শীতে বিপন্ন অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ান



আশিকুল হামিদ, অতিথি লেখক, ইসলাম
শৈত্যপ্রবাহ এবং শীতের তীব্রতা কিছুটা কমলেও কয়েকদিনের মধ্যে নতুন পর্যায়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে

শৈত্যপ্রবাহ এবং শীতের তীব্রতা কিছুটা কমলেও কয়েকদিনের মধ্যে নতুন পর্যায়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশে হঠাৎ শীত বেড়েছে। শীতের কারণে নানা ধরনের রোগের প্রকোপ বেড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের উদ্ধৃতি দিয়ে ২৬ ডিসেম্বর (২০২১) বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ১ থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে রাজধানীসহ সারাদেশে দুই লাখ ৪৭ হাজার ২৭৩ জন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। সেই সঙ্গে রয়েছে করোনার নতুন ভেরিয়্যান্ট ওমিক্রনসহ আরও কিছু রোগ।

এরই মধ্যে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, শৈত্যপ্রবাহ এবং শীতের তীব্রতা কিছুটা কমলেও কয়েকদিনের মধ্যে নতুন পর্যায়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এবারের প্রতিটি শৈত্য প্রবাহ তিন থেকে চারদিন পর্যন্ত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে বাড়তে পারে শীতের নানা রোগ-বালাই।

শীতের দিনে শীত বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক হলেও আমরা উদ্বিগ্ন আসলে গরীব এবং সাধারণ মানুষের জন্য। কারণ, মূলত অর্থকষ্টসহ দারিদ্র্যের কারণে দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষের পক্ষেই শাল, উলের সোয়েটার এবং অন্যান্য গরম কাপড় কেনা সম্ভব নয়। তার ওপর বিগত প্রায় দু’বছর ধরে করোনার কারণে মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা অনেক বেশি খারাপ হয়ে গেছে। ফলে শীতে তাদের কষ্ট সীমা ছাড়িয়ে যাবে- ইতিমধ্যে যেতেও শুরু করেছে।

বেশ কয়েক বছর ধরে আবহাওয়ায়ও যথেষ্ট পরিবর্তন ঘটেছে। ১৯৭০-এর দশক পর্যন্তও একটা সময় ছিল, যখন পৌষ আসতে না আসতেই প্রবল শীতের কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবন অচল হয়ে পড়তো। মাঘ এলে তো কথাই ছিল না। মাঘের শীতে তখন আসলেও কম্বল কাঁপতো। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে আবহাওয়ার আচরণে অকল্পনীয় পরিবর্তন ঘটেছে। চলতি বছরের শীতের কথাই ধরা যাক। এবার পৌষের শুরু থেকে শীত পড়তে শুরু করলেও শীতের তীব্রতা কিন্তু তেমন অনুভূত হয়নি। মানুষকে অতীতের মতো কষ্ট করতে হয়নি। ব্যতিক্রমও অবশ্য ছিল। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় এবং কুড়িগ্রাম ও চুয়াডাঙ্গাসহ আরও কিছু এলাকায় প্রচন্ড শীতে জনজীবন প্রায় অচল হয়ে পড়ে। এমন অবস্থার পেছনে প্রধান কারণ ছিল তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। এ সময় কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছিল দেশের অধিকাংশ অঞ্চল। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, জানুয়ারি মাসে দফায় দফায় শৈত্যপ্রবাহ চলবে। এর অর্থ, পৌষ পেরিয়ে মাঘ মাসেরও বেশিরভাগ সময় দেশে তীব্র শীত থাকবে।

প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে স্বাভাবিক হলেও এবারের শীতে সাধারণ মানুষের জীবনে এরই মধ্যে নানামুখী অসুখ ও বিপদ চেপে বসেছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে, সর্দি-কাশি তো হচ্ছেই, একই সঙ্গে ডায়ারিয়া, নিউমোনিয়া ও হাঁপানির মতো রোগ-বালাইও ছড়িয়ে পড়েছে, যেগুলো সাধারণত শীতের সঙ্গে এসে থাকে। প্রচন্ড শ্বাসকষ্টেও ভুগছে অনেকে। পাশাপাশি রয়েছে শীতবস্ত্রের অভাব। খুব কম সংখ্যক মানুষের পক্ষেই সোয়েটার, জ্যাকেট, মাফলার ও শাল বা চাদর জাতীয় শীতবস্ত্র কেনা বা যোগাড় করা সম্ভব হয়েছে বা হচ্ছে। তারা লেপ-কম্বলও কিনতে বা যোগাড় করতে সক্ষম হয়নি। ফলে অসম্ভব কষ্টে দিন ও রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষ। রাজধানীর মতো বড় বড় শহরে-নগরে যারা দালান বা পাকা ভবনে বসবাস করেন, যাদের যখন-তখন যে কোনো ধরনের শীতবস্ত্র এবং লেপ-কম্বল কেনার সামর্থ্য রয়েছে, তাদের পক্ষে বিশেষ করে গ্রামের মানুষের কষ্টের কথা সহজে কল্পনা করতে পারার কথা নয়।

শুধু গ্রামের কথাই নয়, বিভিন্ন শহরে যে মেহনতী শ্রমিক ও গরীব মানুষের বসবাস, তারাও রয়েছে প্রচন্ড কষ্টের মধ্যে। প্রয়োজনীয় শীত বস্ত্র তো নেই-ই, সেই সঙ্গে তারাই আবার বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শীতজনিত অসুখ-বিসুখে। গণমাধ্যমের খবরে জানা যাচ্ছে, প্রথমত তাদের খুব কম সংখ্যকই সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছে। বেশিরভাগ হাসপাতালে সিট পাওয়া দূরে থাকুক, মেঝেতেও জায়গা মিলছে না এমনকি গুরুতর অসুস্থ শিশু ও বৃদ্ধদের। এর পর রয়েছে ওষুধ পাওয়ার পালা। খুব কম সরকারি হাসপাতালেই প্রয়োজনীয় ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে। বিনামূল্যে পাওয়ার প্রশ্ন ওঠে না, ন্যায্যমূল্যেও ওষুধ পাচ্ছে না মানুষ। ওষুধ কিনতে হচ্ছে বাইরের দোকান থেকে- যাদের সঙ্গে হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সসহ কর্মচারীদের বিশেষ লেনদেনের সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অর্থাৎ প্রচন্ড শীতের মধ্যেও চিকিৎসা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গরীব তথা সাধারণ মানুষেরা। এমন অবস্থা চলছে সারা দেশেই।

শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে অনেকের ভরসা আগুন

 

বলা দরকার, শীতের কারণে সৃষ্ট চরম বিপদের মধ্যে সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে ন্যক্কারজনক ছিনিমিনি কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সরকারের উচিত বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালগুলোর অনিয়ম ও বেআইনি কার্যকলাপের ব্যাপারে দ্রুত তৎপর হয়ে ওঠা। শিশু ও বৃদ্ধ নির্বিশেষে অসুস্থ সব মানুষ যাতে যাওয়া মাত্র ভর্তি ও চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগ পায় তার আয়োজন নিশ্চিত করা। সরকারকে একইসঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণ ওষুধও সরবরাহ করতে হবে, যাতে বিপন্ন কোনো মানুষকেই বেশি দাম দিয়ে বাইরের দোকান থেকে ওষুধ কিনতে না হয়। ওষুধ ও চিকিৎসা নিয়ে যারা দুর্নীতি করছে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

শীতবস্ত্র বিতরণের ব্যাপারেও সরকারের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া। সরকার চাইলে সমাজের বিত্তবান মানুষদের কাছ থেকে সোয়েটার, জ্যাকেট, কম্বল, মাফলার এবং শাল বা চাদর ও কম্বল জাতীয় শীতবস্ত্র সংগ্রহ করা সহজেই সম্ভব হতে পারে। এজন্য দরকার আন্তরিকতার সঙ্গে উদ্যোগ নেওয়া। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, এনজিও এবং সামাজিক সংগঠনেরও উচিত শীতে কষ্ট পাওয়া মানুষদের সাহায্যে এগিয়ে আসা। সেটা আমাদের জাতীয় দায়িত্বও বটে।

আমরা আশা করি, শীতের তীব্রতা এবং মানুষের কষ্ট আরও বাড়ার আগেই সরকারসহ সকল রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন এবং এনজিও মানুষের কষ্ট কমানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হয়ে উঠবেন।

   

মুজদালিফায় হাজিদের অবস্থানের অনিশ্চয়তা কেটেছে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মুজদালিফায় হাজিদের অবস্থানের দৃশ্য, ছবি : সংগৃহীত

মুজদালিফায় হাজিদের অবস্থানের দৃশ্য, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সৌদি আরবের রিফাদ তাওয়াফা কোম্পানির অধীনে সেবাগ্রহণকারী এজেন্সির ২৮ হাজার ৩৩ জন হজযাত্রীর মুজদালিফায় উন্মুক্ত মাঠে অবস্থানের অনিশ্চয়তা কেটেছে। সৌদি সরকারের নতুন নিয়মের পরিপ্রেক্ষিতে এসব হাজিদের হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান মুজদালিফায় অবস্থানের বিষয়টি অনিশ্চয়তায় পড়েছিল।

সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় এবং রিফাদ তাওয়াফা কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করে সৌদি আরবের জেদ্দায় বাংলাদেশের হজ অফিস এ বিষয়টির সুরাহা করেছে। গত ৪ মে বাংলাদেশ হজ অফিসে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে চিঠি পাঠিয়ে ২৮ হাজার ৩৩ জন হজযাত্রীর মুজদালিফায় উন্মুক্ত মাঠে অবস্থানের অনিশ্চয়তা দূর হওয়ার কথা জানানো হয়। পরে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে হজ এজেন্সিগুলোকে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।

হজের সবচেয়ে বড় দিন বলা হয় চতুর্থ দিনকে। এদিন মুজদালিফায় সারা রাত খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করতে হয়। সেখানে সুবহে সাদিক পর্যন্ত থাকা সুন্নত। আর সুবহে-সাদিক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত যেকোনো এক মুহূর্ত মুজদালিফায় অবস্থান করা ওয়াজিব। ফজরের নামাজ আদায় করে সূর্য ওঠার কিছু সময় আগে মিনার উদ্দেশে রওনা হওয়া। মুজদালিফায় অবস্থানের সময় মিনায় শয়তানকে মারার জন্য রাতে কিংবা সকালে পাথরের টুকরা সংগ্রহ করা।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২৪ সনের হজে বাংলাদেশ থেকে ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজযাত্রী হজপালন করবেন। আগামী ৯ মে থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হবে বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় এজেন্সিগুলোর কাছে পাঠানো চিঠিতে জানায়, মিনা-আরাফাত-মুজদালিফায় সেবা প্রদানকারী তাওয়াফা কোম্পানি রিফাদের অধীন ২৮ হাজার ৩৩ জন হাজির মিনা ও আরাফাতের তাঁবুতে অবস্থান এবং মুজদালিফায় খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপনের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

জেদ্দার বাংলাদেশ হজ অফিস জানিয়েছে, এবার হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরব পর্বের কার্যক্রমের মধ্যে অনেকগুলো কার্যক্রমে নতুন পদ্ধতির অবতারণা ঘটানো হয়েছে। এর মধ্যে সৌদি আরবে খরচের অর্থ প্রেরণ ব্যবস্থাপনা এবং মিনায় তাঁবু নির্ধারণ ব্যবস্থাপনা উল্লেখযোগ্য। বিগত বছরগুলোতে মিনা ও আরাফাতের তাঁবু তাওয়াফা কোম্পানিগুলো হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় থেকে বুঝে নিয়ে হাজি সংখ্যার অনুপাতে বিভিন্ন দেশের মিশন বরাবরে বা এজেন্সি বরাবরে বরাদ্দ প্রদান করত। সেই মোতাবেক অন্যান্য সেবা প্রদান করত। কিন্তু এ বছর হজ মিশনসমূহ বা এজেন্সিসমূহ সরাসরি অথবা মিশনের মাধ্যমে হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় থেকে তাঁবু গ্রহণ করে তাওয়াফা কোম্পানিকে বুঝিয়ে দেবে। তাওয়াফা কোম্পানি তাঁবুতে বিভিন্ন সেবা নিশ্চিত করবে।

সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাওয়াফা কোম্পানি নির্বাচন প্রক্রিয়া উন্মুক্ত থাকায় এ বছর এজেন্সিগুলো বিভিন্ন সংখ্যায় বিভক্ত হয়ে ছয়টি তাওয়াফা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। চুক্তিবদ্ধ কোম্পানির মধ্যে হাজি সংখ্যা অনুযায়ী রিফাদ তাওয়াফা কোম্পানি দ্বিতীয়। কোম্পানিটির অধীনে প্রায় ২৮ হাজারের বেশি বাংলাদেশি বেসরকারি মাধ্যমের হাজি চুক্তিবদ্ধ রয়েছে।

রিফাদের আওতাধীন হাজিদের জন্য মিনার তাঁবু গ্রহণের সময় জানা যায় যে, তাওয়াফা কোম্পানি রিফাদ বাংলাদেশি হাজিদের জন্য মাশায়ের এলাকায় তারাদ্দুদিয়া (সার্কুলার সার্ভিস) নামক পরিবহন ব্যবস্থা ব্যবহার করবে। এরূপ নতুন পরিবহন পদ্ধতি এবং সংশ্লিষ্ট বিশেষ এলাকার তাঁবু গ্রহণের ক্ষেত্রে সবাই একমত কি না তা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হলে উপস্থিত সবাই একমত হয়ে জানান যে, রিফাদের অধীন সব এজেন্সি তাদের হাজিদের জন্য তারাদ্দুদিয়া পরিবহন ব্যবস্থা এবং সংশ্লিষ্ট মিনা তাঁবু গ্রহণে আগ্রহী। তাদের সবার মতামতের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক তাঁবু রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়। কিন্তু তাঁবুর রিকুয়েস্ট অনুমোদন না করে হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় সাক্ষাতের জন্য আমন্ত্রণ জানায় বলে জানায় হজ অফিস।

সাক্ষাতে জানানো হয়, রিফাদ কোম্পানির কোনো তারাদ্দুদিয়া পরিবহন সংশ্লিষ্ট মিনা তাঁবু নেই। তারাদ্দুদিয়া সংশ্লিষ্ট তাঁবু বরাদ্দের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হলে তারা পরিষ্কার জানিয়ে দেয়- রিফাদের কোনো তারাদ্দুদিয়া তাঁবু নেই। তবে শর্তসমেত প্রায় অর্ধেক সংখ্যক হাজির জন্য তারাদ্দুদিয়া সংশ্লিষ্ট তাঁবু গ্রহণ করা যাবে মর্মে জানান। শর্ত হিসেবে সংশ্লিষ্ট তাঁবুতে অবস্থান করা হলে সেসব হাজি মুজদালিফার খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করতে পারবে না। আরাফাতের ময়দান হতে সরাসরি মিনার এই তাঁবুতে এসে রাত্রিযাপন করতে হবে।

‘একই সঙ্গে তাঁবুতে অবস্থান করতে হলে হজ অফিসকে ‘কোনোরূপ সমস্যা হবে না’ বলে অঙ্গীকারনামা দাখিলেরও শর্ত আরোপ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে তাওয়াফা কোম্পানি এজেন্সি এবং হজযাত্রীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।’

হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় এবং রিফাদ কোম্পানির সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে একাধিকার সভা করে সব দুরাশাকে দূর করে রিফাদের অধীন ২৮ হাজার ৩৩ হজযাত্রীর তারাদ্দুদিয়া পরিবহন সিস্টেমের বাহিরে বাস ও ট্রেন যোগাযোগের সুবিধাসম্পন্ন মিনা তাঁবু, আরাফাতের তাঁবু এবং মুজদালিফায় খোলা আকাশের নিচে অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করে তাঁবু গ্রহণ সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানায় জেদ্দা হজ অফিস।

এখন সব এজেন্সিকে জরুরি ভিত্তিতে ভিসা ইস্যু সম্পন্ন করার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেওয়ার অনুরোধও জানিয়েছে হজ অফিস।

;

মসজিদে হারামে আগতদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মসজিদে হারামে আগতদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা, ছবি : সংগৃহীত

মসজিদে হারামে আগতদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মক্কার মসজিদে হারাম ও মদিনার মসজিদে নববির পরিচালনা কর্তৃপক্ষ আসন্ন হজসহ বিভিন্ন ওয়াক্ত এবং জুমার নামাজে আগতদের জন্য প্রশান্তিদায়ক পরিবেশের নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

সৌদি বার্তা সংস্থা এসপিএ জানায়, মসজিদে হারামে আসা উমরাপালনকারী ও আগত নামাজ আদায়কারীদের সুবিধার্থে ‘বিশেষ পরিকল্পনা’ গ্রহণ করেছে। ‘তানাকুল’ অ্যাপের মাধ্যমে উমরা পালনকারীদের জন্য প্রায় পাঁচ হাজার ইলেকট্রিক ও সাধারণ হুইল চেয়ারের সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ইলেকট্রিক ও সাধারণ হুইল চেয়ার বুকিং করার সুবিধা মিলবে।

হারামাইন পরিচালনা কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, মসজিদে হারাম এবং মসজিদে নববির প্রবেশদ্বারসহ বিভিন্ন স্থানে নিযুক্ত কর্মকর্তারা দর্শনার্থীদের বিভিন্ন জিজ্ঞাসার উত্তর দিচ্ছেন। এছাড়া ধর্মীয় কোনো বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য, উভয় মসজিদের বিভিন্ন স্থানে ডিজিটাল স্ক্রিন স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে যেকোনো বিষয়ে জানার সুযোগ রয়েছে।

কর্তৃপক্ষ বলছেন, ল্যান্ডলাইন বা মোবাইল ফোনে ২৪ ঘণ্টা প্রশ্ন এবং দর্শনার্থীদের দিক-নির্দেশনা ও বিভিন্ন শরিয়া বিষয়ক প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য দুটি টোল-ফ্রি নম্বর বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইল ফোনের স্মার্ট অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাষায় জুমার খুতবা দ্রুত অনুবাদের সুবিধাও দেওয়া হচ্ছে। আরও থাকছে প্রতিদিন হারামাইন শরিফাইনের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় আলোচনার ব্যবস্থা।

মসজিদে হারামে আগতদের জন্য হুইল চেয়ার, ছবি : সংগৃহীত

করোনা পরবর্তী সময়ে মসজিদে হারামসহ মসজিদের নববিতে প্রতিদিন কয়েকবার করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার পাশাপাশি সুগন্ধি দেওয়া হয়। বিশেষ ব্যবস্থাপনায় পুরো মসজিদ প্রাঙ্গণকে স্যানিটাইজ করা হয় আশপাশের পরিবেশকে দুর্গন্ধহীন করা হয়।

এছাড়া নামাজ আদায়কারী ও উমরাপালনকারীদের জন্য রাখা আছে ঠান্ডা পানি ও জমজমের পবিত্র পানি। এর বাইরে নির্দিষ্ট লোক রয়েছে, যারা মসজিদে হারামের দর্শনার্থীদের মাঝে জমজমের বোতল ও পানি সরবরাহ করেন।

সুশৃঙ্খলভাবে চলাচলের জন্য মসজিদে হারামের বিভিন্ন স্থানে প্রচুর নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন রয়েছে, যারা দর্শনার্থীদের চলাচল সুশৃঙ্খল রাখতে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে পথ হারিয়ে যাওয়াদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার মতো কাজটিও আন্তরিকভাবে করছেন।

উর্দু নিউজ অবলম্বনে মুফতি উমর ফারুক আশিকী

;

হজ ভিসা আবেদনের সময় বাড়ল ৪ দিন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আরাফাতের ময়দানে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল হজপালনকারীরা, ছবি : সংগৃহীত

আরাফাতের ময়দানে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল হজপালনকারীরা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২০২৪ সালের হজে বাংলাদেশ থেকে ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজযাত্রী হজপালন করবেন। ৯ মে থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র ৩৫ হাজারের মতো হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়েছে। এখনও ৫০ হাজার হজযাত্রীর ভিসা হয়নি, এমতাবস্থায় হজ ভিসার জন্য আবেদনের সময় আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। বর্ধিত সময় অনুযায়ী আগামী ১১ মে পর্যন্ত হাজিরা ভিসা আবেদন করতে পারবেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসেন তসলিম। তিনি জানান, সৌদি হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় হাজিদের জন্য ভিসা আবেদনের সময় ১১ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে।

গত ২৯ এপ্রিল ছিল হজ ভিসা আবেদনের শেষ সময়। কাঙ্ক্ষিত ভিসা আবেদন না হওয়ায় প্রথম দফায় ৭ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এই সময়ের মধ্যে সবাইকে ভিসার আবেদন করার জন্য অনুরোধ করা হলেও দ্বিতীয় দফায় ফের সময় বাড়ানো হলো।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। ২০২৪ সালের হজে বাংলাদেশ থেকে ৮৩ হাজারের বেশি হাজি হজপালন করবেন।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হবে। বুধবার হজ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চলতি বছর ৮৩ হাজার হজযাত্রীকে বহন করার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্স (সৌদিয়া) ও সৌদির বেসরকারি এয়ারলাইন্স ফ্লাইনাস মোট ২২৮ হজ ফ্লাইট পরিচালনা করবে। সে অনুযায়ী শিডিউল ঘোষণা করেছে এয়ারলাইন্সগুলো। চুক্তি অনুযায়ী, মোট হজযাত্রীর অর্ধেক বহন করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং বাকি অর্ধেক বহন করে সৌদিয়া ও ফ্লাইনাস এয়ার।

চুক্তি অনুযায়ী, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স মোট ১১৮টি ফ্লাইটে ৪৮ হাজার ৮৩৫ জন হজযাত্রী বহন করবে। সৌদি এয়ারলাইন্স এবং ফ্লাইনাস এয়ার বাকি হজযাত্রী বহন করবে।

;

লন্ডনের প্রথম মুসলিম মেয়রের রেকর্ড



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সাদিক খান, ছবি : সংগৃহীত

সাদিক খান, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সাদিক খান হচ্ছেন লন্ডনের প্রথম মুসলিম মেয়র। যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের মেয়র পদে টানা তিনবার নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন লেবার পার্টির প্রার্থী সাদিক খান। লন্ডনের মেয়র হিসেবে তার যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে। তখন থেকেই পদটি ধরে রেখেছেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মুসলিম এই রাজনীতিক।

সাদিক খানের জন্ম লন্ডনে, ১৯৭০ সালের ৮ অক্টোবর। এর দুই বছর আগে ১৯৬৮ সালে তার মা-বাবা পাকিস্তান থেকে যুক্তরাজ্যের অভিবাসী হিসেবে পাড়ি জমান। বাবা আমানউল্লাহ ছিলেন বাসচালক। মা শেহরুন করতেন দরজির কাজ। সাত ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাদিক পঞ্চম। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় তার দাদা-দাদি ভারত থেকে পাকিস্তানে পাড়ি জমিয়েছিলেন।

সাদিক খানের পড়ালেখা ইউনিভার্সিটি অব নর্থ লন্ডন থেকে। বিষয় ছিল আইন। পড়াশোনা শেষে মানবাধিকার-বিষয়ক আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। কম বয়সেই তিনি যোগ দিয়েছিলেন লেবার পার্টির রাজনীতিতে।

১৯৯৪ সালে লেবার পার্টির হয়ে লন্ডনের ওয়ান্ডসওর্থ বারার কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হন সাদিক খান। তখন তার বয়স মাত্র ২৪ বছর। ২০০৬ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২০০৫ সালে যুক্তরাজ্যের জাতীয় নির্বাচনে দক্ষিণ লন্ডনের টুটিং আসন থেকে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন।

২০০৮ সালে গর্ডন ব্রাউন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন স্থানীয় সরকারের পার্লামেন্টারি আন্ডার সেক্রেটারি এবং পরবর্তীতে যোগাযোগ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন সাদিক খান। ২০১০ সালে লেবার পার্টি বিরোধী দলে গেলে তিনি ছায়া মন্ত্রিসভায় বিচার বিষয়ক ছায়া মন্ত্রী, লর্ড চ্যান্সেলর (ছায়া অর্থমন্ত্রী) ও লন্ডন-বিষয়ক ছায়া মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৬ সালে লন্ডনের মেয়র পদে নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করেন সাদিক খান। সে বছরের ৯ মে কনজারভেটিভ পার্টির জেক গোল্ডস্মিথকে হারিয়ে প্রথমবার লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর ২০২১ সালে কনজারভেটিভ পার্টির সোন বেইলিকে পরাজিত করে মেয়র পদ ধরে রাখেন সাদিক।

এবার তৃতীয় দফায় সাদিক খানের জয় আগামী জাতীয় নির্বাচনে লেবার পার্টির মনোবল আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

ব্যক্তিগত জীবনে সাদিক খানের দুই সন্তান রয়েছে। রাজনীতির পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতিও আগ্রহ রয়েছে তার। সাদিক খানের পছন্দের খেলা ফুটবল, ক্রিকেট ও বক্সিং। ২০১৪ সালে লন্ডন ম্যারাথনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে জনপ্রিয় সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিনে বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় জায়গা করে নেন সাদিক খান।

;