সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় শহর দাম্মামের পুরোনো একটি মসজিদে মুসল্লিদের স্বাগত জানানো হচ্ছে- সুগন্ধী ও কাপড় দিয়ে। কেবল তাই নয়, মসজিদের বর্ধিত অংশে পাখিপ্রেমীদের জন্য রয়েছে বিশাল ঘের, যেখানে আছে বিপুলসংখ্যক পাখি। গালফ নিউজ এসব তথ্য জানিয়েছে।
মসজিদটির নাম আমর বিন আল জামুহ। মসজিদটির তত্ত্বাবধায়ক ইব্রাহিম আল-হুকাইল বলেন, ‘প্রথম দেখায় মসজিদটিকে বেশ নতুন মনে হয়। কিন্তু এটি ৪০ বছরের পুরোনো এবং একাধিকবার এটি সংস্কারের মধ্য দিয়ে গেছে।’
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, আগে মসজিদটিতে বেশ কিছু সমস্যা ছিল। আমরা তার অনেকগুলোই সমাধান করেছি। যেমন আগে অজু করার জায়গা ও টয়লেট একই জায়গায় ছিল, আমরা সেটি আলাদা করেছি।’
মসজিদের বর্ধিত অংশে পাখিদের জন্য একটি ঘর রয়েছে উল্লেখ করে ইব্রাহিম আল-হুকাইল বলেন, ‘জায়গাটি অব্যবহৃত ছিল, পরে সেটি পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত হয়।’
বিজ্ঞাপন
তিনি জানান, পরে মুসল্লিদের পাখি দেখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে মসজিদের জানালা করা হয়। এর ফলে মসজিদের ভেতরে একটি দারুণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এসবের বাইরেও মসজিদটি মুসল্লিদের কাপড় ও সুগন্ধী দিচ্ছে। এ বিষয়ে আল-হুকাইল বলেন, আমরা মুসল্লিদের কাপড় দিচ্ছি। কারণ অনেক সময় অনেক মুসল্লি ঘর্মাক্ত কলেবরে মসজিদে আসেন। তাদের যেন নামাজ পড়তে অস্বস্তি না হয়, তাই তাদের কাপড় দেওয়া হয় অস্থায়ী ভিত্তিতে।
হুকাইল বলেন, এসব কাপড় সব সময়ই পরিষ্কার রাখা হয় এবং জীবাণুমুক্ত রাখা হয়। এটি মসজিদ পরিষ্কার রাখারও একটি উপায়।
কেবল কাপড়ই নয়, মসজিদটিতে ধূপও জ্বালানো হয়। পাশাপাশি নামাজিদের আতরও দেওয়া হয়।
আপনি কি কখনও ভেবেছেন, কেন নবীপ্রেম একজন মুমিনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ? কেন আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে নবীকে ভালোবাসতে বলেছেন? আজকের আলোচনায় আমরা এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করব- ইনশাআল্লাহ
নবীপ্রেমের গুরুত্ব অনেক। এর বহুবিধ ফায়দা রয়েছে। এর কয়েকটি হলো-
ঈমানের পরিপূর্ণতা: নবীপ্রেম ছাড়া ঈমান পূর্ণ হয় না। নবীকে ভালোবাসা শুধু মুখের কথা নয়, বরং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এর প্রতিফলন ঘটানো। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘তোমাদের কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ মুমিন হবে না, যতক্ষণ না আমি (নবীজি সা.) তার নিকট তার সন্তান অপেক্ষা, তার পিতা অপেক্ষা এবং সব মানুষ অপেক্ষা বেশি প্রিয় না হই।’ -সহিহ বোখারি : ১৩-১৪
নবীপ্রেম প্রতিটি মুমিনের এক অমূল্য সম্পদ। নবীপ্রেম সবার অন্তরে থাকলেও সবকিছুর ওপরে তাকে প্রাধান্য দেওয়া ঈমানদারের জন্য ফরজ। কোরআনে কারিমে আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করেন, ‘(হে নবী)! আপনি বলুন, তোমাদের নিকট যদি তোমাদের পিতা-মাতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভাই-বোন, তোমাদের বংশ, তোমাদের অর্জিত সম্পদ, তোমাদের এমন ব্যবসা যা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় করো এবং তোমাদের বাসস্থান যা তোমরা পছন্দ কর; আল্লাহতায়ালা ও তার রাসুল এবং তার রাস্তায় জেহাদ করা থেকে অধিক প্রিয় না হয়, তাহলে অপেক্ষা করো আল্লাহর বিধান আসা পর্যন্ত। আল্লাহ ফাসেক সম্প্রদায়কে হেদায়েত করেন না।’ -সূরা তাওবা : ২৪
আল্লাহর ভালোবাসা লাভ: কোরআন মাজিদে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘(হে রাসুল!) আপনি বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও তবে আমার অনুসরণ করো; ফলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন, তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করে দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু।’ -সূরা আলে ইমরান : ৩১
অর্থাৎ নবীকে ভালোবাসা আল্লাহর ভালোবাসা লাভের একটি নিশ্চিত পথ।
জান্নাতের নিশ্চয়তা: হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যে আমার সুন্নতকে ভালোবাসে, সে অবশ্যই আমাকে ভালোবাসে; আর যে আমাকে ভালোবাসে সে জান্নাতে আমার সঙ্গেই থাকবে।’ -জামে তিরমিজি : ২৭২৬
নবী কারিম (সা.) হলেন আল্লাহর রাসূল: তিনি আল্লাহর বাণী আমাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। তিনিই আমাদের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ মডেল। তাই তাকে ভালোবাসা মানে আল্লাহকে ভালোবাসা।
নবী কারিম (সা.) আমাদের জন্য কোরআন নিয়ে এসেছেন: কোরআন হলো- আল্লাহর কালাম। নবীকে ভালোবাসা মানে কোরআন মাজিদকে ভালোবাসা।
নবী আমাদের জন্য সুন্নাহ রেখে গেছেন: সুন্নাহ হলো- নবীর জীবন ও বাণী। তিনি আমাদেরকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন। তাকে ভালোবাসা মানে তার সুন্নাহ অনুসরণ করা।
নবীপ্রেম একজন মুসলিমের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি আমাদেরকে আল্লাহর কাছাকাছি নিয়ে যায় এবং জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলে। আসুন, আমরা সবাই নবীকে ভালোবাসার চেষ্টা করি এবং তার সুন্নাহ অনুসরণ করি।
আল্লাহতায়ালা সবাইকে নবী কারিম (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা বাড়িয়ে দিন এবং আমাদেরকে তার সুন্নাহ অনুসরণ করার তওফিক দিন আমিন।
দক্ষিণ আমেরিকান দেশ কলম্বিয়া। দেশটির সীমান্তবর্তী মাইকাও হলো কলম্বিয়া-ভেনেজুয়েলা সীমান্তের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তের একটি ছোট শহর। ধুলোবালিতে ভরপুর শহরটির বিভিন্ন প্রান্ত কলম্বিয়ার লা গুয়াজিয়া প্রদেশ সংলগ্ন। যা একসময় ছিলো কলম্বিয়ার আরব ও মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রাণকেন্দ্র।
এখন মাইকাও ঠিক তা নয়, যা হওয়ার কথা ছিল। যদিও এখানে আরব সম্প্রদায়ের প্রভাব অনেকদিন ধরেই। শহরটিতে আছে মসজিদ, আরব স্কুল এবং রাস্তার ওপর একটি ছোটখাটো আরব-পরিচালিত ব্যবসায়িক সাজসজ্জা। এ কথা উল্লেখ না করলেও চলে, শহরটির শাসনভার পরিচালনার দায়িত্বে আছেন লেবানিজ-কলম্বিয়ান মোহাম্মদ জাফর দাসুকি হাজি। কলম্বিয়ার ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়র তিনিই।
শহরটির আকাশে ‘দ্য ওমর ইবনুল খাত্তাব মসজিদ’ হলো স্থানীয় সম্প্রদায়ের অনিবার্য শক্তির একটি বড় প্রমাণ। নজরকাড়া মার্বেল পাথরে নির্মিত মসজিদটি দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম। ১৯৯৭ সালে মাইকাওয়ে আরব সম্প্রদায়ের শক্ত অবস্থানের প্রতীক হিসেবে নির্মিত হয়। মাইকাওয়ের মুসলিম সম্প্রদায়ের একজন গবেষক পেদ্রো ডেলগাডো মসজিদটিকে মাইকাও শহরের প্রতীক হিসেবে আখ্যায়িত করেন। মসজিদটিতে একসঙ্গে ৭০০ মুসল্লির নামাজ পড়ার ব্যবস্থা আছে।
মসজিদটির গা ঘেঁষে দারুল ইকরাম স্কুল হলো- মাইকাওয়ের মুসলিম সম্প্রদায়ের আরেকটি প্রতীক। এক হাজারেরও বেশি ছাত্র নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি একসময় ছিল মাইকাওয়ের আরব মুসলিম এবং মুসলিম অভিবাসীদের গর্বের বস্তু। বিস্তৃতি ছিল আরও দুটি সেন্টারে। তবে চলতি বছর স্কুলটির ছাত্রসংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ২৫২ জনে। সেন্টার কমে হয়েছে একটি। এসব ছাত্রের অর্ধেকের শিকড়ই আরবে নয়।
১৯৮৭ সাল থেকে মাইকাওয়ে বসবাসকারী লেবানিজ নাগরিক ও দোকান মালিক নাসের গেবারা বলেন, ‘আমাদের এখন সময় ভালো যাচ্ছে না। আমাদের সম্প্রদায় কঠিন সংকট মোকাবেলা করছে। শহরটির প্রতি আমার ভালোবাসা আমার রক্তের সঙ্গে মিশে গেলেও আমি অসংখ্যবার লেবাননে ফিরে যাওয়ার কথা ভেবেছি। পাশাপাশি এ-ও ভেবেছি, মাইকাও শহরের প্রতি আমার ভালোবাসা ছড়িয়ে পড়েছে রক্তের প্রতিটি কণিকায়।’
মাইকাও শহরে এখনো যেসব মুসলিম ও আরব সম্প্রদায় টিকে আছেন; তারা একটি বিশেষ আবেগকে ভাগাভাগি করেন। নির্দিষ্ট একটি জায়গার প্রতি আনুগত্য তাদের যেমন অনেক কিছু দিয়েছে; তেমনি নিয়েছেও অনেক কিছু। কলম্বিয়া এবং বিশেষ করে মাইকাওয়ের আরব সম্প্রদায়ের বেড়ে ওঠা বুঝতে হলে কাউকে ফিরে যেতে হবে বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে।
এ অঞ্চলে আরবদের অভিবাসন একেবারে ১৮৮০ সালের দিকের, যখন মধ্যপ্রাচ্যের অনেকেই অভিবাসন করেছেন অটোমান সাম্রাজ্য থেকে। যখন অটোমান সাম্রাজ্যের পতন ঘটে; তখন কিছুসংখ্যক আরব উত্তর কলম্বিয়াকে তাদের গন্তব্য বানান। বারানকুইল্লা ও মাইকাওয়ের মতো শহরের দিকে ধাবিত হন। তারা তা করলেন তাদের প্রাথমিক প্রবেশ পথ ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের বন্দরগুলো থেকে। ১৯৭০ সালে লেবাননে গৃহযুদ্ধ দেখা দিলে অনেক লেবানিজ নাগরিক অভিবাসনের সিদ্ধান্ত নেন। তাদের অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং সামান্য একটি অংশ চলে যায় কলম্বিয়ায়।
পরে আরব মুসলিম সম্প্রদায় ধীরগতিতে কিন্তু দৃঢ়তার সঙ্গে মাইকাওয়ে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে। তবে এই সেটা সময় চিরস্থায়ী হয়নি। একসময় প্রতিবেশী ভেনেজুয়েলার অর্থনীতিতে ধস নামে। ২০০০ সালের প্রথমদিকে দেশটি ধাবিত হয় বড় ধরনের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সংকটের দিকে। খুব স্বাভাবিকভাবেই ধাক্কা এসে লাগে মাইকাওয়ের ওপর। একসময় যে অঞ্চলে অফুরন্ত অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ছিল, তা পড়ে স্থবিরতার কবলে। ফলে উদীয়মান আরব অভিবাসীরা অন্যত্র নিজেদের ভাগ্য অনুসন্ধান শুরু করে।
আরব সম্প্রদায়, তাদের মসজিদ, স্কুল এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত হয়ে এসেছে। যে সম্প্রদায় একসময় যেকোনো জায়গায় ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার ছিল তাদের সংখ্যা। এখন এক হাজারের নিচে যদিও। তবে পুরোপুরি সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা মুশকিল।
স্থানীয় দারুল ইকরাম স্কুলের ডিরেক্টর জর্জ মেনডোজা বলেন, ‘মাইকাও একটি সংকটের মধ্য দিয়ে গেছে। যা এখানকার বাণিজ্যকে প্রভাবিত করেছে। ব্যবসায়ীদের অধিকাংশই ছিলো আরব, যাদের অনেকেই সুযোগের সন্ধানে অন্যত্র চলে গেছে ছেলেমেয়েদের নিয়ে। আর এর প্রভাব পড়েছে স্কুলের ওপর।’
এত কিছুর পরও তারা মূল জনগোষ্ঠীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ। অনেক কম শিশুকে এখন দারুল ইকরাম স্কুলের করিডোরে দেখা যায়। যদিও একসময় পরিপূর্ণ থাকা মসজিদের প্রার্থনা কক্ষের সামান্য জায়গাই ভরে যেত। তারপরও মাইকাওয়ের মুসলিম সম্প্রদায় এখানকার মৌলিক জনগোষ্ঠীর অংশ।
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ১২ বছর বয়সী শিশু মো.মুনতাছির আলম মাত্র ছয় মাসে কোরআনে হাফেজ হয়েছেন। অল্প সময়ের মধ্যে ৩০ পারা কোরআন মুখস্ত করে পরিবার, এলাকাবাসী ও শিক্ষকদের অবাক করে দিয়েছে মুনতাছির।
সে উপজেলার চরহাজারী ইউনিয়নের দারুল ফালাহ মাদরাসার হিফজ্ বিভাগের ছাত্র এবং মুনতাছির উপজেলার চরহাজারী ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের বেপারী বাড়ির মো.শাহ আলম- রোকসানা আক্তার দম্পতির ছেলে।
জানা যায়, ছেলে জন্মের আগেই মায়ের নিয়ত ছিল ছেলে হলে তাকে কোরআনে হাফেজ বানাবেন। এতে মত ছিল বাবারও। যেমন নিয়ত,তেমন কাজ। এরপর ২০২৪ সালের শুরুর দিকে বাবা ও মায়ের ইচ্ছায় ছেলে মুনতাছিরকে বাড়ির পাশে দারুল ফালাহ মাদরাসার হিফজ বিভাগে ভর্তি করা হয়। এরপর ৬ মাসে পবিত্র কোরআন মুখস্ত করে কোরআনে হাফেজ হন। এতে পরিবারে দেখা দেয় পরিবর্তন। পরিবারের সবার মধ্যে কথাবর্তা,আদব কায়দা, নামাজ কালামে পরিবর্তন চলে আসে। ছেলের এমন সাফল্যে খুশি মা-বাবাসহ এলাকাবাসী। বাবা-মায়ের প্রত্যাশা ছেলে নামকরা হাফেজে আলেম হয়ে দেশবাসীর কল্যাণে কাজ করবে।
মাদরাসার শিক্ষক ও স্থানীয়রা বলছে, মা-বাবা তার ছেলেকে ইসলামের পথে দেখতে চেয়েছিলেন। এ জন্য ছেলেকে মাদরাসায় হিফজ বিভাগে ভর্তি করান। তাদের স্বপ্ন পূরণে মনোযোগ দিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে কোরআন মুখস্ত করে মুনতাছির। মুসলিম হিসেবে কোরআনে হাফেজ হওয়া পরিবার ও সমাজের জন্য সর্বোচ্চ পাওয়া।
শিশু হাফেজ মো.মুনতাছির আলম বলেন, মা-বাবা ও মাদরাসার ওস্তাদদের সহযোগিতায়া আমি ছয় মাসের মধ্যে হিফজ্ সম্পন্ন করি। সবার কাছে দোয়া চায় আমি যেন দেশ বরেণ্য হাফেজে আলেম হতে পারি।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু নাছের বলেন, শুধু মাদরাসার শিক্ষকরাই নয় এলাকাবাসীও শুভ কামনা জানিয়েছেন শিশু হাফেজ মুনতাছিরের জন্য। তাদের প্রত্যাশা ইসলাম প্রসারে ভূমিকা রাখবে এ ক্ষুদে হাফেজ। সমাজের মানুষ এ থেকে আরো বেশি দ্বীনি শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হবে।
মুনতাছিরের বাবা শাহ আলম বলেন, আমার ছেলে জন্ম হওয়ার আগেই তার মায়ের নিয়ত ছিল ছেলেকে হাফেজ বানানোর। আল্লাহর রহমতে আমাদের আশা পূর্ণ হয়েছে। আমরা দেশবাসীর কাছে দোয়া চায় আমার ছেলে যেন দেশ বরেণ্য হাফেজ ও আলেম হতে পারে।
দারুল ফালাহ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আবুবক্কর ছিদ্দিক বলেন, ২০২৪ সালের শুরুর হিফজ্ বিভাগে ভর্তি হয়ে সে ছয় মাসের মধ্যে হিফজ্ সম্পন্ন করে। এতে তার পিতা-মাতার আন্তরিকতা সহযোগিতা এবং ওস্তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং সহযোগিতা ছিল। ২০১৮ সালে মাদরাসায় হেফজ বিভাগ চালু হওয়ার পর থেকে ৪৪জন ছাত্র হিফজু সম্পন্ন করে। বর্তমানে হিফজু বিভাগে ৬৪ জন ছাত্র অধ্যয়নরত রয়েছে। ভবিষ্যতে সে দেশ বরেণ্য হাফেজ ও আলেম হতে চায়। ছেলের জন্য দোয়া চেয়েছেন বাবা-মা।
শুধু পবিত্র হজপালন ও উমরা আদায়ের মতো ধর্মীয় কারণে নয়, অবসর ভ্রমণ এবং বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়দের কাছে যাওয়ার ভ্রমণও বেড়েছে সৌদি আরবে। এক কথায়, সামগ্রিকভাবে পর্যটন বেড়েছে দেশটিতে। এর ফলে কোনো লক্ষ্যমাত্রায় নির্দিষ্ট সময়ের সাত বছর আগেই পৌঁছাল দেশটি।
আশ্চর্য এই কাণ্ড ঘটেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে। ২০৩০ সালের মধ্যে বার্ষিক ১০ কোটি পর্যটক টানার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিল দেশটি। সেটা তারা ছাড়িয়ে গেছে ২০২৩ সালেই। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এক প্রতিবেদনের সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম সৌদি গেজেট।
আইএমএফ তার ‘২০২৪ আর্টিকেল ফোর কনসালটেশন’ নামের প্রতিবেদনে সৌদি আরবের পর্যটন খাতকে দেশটির অর্থনৈতিক বহুমুখীকরণে প্রধান অবদানকারী হিসেবে তুলে ধরেছে।
২০২৩ সালে দেশটির পর্যটন থেকে আসা রাজস্ব গিয়ে ঠেকেছে ৩ হাজার ৬০০ কোটি ডলারে। আগের বছরের তুলনায় এটি বেড়েছে ৩৮ শতাংশ। ২০২৩ সালে জিডিপিতে এই খাতের সরাসরি ও পরোক্ষ অবদান ১১ দশমিক ৫ শতাংশ। আশা করা হচ্ছে, ২০৩৪ সাল নাগাদ এই হার ১৬ শতাংশে পৌঁছাবে।
ফর্মূলা ওয়ান, ২০২৭ সালে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া কাপ এবং ২০৩০ ওয়ার্ল্ড এক্সপোর মতো বড় আন্তর্জাতিক ইভেন্টগুলো পর্যটন খাত আরও ফুলে ফেঁপে ওঠার ইঙ্গিতই দিচ্ছে।
আইএমএফ রিপোর্ট থেকে দেখা যায় দেশটি এখন বহির্মুখী পর্যটনে ব্যয় করার চেয়ে আন্তর্জাতিক দর্শকদের কাছ থেকে বেশি আয় করছে। ২০২২ সালের মধ্যে, এই পরিবর্তনের ফলে একটি ইতিবাচক ভারসাম্য দেখা দেয় এবং ২০২৩ সালে এটি আরও উন্নত হয়।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের বাইরে সৌদি নাগরিকদের পর্যটন ব্যয় যেখানে কমেছে, সেখানে প্রবাসীরা করোনা মহামারির পরে তাদের অবসর ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছেন। সৌদি আরবের পর্যটন খাত খাদ্য, পানীয়, ভ্রমণ, সংস্কৃতি এবং বাসস্থানের মতো বিভিন্ন শিল্পের মধ্যে যে সংযোগ তৈরি করেছে, সেটি তেলসংশ্লিষ্ট খাতের ওপর দেশটির নির্ভরতা কমাতে সাহায্য করছে।
রেড সি গ্লোবাল ও দিরিয়াহ গেটের মতো বিশাল বিশাল প্রকল্প এই পরিবর্তনে বড় ভূমিকা রেখেছে। কারণ এগুলো বিলাসবহুল পর্যটন, সংস্কৃতি সংরক্ষণ এবং অবকাঠামোগত উন্নতির দিকে মনোযোগ দিয়েছে। তবে ভিশন ২০৩০ দেশটির অর্থনৈতিক সংস্কারের পরিকল্পনা হিসেবে বহাল রয়েছে, যার মূল স্তম্ভ পর্যটন।
সৌদি আরবের অগ্রগতি সম্পর্কে আইএমএফের স্বীকৃতি তার পর্যটন খাতের বিশাল সম্ভাবনা এবং আগামী বছরগুলোতে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের সক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে বলেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।