তুরস্কের পেরেকবিহীন মসজিদ

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

তুরস্কের পেরেকবিহীন মসজিদ

তুরস্কের পেরেকবিহীন মসজিদ

ঘুজালি মসজিদ। এটি তুরস্কের সামসুন প্রদেশে পেরেকবিহীন নির্মিত একটি কাঠের মসজিদ। প্রায় আটশত বছরের পুরোনো মসজিদটি নির্মাণ কৌশলের জন্য আলোচিত ও বিখ্যাত। যে কারণে মসজিদটি দেখতে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক সেখানে ভিড় করেন।

উত্তর তুরস্কে অবস্থিত ৮০০ বছরের পুরোনো এই কাঠের মসজিদ দক্ষতামূলক কাজের অনন্য নিদর্শন। যে কারণে কয়েক শতক অতিবাহিত হওয়ার পর এখনও তা অক্ষুণ্ণ। স্থানীয়দের মতে, তুরস্কের সামসুন প্রদেশের চাহার শাম্বে অঞ্চলে ১২০৬ খ্রিস্টাব্দে কোনো পেরেক ও স্ক্রুর ছাড়া মসজিদটি নির্মিত হয়। প্রাচীন কাঠের মসজিদটি এখনও ঠিক আছে। আনাতোলিয়ান স্থাপত্যশৈলীর শক্তিশালী নিদর্শন এই মসজিদের দেয়ালগুলো এমনভাবে নির্মিত যে, ভূমিকম্পপ্রবণ তুরস্কে আট শতাব্দী পরেও এর কোনো ক্ষতি হয়নি। মসজিদটিতে প্রায় তিন শতাধিক মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।

বিজ্ঞাপন

আনাতোলিয়ান নিউজ এজেন্সিকে মসজিদের ইমাম আহমাদ ওজকুস জানিয়েছেন, স্থানীয় কিংবদন্তি অনুসারে, মসজিদটি সেলজুক তুর্কি সুলতান গিয়াস আলাদিন কায়খোসরোর শাসনামলে নির্মিত হয়েছিল।

প্রত্নতাত্ত্বিকরা বলছেন, নব্বইয়ের দশকে তারা ভবনটি পরিদর্শন করেন। তারা মসজিদের কাঠের দেয়ালের নমুনা নিয়ে গবেষণা করেছেন দেখেছেন, এটি আট শতাব্দীর বেশি পুরোনো। ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদটিকে তুরস্কের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন
মসজিদের ভেতরের দৃশ্য

 

গবেষণায় দেখা গেছে, মসজিদের দেয়াল নির্মাণে এক মিটারের বেশি ব্যাসের ওক কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। যেগুলোকে খাঁজ কেটে বোর্ড ও কলামের সঙ্গে বিশেষভাবে সংযুক্ত হয়েছে। কাঠের তক্তাগুলোর এমন আন্তঃসংযুক্ত করা হয়েছে পেরেকের ব্যবহার এড়াতে। এমন নির্মাণ শৈলীর কারণে মসজিদটি এখনও পেরেকবিহীন কাঠামোয় টিকে আছে।

বিল্ডিংয়ের ছাদের কাঠামো এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে, যা ভূমিকম্প থেকে রক্ষা করতে সক্ষম। ভূমিকম্পে এর মূল কাঠামোর কম্পন সৃষ্টি হবে কিন্তু ভেঙে পড়বে না। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি শক্তিশালী ভূমিকম্পের কারণে মসজিদটি ভেঙেও পড়ে, তাহলে কলামের কোণ এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে, যা মক্কার দিকে হেলে পড়বে।

এছাড়া বিল্ডিংয়ের ভিত্তি মাটি থেকে ৬০ থেকে ৭০ সেন্টিমিটার উঁচুতে বড় পাথরের ওপর কাঠ ব্যবহার করে স্থাপন করা হয়েছে। কাঠামোগত বৈশিষ্ট্য ছাড়াও মসজিদের দেয়ালে আঁকা রঙিন সেলজুক এবং অটোম্যান মোটিফ রয়েছে।

মসজিদটিতে মাঝে-মধ্যে সামান্য সংস্কার কাজ করা হয়। তবে শক্তিশালী ও ব্যাপক সংস্কার কাজ করা দরকার। যেন, আশ্চর্যজনক এই স্থাপনাটি আরও বহুকাল টিকে থাকে।