মক্কায় কোরআন প্রতিযোগিতা সম্পন্ন, আশাবাদী বাংলাদেশের প্রতিযোগী
সৌদি আরবের মক্কায় অনুষ্ঠিত ৪৩তম বাদশাহ আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব সম্পন্ন হয়েছে। এবার প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত বিজয়ীদের নাম ঘোষণার পালা। প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হবে মক্কার হোটেল হিলটন কনভেনশন সেন্টারে। পরে পুরস্কার ঘোষণা ও বিতরণ করা হবে মসজিদে হারামে।
স্থানীয় সময় বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১০) বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। ওই সময় দেশটির বাদশাহ সালমানের পক্ষ থেকে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার দেওয়া হবে।
৪৩তম বাদশাহ আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতার দুই বিভাগে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে দুই হাফেজ অংশ নিয়েছেন। তারা হলেন, ব্রাক্ষণবাড়িয়ার হাফেজ ফয়সাল আহমেদ ও কক্সবাজারের মো. মুশফিকুর রহমান। হাফেজ ফয়সাল আহমেদ রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসায় পড়াশোনা করেছে। সে পূর্ণ কোরআন হিফজ বিভাগে অংশ নিয়েছে। অপর প্রতিযোগী মো. মুশফিকুর রহমান পবিত্র কোরআনের ১৫ পারা ক্যাটাগরিতে অংশ নিয়েছে। সে কক্সবাজারের মাহাদ আন-নিবরাসে কোরআন হিফজ সম্পন্ন করেছে।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া হাফেজ ফয়সাল আহমদের সঙ্গে সৌদি আরবে অবস্থানরত তার উস্তাদ হাফেজ নেছার আহমাদ আন নাছিরী বার্তা২৪.কমকে জানিয়েছেন, ‘দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে প্রতিবছর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সাফল্য অর্জন করে দেশের নাম উজ্জ্বল করছেন কীর্তিমান হাফেজরা। এবারের প্রতিযোগিতায় হাফেজ ফয়সাল আহমেদ অত্যন্ত ভালো তেলাওয়াত করেছে। আশা করছি, সে সে ভালো ফলাফল করে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করবে।’ৎ
আরব নিউজের খবরে বলা হয়, স্থানীয় সময় বুধবার এশার নামাজের পর পুরস্কারের বিতরণের বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের পক্ষ থেকে পুরস্কারের অর্থ ও সম্মাননা সনদ তুলে দেবেন মক্কার ডেপুটি গভর্নর প্রিন্স বদর বিন সুলতান।
মক্কার আন্তর্জাতিক এ প্রতিযোগিতায় বিচারক প্যানেলে রয়েছেন বাংলাদেশি আলেম হাফেজ মাওলানা ড. ওয়ালীয়ুর রহমান খান। তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের মুহাদ্দিস হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার বাছাই প্রক্রিয়ায় দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
গত বছর (২০২২) এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ থেকে হাফেজ সালেহ আহমদ তাকরীম অংশ নিয়ে তৃতীয় স্থান অর্জন করে। বিজয়ী হিসেবে সে এক লাখ রিয়াল (প্রায় সাড়ে ২৭ লাখ টাকা) পুরস্কার ও সম্মাননা ক্রেস্ট লাভ করে।
এর আগে এই প্রতিযোগিতায় ২০১৯ সালে এই প্রতিযোগিতায় ১০৩ দেশের প্রতিযোগীর মধ্যে দ্বিতীয় হন ক্ষুদে হাফেজ মুহাম্মদ শিহাব উল্লাহ। ২০১৩ সালে ৭০টি দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ নাজমুস সাকিব। ২০১৭ সালে ৭৩টি দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ আবদুল্লাহ আল মামুন।
সৌদি আরবের ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাটি পাঁচটি ক্যাটাগরিতে অনুষ্ঠিত হবে। তা হলো- ১. শাতেবি পদ্ধতিতে সাত কিরাতসহ সুন্দর কণ্ঠে পূর্ণ কোরআন হিফজ, ২. তাজবিদসহ সুন্দর কণ্ঠে পূর্ণ কোরআন হিফজ এবং একক শব্দগুলোর তাফসির, ৩. তাজবিদসহ সুন্দর কণ্ঠে পূর্ণ কোরআন হিফজ, ৪. তাজবিদসহ ১৫ পারা হিফজ, ৫. তাজবিদসহ পাঁচ পারা হিফজ (শেষোক্ত বিভাগটি ওয়াইসিভুক্ত নয় এমন দেশের জন্য প্রযোজ্য)।
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট সৌদি আরবের ইসলাম ও দাওয়াহ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে মক্কায় ৪৩তম আন্তর্জাতিক এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এতে বিশ্বের ১১৭টি দেশের ১৬৬ প্রতিযোগী তাতে অংশ নেন। প্রতিযোগিতার পাঁচ ক্যাটাগরিতে বিজয়ীরা পাবেন সর্বমোট ৪০ লাখ সৌদি রিয়াল পুরস্কার। আর প্রথম স্থান অর্জনকারীরা পুরস্কার হিসেবে পাবেন পাঁচ লাখ রিয়াল।