ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে ঈদ উদযাপন, চলছে কোরবানির আনুষ্ঠানিকতা
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল আজহা। ঈদের জামাত শেষে দেশের বেশিরভাগ স্থানেই এখন চলছে পশু কোরবানির আনুষ্ঠানিকতা।
জুলাই (২১) সকাল ৭টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান ও প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। মাস্ক পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জামাতে অংশ নিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।
এ জামাতে ইমাম ছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান। মুকাব্বির ছিলেন বায়তুল মোকাররমের মুয়াজ্জিন মো. আতাউর রহমান।
পুরো বায়তুল মোকাররম এলাকা দেখা গেছে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জামাতের আগে খুতবা ও বয়ানে কোরবানির তাৎপর্য তুলে ধরা হয়। নামাজ শেষে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি, দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় মোনাজাত করেন ইমাম।
এদিকে, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র ঈদুল আজহার আরও চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তী বা দ্বিতীয় জামাত হয় সকাল ৮টায়। এতে বায়তুল মোকারমের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মুহিব্বুল্লাহিল বাকী নদভী ইমাম হিসেবে থাকার কথা রয়েছে। আর মুকাব্বির থাকবেন মুয়াজ্জিন হাফেজ ক্বারী কাজী মাসুদুর রহমান।
সকাল ৯টায় হয় ঈদের তৃতীয় জামাত। এ জামাতে ইমামতি করার কথা রয়েছেন পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা এহসানুল হকের। এতে মুকাব্বির ছিলেন হাফেজ ক্বারী হাবিবুর রহমান মেশকাত।
চতুর্থ জামাত হয় সকাল ১০টায়। এ জামাতে ইমামতি করেন পেশ ইমাম মাওলানা মহিউদ্দীন কাসেম। আর মোকাব্বির ছিলেন মুয়াজ্জিন ক্বারী মো. ইসহাক।
আর পঞ্চম ও শেষ জামাত হয় সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে। এতে ইমামতি করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস হাফেজ মাওলানা ওয়ালিয়ূর রহমান খান এবং মুকাব্বির ছিলেন বায়তুল মোকাররমের প্রধান খাদেম মো. শহীদুল্লাহ।
রাজশাহীতে পবিত্র ঈদুল আজহার জামাতে সারাবিশ্বকে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তির জন্য দোয়া করা হয়েছে। এ ছাড়া কোরবানি কবুল এবং দেশ-জাতির উন্নতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা হয়। সকাল সাড়ে ৭টায় রাজশাহীতে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হজরত শাহ মখদুম (রহ.) কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে। এখানে দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন নগরীর কাদিরগঞ্জে বায়তুল আমান আহলে হাদিস জামে মসজিদে পবিত্র ঈদুল আজহার দুই রাকায়াত ওয়াজিব নামাজ আদায় করেন। বুধবার সকাল পৌনে ৮টায় এখানে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের নামাজ শেষে কাদিরগঞ্জে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান ও মা মরহুমা জাহানারা জামানের কবর জিয়ারত করেন মেয়র লিটন।
পবিত্র ঈদ উল আজহা উপলক্ষে রাঙামাটির প্রতিটি মসজিদে মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায় করে মুসল্লিরা। নামাজ শেষে বিশ্বকে করোনা মুক্ত করতে এবং বিশ্ব শান্তি কামনায় আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন। পরে আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় পশু কোরবানির মধ্যে দিয়ে ঈদ উল আজহা উদযাপন করেন।সকালে রাঙামাটির প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় তবলছড়ি মসজিদে। এখানে দুই দফা সকাল ৮ টায় এবং সকাল ৯ টায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে খুলনায় পবিত্র ঈদুল অাযহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৮টায় খুলনা টাউন জামে মসজিদে ঈদের প্রথম ও প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান জামাতে ইমামতি করেন খুলনা টাউন জামে মসজিদের খতিব আলহাজ্ব মাওলানা মোহাম্মদ সালেহ।
এরপর টাউন জামে মসজিদে সকাল ৯ টায় দ্বিতীয় ও সকাল ১০ টায় শেষ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া খুলনা কোর্ট জামে মসজিদেও সকাল সাড়ে ৮টায় একটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের জামাতে অংশ নিতে খুলনা নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা আসেন।
মাওলানা মোহাম্মদ সালেহ ঈদের জামায়াতের আগের খুতবা ও বয়ানে কোরবানির তাৎপর্য তুলে ধরেন। ঈদের নামাজ ও খুতবা শেষে মোনাজাতে দেশ, জাতি, মুসলিম উম্মাহর শান্তি, অগ্রগতি, সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। ঈদ জামাতের আলোচনায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। একইসাথে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি, দেশ ও জাতির মুক্তি কামনা করা হয়।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্যে রংপুরে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। সকাল আটটায় প্রধান ঈদজামাত অনুষ্ঠিত হয় রংপুর জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে। এর এক ঘণ্টার পরে একই মসজিদে দ্বিতীয় ঈদ জামাতে নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।
সেখানে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল ওয়াহাব ভূঞা, রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, জেলা প্রশাসক আসিব আহসান ছাড়াও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতা, বিশিষ্টজন এবং সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেন।