ক্ষমা লাভের তিন সুবর্ণ সুযোগ

  • মুহাম্মাদ নুরুল ইসলাম, অতিথি লেখক, ইসলাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রমজান মাস গোনাহ মাফের অপূর্ব সুযোগ নিয়ে আসে

রমজান মাস গোনাহ মাফের অপূর্ব সুযোগ নিয়ে আসে

রমজান মাস মাগফেরাতের মাস। এই মাস নিজের জীবনের কৃত গোনাহ মাফ করানোর মাস। এই মাস সংযত হওয়ার মাস। যে ব্যক্তি এই মাসে নিজের গোনাহ মাফ করাতে না পারে, সে তার জিন্দেগিতে এই সুযোগ আর পাবে বলে মনে হয় না। কেননা এই মাসে গোনাহ মাফ করানোর জন্য যে সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে, তা অন্য মাসে নেই। আর মহান আল্লাহ যাকে একবার মাফ করে দেবেন সে কামিয়াব! কেননা আল্লাহতায়ালা কখনও ওয়াদার খেলাফ করেন না।

এই মাসে নিজেকে পবিত্র করার তিনটি সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। প্রথমটা মিস করলে দ্বিতীয়টা কাজে লাগানো যাবে। দ্বিতীয়টা মিস করলে তৃতীয়টা কাজে লাগানো যাবে। আর যে তৃতীয়টা মিস করবে, সে হলো কপালপোড়া! কেননা এই মাস ফের পাবে তার কোনো গ্যারান্টি নেই। আমার অনেক আত্মীয় গত রমজানে আমাদের সঙ্গে বসে ইফতার করেছেন, অথচ এই রমজানে তাদের অনেকেই শুয়ে আছেন অন্ধকার কবরে! এভাবে অনেকের বাবা, অনেকের মা কিংবা দাদা-দাদি অথবা পাড়ার কেউ। গত রমজানে এক কাতারে নামাজ পড়েছিল অথচ এই রমজানে নেই। হয়ত আপনিও আগামী রমজানে নাই হয়ে যেতে পারেন। তাই এই রমজানকে কাজে লাগান।

বিজ্ঞাপন

আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমার দিকে ছুটে যাও।’ -সুরা আলে ইমরান : ১৩৩

তওবার মাধ্যমে ক্ষমা পাওয়া যায়। তওবা ছাড়া আরও তিনটা সুবর্ণ সুযোগ রমজান মাসে আল্লাহতায়ালা দিয়েছেন! সেই তিনটি বিশেষ সুযোগ হলো-

বিজ্ঞাপন

প্রথম সুযোগ : রমজানে রোজাপালন করে নিজের গোনাহগুলো মাফ করিয়ে নেওয়া। তবে শর্ত হলো, সেই রোজা লোকদেখানো না হতে হবে এবং ঈমানের সঙ্গে পুণ্যের আশায় রোজাপালন করতে হবে। হাদিসে আছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানসহ পূণ্যের আশায় রমজানের রোজা পালন করে, তার পূর্বের গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ -সহিহ বোখারি : ৩৮

দ্বিতীয় সুযোগ : ধরুন, আপনি ঠিকমতো রোজা রাখতে পারেননি অনিচ্ছায়। অথবা কোনো সমস্যা যেমন অসুস্থতা, হায়েজ, নেফাস ইত্যাদির কারণে রোজা রাখতে পারেননি, আপনার রয়েছে আরেকটি সুযোগ। সেটা কী? সেটা হলো, রমজানে রাতেরবেলা নামাজ পড়া। হাদিসে আছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি রমজানের রাতে ঈমানসহ পূণ্যের আশায় রাত জেগে ইবাদত করে, তার পূর্বের গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ -সহিহ বোখারি : ৩৭

তৃতীয় সুযোগ : ধরুন, আপনি ওজরের কারণে ঠিকমতো রোজা রাখতে পারলেন না। অসুস্থতার জন্য রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগিও করতে পারেননি, আপনার জন্য রয়েছে আরও একটি সুযোগ। সেটা কী? সেটা হলো- লাইলাতুল কদর! বরকতময় রাতের মধ্যে অন্যতম হলো- লাইলাতুল কদর!

যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে, সওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল কদরের রাত জেগে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে, তার পূর্ববর্তী গোনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয়। -সহিহ বোখারি : ২০১৪

এখন যদি এই সুযোগটিও হারান, তাহলে ধরে নেন আপনি একজন হতভাগা, কপালপোড়া! এত এত সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আপনি অবহেলায় এড়িয়ে গেলেন। আপনি ওই দলের মধ্যে শামিল হলেন, যে দলের ওপর আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর অভিশাপ! হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, তিন প্রকার মানুষের ওপর হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অভিশাপ। তন্মধ্যে একপ্রকার হলো- যে ব্যক্তি রমজান পেয়েও নিজের গোনাহ ক্ষমা করাতে পারেনি। -মুসনাদে আহমাদ : ৭৪৫১