ফরজ নামাজ ছেড়ে দেওয়ার শাস্তি

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ফরজ নামাজ ছেড়ে দেওয়া ভয়াবহ পাপের কাজ

ফরজ নামাজ ছেড়ে দেওয়া ভয়াবহ পাপের কাজ

ফরজ নামাজ আদায় না করা ভয়াবহ গোনাহের কাজ। পদ্ধতিগতভাবে পার্থক্য থাকলেও আগের নবীদের যুগেও নামাজের বিধান ছিল। কিন্তু তাদের পরবর্তী লোকেরা নামাজের ব্যাপারে অবহেলা করে। এর পরিণতি হলো- জাহান্নাম। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নবী ও হেদায়েতপ্রাপ্তদের পর এলো এমন এক অপদার্থ বংশধর, যারা নামাজ বিনষ্ট করল এবং প্রবৃত্তির পূজারি হলো। সুতরাং তারা ‘গাই’ নামক জাহান্নামের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে। তবে যারা এরপর তওবা করে নিয়েছে, ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে তারাই তো জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি কোনো ধরনের জুলুম করা হবে না।’ -সুরা মারইয়াম : ৫৯-৬০

কোরআনে কারিমের অন্য আয়াতে এসেছে, কেয়ামতের দিন জাহান্নামীদের জিজ্ঞাসা করা হবে- কেন তোমরা সাকার নামক জাহান্নামে এলে? তারা বলবে, আমরা তো নামাজি ছিলাম না এবং আমরা মিসকিনদের খাবার দিতাম না; বরং আমরা সমালোচনাকারীদের সঙ্গে সমালোচনায় নিমগ্ন থাকতাম। এমনকি আমরা প্রতিদান দিবসকে (কেয়ামত) অস্বীকার করতাম। আর এভাবেই হঠাৎ আমাদের মৃত্যু এসে গেল।’ -সুরা মুদ্দাসসির : ৩৮-৪৭

বিজ্ঞাপন

হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘কোনো ব্যক্তি এবং কুফর ও শিরকের মধ্যে ব্যবধান শুধু নামাজ না পড়া। যে নামাজ ছেড়ে দিল সে কাফের হয়ে গেল (কাফেরের মতো কাজ করল)।’ -সহিহ মুসলিম : ৮২

অন্য হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আমাদের ও কাফেরদের মধ্যে ব্যবধান শুধু নামাজের। যে নামাজ ত্যাগ করল সে কাফের হয়ে গেল।’ -তিরমিজি : ২৬২১

বিজ্ঞাপন

ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ ছেড়ে দিলে মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তির ওপর থেকে তার জিম্মাদারি বা রক্ষণাবেক্ষণ তুলে নেন। হজরত মুআজ (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে দশটি নসিহত করেন, তার মধ্যে বিশেষ একটি এটাও যে তুমি ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ ত্যাগ করো না। কারণ যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ ত্যাগ করল তার ওপর আল্লাহতায়ালার কোনো জিম্মাদারি থাকল না।’ -মুসনাদ আহমাদ : ৫/২৩৮

নামাজ না পড়লে ইহকালেও বহু ক্ষতি সাধিত হয়। হজরত বুরাইদা (রা.) বলেন, নবী কারিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি আসরের নামাজ পরিত্যাগ করল তার সব আমল বরবাদ হয়ে গেল।’ -সহিহ বোখারি : ৫৫৩, ৫৯৪

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তির আসরের নামাজ ছুটে গেল তার পরিবারবর্গ ও ধন-সম্পদের যেন বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল।’ -সহিহ বোখারি : ৫৫২

নামাজ পড়া মুসলিমদের একটি বাহ্যিক নিদর্শন। তাই হজরত উমর (রা.) বলতেন, ‘নামাজ ত্যাগকারী নির্ঘাত কাফের।’ -বায়হাকি : ১৫৫৯, ৬২৯১

হজরত আলি (রা.) বলেন, ‘যে নামাজ পড়ে না সে কাফের।’ -বায়হাকি : ৬২৯১

হজরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.) বলেন, ‘যে নামাজ পড়ে না সে মুসলমান নয়।’ -বায়হাকি : ৬২৯১

অর্থাৎ নামাজ পরিত্যাগ করা কাফেরদের কাজ, যে মুসলমান নামাজ পড়ল না সে যেন কাফেরের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ কাজ করল।