স্বামীর মৃত্যু ও বিচ্ছেদের পর নারীর করণীয়



মুফতি মাহফূযুল হক, অতিথি লেখক, ইসলাম
স্বামীর মৃত্যু ও বিচ্ছেদের পর নারীর করণীয়, ছবি: প্রতীকী

স্বামীর মৃত্যু ও বিচ্ছেদের পর নারীর করণীয়, ছবি: প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

ইদ্দত শব্দের আভিধানিক অর্থ সময় গণনা করা। পরিভাষায় ইদ্দত বলা হয়- স্বামীর মৃত্যুর পর বা তালাকের পর নির্দিষ্ট সময়কাল পর্যন্ত পরবর্তী বিয়ে থেকে বাধ্যতামূলকভাবে নিজেকে বিরত রাখা।

নারীর অবস্থার ভিন্নতায় ইদ্দতের সময়সীমায় কিছুটা ভিন্নতা আছে। আবার ইদ্দতকালীন সময়ের জন্য রয়েছে বিশেষ কিছু বিধি-বিধান।

প্রথমে আলোচনা করা যাক ইদ্দতের সময়সীমা নিয়ে। এ ক্ষেত্রে স্বামীর মৃত্যুর ইদ্দত ও তালাকের ইদ্দত কিছুটা ভিন্ন।

স্বামী মৃত্যুর ইদ্দত
যে নারীর স্বামী মারা গেছে সে যদি গর্ভবতী হয় তাহলে তার ইদ্দত সন্তান প্রসব পর্যন্ত। কেননা, এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘গর্ভবতীদের সময়কাল হলো- সন্তান প্রসব করা।’ -সূরা তালাক: ৪

আর সে যদি গর্ভবতী না হয়- তাহলে তার ইদ্দত চার মাস দশ দিন। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মারা গেছে তাদের স্ত্রীরা চার মাস দশ দিন পর্যন্ত নিজেদের বিরত রাখবে।’ -সূরা বাকারা: ২৩৪

তালাকের ইদ্দত
যে নারীকে তার স্বামী তালাক দিয়েছে অথবা সে নিজেই তালাক গ্রহণ করেছে সে যদি গর্ভবতী হয়- তাহলে তার ইদ্দত সন্তান প্রসব পর্যন্ত। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘গর্ভবতীদের সময়কাল হলো- সন্তান প্রসব করা।’ -সূরা তালাক: ৪

আর সে যদি গর্ভবতী না হয় এবং তার ঋতুস্রাব আসে তাহলে তার ইদ্দত পরিপূর্ণ তিন ঋতুস্রাব শেষ হওয়া পর্যন্ত। যদি ঋতুস্রাবকালে তালাক সংঘটিত হয় তাহলে ওই ঋতুস্রাব বাদ দিয়ে পরবর্তী ঋতুস্রাব থেকে তার ইদ্দত গণনা করতে হবে।

এ বিষয়ে কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তালাকপ্রাপ্ত নারী তিন ঋতুস্রাব পর্যন্ত নিজেদের বিরত রাখবে।’ -সূরা বাকারা: ২২৮

আর সে যদি গর্ভবতীও না হয় এবং তার ঋতুস্রাবও না আসে তাহলে তার ইদ্দত তিন মাস। কেননা, পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের যে সকল স্ত্রীর ঋতুবতী হওয়ার আশা নাই তাদের ইদ্দত সম্পর্কে তোমারা সন্দেহ করলে তাদের ইদ্দত হবে তিন মাস এবং যাদের এখনও ঋতুস্রাব শুরু হয়নি তাদেরও।’ -সূরা তালাক: ৪

ইদ্দত যাপনকালীন নারীর জন্য বিশেষ তিনটি বিধান রয়েছে। সেগুলো হলো-

সাজগোজ না করা
এ প্রসঙ্গে হজরত নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোনো নারীর জন্য স্বামী ব্যতীত অন্য কারও মৃত্যুতে তিন দিনের বেশি সাজগোজ বর্জন করা জায়েজ নয়। স্বামীর মৃত্যুতে সে চার মাস দশ দিন সাজগোজ বর্জন করবে।’ –সহিহ বোখারি: ১২৮০ ও –সহিহ মুসলিম: ৩৮০৮

নারীর যে বাড়তি বেশ-ভূষা তার প্রতি পুরুষকে আকৃষ্ট করে তাকেই সাজগোজ বলে। এটা একটি আপেক্ষিক বিষয়। যুগ, অঞ্চল, পরিবেশ, পরিবার, সমাজ, শ্রেণি প্রভৃতির তারতম্যে তাতে ভিন্নতা থাকে। তাই যেখানে সাজগোজ বলতে যা বুঝায় সেখানে তাই ইদ্দত অবস্থায় হারাম।

লাল বা হলুদ রঙের পোশাক পরিধান করা, মেহেদি লাগানো, যেকোনো সুবাস দেওয়া; কাজল, আইব্রু, লিপিস্টিকসহ বিভিন্ন মেকাপ এবং সুবাসযুক্ত প্রসাধনী ব্যবহার করা ইদ্দত অবস্থায় না জায়েজ।

তবে সাজগোজের কোনো বস্তুর ব্যবহার যদি রোগের কারণে একান্তই জরুরি হয় এবং তার কোনো বিকল্প না থাকে, লাল বা হলুদ পোশাক ব্যতীত সতর ঢাকার মতো অন্য কোনেরা বস্ত্র না থাকে তাহলে এমন আবশ্যকীয় প্রয়োজনের সময় শুধুমাত্র প্রয়োজন পরিমাণ ব্যবহার করা যাবে।

ইদ্দত অবস্থায় হালকা রঙের ছাপা কাপড় পড়া, নাকে-কানে-গলায়-হাতে সামান্য পরিমাণের হালকা গহনা ব্যবহার করা নাজায়েজ নয়। কেননা, এগুলোকে সাধারণত সাজগোজের অন্তর্ভুক্ত গণ্য করা হয় না।

বিয়ে বর্জন করা
এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘ইদ্দত পালনরত নারীদের কাছে ইঙ্গিতে বিয়ের প্রস্তাব করলে অথবা মনের মধ্যে বিয়ের ইচ্ছা গোপন রাখলে তোমাদের কোনো পাপ নেই। আল্লাহ জানেন যে, তোমরা তাদের সম্বন্ধে আলোচনা করবে। কিন্তু বিধিমত কথাবার্তা ব্যতীত গোপনে তাদের নিকট কোনো অঙ্গীকার করো না, ইদ্দত পূর্ণ হওয়ার আগে বিয়ে সম্পন্ন করার সঙ্কল্প করো না।’ -সূরা বাকারা: ২৩৫

এ আয়াত প্রমাণ করে ইদ্দতাধীন নারীকে বিয়ে করা হারাম, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেওয়া বা আশ্বাস দেওয়াও হারাম, বিয়ের স্পষ্ট প্রস্তাব পাঠানোও হারাম। তবে বিয়ের ইঙ্গিত দেওয়া হারাম নয়।

নিজ ঘর থেকে বের না হওয়া
এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা ইদ্দতাধীন নারীদের ঘর থেকে বের করো না এবং তারাও যেন বের না হয়, যদি না তারা স্পষ্ট অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়। এটা আল্লাহর বিধান। যে আল্লাহর বিধান লংঘন করে সে নিজের ওপরই অত্যাচার করে।’ -সূরা তালাক: ১

তালাকের সময় বা স্বামীর মৃত্যুর সময় যে ঘরটি স্ত্রীর ঘর হিসেবে পরিচিত, যে ঘরকে তার ঘর বলা হয় সে ঘরেই ইদ্দত পালন করা স্ত্রীর ওপর ফরজ। সে ঘরের মালিক স্ত্রী হোক অথবা স্বামী। তা ভাড়ায় নেওয়া হোক অথবা ধারে নেওয়া হোক।

অতএব, স্ত্রী যদি বাপের বাড়ি বেড়াতে যায় আর সে সময় তালাক সংঘটিত হয় বা স্বামীর মৃত্যু ঘটে তাহলে স্ত্রীকে বাপের বাড়ি থেকে তার ঘরে ফিরে আসতে হবে এবং নিজ ঘরেই তাকে ইদ্দত পালন করতে হবে।

ঘরে ইদ্দত পালন করার অর্থ হলো- দিনরাত ঘরে থাকা। এটা ফরজ। কোনো গুরুতর সমস্যা ব্যতীত দিনের বেলা ঘর ছেড়ে অন্যত্র যাওয়া অথবা অন্য কোথাও রাতযাপন করা ইদ্দতাধীন স্ত্রীর জন্য হারাম। তার ঘর যদি বসবাস অযোগ্য হয়ে যায়, ধ্বসে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়, ঘরের ভাড়া পরিশোধে অসামর্থ্যবান হয়ে পড়ে, স্বামী বা তার স্বজনরা তার অবস্থানকে অনিরাপদ ও হুমকির সম্মুখীন করে ফেলে তাহলে সে সেই ঘর ত্যাগ করতে পারবে। যদি চিকিৎসার প্রয়োজন হয় অথবা ব্যয় নির্বাহের কেউ না থাকায় উপার্জনের প্রয়োজন হয় তাহলে প্রয়োজন পরিমাণ বের হওয়া জায়েজ।

ইদ্দত শেষ হওয়ার আগে স্ত্রীকে তার বসবাসের ঘর থেকে বের করে দেওয়া স্বামী ও তার স্বজনদের জন্য হারাম। তবে সে যদি ব্যভিচার ও অশ্লীলতায় লিপ্ত হয় তাহলে তাকে বের করে দেওয়া জায়েজ হবে। তালাকের ইদ্দতকালীন স্ত্রীর নাফাকাহ্ অর্থাৎ খাদ্য ও বস্ত্র সরবরাহ করাও স্বামীর ওপর ফরজ।

যেহেতু আবশ্যিক প্রয়োজন ব্যতীত দিনে ইদ্দতের ঘর থেকে বের হওয়া স্ত্রীর জন্য জায়েজ নেই, সেহেতু স্বামীকে যদি গ্রামের বাড়িতে কবর দেওয়া হয় তাহলে সেক্ষেত্রে স্ত্রীকে স্বামীর লাশের সাথে শহর থেকে গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া জায়েজ হবে না। যারা গ্রামের বাড়ি রেখে সপরিবারে শহরে বসবাস করে তাদের অনেকই না জানার কারণে বা গুরুত্যপূর্ণ মনে না করার কারণে বিধবা মহিলাকে এ হারামে লিপ্ত করে ফেলে।

ইদ্দতের বিধান আমাদের দেশে দু’ধরণের প্রান্তিকতার শিকার। কেউ কেউ না জানার করণে অথবা গুরুত্বপূর্ণ মনে না করার কারণে ইদ্দতের প্রতি কোনো ভ্রুক্ষেপ করে না। ইদ্দত অবস্থায় বিভিন্ন উপলক্ষে কড়া সাজগোজ করে, বেড়াতে চলে যায়। এমনকি বিয়ে পর্যন্ত সংগঠিত হতে শোনা যায়। আবার কেউ কেউ সাধারণ হালকা রঙের পোশাক পরিহার করে নিছক সাদা রঙের পোশাককে বাধ্যতামূলক মনে করে। নাক-কানের হালকা, সামান্য গহনা যা বাড়তি কোনো আকর্ষণ সৃষ্টি করে না সেগুলোকেও নিষিদ্ধ মনে করে। এ ধরণের বাড়াবাড়ি-ছাড়াছাড়ি উভয় প্রান্তিকতাই বর্জনীয়।

   

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না বলে আশাবাদী বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান।

ভিসা না হওয়া হজযাত্রীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। তবে বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, চলতি হজ মৌসুমে নিবন্ধিত সবার ভিসা হবে বলে আমি আশাবাদী। কয়েকটি এজেন্সির হজযাত্রী নিয়ে জটিলতা হচ্ছে, তার অর্ধেকই ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। বাকি কাজ সমাধানের পথে।

জিলহজ মাসে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ৯ মে শুরু হওয়া হজফ্লাইট শেষ হবে ১০ জুন। এই সময়ের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইডসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন। ইতোমধ্যে ২৮ হাজার ৪ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। ৮২ হাজার ১০০ জনের ভিসা ভিসা হয়েছে। এখনও বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত ৩ হাজার ৩৩৬ জনের ভিসা হয়নি।

মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, পরিচালক, হজ অফিস, ছবি: বার্তা২৪.কম

জানা গেছে, যথাসময়ে ভিসার আবেদন না করায় ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০) কে ধর্ম মন্ত্রণালয় শোকজ করে। এসব এজেন্সির মাধ্যমে ১ হাজার ৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা রয়েছে।

আর আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সির নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কারও ভিসা না করায় বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়ার দেশত্যাগ স্থগিত ও তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

হজ এজেন্সির মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সিসহ অভিযুক্ত এজেন্সির মালিকদের নিয়ে আমরা বসে, পয়েন্ট পয়েন্ট ধরে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করেছি। ইতোমধ্যে হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস, ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এবং মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের হজযাত্রীদের ভিসা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অন্যদেরও হয়ে যাবে। নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালন থেকে বঞ্চিত হবেন না বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এমন আশাবাদী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে হাব সভাপতি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরব অংশে যে পরিমাণ অর্থ প্রেরণ করা দরকার এজেন্সিগুলো তা পাঠিয়েছে। আর যতটুকু সমস্যা রয়েছে, আশা করি তা সমাধান করা যাবে।

এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, ছবি: বার্তা২৪.কম

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি এবার হজে কোনো লোক পাঠাইনি। আকবর হজ গ্রুপের মুফতি লুৎফর রহমান ফারুকী তার লাইসেন্সে সমস্যা হওয়ায় আমার লাইসেন্স ব্যবহার করে ৪৪৮ জন হজযাত্রী পাঠাচ্ছে। চলতি সমস্যা নিয়ে হাব সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে মুফতি লুৎফর রহমান সৌদি থেকে ফোনে কথা বলেছেন, তিনি আশ্বস্থ করেছেন; আজকালের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ জনের ভিসা হয়ে যাবে। আর আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে সবার ভিসা হয়ে যাবে। তিনি মদিনার বাড়ি ভাড়া করেছেন, মক্কার বাড়িও ভাড়া হওয়ার পথে।’

;

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগমুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করলেন বাবা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মৃত্যদণ্ড কার্যকরের আগ মুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে দিলেন বাবা। শেষ সময়ে জন্মদাদা বাবার এমন উদারতা দেখে উপস্থিত কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে সৌদি আরবে। খবর গালফ নিউজের।

আল হুমাইদি আল হারবি নামের ওই বাবা হঠাৎ করে দণ্ড কার্যকরের স্থানে যান। সেখানে গিয়ে ঘোষণা দেন, ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। ওই হত্যাকারীর দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি নেওয়ার আগে আল হুমাইদি আল হারবির কাছে একাধিকবার গিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা।

কিন্তু ওই সময় তিনি ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। নিজ ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করার একমাত্র অধিকারী ব্যক্তি ছিলেন ওই বাবা। সে অনুযায়ী, বিনা শর্তে তিনি হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেন। এতে করে সেখানে থাকা সবাই বেশ অবাক হন।

আল হারবি জানিয়েছেন, ধর্মীয় দিক বিবেচনা করে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও প্রথমে হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের মন পরিবর্তন করেন। ছেলের হত্যারকারীকে ক্ষমা করা ওই বাবার এমন উদারতার প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা এটিকে ক্ষমার একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

খবরে প্রকাশ, নিজ গোত্রের প্রতিবেশীর বন্ধুর ছেলের হাতে তার ছেলে খুন হন। দেশটির আইন অনুযায়ী বিচার শেষে হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। সৌদি আরবের আইনে রক্তপণ নিয়ে কিংবা অভিভাবক হিসেবে খুনিকে ক্ষমা করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।

সে হিসেবে তিনি ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক আজও আগের মতো।’

তার স্পষ্ট কথা, আমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করেছি। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তারা ক্ষমার কথা বললেও তার পরিবার ক্ষমা প্রসঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমাদের সম্পর্ক গত ছয় দশকের মতোই আজও আছে। ছেলের খুনের পর যেমন ছিল, এখনও সম্পর্ক তেমনি আছে।

হত্যাকারীর বাবা আবদুল মাজিদ আল হারবি বলেন, আমি নিহতের বাবাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা করি এবং সম্মান করি, তিনি আমার ভাইয়ের চেয়েও বেশি।

;

সৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ মৌসুমে সৌদি আরবে মো. আসাদুজ্জামান নামের এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এটিই এবারের হজে প্রথম কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু।

শনিবার (১৮ মে) হজ পোর্টালের আইটি হেল্পডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, ১৫ মে আসাদুজ্জামান মদিনায় মসজিদে নববীতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পরেন। পরে তাকে কিং সালমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ৭ নম্বর মাসকা ইউনিয়নের সাতাশী গ্রামের বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে শুক্রবার (১৭ মে) রাত ৩টা পর্যন্ত ২৭ হাজার ১১১ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। অন্যদিকে এখনো ৪ হাজার ২৫৬ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

;

সৌদি পৌঁছেছেন ২৪ হাজার ২৩৬ হজযাত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ থেকে চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে ২৪ হাজার ২৩৬ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২০ হাজার ৪৮৯ জন। এখন পর্যন্ত ৭৯ হাজার ৯০১টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ মে) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।

বুলেটিনে জানানো হয়, এ পর্যন্ত ৬১টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২১টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২০টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

হেল্পডেস্ক থেকে পাওয়া তথ্য মতে, হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার প্রথম ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। এবার সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।

দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত এবার হজ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি।

;