যেসব ভুলের কারণে নামাজ হয় না



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
নামাজ সহিহ-শুদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয় মাসয়ালা জানা জরুরি

নামাজ সহিহ-শুদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয় মাসয়ালা জানা জরুরি

  • Font increase
  • Font Decrease

একজন মুসলিম হিসেবে আমরা নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি। অনেক সময় না-জানা কিংবা অবহেলার কারণে নামাজে বিভিন্ন ধরনের ভুল হয়। সেসব ভুলের দরুণ কখনও নামাজ মাকরূহ হয়ে যায়, আবার কখনও নামাজই হয় না; নষ্ট হয়ে যায়। তাই এখানে বহুল প্রচলিত কতিপয় ভুল-ভ্রান্তি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

তাকবিরে তাহরিমা মনে মনে বলা

অনেকে নামাজের শুরুতে উভয় হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে হাত বাঁধাকেই তাকবিরে তাহরিমা মনে করে। ফলে তারা আর মুখে তাকবির উচ্চারণ করে না। এটি একটি মারাত্মক ভুল। এর দ্বারা নামাজ সহিহ হয় না। কারণ নামাজের শুরুতে স্পষ্ট উচ্চারণে তাকবির তথা ‘আল্লাহু আকবার’ বলা ফরজ। যেহেতু এই তাকবিরের মাধ্যমে নামাজ বহির্ভূত সব কাজ হারাম হয়ে যায় তাই একে ‘তাকবিরে তাহরিমা’ বলা হয়। এই তাকবির স্পষ্টভাবে মুখে উচ্চারণ করে বলা ফরজ।

সুতরাং কেউ যদি শুধু দুই হাত উঠিয়ে নাভির নিচে বেঁধে নেয়; কিন্তু মুখে ‘আল্লাহু আকবার’ না বলে বা মনে মনে বলে তাহলে তার নামাজের প্রথম ফরজ আদায় না হওয়ার কারণে তার নামাজ সহিহ হবে না। অতএব তাকবির স্পষ্টভাবে মুখে উচ্চারণ করতে হবে। শুধু মনে মনে বলা যথেষ্ট হবে না। -মারাকিল ফালাহ : ২১৮

ইমামের আগে তাকবিরে তাহরিমা শেষ করে ফেলা

অনেক মুসল্লিকে দেখা যায়, তারা ইমামের সঙ্গে তাকবিরে উলা ধরার জন্য একেবারে ইমামের সঙ্গে সঙ্গেই তাকবিরে তাহরিমা বলে। এক্ষেত্রে অসতর্কতার দরুণ কখনও কখনও মুক্তাদির নামাজ অশুদ্ধ হয়ে যায়। কেননা মুক্তাদির নামাজ শুদ্ধ হওয়ার জন্য তার তাকবিরে তাহরিমা, ইমামের তাকবিরে তাহরিমা বলে শেষ করার পরে শেষ হওয়া জরুরি। ইমামের তাকবিরে তাহরিমা শেষ হওয়ার আগেই যদি মুক্তাদির তাকবির বলা শেষ হয়ে যায় তাহলে তার ইক্তেদা ও নামাজ সহিহ হবে না।

অনেক সময় ইমাম সাহেবের তাকবিরে তাহরিমা দীর্ঘ করে টেনে বলার কারণে মুক্তাদির তাকবির তার আগে শেষ হয়ে যায়। ফলে মুক্তাদির নামাজ শুদ্ধ হয় না। অতএব মুক্তাদিদের এ ভুল থেকে বাঁচানোর জন্য ইমামের কর্তব্য হলো, তাকবিরে তাহরিমার ‘আল্লাহ’ শব্দের লামকে এক আলিফের চেয়ে বেশি দীর্ঘ না করা। -আদ দুররুল মুখতার : ১/৪৮০

আল্লাহু আকবারের ‘হামজা’ অথবা ‘বা’ কে টেনে পড়া

কোনো কোনো মুসল্লি ও ইমামকে নামাজের মধ্যে তাকবির বলার সময় ‘আল্লাহু আকবার’-এর (বা) টেনে পড়তে শোনা যায়। এটা একটা বড় ভুল। কারণ (বা) এ ‘মদ’ করলে অর্থাৎ টেনে দীর্ঘ করে পড়লে তার অর্থে চরম বিকৃতি ঘটে। বিনা মদে ‘আকবার’ অর্থ ‘সবচেয়ে বড়’। আর মদ সহকারে ‘আকবা-র’ শয়তানের বাচ্চার নাম। এ ভুলটি যদি তাকবিরে তাহরিমার মধ্যে হয় তাহলে নামাজ আরম্ভই হবে না। আর নামাজের ভেতরের কোনো তাকবিরে হলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। তদ্রূপ ‘আল্লাহু আকবার’ এর প্রথম অথবা দ্বিতীয় ‘আ’-কে টেনে দীর্ঘ করে পড়লে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। কেননা সেক্ষেত্রেও তাকবিরের অর্থ ও মর্ম ভীষণভাবে পাল্টে যায়। সেক্ষেত্রে তা প্রশ্নবোধক বাক্যে পরিণত হয়, যা আল্লাহতায়ালার বড়ত্ব ও মহত্ত্বে সংশয় প্রকাশ করে। -মারাকিল ফালাহ : ২২৩

নামাজ একটি ফরজ ইবাদত

মনে মনে কেরাত পড়া

যে সব নামাজে আস্তে কেরাত পড়া হয়, সেসব নামাজে অনেককে দেখা যায়, তারা মুখ-ঠোঁট না নেড়ে মনে মনে সুরা-কেরাত পড়েন। তারা হয়তো মনে করেন, আস্তে কেরাত পড়া মানে মনে মনে পড়া। এই ধারণা ঠিক নয়। কারণ নামাজে কেরাত আস্তে পড়ার অর্থ হলো- নিচু স্বরে তেলাওয়াত করা। আর মনে মনে পড়া কোনোক্রমেই নিম্নস্বরে পড়া নয়।

আস্তে কেরাত পড়ার সর্বোত্তম পদ্ধতি হলো- এমনভাবে পড়া, যেন পাঠকারী নিজে শুনতে পায়। আর সর্বনিম্ন এতটুকু তো অবশ্যই জরুরি যে, সহিহ-শুদ্ধভাবে হরফ উচ্চারণ করা হবে এবং ঠোঁট-জিহবার নড়াচড়া দেখা যাবে। হাদিস শরিফে আছে, জোহর ও আসর নামাজে হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কেরাত পড়তেন, তখন কোনো কোনো আয়াত সাহাবায়ে কেরামও কখনও কখনও শুনতে পেতেন।

হজরত আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জোহর ও আসর নামাজের প্রথম দুই রাকাতে সুরা ফাতেহার সঙ্গে আরেকটি সুরা পড়তেন। কখনও কোনো কোনো আয়াত আমাদের শুনিয়ে পড়তেন।’ –সহিহ বোখারি : ৭৭৮

অতএব কেরাত পড়ার সময় জিহবা ও ঠোঁট ব্যবহার করে মাখরাজ থেকে সহিহ-শুদ্ধভাবে হরফ উচ্চারণ করতে হবে। অন্যথায় শুধু মনে মনে পড়ার দ্বারা কেরাত আদায় হবে না এবং নামাজও সহিহ হবে না। -মারাকিল ফালাহ : ২১৯

রুকুতে গিয়ে তাকবিরে তাহরিমা বলা শেষ করা

অনেকে জামাতে ইমামকে রুকু অবস্থায় পেলে রাকাত ধরার জন্য দ্রুত রুকুতে চলে যায়। এ ক্ষেত্রে অনেকেই তাকবিরে তাহরিমা রুকুতে গিয়ে বলে। আবার অনেকে পূর্ণ তাকবির রুকুতে গিয়ে না বললেও দাঁড়িয়ে তাকবির শুরু করে, কিন্তু শেষ করে রুকুতে গিয়ে। অর্থাৎ দাঁড়ানো অবস্থায় ‘আল্লাহু’ বলে আর রুকু অবস্থায় গিয়ে ‘আকবার’ বলে। এটা একটা বড় ভুল। এভাবে তাকবিরে তাহরিমা বললে নামাজ হবে না। বরং পুরো তাকবিরে তাহরিমা দাঁড়িয়ে বলা জরুরি। পূর্ণ তাকবির কিংবা তাকবিরের কিছু অংশও যদি রুকুতে গিয়ে (অর্থাৎ হাত হাঁটু পর্যন্ত পৌঁছার পর) বা তার কাছাকাছি গিয়ে শেষ হয় তাহলে নামাজ হবে না। অবশ্য দাঁড়ানোর কাছাকাছি থাকা অবস্থায় পূর্ণ তাকবিরে তাহরিমা বলা শেষ করলেও নামাজ হয়ে যাবে।

অতএব তাকবিরে তাহরিমা পুরোটাই দাঁড়ানো বা দাঁড়ানোর কাছাকাছি অবস্থার ভেতর বলে শেষ করতে হবে। -খুলাসাতুল ফাতাওয়া : ১/৮৪

ইমামের রুকু থেকে উঠার পর রুকুতে যাওয়া

কোনো কোনো সময় এমন হয় যে, জামাত চলাকালীন আগন্তুক মুসল্লি তাকবিরে তাহরিমা বলে রুকুতে যাচ্ছে আর এদিকে ইমাম ‘সামিয়াল্লাহ’ বলে রুকু থেকে উঠে গেছেন। এক্ষেত্রে উক্ত মুসল্লি ইমামের সঙ্গে রুকু না পাওয়ার কারণে ওই রাকাত পায়নি। কেননা রাকাত পাওয়ার জন্য ইমামের সঙ্গে রুকু পাওয়া জরুরি। আর রুকু পাওয়ার জন্য এক মুহূর্তের জন্য হলেও ইমামের সঙ্গে রুকুতে শরিক হওয়া আবশ্যক। যদি কেউ ইমামকে রুকু অবস্থায় এক মুহূর্তের জন্যও না পায়; বরং ইমামের রুকু থেকে উঠে যাওয়ার পর, অর্থাৎ তার মাথা এবং হাঁটু থেকে হাত উঠে যাওয়ার পর রুকুতে যায় তাহলে সে ওই রাকাত পেয়েছে বলে ধর্তব্য হবে না।

অনেক মুসল্লি ইমামের রুকু থেকে উঠে যাওয়ার পর রুকুতে গিয়ে সেই রাকাত পেয়েছে বলে ধারণা করে এবং এক রাকাত কম আদায় করে। এতে তার নামাজ হয় না।

মুসল্লিদের এই মারাত্মক ভুল থেকে রক্ষার জন্য ইমামদের উচিত হলো, রুকু থেকে উঠা আরম্ভ করতেই তাকবির বলা শুরু করা। কেননা কোনো কোনো ইমাম সাহেব রুকু থেকে উঠার সময় কিছুদূর উঠার পর তাকবির বলেন। ফলে নবাগত মুসল্লি দূর থেকে মুসল্লিদেরকে রুকু অবস্থায় দেখে তাকবিরে তাহরিমা বলে রুকুতে যায়। অথচ তখন ইমাম সাহেব রুকু অবস্থায় নেই। এতে সে ইমামের সঙ্গে রুকু পেয়েছে মনে করে সে হিসেবে নামাজ পড়ার দরুণ তার নামাজ বাতিল হয়ে যায়। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/১২০

প্রথম সালামের পর ইমামের ইক্তেদা করা

অনেককে দেখা যায়, শেষ বৈঠকে যখন ইমাম সাহেব ডানদিকে সালাম ফিরিয়ে ফেলেন তখনও তারা তার ইক্তেদা করেন। এটাও ঠিক নয়। কারণ প্রথম সালামের ‘আসসালামু’ শব্দটি বলার সঙ্গে সঙ্গেই ইমামের ইক্তেদার সময় শেষ হয়ে যায়। এরপর আর ইমামের ইক্তেদা করা সহিহ নয়। সুতরাং এ অবস্থায় মুসল্লি ইমামের ইক্তেদা করলে তার নামাজ আদায় হবে না। -হাশিয়াতুত তাহতাবি আলাল মারাকি : ২৫১

 

 

ফের বাড়ল হজ নিবন্ধনের সময়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। বর্ধিত সময় অনুযায়ী আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে।

সোমবার (২৭ মার্চ) নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৩৩৯ জন। কোটা পূরণে এখনো নিবন্ধন বাকি রয়েছে ৯ হাজার ৮৫৯। এর মধ্যে সরকারিতে ফাঁকা ৫ হাজার ১০৮, বেসরকারিতে ৪ হাজার ৭৫১।

হজ অনুবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে কতজন হজ করতে যাবেন তা সৌদি সরকারকে জানানোর শেষ তারিখ আগামী ৯ মে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এবার হজের খরচ বেশি হওয়ায় শুরু থেকেই নিবন্ধনে ভাটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু তারা তো কাউকে ডেকে এনে নিবন্ধন করাতে পারেন না।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহ্জ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন এবং অবশিষ্ট এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন।

;

১৮ এপ্রিল পবিত্র লাইলাতুল কদর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শুক্রবার থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হচ্ছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাতে তারাবির নামাজ আদায় করেন। শেষ রাতে প্রথম সেহরি খাওয়া হবে।

এই হিসেবে আগামী ১৮ এপ্রিল (২৬ রমজান) মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে কদর পালিত হবে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, মুসলমানদের জন্য রমজান মাস রহমত, বরকত ও মাগফেরাতের বার্তা বয়ে আনে। সংযমের এ মাসে মুসলিমরা আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় ইবাদত-বন্দেগি করে থাকেন।

;

রোজার পুরস্কার মিলবে যেসব আমলে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র মাহে রমজানে কোনোভাবেই আল্লাহতায়ালার অসন্তুষ্টিমূলক কোনো কাজে লিপ্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সর্বোপরি মাহে রমজান ও রোজা মহান মালিককে সন্তুষ্ট করার সুবর্ণ অবসর। এ জন্য আমাদের মাহে রমজান ও রোজা হওয়া চাই হারাম, কবিরা গোনাহ ও নাফরমানি মুক্ত। মিথ্যা, প্রতারণা, অন্যায়, অত্যাচার, পাপাচার, সুদ, ঘুষ ও দুর্নীতি মুক্ত হওয়া। তবেই আমরা রমজান ও রোজার পূর্ণাঙ্গ পুরস্কার গ্রহণ করতে পারব।

আল্লাহ পাককে সন্তুষ্ট করার, মুত্তাকি হওয়ার লক্ষ্য অর্জন করতে পারব। এ লক্ষে রমজান মাসে কিছু বিষয়ের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখা দরকার। এর অন্যতম হলো-

সময়ের অপচয়রোধ

জীবন সেকেন্ড, মিনিট, ঘণ্টার সমষ্টি। এই ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র সময়ই আমার জীবন। জীবনের একটি মুহূর্ত বেখেয়াল, অবহেলায় কাটিয়ে দেওয়া মানে এই সময়টা নষ্ট করে ফেলা। সে আর কখনও ফেরত আসবে না। এক একটি মুহূর্ত জীবনে একবারই আসে। প্রত্যেকটি দিন আগমন করে আমাকে আহবান করে তাকে ভালোভাবে ব্যবহার করার জন্য। সে এও বলে দেয়, হিসাবের দিনেই কেবল সে আবার আমার সামনে হাজির হবে। যে ব্যক্তি সময়ের সদ্ব্যবহার করে, দুনিয়ার জীবনে সে সফলতা পায়। আমার রমজান ৩০ দিনের হলে ২৫,৯২,০০০ সেকেন্ডের সমষ্টি। রমজানের চাঁদ উদিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কমতে শুরু করে। আমার কাছে রমজানের প্রতিটি সেকেন্ড মূল্যবান। আমি, আপনি যদি হিসাব করে এই সেকেন্ডগুলো কাজে লাগাতে পারি, তবে আমি আপনি অবশ্যই সফল হতে পারব। একজন পরীক্ষার্থী যেমন প্রত্যেকটি সেকেন্ডের হিসাব রেখে উত্তর লিখতে থাকে। তেমনি আমার আপনারও এই মূল্যবান সময়ের যথাযথ কদর করে রোজা পালন করলে, এই বছরের রমজান আমার আপনার জীবনে এক ব্যতিক্রম রমজান মনে হবে এবং এক ব্যতিক্রম ফল বয়ে আনবে। তাই গল্পগুজব, আড্ডা, টিভি দেখা, ফেসবুক অনলাইনে সময় ব্যয়, অবসরে শুধু ঘুমানো, এখানে সেখানে ঘুরাফেরা করা ইত্যাদি কাজগুলো বর্জন করি। তবে আমার রমজান হবে প্রাণবন্ত।

কথা হোক কম

যখন আপনি আমি কথা কম বলব, তখন অনেক অনর্থক এমন কি ফাহেশা কথা থেকে বেঁচে যাব। জীবনের অনেক সময়ও বেঁচে যাবে। বেশি কথা বললে, গীবত, পরনিন্দা, মিথ্যা এ ধরণের অনেক কথা মুখ ফঁসকে বেরিয়ে যেতে পারে। যে সময় আমি অযথা গল্প কথায় লিপ্ত হব, এই সময়টাকে আমি কোরআন তেলাওয়াত, তাফসির অধ্যয়ন, হাদিস পাঠ, বিভিন্ন মাসনুন দোয়া, ইস্তেগফার, দরুদ শরিফ পাঠ, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শেখানো বিভিন্ন জিকিরে মশগুল হতে পারি। অনায়াসে অনেক বরকতের ভাগিদার হতে পারি।

কাজে গতিময়তা

কাজ ছাড়া জীবন অচল, আমরা কেউ চাকুরি করি, কেউ ব্যবসা, কেউ কৃষিকাজ ইত্যাদি। এই রমজানে আমার কাজের সময়কে কমিয়ে আনি। কাজের গতি বাড়িয়ে দেই। কাজের গতি বাড়িয়ে কাজের সময়কে কমিয়ে আনি। এই বেঁচে যাওয়া সময়টিকে আমি ইবাদত-বন্দেগি, কোরআন তেলাওয়াত, দরুদ, ইস্তেগফার পাঠে ব্যয় করি। তাহলে দেখা যাবে কাজের এই গতিময়তা পুরো বছর আমাকে বরকত দেবে। আমার অনেক সময় হাতে থাকবে, বিশেষভাবে মাওলাকে ডাকার জন্য আমার সময়ের অভাব হবে না।

সোশ্যাল মিডিয়া বর্জন

রমজান মাস আমার জন্য আমার মহান রবের এক মহান উপহার। এই মাস সওয়াব কামাইয়ের মাস। এই মাস সোশ্যাল নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকার মাস নয়। আপনার বিশেষ কোনো প্রয়োজনে আপনি নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকতে পারেন। কিন্তু ফেসবুক, টুইটার, ইনস্ট্রাগ্রাম, ইউটিউভ ইত্যাদি মাধ্যমগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। আপনি হয়তো ভালো কিছু দেখতে চান, ভালো কিছু শুনতে চান। এই ভালো দেখার সঙ্গে, ভালো শোনার সঙ্গে কিছু খারাপও আপনার নজরে এসে যাবে। এই সময় আমি আপনি নেটওয়ার্কহীন অন্য ইবাদতে মশগুল হই। যার নেটওয়ার্ক আমার আর আমার রবের সঙ্গে সংযোগ করে দেবে- ইনশাআল্লাহ।

;

শুক্রবার থেকে রোজা শুরু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ বুধবার দেশের কোথাও চাঁদ দেখা না যাওয়ায় আগামী শুক্রবার থেকে রোজা শুরু হচ্ছে।

বুধবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে বৈঠক করে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি এ কথা জানায়।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ধর্মমন্ত্রী ও কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ মতিউর রহমান।

বৈঠক শেষে জানানো হয়, বাংলাদেশের কোথাও পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হবে রমজান মাস গণনা। সে ক্ষেত্রে বৃহস্পতিবার দেশের মসজিদগুলোতে বাদ এশা তারাবির নামাজের মধ্য দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পবিত্র রমজানের কার্যক্রম শুরু করবেন। এরপর ওই দিন দিবাগত ভোররাতে সাহ্‌রি খেয়ে প্রথম রোজা রাখতে হবে।

;