ইহুদিদের ভুল ভাঙতে হিব্রু ভাষায় কোরআন অনুবাদ
হিব্রু ইসরাইলের ভাষা। ২০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে মৌখিক ভাষা হিসেবে এটি বিলুপ্ত হয়ে যায়। কিন্তু লিখিত ভাষা হিসেবে এটি আরও বহু শতক টিকে থাকে। ১৯ শতকের শেষে ও বিংশ শতাব্দীর শুরুতে কথ্য ভাষা হিসেবে এটির পুনর্জন্ম হয়। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রধানত রাশিয়া থেকে বর্তমান ইসরাইলে ইহুদিরা তাদের নিজস্ব বিভিন্ন মাতৃভাষা যেমন আরবি, ইডিশ, রুশ, ইত্যাদির পরিবর্তে আধুনিক হিব্রু ভাষায় কথা বলা শুরু করেন। ১৯২২ সালে হিব্রু ব্রিটিশ ফিলিস্তিনের সরকারি ভাষার মর্যাদা পায়।
ইসরাইলে প্রায় ৯০ লাখের বেশি লোক হিব্রু ভাষায় কথা বলেন। এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রায় কয়েক লক্ষ লোক হিব্রুতে কথা বলেন। বর্তমানে আরবির পাশাপাশি হিব্রু ইসরাইলের সরকারি ভাষা। আরব সেক্টরগুলো বাদে ইসরাইলের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি কাজে হিব্রু ব্যবহার করা হয়। সরকারি স্কুলগুলোতে হিব্রু বা আরবি ভাষায় শিক্ষাদান করা হয়, তবে আরবি স্কুলগুলিতে হিব্রু দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া বাধ্যতামূলক। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েও হিব্রু ভাষাই শিক্ষাদানের মাধ্যম। ইসরেইলের সংবাদপত্র, বই, রেডিও ও টেলিভিশনের প্রধান ভাষা হিব্রু।
এই বিপুল সংখ্যক হিব্রুভাষীদের কাছে কোরআনে কারিমে সঠিক বাণী পৌঁছাতে হিব্রু ভাষায় পবিত্র কোরআন অনুবাদের উদ্যোগ নিয়েছে মিসর। হিব্রু ভাষায় কোরআনের কিছু অনুবাদ থাকলেও সেগুলোতে ইহুদি প্রাচ্যবিদরা ভুল ব্যাখ্যা দেওয়ায় মিসর এ উদ্যোগ নিয়েছে।
সম্প্রতি মিসরের প্রতিভা ও বৃত্তি বিষয়ক (এনডোমেন্ট) মন্ত্রণালয় এ প্রকল্প গ্রহণের কথা জানিয়েছে। এক সংবাদ সম্মেলনে মিসরের ওই মন্ত্রণালয় জানায়, হিব্রু ভাষায় আগে ইহুদিদরা পবিত্র কোরআনের যে অনুবাদ করেছে, তাতে অনেক ভুল আছে। এ কারণে ইহুদিদের ভুল ভাঙানোর জন্য এবার সঠিক তথ্যসহ হিব্রু ভাষায় পবিত্র কোরআন অনুবাদের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মিসরের এ সরকারি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত মোহাম্মদ মোক্তার গোমা বলেন, আমরা বেশ উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, আগের হিব্রু ভাষায় অনুবাদ করা কোরআন শরিফে অনেক ভুল ব্যাখা দিয়েছেন ইহুদি প্রাচ্যবিদরা। এ কারণে বিশ্বের ১ কোটি ৪০ লাখ হিব্রুভাষী ইহুদির মাধ্যে পবিত্র কোরআনের সঠিক বাণী পৌঁছে দেওয়ার জন্য মিসর এ উদ্যোগ নিয়েছে।