আল আমীন মিশন: পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সমাজে শিক্ষা প্রসারের নবদূত



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় প্রধান, ইসলাম
পশ্চিমবঙ্গ আল আমীন মিশনের একটি ক্যাম্পাস, ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গ আল আমীন মিশনের একটি ক্যাম্পাস, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘সত্যিকারের শিক্ষক তারাই, যারা জাতিকে ভাবতে সাহায্য করেন। কাজের মাধ্যমে নিজের মমত্ববোধকে সমাজের মাঝে ছড়িয়ে দেন।’ এমনই একজন আলোকিত মানুষ এম নুরুল ইসলাম। পশ্চিমবঙ্গের আলোচিত শিক্ষা সংগঠন ‘আল আমীন মিশন’-এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের ভাবতে শিখিয়েছেন, স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছেন। তার দেখানো পথে জীবনে সাফল্য পেয়েছে হাজার হাজার মুসলিম শিক্ষার্থী। তিনি তাদের মাঝে স্বপ্নে বীজ বপন না করলে, ভারতের মতো দেশে কঠোর প্রতিযোগিতায় হারিয়ে যেত তারা। যথাযথ পরিবেশের অভাবে তাদের শিক্ষা অর্জন করা সম্ভব হতো না।

‘একমাত্র শিক্ষাই পাড়ে মানুষকে আলোর দিশা দেখাতে’ মূলমন্ত্রে বিশ্বাসী এম নুরুল ইসলামের শিক্ষা বিপ্লবে কারণে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সমাজে এক নবজাগরণ তৈরি হয়েছে। তবে এখনও অনেক পথ বাকি।

সত্তরের দশকে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমরা যখন শিক্ষা থেকে যোজন যোজন কোষ দূরে, তখন আশির দশকের প্রায় শেষ দিকে মুসলিম সমাজকে শিক্ষার আলো দেখানোর জন্য এগিয়ে আসেন এম নুরুল ইসলাম। পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সমাজের সর্বস্তরের বিস্তারের জন্য প্রতিষ্ঠা করেন আল আমীন মিশন।

পশ্চিমবঙ্গ আল আমীন মিশনের খলতপুর ক্যাম্পাস, ছবি: সংগৃহীত

১৯৫৯ সালের ১৭ অক্টোবর হাওড়া জেলার খলতপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। অত্যন্ত মেধাবী ও প্রখর দূরদৃষ্টি সম্পন্ন এম নুরুল ইসলাম ১৯৮৪ সালের মে মাসে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলায় খলতপুর গ্রামে তিনি ‘ইন্সটিটিউট অফ ইসলামিক কালচার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান শুরু করেন। অবাক করা তথ্য হলো, সমাজের মানুষের ‘মুষ্টির চাল’কে আয়ের মাধ্যম ধরে স্থানীয় একটি কওমি মাদরাসার সহায়তায় ওই মাদরাসার ভবনে আবাসিক ছাত্রাবাস শুরু করেন। পরে ১৯৮৭ সালের ১ জানুয়ারি ইন্সটিটিউট অফ ইসলামিক কালচারের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়, ‘আল আমীন মিশন।’ বর্তমানে তিনি আল আমিন মিশনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তার মতে, ‘আমি মনে করি, আল্লাহতায়ালা হলেন সব থেকে বড় পরিকল্পনাকারী। এই যে আল আমীন মিশন, এসব তারই পরিকল্পনার ফসল।’

গোটা ভারত বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র যখন ইংরেজি মাধ্যমের প্রতি আকর্ষণ বাড়ছে, সবাই ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটছে সেদিকে, আল আমীন মিশন তখন দেখিয়ে দিয়েছে বাংলা মাধ্যমে পড়েও বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো যায়। দেশে-বিদেশে কর্মে এবং গবেষণায় যুক্ত আল আমীনের ছেলে-মেয়েরাই তার উজ্জ্বল উদাহরণ।

আল আমিন মিশন থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৯ হাজার শিক্ষার্থী বেরিয়েছেন এবং তাদের বেশিরভাগই ভারত তথা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মানবসেবায় নিযুক্ত। তাদের মধ্যে চিকিৎসক ৪ হাজার, স্বাস্থ্যকর্মী ৪ হাজার, ইঞ্জিনিয়ার ৩ হাজারের বেশি। কেউবা আবার মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষক, আবার কেউ গবেষক। অনেকেই উচ্চপদে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী। এছাড়া ডব্লিউবিসিএস, নার্সিং, হোমিওপ্যাথি, আর্য়ুবেদ এবং ভেটেনারিতেও মিশনের প্রভূত সাফল্য রয়েছে। এখনও প্রতি বছর চারশ’র বেশি ছেলে-মেয়ে মেডিকেলে ভর্তি হচ্ছে। সাফল্যের হারের দিক থেকে এই ফলাফল ভারতের সংখ্যালঘু পরিচালিত সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সেরা। বর্তমানে আল আমীন মিশনের পাঠরত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১৭ হাজার। ৩ হাজার শিক্ষক আর শিক্ষাকর্মী এসব ছাত্র-ছাত্রীদের সন্তানসম স্নেহে পড়াশোনা করিয়ে থাকেন।

আল আমীন মিশনের প্রতিষ্ঠাতা এম নুরুল ইসলাম, ছবি: সংগৃহীত

মাত্র সাত জন দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীকে নিয়ে একটি অনুন্নত এলাকায় পথ চলা শুরু আল আমীন মিশনের। ওই ছাত্রদের পড়াশোনার জন্য যথেষ্ট অর্থের দরকার ছিল, সেই অর্থ সংগ্রহ করতে এম নুরুল ইসলাম ‘ভিক্ষার ঝুলি’ নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়েছেন। জাকাতের টাকা ও কিছু সমাজসেবী মানুষের সাহায্যে চলতে শুরু করে আল আমীন মিশন। একটা সময় জাকাত ও সমাজসেবীদের সাহায্য পর্যাপ্ত না হওয়ায় এম নুরুল ইসলাম স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে অর্থাভাব মিটিয়েছেন।

প্রথম থেকেই এম নুরুল ইসলামের ইচ্ছা ছিলো, শুধু শিক্ষিত নয়; মানুষের মতো মানুষ তৈরি করতে হবে। আর পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সমাজে শিক্ষাবিপ্লব ঘটাতে হলে, শুধু একটি আবাসিক মিশন যথেষ্ট নয়। তাই পশ্চিমবঙ্গের সব জেলায় শুরু হয় আল আমীন মিশনের বিভিন্ন শাখা তৈরি কাজ।

বর্তমানে রাজ্যের ১৭টি জেলায় ৭০টি শাখা ছড়িয়ে আছে। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও আসাম, ত্রিপুরা, মধ্যপ্রদেশ ও ঝাড়খণ্ডের মতো অন্যান্য রাজ্যে এখন আল আমীন মিশন বিস্তৃত। তার নিরলস পরিশ্রম, স্বপ্নকে ছোঁয়ার অদম্য জেদ ও প্রখর দূরদৃষ্টির জন্য মাত্র ৩৭ বছরে আল আমীন মিশন একটি আলোচিত শিক্ষাবিপ্লবের নামে পরিণত হয়েছে। আল আমীন মিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন সমাজে শিক্ষার আলো জ্বেলে দেওয়ার জন্য। পশ্চিমবঙ্গের পিছিয়ে পড়া মুসলমানদের জন্য আল আমীনের মতো আরও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দরকার। এখন অবশ্য অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি হতে শুরু করেছে।

আল আমীন মিশনকে বলা হয়, ‘দরিদ্র মেধাবী ছাত্রের সাফল্যের সোপান।’ আল আমীন আছে বলেই মুসলিম সমাজে শিক্ষার প্রসার ঘটেছে। প্রতি বছরের মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, জয়েন্ট এন্ট্রান্স, নিট, ডাব্লুবিসিএসের ফলাফল প্রমাণ করে আল আমীন মিশন মুসলিম সমাজকে কতটা এগিয়ে নিয়েছে। আল আমীন না থাকলে হাজার হাজার ছেলে-মেয়ের অস্তিত্ব থাকতো না, আল আমীন মিশন তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে বলেই তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিষ্ঠিত প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছে। বাংলার মুসলিম সমাজে শিক্ষার প্রতি আসক্তি তৈরি করছে আল আমীন মিশন।

আল আমীন মিশনের অধীনে ১৯৯২ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট শিল্পপতি পতাকা শিল্পগোষ্ঠীর কর্ণধার আলহাজ মোস্তাক হোসেনের সেবামূলক সংস্থা জি ডি চ্যারিটেবল সোসাইটির জি.ডি স্কলারশীপ পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া শিক্ষার কাজকে আরও বেগবান করতে ১৯৯৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের মাওলানা আজাদ এডুকেশন ফাউন্ডেশন ৪৫ লাখ, ২০০৩ সালে প্রখ্যাত চিত্রপরিচালক মৃণাল সেন মঞ্জুরীকৃত এমপি ল্যাডস ফান্ড ৮৮ লাখ টাকা দেয়। এভাবেই মানুষের সাহায্য-সহযোগিতায় মিশনের কাজ এগিয়ে চলছে।

দিনের পর দিন একই পোশাকে থেকে কোনোরকম পারিশ্রমিক ছাড়া কাজ করে যাচ্ছেন এমন নুরুল ইসলাম। মিশনের উত্তরণের জন্য জীবনে চাকরি করার ইচ্ছে ছিল না। তবুও ফান্ডের কথা ভেবে ১৯৯১ সালে মিশনের কাছেই আসন্ডা আদর্শ শিক্ষা সদনে চাকরি নেন। কিন্তু বেতনের টাকাটা জমা হতে থাকে মিশনের ফান্ডে।

আল আমীন মিশনের বর্ধমান ক্যাম্পাস, ছবি: সংগৃহীত

২০০১ সালে নানির দেওয়া জায়গায় স্থায়ীভাবে মিশনের জন্য একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। পরে মিশনের কাজ সম্প্রসারণ করতে বিভিন্ন সময়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের মাইনুদ্দিন আহমেদ, সাজাহান বিশ্বাস, বীরভূমের হজরত দাতা মাহবুব শাহ ওয়ালী (রহ.) ওয়াকফ স্টেট, পশ্চিমবঙ্গ ওয়াকফ বোর্ড, বেঙ্গালুরুর সাদাতুল্লাহ খান, বিখ্যাত শিক্ষাবিদ অধ্যাপক এ.কে. জালালউদ্দিন, মৃণালকান্তি দুয়ারী, কেন্দ্রীয় সরকারের ফ্রি কোচিং স্কিম ফান্ড, পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রণালয়, সোলেমান মোল্লা, আব্দুর রহমান, এস এম আনোয়ার, খলিলুর রহমান, শওকত আলী, হারুন রসিদ, মুকতার আলম, তাবারক হোসেন মিস্ত্রি, আজিজুর রহমান মোল্লা ও মারুফ-ই-ইলাহীসহ অনেক সমাজ ও শিক্ষাদরদী মানুষের সাহায্য ও সহযোগিতা পেয়েছে মিশন। এভাবে সমাজের অসংখ্য সহৃদয় শিক্ষানুরাগী, শুভানুধ্যায়ীরা আল আমীনের সঙ্গে আছেন। যারা বাংলার পিছিয়ে পড়া মুসলিম সমাজকে বিকশিত করার জন্য সবসময় চিন্তা করেন ও অকৃপণভাবে বাড়িয়ে দেন সাহায্যের হাত।

২০১৫ সালে শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্যজুড়ে বিশেষ অবদানের জন্য আল আমীন মিশনকে ‘বঙ্গভূষণ সম্মাননা’য় সন্মানিত করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। একই মঞ্চে বঙ্গবিভূষণ সম্মাননায় ভূষিত হয় রামকৃষ্ণ মিশন ও ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ। সরকারি দু’টি কমিটিতে আল আমীন মিশন প্রতিনিধিত্বও করছে। এর আগে আল আমীন মিশন টেলিগ্রাফ স্কুল অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সিলেন্স পায় ২০০২ সালে, ২০০৯ সালে পায় বেগম রোকেয়া পুরস্কার।

২০২০ সালেও মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, জয়েন এন্ট্রান্স ও নিট পরীক্ষায় আল আমীন মিশনের শিক্ষার্থীরা নজরকাড়া সাফল্য অর্জন করেছে। এমন কোনো বছর আর পরীক্ষা নেই- যেখানে রাজ্য মেধা তালিকায় আল আমীনের শিক্ষার্থী থাকে না। প্রতিবছর মিশনের ছাত্র-ছাত্রীদের নিট পরীক্ষার ফলাফল মানুষের নজর কাড়ে। ২০২০ সালেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। নিটে ৫৬৫ নম্বরের ওপর পেয়েছে ৩২০ জন ছাত্র-ছাত্রী। আল আমীন মিশন থেকে এ বছর সর্বভারতীয় স্তরে সর্বোচ্চ র‍্যাঙ্ক হয়েছে ৯১৬। গোটা ভারতে ১৫ লাখের বেশি শিক্ষার্থী এ বছর নিট পরীক্ষা দিয়েছিল, তন্মধ্যে ৯১৬ র‍্যাঙ্ক করে মিশনের মুখ উজ্জ্বল করেছে জিসান হোসেন।

আল আমীন মিশনের একটি প্রতিষ্ঠান, ছবি: সংগৃহীত

যেখানে সত্তরের দশকে মুসলিম সমাজের ছাত্ররা ডাক্তার তো দূরের কথা উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়তে পারবে কিনা সন্দেহ ছিল, সেখান এখন প্রতি বছর আল আমীন থেকে ৩০০-৪০০ জন ডাক্তার তৈরি হচ্ছে। এর থেকে আনন্দের খবর আর কি হতে পারে? বিগত ৩-৪ বছর থেকে ডাক্তারের মোট আসনের ১৫-২০ শতাংশ আল আমীন মিশনের ছেলে-মেয়েরা লাভ করছে। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের এমন কোনো হাসপাতাল পাবেন না, যেখানে মিশনের ছাত্র-ছাত্রী নেই।

আল আমীন মিশন পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সমাজকে আলোর দিশা দেখিয়েছে। এখন বাংলায় প্রতিটি মা-বাবা চায়, তাদের সন্তান যেন আল আমীনে পড়তে পারে। এম নুরুল ইসলামসহ আল আমীন মিশনের একান্ত চাওয়া, পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সমাজ শিক্ষিত হয়ে নিজের মেরুদণ্ড শক্ত করে দাঁড়াক। এ জন্য তার মতো আরও অনেক মানুষ দরকার সমাজে।

নাম পরিবর্তনের পর ৩৪ বছর বহু গৌরবজনক অধ্যায় পেরিয়ে এসেও আল আমীন মিশনের কোনো লোগো ছিল না। ২০২০ সালের শেষদিকে মিশনের লোগো বানানো হয়েছে। হয়েছে মিশনের নিজস্ব অ্যাপ। করোনার সময়েও মিশন পঠন-পাঠন চালু রেখেছে অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে। মিশনের শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা গড়ে প্রায় ৭০ শতাংশ বেতন পাচ্ছেন গত এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত। এভাবে আল আমীন মিশনকে এগিয়ে নিচ্ছেন এম নুরুল ইসলাম ও তার সঙ্গিরা।

ফের বাড়ল হজ নিবন্ধনের সময়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। বর্ধিত সময় অনুযায়ী আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে।

সোমবার (২৭ মার্চ) নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৩৩৯ জন। কোটা পূরণে এখনো নিবন্ধন বাকি রয়েছে ৯ হাজার ৮৫৯। এর মধ্যে সরকারিতে ফাঁকা ৫ হাজার ১০৮, বেসরকারিতে ৪ হাজার ৭৫১।

হজ অনুবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে কতজন হজ করতে যাবেন তা সৌদি সরকারকে জানানোর শেষ তারিখ আগামী ৯ মে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এবার হজের খরচ বেশি হওয়ায় শুরু থেকেই নিবন্ধনে ভাটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু তারা তো কাউকে ডেকে এনে নিবন্ধন করাতে পারেন না।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহ্জ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন এবং অবশিষ্ট এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন।

;

১৮ এপ্রিল পবিত্র লাইলাতুল কদর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শুক্রবার থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হচ্ছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাতে তারাবির নামাজ আদায় করেন। শেষ রাতে প্রথম সেহরি খাওয়া হবে।

এই হিসেবে আগামী ১৮ এপ্রিল (২৬ রমজান) মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে কদর পালিত হবে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, মুসলমানদের জন্য রমজান মাস রহমত, বরকত ও মাগফেরাতের বার্তা বয়ে আনে। সংযমের এ মাসে মুসলিমরা আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় ইবাদত-বন্দেগি করে থাকেন।

;

রোজার পুরস্কার মিলবে যেসব আমলে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র মাহে রমজানে কোনোভাবেই আল্লাহতায়ালার অসন্তুষ্টিমূলক কোনো কাজে লিপ্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সর্বোপরি মাহে রমজান ও রোজা মহান মালিককে সন্তুষ্ট করার সুবর্ণ অবসর। এ জন্য আমাদের মাহে রমজান ও রোজা হওয়া চাই হারাম, কবিরা গোনাহ ও নাফরমানি মুক্ত। মিথ্যা, প্রতারণা, অন্যায়, অত্যাচার, পাপাচার, সুদ, ঘুষ ও দুর্নীতি মুক্ত হওয়া। তবেই আমরা রমজান ও রোজার পূর্ণাঙ্গ পুরস্কার গ্রহণ করতে পারব।

আল্লাহ পাককে সন্তুষ্ট করার, মুত্তাকি হওয়ার লক্ষ্য অর্জন করতে পারব। এ লক্ষে রমজান মাসে কিছু বিষয়ের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখা দরকার। এর অন্যতম হলো-

সময়ের অপচয়রোধ

জীবন সেকেন্ড, মিনিট, ঘণ্টার সমষ্টি। এই ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র সময়ই আমার জীবন। জীবনের একটি মুহূর্ত বেখেয়াল, অবহেলায় কাটিয়ে দেওয়া মানে এই সময়টা নষ্ট করে ফেলা। সে আর কখনও ফেরত আসবে না। এক একটি মুহূর্ত জীবনে একবারই আসে। প্রত্যেকটি দিন আগমন করে আমাকে আহবান করে তাকে ভালোভাবে ব্যবহার করার জন্য। সে এও বলে দেয়, হিসাবের দিনেই কেবল সে আবার আমার সামনে হাজির হবে। যে ব্যক্তি সময়ের সদ্ব্যবহার করে, দুনিয়ার জীবনে সে সফলতা পায়। আমার রমজান ৩০ দিনের হলে ২৫,৯২,০০০ সেকেন্ডের সমষ্টি। রমজানের চাঁদ উদিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কমতে শুরু করে। আমার কাছে রমজানের প্রতিটি সেকেন্ড মূল্যবান। আমি, আপনি যদি হিসাব করে এই সেকেন্ডগুলো কাজে লাগাতে পারি, তবে আমি আপনি অবশ্যই সফল হতে পারব। একজন পরীক্ষার্থী যেমন প্রত্যেকটি সেকেন্ডের হিসাব রেখে উত্তর লিখতে থাকে। তেমনি আমার আপনারও এই মূল্যবান সময়ের যথাযথ কদর করে রোজা পালন করলে, এই বছরের রমজান আমার আপনার জীবনে এক ব্যতিক্রম রমজান মনে হবে এবং এক ব্যতিক্রম ফল বয়ে আনবে। তাই গল্পগুজব, আড্ডা, টিভি দেখা, ফেসবুক অনলাইনে সময় ব্যয়, অবসরে শুধু ঘুমানো, এখানে সেখানে ঘুরাফেরা করা ইত্যাদি কাজগুলো বর্জন করি। তবে আমার রমজান হবে প্রাণবন্ত।

কথা হোক কম

যখন আপনি আমি কথা কম বলব, তখন অনেক অনর্থক এমন কি ফাহেশা কথা থেকে বেঁচে যাব। জীবনের অনেক সময়ও বেঁচে যাবে। বেশি কথা বললে, গীবত, পরনিন্দা, মিথ্যা এ ধরণের অনেক কথা মুখ ফঁসকে বেরিয়ে যেতে পারে। যে সময় আমি অযথা গল্প কথায় লিপ্ত হব, এই সময়টাকে আমি কোরআন তেলাওয়াত, তাফসির অধ্যয়ন, হাদিস পাঠ, বিভিন্ন মাসনুন দোয়া, ইস্তেগফার, দরুদ শরিফ পাঠ, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শেখানো বিভিন্ন জিকিরে মশগুল হতে পারি। অনায়াসে অনেক বরকতের ভাগিদার হতে পারি।

কাজে গতিময়তা

কাজ ছাড়া জীবন অচল, আমরা কেউ চাকুরি করি, কেউ ব্যবসা, কেউ কৃষিকাজ ইত্যাদি। এই রমজানে আমার কাজের সময়কে কমিয়ে আনি। কাজের গতি বাড়িয়ে দেই। কাজের গতি বাড়িয়ে কাজের সময়কে কমিয়ে আনি। এই বেঁচে যাওয়া সময়টিকে আমি ইবাদত-বন্দেগি, কোরআন তেলাওয়াত, দরুদ, ইস্তেগফার পাঠে ব্যয় করি। তাহলে দেখা যাবে কাজের এই গতিময়তা পুরো বছর আমাকে বরকত দেবে। আমার অনেক সময় হাতে থাকবে, বিশেষভাবে মাওলাকে ডাকার জন্য আমার সময়ের অভাব হবে না।

সোশ্যাল মিডিয়া বর্জন

রমজান মাস আমার জন্য আমার মহান রবের এক মহান উপহার। এই মাস সওয়াব কামাইয়ের মাস। এই মাস সোশ্যাল নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকার মাস নয়। আপনার বিশেষ কোনো প্রয়োজনে আপনি নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকতে পারেন। কিন্তু ফেসবুক, টুইটার, ইনস্ট্রাগ্রাম, ইউটিউভ ইত্যাদি মাধ্যমগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। আপনি হয়তো ভালো কিছু দেখতে চান, ভালো কিছু শুনতে চান। এই ভালো দেখার সঙ্গে, ভালো শোনার সঙ্গে কিছু খারাপও আপনার নজরে এসে যাবে। এই সময় আমি আপনি নেটওয়ার্কহীন অন্য ইবাদতে মশগুল হই। যার নেটওয়ার্ক আমার আর আমার রবের সঙ্গে সংযোগ করে দেবে- ইনশাআল্লাহ।

;

শুক্রবার থেকে রোজা শুরু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ বুধবার দেশের কোথাও চাঁদ দেখা না যাওয়ায় আগামী শুক্রবার থেকে রোজা শুরু হচ্ছে।

বুধবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে বৈঠক করে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি এ কথা জানায়।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ধর্মমন্ত্রী ও কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ মতিউর রহমান।

বৈঠক শেষে জানানো হয়, বাংলাদেশের কোথাও পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হবে রমজান মাস গণনা। সে ক্ষেত্রে বৃহস্পতিবার দেশের মসজিদগুলোতে বাদ এশা তারাবির নামাজের মধ্য দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পবিত্র রমজানের কার্যক্রম শুরু করবেন। এরপর ওই দিন দিবাগত ভোররাতে সাহ্‌রি খেয়ে প্রথম রোজা রাখতে হবে।

;