নামাজের সুফল লাভের উপায়

  • মো. লুৎফর রহমান, অতিথি লেখক, ইসলাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

নিশ্চয়ই নামাজ মুমিনদের ওপর সময়ের ভিত্তিতে ফরজ করা হয়েছে

নিশ্চয়ই নামাজ মুমিনদের ওপর সময়ের ভিত্তিতে ফরজ করা হয়েছে

মহান আল্লাহ কোরআনে কারিমে ইরশাদ করেন, ‘জমিন ও আসমানের সকল প্রশংসা একমাত্র তারই। অতএব তোমরা আল্লাহর তাসবিহ পাঠ করো (নামাজ পড়ো) সন্ধ্যায় (মাগরিব ও এশা) ও প্রত্যুষে (ফজর) এবং বিকেলে (আসর) ও দ্বিপ্রহরে (জোহর)।’ -সুরা আর রূম : ১৭-১৮

নির্দিষ্ট সময়ে নামাজ আদায়
আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ মুমিনদের ওপর সময়ের ভিত্তিতে ফরজ করা হয়েছে।’ -সুরা আন নিসা : ১০৩

বিজ্ঞাপন

কোরআনে কারিমে আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘নামাজ কায়েম করো দিনের দুই প্রান্তে এবং রাতের কিছু অংশে। অবশ্যই পুণ্যকাজ পাপকে দূর করে দেয়। যারা শিক্ষা গ্রহণ করে তাদের জন্য এটি উত্তম উপদেশ।’ –সুরা হুদ : ১১৪

নামাজের মাধ্যমে হেদায়েত লাভ
আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘কোরআন সেই মুত্তাকিদেরকে মুক্তির পথ দেখাবে যারা জীবনে নামাজ কায়েম করে।’ -সুরা বাকারা : ২-৩

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘এটা হেদায়েত ও সুসংবাদ ওই মুমিনদের জন্য, যারা নামাজ কায়েম করে, জাকাত দেয় এবং আখেরাতের ওপর দৃঢ় বিশ্বাস রাখে।’ -সুরা নামল : ২-৩

কোরআনে কারিমে আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা নামাজ কায়েম করো, জাকাত দাও এবং রাসুলের আনুগত্য করো। আশা করা যায়, তোমাদের ওপর রহম করা হবে।’ -সুরা নূর : ৫৬

সন্তানদের নামাজের নির্দেশ
হজরত আমর বিন শোয়াইব (রা.)-এর বর্ণনায় হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের সন্তানদেরকে নামাজের নির্দেশ দাও যখন তারা সাত বছরে উপনীত হয়। আর দশ বছর হলে নামাজের জন্য প্রয়োজনে প্রহার করো এবং বিছানা পৃথক করো।’ –সুনানে আবু দাউদ : ২৭২

হজরত আবু হুরায়রা (রা.)-এর বর্ণনায় হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে অন্য জুমা, এক রমজান থেকে অন্য রমজান কাফফারা হয় সে সব গোনাহর জন্য, যা এ সবের মধ্যবর্তী সময়ে ঘটে থাকে, যদি কবিরা গোনাহ থেকে বেঁচে থাকা হয়।’

নামাজ না পড়ার পরিণতি
নামাজ না পড়া কঠিন শাস্তির কারণ। এ ছাড়া নামাজ না পড়ার কারণে আরও যেসব শাস্তি দেওয়া হবে এর অন্যতম হলো- তার চেহারা মলিন হবে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘কিয়ামতের দিন তার চেহারা উদাস ও অন্ধকারাচ্ছন্ন হবে, যে কোরআনকে মেনে নেয়নি এবং নামাজ আদায় করেনি।’ -সুরা কিয়ামা : ৩১

আখেরাতে নামাজের হিসাবই প্রথমে হবে
হজরত আবু হুরায়রা (রা.)-এর বর্ণনায় হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কিয়ামতের দিন বান্দার আমলের মধ্যে নামাজের হিসাব সর্বপ্রথম নেওয়া হবে। যদি তা সঠিক হয় তাহলে সে সফল হবে, নাজাত পাবে। আর তা যদি খারাপ হয় তাহলে সে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। -সুনানে তিরমিজি

ইসলাম ও কুফরের মধ্যে পার্থক্যকারী
হজরত জাবির (রা.)-এর বর্ণনায় হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আনুগত্য ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে নামাজ।’ –সহিহ মুসলিম

মানবজীবনে নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম। কোরআন মাজিদে অন্তত বিরাশি জায়গায় নামাজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোরআন ও হাদিস ভালোভাবে অধ্যয়ন করলে বুঝা যায়, নিম্নোক্ত ছয়টি কাজ করলে নামাজের উদ্দেশ্য সফল হয়।

১. জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়।
২. সহি-শুদ্ধভাবে নামাজ আদায়।
৩. ধীরে ধীরে নামাজ আদায়।
৪. বিনীত ও বিনম্রভাবে নামাজ আদায়।
৫. বুঝে বুঝে নামাজ আদায়।
৬. নামাজের আলোকে জীবন গড়া।

আসলে নামাজ জামাতের সঙ্গে ফরজ হয়েছে, একা একা নয়। যাতে সমাজে চিন্তার ঐক্য ও চরিত্রের মাধুর্য সৃষ্টি হয় এবং পারস্পরিক যোগাযোগ, ভালোবাসা, সহমর্মিতা ও সহযোগিতা বৃদ্ধি পায়। তাই শুধু নামাজ পড়লেই হবে না, তার শিক্ষা মেনে চলতে হবে।