম ও ইসলামের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। এ মিলগুলোই আমাদের খুঁজে বের করতে হবে, পার্থক্য নয় (রায়হানা বেগম, ডয়চে ভেলে, ৩০ ডিসেম্বর- ২০০৯)।

নামাজ আদায় করছেন মুসলিম কিশোর-কিশোরীরা, ছবি: সংগৃহীত

বুহুনিকি এলাকায় একটি মসজিদ নির্মাণের জন্য রাজা তৃতীয় সোবিস্কি মুসলমানদের একখণ্ড জমি দান করেন। শিক্ষা গ্রহণ, ভূমি ক্রয়, মসজিদ নির্মাণ, বাসস্থান তৈরি, ব্যবসায় পরিচালনা ও স্থানীয় মেয়েদের বিয়ে করার ক্ষেত্রে মুসলমানদের জন্য সুযোগ অবারিত হয়। বুহুনিকি ও কুরুসজিনিয়ানিতে মসজিদ দু’টি তুলনামূলকভাবে অতি প্রাচীন। বিয়ালিস্টকে রয়েছে ইসলামি কেন্দ্র, যেখানে মুসলমানদের সংখ্যা প্রায় এক হাজার ৮০০।

পোল্যান্ডে জন্ম নেওয়া বহু মুসলমান শিক্ষা, প্রশাসনসহ বিভিন্ন বিভাগে চাকরি করছেন। ড. আলী মিসকভজিস বিয়ালিস্টক বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ড. সলিম চাসভিজেউক্স ওয়ারামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। মুসলিম তাতাররা ধর্মীয় স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে পোল্যান্ডের জীবনধারার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন। তারা মাতৃভাষা ত্যাগ করে স্লোভাকিয়ান বাকরীতি গ্রহণ করেছেন।

এ দেশে দাওয়াতি তৎপরতা চালাতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। আধ্যাত্মিক শান্তির অন্বেষায় পোল যুবক, শিল্পী ও ছাত্ররা ইসলামের দিকে ক্রমশ ঝুঁকে পড়ছেন। দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন সমস্যার ইসলামি সমাধান প্রাপ্তির লক্ষ্যে তাতারদের রয়েছেন থোমাস মিসকিউজ নামে একজন মুফতি।

রাজধানী ওয়ারশতে মুসলমানদের রয়েছে নিজস্ব মসজিদ, কোরআন শিক্ষাকেন্দ্র, হালাল খাদ্যের স্টল ও কবরস্থান। ওয়ারশ কেন্দ্রীয় মসজিদে জুমার দিন তিন শতাধিক মুসলমান নামাজ আদায়ের জন্য জড়ো হন। রাজধানীর পাঁচ হাজার মুসলমানের মধ্যে বেশিরভাগ উচ্চ শিক্ষিত। পোলিশ ভাষায় পবিত্র কোরআনের একটি অনুবাদ এবং ইমাম নববির ৪০ হাদিস নামক একটি হাদিস গ্রন্থের অনুবাদ ও ব্যাখ্যা বেরিয়েছে। পোজনান এলাকায় কোনো মসজিদ না থাকলেও মুসলমানরা স্থানীয় ছাত্রাবাসে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে থাকেন।

পোল্যান্ডে বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের মধ্যে ১৯১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত পোলিশ মুসলিম ইউনিয়ন ও ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত মুসলিম স্টুডেন্টস সোসাইটির কর্মতৎপরতা বেশ চোখে পড়ার মতো। মুসলিম ইউনিয়নের তত্ত্বাবধানে কোরআন, হাদিস, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও নৈতিক মূল্যবোধের বিকাশের লক্ষ্যে পোলিশ ও ইংরেজি ভাষায় বিভিন্ন ম্যাগাজিন বের হয় নিয়মিত। তন্মধ্যে ‘মুসলিম ওয়ার্ল্ড রিভিউ’, মাসিক ইসলামিক ম্যাগাজিন ‘আলিফ’ উল্লেখযোগ্য। মুসলিম স্টুডেন্টস সোসাইটি মুসলিম শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে বেশ কিছু শিক্ষাকেন্দ্র চালু করেছে। সোসাইটির ব্যবস্থাপনায় প্রতি বছর বিভিন্ন দিবসে মাহফিল, সেমিনার, সংলাপ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সংগঠনটি ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে ২২টি গ্রন্থ ‘আল হাদারা’ নামক একটি আরবি ত্রৈমাসিক এবং ‘হিকসা’ নামে ম্যাগাজিন প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে। ‘হিকমা’ এ পর্যন্ত ৪২টি সংখ্যা বেরিয়েছে। মুসলিম ছাত্রদের মাদরাসা ও স্কুলে পড়ালেখায় উদ্বুদ্ধকরণ ও ভর্তির ব্যাপারে পরামর্শ দেওয়া সোসাইটির অন্যতম প্রধান কর্মসূচি। স্কলারদের মাধ্যমে পোলিশ ভাষায় পবিত্র কোরআনের তরজমাসহ নির্ভরযোগ্য একটি তাফসির প্রকাশ, রাজধানী ওয়ারশতে উচ্চতর ইসলামি শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন এবং ইসলামি পাঠাগার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের নেতারা সমন্বিত পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।

পোল্যান্ডের মুফতি থোমাস মিসকিউজ, ছবি: সংগৃহীত

পোল্যান্ডে ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিপালনে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির লক্ষ্যে মুসলমান নেতারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে একটি আইনের খসড়া তৈরিতে সক্ষম হয়েছেন। এ আইন কার্যকর হলে ১৯৩৬ সালের আইন বাতিল হয়ে মুসলমানদের ধর্মীয় ও সামাজিক অধিকার নিশ্চিত হবে। খসড়া আইনের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে- ক. মসজিদে ইমাম ও খতিবদের তত্ত্বাবধানে মুসলমানদের যেসব বিয়ে সম্পন্ন হবে, তা সিভিল ম্যারেজ হিসেবে আইনি মর্যাদা পাবে, খ. উলামা-মাশায়েখ কর্তৃক যেকোনো খাদ্যদ্রব্যের জন্য প্রদত্ত ‘হালাল সার্টিফিকেট’ রাষ্ট্রীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য হবে, গ. ধারালো ছুরি দিয়ে গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ, দুম্বা, হাঁস, মুরগি ও কবুতরের গলা দিয়ে জবাই করলে এবং জবাই করার সমং ‘আল্লাহু আকবার’ বললে কেবল মুসলমানরা সে গোশত খেতে পারবেন, ঘ. ঈদসহ মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসবগুলো ছুটির দিন হিসেবে গণ্য হবে, ঙ. ধর্মীয় ও সামাজিক বিধি-বিধান পালনে প্রয়োজনে মুসলমানরা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ছুটি নিতে পারবেন। এ আইন পোল্যান্ডে ইসলামের বিকাশ এবং সে দেশে অবস্থানরত মুসলমানদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্বকীয়তা সংরক্ষণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

পোল্যান্ডের এ প্রশংসনীয় পরিস্থিতি পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত মুসলমানদের মনে নতুন আশার সঞ্চার করে।

   

হজযাত্রীদের নতুন রুট, ৩৫ মিনিটে জেদ্দা-মক্কা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মক্কা-জেদ্দা মহাসড়ক

মক্কা-জেদ্দা মহাসড়ক

  • Font increase
  • Font Decrease

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে বহুবিধ উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর অন্যতম হলো- জেদ্দা-মক্কা সড়ককে মহাসড়কে রূপান্তর করা। ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের কাজ ৭০ শতাংশ সম্পূর্ণ হয়েছে। সড়কটি আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসড়কে রূপান্তরের কাজ শুরু হয়েছে। এটি জেদ্দা বিমানবন্দরকে মসজিদে হারামের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।

আট লেনের এই যুগান্তকারী অবকাঠামো বাস্তবায়িত হলে, হজযাত্রীদের ভ্রমণে সময় বাঁচবে এবং ভ্রমণ আরো নিরাপদ হবে।

শুধু এই সড়ক নির্মাণ নয়, সৌদি আরব হজযাত্রী, ওমরাহ পালনকারী এবং ভ্রমণকারীদের জন্য জন্য আরও নানাবিধ সুবিধা দিতে প্রস্তুত।

জেদ্দা-মক্কা সরাসরি সড়কটি জেদ্দা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগত ওমরাহ যাত্রীদের আরাম, নিরাপত্তা ও সময় কম ব্যয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে ডিজাইন করা হয়েছে। এটি ভ্রমণের সময়কে কমিয়ে মাত্র ৩৫ মিনিটে নিয়ে আসবে।

সৌদি ভিশন ২০৩০-এর লক্ষ্য ওমরাহ যাত্রীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা। এটি অর্জনের জন্য সৌদি আরব মক্কার মসজিদে হারামের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ করেছে। ওমরাহ পরিষেবা প্রদানকারীদের লাইসেন্স সম্প্রসারিত করেছে, ওমরাহ ভিসার বরাদ্দ ও সময় বাড়িয়েছে এবং পর্যটক ও দর্শনার্থীদের ওমরাহতে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়ার জন্য প্রবিধান প্রণয়ন করেছে। এছাড়া সৌদি নাগরিকরা এখন অন্যদেশে তাদের পরিচিতদের ওমরাহ পালনের আমন্ত্রণ জানাতে পারছে।

জেদ্দা-মক্কা সরাসরি সড়ক শুধুমাত্র হজযাত্রীদের ভ্রমণের সুবিধার জন্যই নয়। বরং এটি সামগ্রিক সড়ক ও পরিবহন পরিষেবার উন্নতির জন্য, যার ফলে গড় ভ্রমণের সময় হ্রাস পাবে। এই আধুনিক হাইওয়েতে প্রতি ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতিতে যানবাহন চলতে পারবে।

;

নবী কন্যা উম্মে কুলসুমের বাড়ি নিয়ে মিথ্যা প্রচার



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মসজিদে নববি

মসজিদে নববি

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগের প্ল্যাটফর্মে প্রচারিত এক ভিডিওতে দেখানো মদিনার এক বাড়িকে নবী কারিম (সা.)-এর তৃতীয় কন্যা উম্মে কুলসুমের আবাসস্থল হিসেবে মিথ্যা প্রচার চালানো হচ্ছে বলে সতর্ক করেছে সৌদি সরকার।

গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভিডিওতে মদিনার পাথরের পুরোনো ওই বাড়ির বিষয়ে দাবি খারিজ করে দিয়েছে সৌদি আরব সরকারের গবেষণাকেন্দ্র আল মদিনা আল মুনাওয়ার রিসার্চ অ্যান্ড স্টাডিজ সেন্টার। তারা জানিয়েছে, সেই ভিডিওতে উল্লিখিত তথ্যটি ভুল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এক ব্যক্তিকে মদিনার কাবা গ্রামে পুরোনো পাথরের বাড়ি ভ্রমণ করতে দেখা যায় ভিডিওটিতে। চিত্রগ্রহণকারী দাবি করেন, জায়গাটি একসময় নবী কারিম (সা.)-এর তৃতীয় কন্যা উম্মে কুলসুমের আবাস ছিল। তবে আল মুনাওয়ার রিসার্চ অ্যান্ড স্টাডিজ সেন্টার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘চিত্রায়িত ঘরগুলোর সঙ্গে নবী কারিম (সা.)-এর জীবনী বা নবীর কন্যাদের কোনো সম্পর্ক নেই।’

গবেষণাকেন্দ্রটি ইসলামের দ্বিতীয় পবিত্রতম স্থান মদিনা, নবীর জীবন এবং মদিনার ইতিহাস সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে নির্ভুল পর্যবেক্ষণ এবং প্রকৃত সত্যকে সূত্র হিসেবে ব্যবহার করার ওপর জোর দিয়েছে।

তারা বিবৃতিতে বলেছে, ‘মদিনার ইতিহাস এবং এর ঐতিহাসিক স্থানগুলোর ওপর বেশ কয়েকটি বই ও কাজ রয়েছে এই গবেষণাকেন্দ্রের। অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এসব তথ্য পরীক্ষা ও ব্যবহার করা যেতে পারে।’

নবী কারিম (সা.)-এর হিজরিত ও মসজিদে নববির জন্য সুপরিচিত মদিনা। মদিনায় রয়েছে নবী কারিম (সা.)-এর রওজা শরিফ। হজ ও ওমরাহ পালনকারীরা নবী কারিম (সা.)-এর রওজা জিয়ারত, রওজায় সালাম পেশ ও মসজিদে নববিতে নামাজ আদায়ের জন্য ছুটে যান।

সৌদি আরবের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, নবী (সা.)-এর রওজায় সালাম পেশ ও রিয়াজুল জান্নাতে নামাজ আদায়ের জন্য বিশেষ অ্যাপ নুসুকের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হয়।

;

যুক্তরাষ্ট্রে আইটিভি ইউএসএ-এর সিরাত কনফারেন্স অনুষ্ঠিত



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
যুক্তরাষ্ট্রে আইটিভি ইউএসএ-এর সিরাত কনফারেন্সের অতিথি ও আয়োজকবৃন্দ

যুক্তরাষ্ট্রে আইটিভি ইউএসএ-এর সিরাত কনফারেন্সের অতিথি ও আয়োজকবৃন্দ

  • Font increase
  • Font Decrease

গ্লোবাল দাওয়াহ টেলিভিশন আইটিভি ইউএসএ-এর উদ্যোগে আড়ম্বর আয়োজনের মধ্য দিয়ে সিরাত কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) কুইন্সের ডিটমার্স বুলেভার্ডে অবস্থিত লাগোর্ডিয়া প্লাজা হোটেলে বিশাল এই আয়োজন সম্পন্ন হয়।

কনফারেন্সে ছিল বিশ্বখ্যাত কারিদের কণ্ঠে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, রাসুল (সা.)-এর জীবন নিয়ে আলোচনা, দোয়া-মাহফিল, ক্যালিওগ্রাফি প্রদর্শনী, সিরাত বইমেলা এবং অ্যাওয়ার্ড প্রদান।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বখ্যাত কারি শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আজহারী, শায়খ হাসান সালেহ, ইমাম শামসী আলী, শায়খ ওয়ালিদ, ড. জাকির আহমেদ, কারি নজরুল ইসলাম, কারি ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ডা. মো. ওয়াহিদুর রহমান, কণ্ঠশিল্পী ইকবাল হোসাইন জীবন এবং কারি আবদুল্লাহসহ আরও অনেকে।

নিউইয়র্ক সিটির বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেও জমকালো এই কনফারেন্সে বিপুল পরিমাণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সুমধুর কণ্ঠে কোরআন তেলাওয়াত করে উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করেন কারি শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আজহারী ও অন্যান্য কারিরা। রাসুলের শানে নাত পরিবেশন করেন ইকবাল হোসাইন জীবন।

অনুষ্ঠানের আকর্ষণ ছিল কারিদের তেলাওয়াত

সিরাত নিয়ে আলোচনায় বক্তারা বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে শুধু জানা নয়, তার জীবনকে আমাদের জীবনে এপ্লাই করার চেষ্টা করতে হবে। যে যেখানে যে অবস্থায় আছি, আমরা যেন হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে অনুসরণ করি। আমরা সবসময় আল্লাহকে ভালোবাসার কথা বলি। আসলে আল্লাহকে ভালোবাসা মানেই হলো তার রাসুলকে অনুসরণ করা।

অনুষ্ঠানের দিন আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত নিউইয়র্কের বিভিন্ন ইসলামিক প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা থেকে আগত খুদে শিক্ষার্থীরা কোরআন মাজিদ তেলাওয়াত করেন।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের সাবেক প্রেসিডেন্ট, নিউইয়র্ক সিটি মেয়রের মুসলিম অ্যাডভাইজারি বোর্ডের মেম্বার, আইটিভি ইউএসএ-এর পৃষ্ঠপোষক ডা. মো. ওয়াহিদুর রহমান ডিডিএস। তিনি মিডিয়ার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনায় বলেন, আইটিভি গত ৮ বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীজুড়ে যে দাওয়াতের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, এটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আইটিভির যে কনটেন্ট সেটা সাধারণ মুসলমানের জন্য বিরাট উপকারী। অন্যান্য সবার জন্য এই টেলিভিশন জ্ঞানার্জনের দ্বার উন্মোচন করেছে।

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্যায়ে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিদ্ধ কারি, নিউজার্সির মসজিদ দারুল ইসলাহর পরিচালক এবং ইমাম ও খতিব শেখ ওয়ালিদ আল বারদাউইশ।

দ্বিতীয় পর্যায়ে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন তাজবিদের ওপর বিশেষজ্ঞ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিদ্ধ কারি শেখ নাদি। তিনি তাজবিদের বিভিন্ন স্টাইলসহ কোরআন তেলাওয়াত করে শোনান।

ক্যালিওগ্রাফি প্রদর্শনী

অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ইসলামিক কালচারাল সেন্টার অব নিউইয়র্কের ইমাম ও খতিব, রাওদা ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট ড. জাকির আহমেদ।

উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন আইটিভির পৃষ্টপোষক, হিলসাইড ইসলামিক সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ ভুঁইয়া।

অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ ছিলেন বাংলাদেশ থেকে আগত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কারি শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আজহারী। দীর্ঘ সময় ধরে অসাধারণ ভঙ্গিতে, বিভিন্ন পঠন পদ্ধতিতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন। সবশেষে কোরআন তেলাওয়াত করেন আমেরিকার শীর্ষ কারি উসতাজুল কুররা শায়খ হাসান সালেহ।

অনুষ্ঠান শেষে বক্তব্য রাখেন কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট, মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট সমাজ চিন্তক ড. আবু জাফর মাহমুদ। বক্তব্যে তিনি প্রিয় নবীর আদর্শ অনুযায়ী দেশপ্রেম এবং আগামী দিনের নেতৃত্বের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের পক্ষ থেকে সাইটেশন প্রদান করা হয়। এর পাশাপাশি আইটিভির পক্ষ থেকে সাইটেশন প্রদান করা হয় ড. আবু জাফর মাহমুদ এবং শায়খ আহমেদ বিন ইউসুফ আল আজহারীকে।

দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন মসজিদ আত তাওহিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা কারি ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

দ্বিতীয় পর্বে সিরাহ ক্যালিওগ্রাফি প্রদর্শনীতে অংশ নেন অতিথিরা। কনফারেন্সের মধ্যে আয়োজিত বইমেলায় অংশ নেয় দারুল আহনাফ, ইলহাম ইনস্টিটিউট, মসজিদ তাওহিদ, পিপল এন টেক, ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, দাওয়াহ ইউএসএ, আইটিভি ইউএসএসহ অন্যান্য স্টল।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথি, দর্শক-শ্রোতা, স্পন্সরসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানান আইটিভি ইউএসএ-এর সিইও মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ।

;

দোয়া কবুলের কিছু সময় ও স্থান



মুফতি আবদুল কাইয়ুম, অতিথি লেখক, ইসলাম
আল্লাহর নিকট বান্দার দোয়া অপেক্ষা অধিক মূল্যবান জিনিস আর কিছু নেই

আল্লাহর নিকট বান্দার দোয়া অপেক্ষা অধিক মূল্যবান জিনিস আর কিছু নেই

  • Font increase
  • Font Decrease

দোয়া একটি স্বতন্ত্র ইবাদত। দোয়া আমাদের জন্য সবসময় উপাদেয় ও উপকারী। দোয়ার মাধ্যমে ইবাদতে নিমগ্ন হলে আত্মা প্রশান্তি লাভ করে। মনের ভার কমে, পেরেশানি দূর হয়। জীবনের সব কাজ আল্লাহর নামে এবং দোয়ার মাধ্যমে শুরু করলে তা অত্যন্ত সফলতা ও স্বার্থকতা লাভ করে। তাই আমাদের উচিত সর্বদা দোয়ার মাধ্যমে কাজ শুরু ও শেষ করা। হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দোয়াই ইবাদতের মগজ।’ -সুনানে তিরমিজি : ৩২৯৩

দোয়া সম্পর্কে রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘আল্লাহর নিকট বান্দার দোয়া অপেক্ষা অধিক মূল্যবান জিনিস আর কিছু নেই।’ -সুনানে তিরমিজি : ৩২৯২

অন্য বর্ণনায় আছে, ‘যার জন্য দোয়ার দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে (যাকে দোয়ার তাওফিক দেওয়া হয়েছে), তার জন্য রহমতের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে।’ -সুনানে তিরমিজি : ৩৫৪৮

দয়াময় আল্লাহর দরবারে একাগ্রচিত্তে কাকুতি-মিনতিসহ দোয়া করলে কবুল হয়। কায়মনোবাক্যে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া না করলে তা কবুল হয় না। এখানে দোয়া কবুলের কিছু সময় ও স্থান সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

১. সুরা ফাতেহা পাঠ করার পর, সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পাঠ করে দোয়া করলে তা কবুল হয়। -সহিহ মুসলিম : ৮০৬
২. অনুপস্থিত ব্যক্তির জন্য দোয়া। কোনো মুসলিমের অগোচরে অন্য মুসলিমের জন্য দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়। -সহিহ মুসলিম : ৬৮২২

হজের স্থানসমূহের কৃত দোয়া তাড়াতাড়ি কবুল হয়

৩. জালেমের বিরুদ্ধে মাজলুমের দোয়া কবুল হয়। -সুনানে তিরমিজি : ৩৪৪৮
৪. মা-বাবা তার সন্তানের জন্য দোয়া করলে, সেই দোয় কবুল হয়৷ -সুনানে তিরমিজি : ৩৪৪৮
৫. নেককার সন্তানের দোয়া কবুল হয় (বাবা-মায়ের জন্য তাদের মৃত্যুর পর)। -সুনানে আবু দাউদ : ২৮৮০
৬. আরাফাতের ময়দানে দোয়া করলে তা কবুল হয়। -সুনানে তিরমিজি : ৩৫৮৫
৭. বিপদগ্রস্ত অসহায় ব্যক্তির দোয়া তাড়াতাড়ি কবুল হয়। -সুরা নমল : ৬২
৮. সেজদায় দোয়া করলে তা কবুল হয় (তবে সেজদায় আরবিতে দোয়া করতে হবে)। -সুনানে নাসায়ি : ১০৪৫
৯. হজের স্থানসমূহের কৃত দোয়া তাড়াতাড়ি কবুল হয়। যেমন- আরাফাতের ময়দান, মুজদালিফা, মিনা...। -ইবনে মাজাহ : ২৮৯২

১০. হজ পালন করা অবস্থায় হাজির দোয়া কবুল হয়। -ইবনে মাজাহ : ২৮৯৩
১১. ওমরাহ করার সময় ওমরাহকারীর দোয়া কবুল হয়। -সুনানে নাসায়ি : ২৬২৫
১২. আজানের পর ইকামতের আগ পর্যন্ত দোয়া কবুল হয়। -সুনানে তিরমিজি : ২১০
১৩. দুশমনের মোকাবেলার (যুদ্ধ) দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়। -সুনানে আবু দাউদ : ২৫৪০
১৪. বৃষ্টি বর্ষণকালে দোয়া করলে তা কবুল হয়। -সুনানে আবু দাউদ : ২৫৪০
১৫. শেষ রাতের দোয়া অর্থাৎ তাহাজ্জুদের সময়কার (রাতের শেষ তৃতীয়াংশ) দোয়া কবুল হয়। সহিহ বোখারি : ১১৪৫

১৬. জুমার দিন (সারাদিন ও রাত) দোয়া কবুল হয়, বিশেষ করে দুই খুতবার মধ্যবর্তী সময় ও আসরের শেষ দিকে মাগরিবের আগে তালাশ করার জন্য নির্দেশ আছে। -সুনানে নাসায়ি : ১৩৮৯
১৭. লাইলাতুল কদরের রাতের দোয়া কবুল হয়। -সহিহ বোখারি ও মুসলিম
১৮. আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়কার দোয়া কবুল হয়। -সহিহ মুসলিম : ৬৬৮
১৯. ফরজ নামাজের সালাম ফেরানোর পর দোয়া করলে কবুল হয়। -সুনানে তিরমিজি : ৩৪৯৯
২০. মুসাফিরের দোয়া কবুল হয় (সফর অবস্থায়)। -সুনানে তিরমিজি : ৩৪৪৮
২১. রোজাদার ব্যক্তির দোয়া কবুল হয় (রোজা অবস্থায়)। -ইবনে মাজাহ : ১৭৫২
২২. ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া কবুল হয়। -সুনানে তিরমিজি : ২৫২৬

২৩. দোয়ায়ে ইউনুস পাঠ করে দোয়া করলে তা কবুল হয়। -সহিহ তিরমিজি : ৩৫০৫
দোয়া ইউনুস হলো- লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নী কুংতু মিনাজ জোয়ালিমীন।

২৪. ইসমে আজম পড়ে দোয়া করলে তা কবুল হয়। -ইবনে মাজাহ : ৩৮৫৬
ইসমে আজম হলো- আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা বিআন্না লাকাল হামদু লা ইলাহা ইল্লা আংতা ওয়াহদাকা লা-শারিকা লাকাল মান্নান। ইয়া বাদিয়াস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বি ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম, ইয়া হাইয়্যু ইয়া ক্বাইয়্যুম। -নাসায়ি : ১৩০০

হাদিসে মোট তিনটি ইসমে আজম এসেছে, এর যেকোনো একটি পড়লেই হবে, তবে এটিই বেশি প্রচলিত।

২৫. বিপদে পতিত হলে যে দোয়া পড়া হয় (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) এবং (আল্লাহুম্মা আজিরনী ফি মুসিবাতি ওয়াখলিফলি খাইরাম মিনহা) তখন দোয়া কবুল হয়। -মিশকাতুল মাসাবিহ : ১৬১৮

২৬. জমজমের পানি পান করার পর দোয়া করলে তা কবুল হয়। -ইবনে মাজাহ : ৩০৬২
দু্ই হাত তুলে দোয়া করা, কারণ আল্লাহতায়ালা বান্দার খালি হাত ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন। -সুনানে আবু দাউদ : ১৪৮৮

আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে বেশি বেশি দোয়া করার তওফিক দিন এবং সবার দোয়া কবুল করে নিন। আমিন!

;