রহমত, বরকত, নাজাতের রমজান



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রমজান মাসের নতুন চাঁদ উদিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সারা পৃথিবী জুড়ে নেমে আসে এক অনাবিল আধ্যাত্মিক স্পন্দন। আধ্যাত্মিকতা বা রুহানিয়াতের দোলায় বিশ্বের সকল মুসলমানের চিত্ত হয় আলোকিত। রহমত, বরকত, মাগফেরাত, নাজাতের পয়গামে সূচিত রমজান মাস আত্মিক ও শারীরিক পরিশুদ্ধির অনুপ্রেরণা জাগায়।

‘রমজান হলো আমার উম্মতের মাস’, বলেছেন প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি আরো বলেন, ‘রজব আল্লাহর মাস, শাবান আমার মাস আর রমজান আমার উম্মতের মাস।’ মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, রজব মাস জমি চাষ করার, শাবান মাস বীজ বপন করার এবং রমজান মাসে ফল লাভ করার অফুরন্ত নেয়ামত পাওয়া যায়।

হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন:

‘আল্লাহ তায়ালার কসম, মুসলমানদের জন্য রমজানের চেয়ে উত্তম কোনো মাস আসে নি। এবং মুনাফিকদের জন্য রমজান মাসের চেয়ে অধিক ক্ষতির মাসও আসে নি। কেননা, মুমিনগণ এ মাসে (গোটা বছরের জন্য) ইবাদতের শক্তি ও পাথেয় সংগ্রহ করে। আর মুনাফিকরা তাতে মানুষের উদাসীনতা ও দোষত্রুটি তালাশ করে। এ মাস মুমিনদের জন্য গনিমত আর মুনাফিকদের জন্য ক্ষতির কারণ।’ (মুসনাদে আহমাদ: ৮৩৬৮)

অতএব রমজান মাসের গুরুত্ব ও মর্যাদা সহজেই অনুমান করা যায়। তেমনিভাবে এটাও মনে রাখা জরুরি যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা পুরো বছরকেই বিভিন্ন মাসে বিভক্ত করে মানবজীবনের জন্য ভারসাম্যপূর্ণ করেছেন, যাতে হজ, কোরবানি. রোজা ইত্যাদি আমলের মাধ্যমে প্রতিটি মুসলমান নর-নারী পূর্ণাঙ্গ দ্বীন বা জীবনব্যবস্থা ইসলামের শরিয়ত বা বিধানের সুফল পেতে পারেন।

মাহে রমজান তেমনিভাবে মানুষের জীবনে এক অতি কল্যাণময় মাস, যার প্রথম দশ দিন রহমত, দ্বিতীয় দশ দিন বরকত এবং তৃতীয় বা শেষ দশ দিন নাজাতের আলোয় দীপ্ত। রমজানে আমলের বহুমাত্রিক সুযোগের পাশাপাশি রয়েছে অধিকতর নেকি বা সাওয়াব হাসিলের নিশ্চয়তা। কারণ, রমজানে প্রতিটি আমলের সাওয়াব বাড়িয়ে দেওয়া হয় বহুগুণে এবং রোজাদারের মুখের গন্ধ হয় মেশকে আম্বরের মতো সুগন্ধিময়।

পবিত্র ও বরকতময় রমজান মাসেই রয়েছে মহিমান্বিত লায়লাতুল কদর, যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম ও শ্রেষ্ঠ। রয়েছে ইতেকাফের মাধ্যমে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার ইবাদতে নিবিড়ভাবে বিলীন হওয়ার অবারিত সুযোগ। রয়েছে দিনে রোজা আর রাতে কিয়ামুল লাইল, তারাবিহ, তাহাজ্জুদ নামাজ। তদুপরি পবিত্র কোরআন নাজিলের সম্মানিত মাস রমজান। ফলে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার আদেশ-নির্দেশ-দিকনির্দেশনা সম্বলিত আল কোরআনের সঙ্গে একাত্ম হওয়ার মাসও রমজান।

অতএব, রমজান মাসের প্রতিটি মুহূর্ত মহামুল্যবান। দিন ও রাতের প্রতিটি ক্ষণ রোজা, নামাজ, তেলাওয়াত, জিকির, তাসবিহ, তাহলিলে পরিপূর্ণভাবে রমজানকে উদযাপন করাই প্রতিটি মুসলিম নর-নারীর একান্ত কর্তব্য। ফরজ, ওয়াজিবের পাশাপশি সুন্নত আমলসমূহের অনুসরণ করে মাহে রমজানের প্রতিটি মুহূর্তকে সফল করা বিশ্বাসী মুসলমানদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।

রমজানের পবিত্র পরিবেশে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার নির্দেশিত ও পালনীয় ইবাদতের মাধ্যমে শারীরিক কৃচ্ছ্বতা সাধন করা যেমন উপকারী, তেমনি নানাবিধ আমলে নিয়োজিত হয়ে আত্মিক উৎকর্ষ সাধনও সহজতর। লোভ, লালসা, কাম, ক্রোধ, অসসতা, নির্লজ্জতা, হিংসা, বিদ্বেষ, পরনিন্দা, পরচর্চা ইত্যাদির কুঅভ্যাস ও রিপুর তাড়না থেকে বাঁচার পথও দেখায় রমজান এবং রমজানের আলোকিত পরিস্থিতিতে এসব আমল পালন করার  প্রেরণাও জাগে।

যদিও দুঃখজনকভাবে লক্ষ্যণীয় যে, একদল লোক রোজা রাখার পরেও নানা রকমের অপকর্ম থেকে সরে আসতে পারে না। ব্যক্তিগত, সামাজিক ও ব্যবসায়িক জীবনকেও অনাচার, অপকর্ম ও পাপাচার মুক্ত রাখতে পারে না। এদের জন্য রয়েছে চরম দুঃসংবাদ। এদের রোজায় পানাহার ত্যাগ করা হয় বটে, কিন্তু রোজার প্রকৃত পরিশুদ্ধি ও কল্যাণ লাভ এদের পক্ষে মোটেও সম্ভব হয় না।

মনে রাখা দরকার যে, রোজাকে বলা হয়েছে ‘ঢাল স্বরূপ’ এবং প্রকৃত ও যথাযথভাবে পালনকরা রোজার পুরস্কার আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা স্বয়ং নিজে দেবেন বলে ঘোষণা করেছেন। অতএব, রোজা অবশ্যই হতে হবে সর্বাঙ্গ-সুন্দর, ত্রুটি ও দোষমুক্ত। রোজাদারকে হতে হবে কোরআন ও হাদিসে নিদের্শিত সকল প্রকার অপরাধ থেকে মুক্ত ও পবিত্র। তাহলেই রোজার পূর্ণ সাওয়াব এবং রমজানের অফুরন্ত রহমত, বরকত, মাগফেরাত ও নাজাত পাওয়ার আশা করা যায়।

মানুষের চরম সৌভাগ্য যে, তার ইহকালীন জীবনকে আলোকিত ও পরকালীন জীবনকে কল্যাণময় করার অবারিত সুযোগ দিয়ে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা রমজান মাস দিয়েছেন। এই মহতী মাসের যাবতীয় নেয়ামতকে সকল প্রকার ভুল-ভ্রান্তি ও ত্রুটির ঊর্ধ্বে রেখে পরিপূর্ণভাবে পালন ও হাসিল করার এই মহার্ঘ সুযোগ সঠিকভাবে কাজে লাগানোর মধ্যেই মানবজীবনের সার্বিক সার্থকতা ও সফলতা নিহিত। মাহে রমজানের সূচনাতেই পুরো মাসের দিন ও রাতের কর্মপরিকল্পনা ঠিক করে অত্যন্ত সচেতনভাবে তৈরি হওয়া দরকার এবং বিশুদ্ধ আমল ও আখলাকের আলোকে কোরআন-সুন্নাহ নির্দেশিত পন্থায় একনিষ্ঠভাবে তৎপর হয়ে সফলতা প্রাপ্ত হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

ইসলামের ইতিহাসে দ্বিতীয় হিজরি সালের রমজান মাসে রোজা পালন ফরজ করা হয়। প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনে নয়টি রমজান পেয়ে সিয়াম বা রোজা পালন করেছেন। কারণ রমজানের রোজা দ্বিতীয় হিজরির শাবান মাসে ফরজ করা হয়েছিল এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একাদশ হিজরি বছরের রবিউল আউয়াল মাসে ওফাত লাভ করেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার পক্ষ থেকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাধ্যমে উন্মতের জন্য মহামূল্যবান নেয়ামত স্বরূপ রমজান উম্মতের জন্য অব্যাহত রয়েছে, যার সুফল সঠিকভাবে ও পূর্ণ নিষ্ঠা-একাগ্রতা-পরিশ্রমের মাধ্যমে লাভ করা মুসলিম উম্মাহর প্রতিটি সদস্যের জন্য অপরিহার্য।

   

আগামীতে হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট: ধর্মমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ অনুসারে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে হজ ব্যবস্থাপনায় আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে।

তিনি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত যে পোর্টালটি রয়েছে সেখানে আমরা নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করছি। আগামী দিনে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট হজ ব্যবস্থাপনা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে ঢাকা হজ অফিসের সম্মেলন কক্ষে হজযাত্রী প্রশিক্ষণ ২০২৪ ’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্মমন্ত্রী এ কথা বলেন।

ফরিদুল হক খান বলেন, আপনারা সকলেই যাতে সহী-শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে পারেন সেজন্যই মূলত আজকের এই প্রশিক্ষণ। আমরা প্রশিক্ষণের জন্য অত্যন্ত দক্ষ প্রশিক্ষক নির্বাচন করেছি। আপনারা যদি প্রশিক্ষণের প্রতি মনযোগী হতে পারেন তাহলে আপনারা হজের নিয়ম-কানুন, হুকুম-আহকাম, ধারাবাহিক আনুষ্ঠানিকতা- সবকিছু আয়ত্তে আনতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষেরই প্রবণতা হলো জীবনের শেষ প্রান্তে এসে হজ পালন করা। হজ অনেক পরিশ্রমসাধ্য ইবাদত, এর জন্য শারীরিক সামর্থ্য থাকা বাঞ্চনীয়। অনেকেরই সেই শারীরিক সামর্থ্য থাকে না। যার কারণে তাদের পক্ষে হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন করা অনেক কষ্টকর হয়ে যায়।

তিনি বলেন, অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে জমানো সঞ্চয় দিয়েই হজব্রত পালন করতে যান। এদেশের অধিকাংশ মানুষেরই দ্বিতীয় বার হজ করার মতো আর্থিক সঙ্গতি থাকে না। সে কারণে আপনার পরিশ্রম ও অর্থ যেন বিফলে না যায় সেজন্য অবশ্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)’র নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে হজ সম্পাদন করতে হবে। সহী ও শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে হবে।

ফরিদুল হক খান বলেন, সৌদি আরবে আপনার পরিচয় শুধু একজন হজযাত্রী নয়, আপনার পরিচয়-আপনি একজন বাংলাদেশি। আপনার আচার-আচরণ, কথাবার্তা ও চালচলনের মাধ্যমেই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রকাশ পাবে।

তিনি সৌদি আরবের আইন-কানুন, নিয়ম-শৃঙ্খলা প্রতিপালনে কোনরূপ বিচ্যুতি না ঘটে সেদিকে যত্নবান থাকার আহ্বান জানান।

এছাড়া, কারো জন্য দেশের ভাবমূর্তি ও সম্মান যেন ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে বিশেষভাবে সর্তক থাকার জন্য হজযাত্রীদেরকে অনুরোধ জানান তিনি।

ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম, যুগ্মসচিব ড. মো. মঞ্জরুল হক ও ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।

প্রশিক্ষণে সরকারি মাধ্যমে নিবন্ধিত ঢাকার হজযাত্রীরা অংশগ্রহণ করছেন।

;

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আশঙ্কা এজেন্সি মালিকদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হজ এজেন্সির মালিকেরা। তাই সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে দ্রুত সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এজেন্সি মালিকেরা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান অপারেটিং হজ এজেন্সির মালিকরা।

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে হাবিবুল্লাহ মুহাম্মদ কুতুবুদ্দীন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কিছু ঊর্ধতন কর্মকর্তা এবং মক্কা হজ মিশনের কিছু কর্মকর্তাদের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছেন তারা।

তিনি আরও বলেন, গত ১৮ এপ্রিল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ ১ শাখা থেকে সৌদি সরকারের একটি চিঠির বরাতে জানানো হয়- আগামী ২৯ এপ্রিল হজ যাত্রীদের ভিসা ইস্যু বন্ধ হয়ে যাবে।

চিঠিতে আরও জানানো হয়, ২৯ এপ্রিলের মধ্যে আবশ্যিকভাবে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করতে হবে। এজেন্সীর অবহেলার কারণে হজযাত্রীদের হজে গমন অনিশ্চিত হলে সে এজেন্সীর বিরুদ্ধে হজ ও উমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন ২০২১ অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে, গত ১০ ফ্রেব্রুয়ারি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে জানানো হয়, সৌদি সরকারের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের আবাসন, ক্যাটারিং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সকল প্রকার অনলাইন চুক্তি (সার্ভিস কোম্পানি, পরিবহান, ইত্যাদি) সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ এখনো অনেক এজেন্সির ৮০ শতাংশ কার্যক্রম বাকি।

এমন অবস্থায় সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এবং সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে হজ এজেন্সি মালিকেরা অনুরোধ করেন।

এছাড়াও কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেন তারা। সেগুলো হলো- দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল হাজির মিনার জোন নির্ধারণ করে ই হজ সিস্টেম আপডেট করতে হবে। ফাইনাল ফ্লাইট শিডিউল ঘোষণা ও সকল এজেন্সির হজযাত্রী অনুপাতে টিকেট নিশ্চিত করতে হবে। মোয়াজ্জেমদের জন্য বারকোড ভিসার বিষয়টি নিশ্চিত করা। যাদের সৌদি একাউন্টে এখনো রিয়াল জমা হয়নি তাদের একাউন্টে দ্রুত রিয়াল জমার ব্যবস্থা করা।

তারা বলেন, বর্তমানে সৌদি একাউন্টে টাকা ঢুকতে দেড় মাস সময় লাগে। যদি কারো একাউন্টে ১ পয়সাও কম থাকে তাহলে তার হজে যাওয়া সম্ভব হবে না। এবং বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন চার্জ একবারে হিসাব করে পাঠানো অনেকটা অসম্ভব। এছাড়া যাদের এখনো মেননজাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা হয়নি তাদের জন্য দ্রুত টিকার ব্যবস্থা করতে হবে।

এছাড়াও ভিসা ইস্যু কার্যক্রম অন্যান্য বছরের মতো সর্বশেষ ফ্লাইটের এক সপ্তাহ পূর্ব পর্যন্ত চালু রাখার দাবি জানান তারা। আরও বলেন, অতীতে দেখা গেছে অনেকে হজ করতে যাওয়ার ইচ্ছে করলেও সকল প্রস্তুতির পর মারা গেছেন। আবার কেউ মারাত্মক রোগাক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও দুর্ঘটনা ইত্যাদি কারণে যেতে পারেন না। তাই সেই হজযাত্রীর পরিবর্তে তার পরিবারের অন্য কোন সদস্যদের যাওয়ার ব্যবস্থা করা যেতো তাহলে জমাকৃত টাকা গচ্চা যেতো না। বর্তমানে যে অবস্থা আছে তাতে ভিসা ইস্যু এতো আগে বন্ধ হয়ে গেলে অহেতুক প্রচুর টাকা সৌদি আরবে চলে যাবে। এতে দেশের ক্ষতি হবে। যদি বিষয়টি সৌদি সরকারকে বুঝাতে আমরা সক্ষম হই তাহলে আমাদের বিশ্বাস সৌদি সরকার বাস্তবতা বুঝে অবশ্যই বিবেচনা করবেন।

;

যে গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার কেউ নেই



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্মিলিত ও সুপরিকল্পিত উদ্যোগে বদলে গেছে প্রত্যন্ত একটি গ্রামের চিত্র। গ্রামটির সকল পরিবার হয়েছে সচ্ছল। ওই গ্রামে এখন আর ফেতরা কিংবা জাকাত নেওয়ার মানুষ নেই। সবাই স্বাবলম্বী।

কিশোরগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার দানাপাটুলি ইউনিয়নের চাঁদের হাসি গ্রাম। এই চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের এমন উদ্যোগের ফলে বদলে গেছে গ্রামের দৃশ্যপট।

সংগঠনটি নিজ গ্রামের গন্ডি পেরিয়ে এখন পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষদের স্বাবলম্বী করতে উদ্যোগ নিয়েছে। এমন প্রশংসনীয় কাজ করা সংগঠনটির নেই নিবন্ধন, নেই বাহারি অফিস। তারা প্রচারে নয়, কাজে বিশ্বাসী। যার প্রমাণ, ফাউন্ডেশনের জনকল্যাণমূলক নানা কাজ।

জানা গেছে, ২০০৩ সালে চাঁদের হাসি গ্রামের প্রয়াত মাওলানা হেলান উদ্দিনের প্রচেষ্টায় দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে গ্রামে সকল পরিবারের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে অসহায়-গরীব মানুষের মাঝে বিতরণ করে আসছে। এভাবে দীর্ঘ ২১ বছরে এই কার্যক্রমের ফলে চাঁদের হাসি গ্রামে এখন আর ফেতরা ও জাকাত নেওয়া মতো মানুষ নেই। ইতোমধ্যে সংগঠনটি গ্রামের ৮০ জন অসহায় গরীব মানুষকে ঘর তৈরি করে দিয়েছে।

২ বছর আগে চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর পেয়েছেন ওহেদ আলী। তিনি জানান, ঘর পেয়ে মাথা গুজার ঠাঁই হয়েছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভালোভাবেই চলছে তার সংসার।

মাহমুদ বেগম নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী জানান, তার পরিবার দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর ও সেলাই মেশিন পেয়েছেন। তার বাবা নেই মা ও ছোট বোনকে নিয়ে ঘরে বসবাস করছেন। সেলাই মেশিনের মাধ্যমে মানুষের জামা কাপড় সেলাই করে নিজেও স্বাবলম্বী হয়েছেন।

চাঁদের হাসি দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ আলম জানান, ২০০৩ সালে আমাদের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এলাকার চলনশীল মানুষের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে আমরা কাজ করে থাকি। এভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করার পর থেকে ইসলামের বিধি মোতাবেক যে ৮টি খাত রয়েছে সে হিসাবে বর্তমানে আমাদের গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার মতো কোনো মানুষ নেই।

সংগঠনটি গ্রামের অসহায় ও গরীব মানুষকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সহায়তাও দিয়ে আসছে। গ্রামের বেকারত্ব ঘোচাতে অসহায় ও গরীব মানুষের মাঝে গরু, ছাগল, সেলাই মেশিন, অটোরিকশা ও ভ্যান গাড়ি বিতরণ করেছে।

;

রাজধানীতে শীতল পানি বিতরণ করল ইসলামী ছাত্র আন্দোলন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহে সৃষ্ট সংকটে দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন করছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ।

বিভিন্ন জেলা, থানা, ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভ্রাম্যমাণ ভ্যান নিয়ে পথচারী, দিনমজুর, রিকশাচালকসহ তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে ঠান্ডা পানি বিতরণ করেছে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। এছাড়া খাবার স্যালাইন ও পকেট রুমাল বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬৬ ও ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডে শ্রমজীবী ও পথচারীদের মাঝে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর পূর্বের ডেমরা থানা শাখার উদ্যোগে বিশুদ্ধ শীতল পানি, স্যালাইন ও ওয়ালেট টিস্যু বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ মাইনুল ইসলাম, ডেমরা থানা শাখার সভাপতি শাহাদাত হোসেন মৃধা, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রাফিইন বিন আমজাদ, কফিল উদ্দিনসহ থানা ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ।

এ সময় প্রধান অতিথি শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমান বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন, জলাধার ভরাট ও অবাধে বৃক্ষ নিধনের ফলেই অসহনীয় তাপদাহে নগরে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। সাময়িক স্বস্তির জন্য আমরা শীতল পানির বিতরণ কর্মসূচি পালন করছি। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধানের জন্য নগরকে সবুজায়ন ও বসবাসের উপযোগী করতে রাষ্ট্রকেই যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।

নগর সহ-সভাপতি মাইনুল ইসলাম বলেন, যতদিন তীব্র তাপদাহ থাকবে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর পূর্বের উদ্যোগে নগরজুড়ে বিশুদ্ধ শীতল পানি বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

;