মধ্যপ্রাচ্যে ঈদ কেন একদিন আগে হয়



মোঃ আফসারুল আলম মামুন, অতিথি লেখক, ইসলাম
যখন যে দেশে চাঁদ দেখা যাবে তখন রাষ্ট্রীয়ভাবে সেই দেশ ঈদ ও রোজার ঘোষণা দেবে

যখন যে দেশে চাঁদ দেখা যাবে তখন রাষ্ট্রীয়ভাবে সেই দেশ ঈদ ও রোজার ঘোষণা দেবে

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বাভাবিকভাবে সৌদি আরব কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে একদিন আগে ঈদ হয় না, ঈদের দিনই ঈদ হয়। প্রথমে ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি মনে করিয়ে দিতে চাই। তারাবির নামাজ পড়ার পর জানা গেলো আগামীকাল ঈদ। এ নিয়ে তখন সারাদেশে তোলপাড়। যখন প্রথমে রোজার ঘোষণা দেওয়া হলো, তখনই নানাজনের কাছ থেকে নানামত ভেসে আসতে থাকল। কারও কারও মত ছিল খুবই যৌক্তিক। যেমন, যদি কালকে আসলেই ঈদ হয়, আর আমরা রোজা রাখি; তাহলেতো আমরা হারাম কাজ করলাম। কারণ ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম। আবার যখন রাত ১১টায় ঘোষণা হলো আগামীকাল ঈদ, তখন নানা প্রশ্ন-সমালোচনা আর ট্রলের ছড়াছড়ি। কিন্তু প্রকৃতভাবে চাঁদের হিসাব বের করা খুবই জটিল না বললেও সাধারণ বলা যাবে না। কোরআন-হাদিস আর বিজ্ঞানে যা খুবই সাবলীলভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে।

কোরআনের ক্ষেত্রে

চাঁদ নিয়ে পবিত্র কোরআনে একটি পূর্ণাঙ্গ সুরা রয়েছে, নাম আল কামার। এ ছাড়া আল্লাহতায়ালা চাঁদ সম্পর্কে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কথা বলেছেন। সুরা ফুসিলাতের ৩৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘এটা আমার একটি নিদর্শন।’ এ ছাড়া আরও ২৫ বারের অধিক আল্লাহতায়ালা বিভিন্ন আয়াতে চাঁদের কথা বলেছেন। চাঁদ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রূপ নেয়, এ কথা বলা আছে সরা আল ইনশিকাকের ১৮ নম্বর আয়াতে। পবিত্র কোরআনে নতুন চাঁদ নিয়ে সুন্দরতম একটি বিষয় উপস্থিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে নবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তারা আপনাকে নতুন চাঁদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলুন, তা হলো মানুষ ও হজের জন্য সময় নির্দেশক।’ -সুরা বাকারা : ১৮৯

আমরা সবাই জানি, আকাশে নবচন্দ্র দেখা যায় একটি। যাকে আরবি অর্থ অনুযায়ী ‘হিলাল’ বলা হয়। অথচ পবিত্র কোরআনে ‘হিলাল’-এর বহুবচন ‘আহিল্লা’ বা একাধিক নবচন্দ্রের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যদি এক জায়গায় চাঁদ দেখা বিশ্বের সবার জন্য যথেষ্ঠ হতো, তাহলে এই আয়াতে ‘হিলাল’-এর বহুবচন ‘আহিল্লা’ তথা একাধিক নবচন্দ্রের কথা উল্লেখ করা হতো না।

হাদিসের ক্ষেত্রে

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা চাঁদ দেখে রোজা শুরু করো, চাঁদ দেখেই ঈদ করো, যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে তাহলে শাবান মাস ত্রিশদিন পূর্ণ করো।’ -সহিহ বোখারি : ১৯০০

এ ছাড়া নবী কারিম (সা.) আরও বলেন, ‘তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখো এবং চাঁদ দেখেই তা ভঙ্গ করো।’ -সুনানে নাসায়ি : ২২১৬

এই নিয়ে সুন্দর একটি ঘটনা রয়েছে। হজরত কুরাইব (রা.) হতে বর্ণিত, উম্মে ফজল (রা.) তাকে শাম দেশে হজরত মুয়াবিয়া (রা.)-এর নিকট প্রেরণ করেছিলেন। হজরত কুরাইব (রা.) বলেন, আমি সিরিয়ায় পৌঁছে উম্মে ফজল (রা.)-এর কাজ সমাধা করলাম। সিরিয়া থাকতে থাকতেই রমজানের চাঁদ দেখা গেলো। জুমার রাতে আমরা চাঁদ দেখলাম। এর পর রমজানের শেষে আমি মদিনায় ফিরলাম। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) আমাকে জিজ্ঞাসা করার পর চাঁদ সম্পর্কে আলোচনায় বললেন, তোমরা কবে চাঁদ দেখেছো? আমি বললাম জুমার রাতে। তিনি বললেন, তুমি নিজে জুমার রাতে চাঁদ দেখেছো? আমি বললাম, হ্যাঁ; আমি দেখেছি ও লোকেরাও দেখেছে এবং তারা রোজা রেখেছে। হজরত মুয়াবিয়া (রা.)ও রোজা রেখেছেন। ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, কিন্তু আমরা মদিনায় চাঁদ দেখেছি শনিবার রাতে। কাজেই আমরা পুনরায় চাঁদ দেখা পর্যন্ত অপেক্ষা করবো, নতুবা ত্রিশ দিন পূর্ণ করবো। আমি বললাম আপনি কি মুয়াবিয়া (রা.) এর চাঁদ দেখা ও রোজা রাখাকে যথেষ্ট বিবেচনা করেন না? তিনি বললেন, না। আমাদেরকে আল্লাহর রাসুল (সা.) এমনই আদেশ দিয়েছেন। -সহিহ মুসলিম

বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে

পৃথিবী নিজের অক্ষের চারদিকে পশ্চিম থেকে পূর্বে ঘুরে চলেছে। যাকে আহ্নিক গতি বলে। গতিটা সহজে বোঝা যাবে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিক বা অ্যান্টি ক্লকওয়াইজ বললে। সাধারণভাবে বললে আমরা এভাবে বলতে পারি, সূর্য পূর্বদিকে উদিত হয় বলে পূর্বের দেশ হিসেবে আমাদের দিন আগে শুরু হয়। জাপানের দিন সবার আগে, যে কারণে জাপানকে সূর্যোদয়ের দেশ বলা হয়। এদিকে ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী পশ্চিমের দেশগুলোর দিন আমাদের পরে শুরু হয়। যে কারণে আমরা আঞ্চলিক সময়ের হিসাবে এগিয়ে আছি। যেমন আমরা কাছের মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রায় ৩ ঘন্টা, দূরের ইউরোপ থেকে গড়ে ৬ ঘন্টা এবং আরও পশ্চিমের আমেরিকা থেকে প্রায় ১২ ঘন্টা এগিয়ে আছি। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, সৌর হিসেবে সৌদি আরবের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য মাত্র ৩ ঘণ্টা হলেও চন্দ্রের হিসেবে সৌদি আরব ও আমাদের পার্থক্য ২১ ঘণ্টার।

এখন আসি চাঁদের হিসাবে। সাধারণত চাঁদ পশ্চিমে উদিত হয় আর পূর্বে অস্ত যায়। সেই হিসাবে আমরা যারা পূর্বের দেশগুলোতে অবস্থান করছি, স্বাভাবিকভাবে চাঁদ আমাদের কিছুটা পরে দেখাই উচিত এবং তাই হয়ে থাকে। বছরের সবসময় এমন ঘটনা ভূমন্ডলে সম্পাদিত হয়। কিন্তু চাঁদের হিসাব শুধু ঈদ আসলে আমাদের চোখে ধরা পড়ে বিধায় আমরা ঈদ আগে বা পরে নিয়ে অহেতুক দ্বন্দ্বে লিপ্ত হই।

সাধারণত মাধ্যপ্রাচ্যে বিশেষ করে সৌদি আরবে মাঝে মাঝে সূর্য অস্তমিত হওয়ার আগেই চাঁদ দেখা যায়। এখন আসি অন্য একটি পরিসংখ্যানে, যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে যখন চাঁদ দেখা যাবে, তখন সে চাঁদটি দেখার জন্য কানাডার ইস্ট কোস্টে অবস্থানরত মানুষদের অপেক্ষা করতে হবে ভোর ৩-৪ টা পর্যন্ত। এবার ওই একই চাঁদকে দেখার জন্য জাপান থেকে দেখতে হলে অপেক্ষা করতে হবে পরেরদিন দুপুর ২টা পর্যন্ত। অর্থাৎ হাওয়াই অঞ্চলে রমজান শুরু হয়ে গেলেও জাপানের মুসলমানদের পক্ষে সম্ভব হবে না সেই চাঁদ দেখে রোজা শুরু করা। কারণ, কোনো এক দেশে চাঁদ দেখা গেলেও অন্যদেশে দেখা যেতে দেরি হতে পারে। কেননা খালি চোখে চাঁদকে দেখতে হলে চন্দ্র আর সূর্যের মাঝে ১০.৫ ডিগ্রি কোণ থাকতে হবে এবং যে পরিমাণ দূরত্ব অর্জন করলে এই কোণ তৈরি হবে, সে পরিমাণ যেতে যেতে চাঁদের ১৭ থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত লেগে যায়। এ কারণে আজ আমেরিকাতে চাঁদ দেখে গেলেই যে বাংলাদেশেও দেখা যাবে, সেটা ভুল ধারণা। যতক্ষণ না পর্যন্ত সেই কোণ অর্থাৎ ১০.৫ ডিগ্রি অর্জন না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত দেখা যাবে না। একই বিষয় সৌদি আরব ও বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও।

এই সঙ্কট কোণকে বিজ্ঞানের ভাষায় ইলঙ্গেশন বলে। তাই চাঁদের বয়স কত সেটা আদৌ আসল কথা নয়, সেই কোণ হয়েছে কিনা সেটার ওপর নির্ভর করে চাঁদ দেখা যাবে কিনা। ফলে আমরা সৌদি আরব থেকে ৩ ঘণ্টা সূর্যের হিসেবে এগিয়ে থাকলেও, চাঁদের হিসেবে ২১ ঘণ্টা পিছিয়ে আছি। অর্থাৎ আমরা প্রায় একদিন পিছিয়ে আছি। সেজন্য সৌর বছরের হিসেবে একদিন পরে চাঁদ দেখি। সেই হিসাবে সৌদি আরবে একদিন আগে ঈদ হয়।

ফিকহ শাস্ত্রের ক্ষেত্রে

ফিকাহ শাস্ত্রে (ইসলামি আইন ও বিধান) চাঁদ দেখা নিয়ে দু’টি মতবাদ পাওয়া যায়। ১. উদয়স্থলের অভিন্নতা, ২. স্থানীয়ভাবে চাঁদ দেখা। ইসলামের চার ইমাম হজরত ইমাম আবু হানিফা (রহ.), ইমাম মালেক (রহ.), ইমাম শাফেয়ী (রহ.) ও ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.)সহ প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ ও শরিয়তের ব্যাখ্যাকারীরারা সবাই রোজা রাখা আর ঈদ উদযাপনের জন্য স্থানীয়ভাবে চাঁদ দেখার ওপর একমত পোষণ করেছেন।

রাষ্ট্রীয় আইন

মুসলিম রাষ্ট্রের আইনও চাঁদ দেখার একটি নিয়ামক। মুসলিম রাষ্ট্রে কেউ ইচ্ছে করলেই চাঁদ দেখে রোজা রাখা বা ভাঙতে পারবে না। রাষ্ট্রীয়ভাবে চাঁদ দেখা ও সাক্ষ্য গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অর্থাৎ চাঁদ দেখা প্রমাণিত হওয়ার সুন্নাহ নির্দেশিত পদ্ধতি হচ্ছে, শাসক বা প্রশাসকের নিকট সাক্ষ্য গৃহীত হওয়া। রাষ্ট্রীয়ভাবে সাক্ষ্য গৃহীত কিংবা প্রমাণিত হলেই শুধু ঈদ করা যাবে। রাষ্ট্রীয় প্রশাসন ও সমাজের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ঈদপালন করতে নির্দেশ দিয়ে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যেদিন সব মানুষ ঈদুল ফিতর পালন করবে, সেদিনই ঈদুল ফিতরের দিন এবং যেদিন সব মানুষ ঈদুল আজহা পালন করবে সেদিনই ঈদুল আজহার দিন।’ -সুনানে তিরমিজি

উপরিউক্ত বিষয়গুলো দ্বারা এই প্রমাণিত হয়, চাঁদ দেখার বিষয়টি নানা ধরনের প্রভাবকের সঙ্গে প্রভাবিত এবং আইন অনুযায়ী যখন যে দেশে চাঁদ দেখা যাবে তখন রাষ্ট্রীয়ভাবে সেই দেশ ঈদ বা রোজার আয়োজন করবে। কোনো দেশ একদিন আগে বা পরে করবে না।

 

 

 

ফের বাড়ল হজ নিবন্ধনের সময়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। বর্ধিত সময় অনুযায়ী আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে।

সোমবার (২৭ মার্চ) নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৩৩৯ জন। কোটা পূরণে এখনো নিবন্ধন বাকি রয়েছে ৯ হাজার ৮৫৯। এর মধ্যে সরকারিতে ফাঁকা ৫ হাজার ১০৮, বেসরকারিতে ৪ হাজার ৭৫১।

হজ অনুবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে কতজন হজ করতে যাবেন তা সৌদি সরকারকে জানানোর শেষ তারিখ আগামী ৯ মে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এবার হজের খরচ বেশি হওয়ায় শুরু থেকেই নিবন্ধনে ভাটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু তারা তো কাউকে ডেকে এনে নিবন্ধন করাতে পারেন না।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহ্জ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন এবং অবশিষ্ট এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন।

;

১৮ এপ্রিল পবিত্র লাইলাতুল কদর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শুক্রবার থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হচ্ছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাতে তারাবির নামাজ আদায় করেন। শেষ রাতে প্রথম সেহরি খাওয়া হবে।

এই হিসেবে আগামী ১৮ এপ্রিল (২৬ রমজান) মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে কদর পালিত হবে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, মুসলমানদের জন্য রমজান মাস রহমত, বরকত ও মাগফেরাতের বার্তা বয়ে আনে। সংযমের এ মাসে মুসলিমরা আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় ইবাদত-বন্দেগি করে থাকেন।

;

রোজার পুরস্কার মিলবে যেসব আমলে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র মাহে রমজানে কোনোভাবেই আল্লাহতায়ালার অসন্তুষ্টিমূলক কোনো কাজে লিপ্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সর্বোপরি মাহে রমজান ও রোজা মহান মালিককে সন্তুষ্ট করার সুবর্ণ অবসর। এ জন্য আমাদের মাহে রমজান ও রোজা হওয়া চাই হারাম, কবিরা গোনাহ ও নাফরমানি মুক্ত। মিথ্যা, প্রতারণা, অন্যায়, অত্যাচার, পাপাচার, সুদ, ঘুষ ও দুর্নীতি মুক্ত হওয়া। তবেই আমরা রমজান ও রোজার পূর্ণাঙ্গ পুরস্কার গ্রহণ করতে পারব।

আল্লাহ পাককে সন্তুষ্ট করার, মুত্তাকি হওয়ার লক্ষ্য অর্জন করতে পারব। এ লক্ষে রমজান মাসে কিছু বিষয়ের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখা দরকার। এর অন্যতম হলো-

সময়ের অপচয়রোধ

জীবন সেকেন্ড, মিনিট, ঘণ্টার সমষ্টি। এই ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র সময়ই আমার জীবন। জীবনের একটি মুহূর্ত বেখেয়াল, অবহেলায় কাটিয়ে দেওয়া মানে এই সময়টা নষ্ট করে ফেলা। সে আর কখনও ফেরত আসবে না। এক একটি মুহূর্ত জীবনে একবারই আসে। প্রত্যেকটি দিন আগমন করে আমাকে আহবান করে তাকে ভালোভাবে ব্যবহার করার জন্য। সে এও বলে দেয়, হিসাবের দিনেই কেবল সে আবার আমার সামনে হাজির হবে। যে ব্যক্তি সময়ের সদ্ব্যবহার করে, দুনিয়ার জীবনে সে সফলতা পায়। আমার রমজান ৩০ দিনের হলে ২৫,৯২,০০০ সেকেন্ডের সমষ্টি। রমজানের চাঁদ উদিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কমতে শুরু করে। আমার কাছে রমজানের প্রতিটি সেকেন্ড মূল্যবান। আমি, আপনি যদি হিসাব করে এই সেকেন্ডগুলো কাজে লাগাতে পারি, তবে আমি আপনি অবশ্যই সফল হতে পারব। একজন পরীক্ষার্থী যেমন প্রত্যেকটি সেকেন্ডের হিসাব রেখে উত্তর লিখতে থাকে। তেমনি আমার আপনারও এই মূল্যবান সময়ের যথাযথ কদর করে রোজা পালন করলে, এই বছরের রমজান আমার আপনার জীবনে এক ব্যতিক্রম রমজান মনে হবে এবং এক ব্যতিক্রম ফল বয়ে আনবে। তাই গল্পগুজব, আড্ডা, টিভি দেখা, ফেসবুক অনলাইনে সময় ব্যয়, অবসরে শুধু ঘুমানো, এখানে সেখানে ঘুরাফেরা করা ইত্যাদি কাজগুলো বর্জন করি। তবে আমার রমজান হবে প্রাণবন্ত।

কথা হোক কম

যখন আপনি আমি কথা কম বলব, তখন অনেক অনর্থক এমন কি ফাহেশা কথা থেকে বেঁচে যাব। জীবনের অনেক সময়ও বেঁচে যাবে। বেশি কথা বললে, গীবত, পরনিন্দা, মিথ্যা এ ধরণের অনেক কথা মুখ ফঁসকে বেরিয়ে যেতে পারে। যে সময় আমি অযথা গল্প কথায় লিপ্ত হব, এই সময়টাকে আমি কোরআন তেলাওয়াত, তাফসির অধ্যয়ন, হাদিস পাঠ, বিভিন্ন মাসনুন দোয়া, ইস্তেগফার, দরুদ শরিফ পাঠ, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শেখানো বিভিন্ন জিকিরে মশগুল হতে পারি। অনায়াসে অনেক বরকতের ভাগিদার হতে পারি।

কাজে গতিময়তা

কাজ ছাড়া জীবন অচল, আমরা কেউ চাকুরি করি, কেউ ব্যবসা, কেউ কৃষিকাজ ইত্যাদি। এই রমজানে আমার কাজের সময়কে কমিয়ে আনি। কাজের গতি বাড়িয়ে দেই। কাজের গতি বাড়িয়ে কাজের সময়কে কমিয়ে আনি। এই বেঁচে যাওয়া সময়টিকে আমি ইবাদত-বন্দেগি, কোরআন তেলাওয়াত, দরুদ, ইস্তেগফার পাঠে ব্যয় করি। তাহলে দেখা যাবে কাজের এই গতিময়তা পুরো বছর আমাকে বরকত দেবে। আমার অনেক সময় হাতে থাকবে, বিশেষভাবে মাওলাকে ডাকার জন্য আমার সময়ের অভাব হবে না।

সোশ্যাল মিডিয়া বর্জন

রমজান মাস আমার জন্য আমার মহান রবের এক মহান উপহার। এই মাস সওয়াব কামাইয়ের মাস। এই মাস সোশ্যাল নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকার মাস নয়। আপনার বিশেষ কোনো প্রয়োজনে আপনি নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকতে পারেন। কিন্তু ফেসবুক, টুইটার, ইনস্ট্রাগ্রাম, ইউটিউভ ইত্যাদি মাধ্যমগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। আপনি হয়তো ভালো কিছু দেখতে চান, ভালো কিছু শুনতে চান। এই ভালো দেখার সঙ্গে, ভালো শোনার সঙ্গে কিছু খারাপও আপনার নজরে এসে যাবে। এই সময় আমি আপনি নেটওয়ার্কহীন অন্য ইবাদতে মশগুল হই। যার নেটওয়ার্ক আমার আর আমার রবের সঙ্গে সংযোগ করে দেবে- ইনশাআল্লাহ।

;

শুক্রবার থেকে রোজা শুরু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ বুধবার দেশের কোথাও চাঁদ দেখা না যাওয়ায় আগামী শুক্রবার থেকে রোজা শুরু হচ্ছে।

বুধবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে বৈঠক করে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি এ কথা জানায়।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ধর্মমন্ত্রী ও কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ মতিউর রহমান।

বৈঠক শেষে জানানো হয়, বাংলাদেশের কোথাও পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হবে রমজান মাস গণনা। সে ক্ষেত্রে বৃহস্পতিবার দেশের মসজিদগুলোতে বাদ এশা তারাবির নামাজের মধ্য দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পবিত্র রমজানের কার্যক্রম শুরু করবেন। এরপর ওই দিন দিবাগত ভোররাতে সাহ্‌রি খেয়ে প্রথম রোজা রাখতে হবে।

;