শয়তানের ধোঁকা থেকে বাঁচার উপায়

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

শয়তানের ধোঁকা থেকে বাঁচার উপায়

শয়তানের ধোঁকা থেকে বাঁচার উপায়

আল্লাহতায়ালা কোরআন মাজিদে ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনরা, তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না।’ -সুরা নুর : ২১

বর্ণিত আয়াতে শয়তানের ‘পদাঙ্ক’ অনুসরণ দ্বারা উদ্দেশ্য তার পথ, কর্মপদ্ধতি আর সে যে কাজের নির্দেশ দেয়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-এর মতে, পদাঙ্ক দ্বারা শয়তানের কাজ উদ্দেশ্য। হজরত কাতাদা (রহ.) বলেন, প্রতিটি পাপের কাজই শয়তানের পদাঙ্কের অন্তর্ভুক্ত। -তাফসিরে ইবনে কাসির

বিজ্ঞাপন

শায়খ ইবনে উসাইমিন (রহ.) বলেন, ‘আল্লাহ নিষিদ্ধ করেছেন এমন সব কাজই শয়তানের ‘পদাঙ্ক’-এর অন্তর্ভুক্ত; চাই তা অহংকার, মিথ্যা বলা, ঠাট্টা-বিদ্রুপ ইত্যাদি যা-ই হোক।

কোরআন মাজিদের ৪ স্থানে আল্লাহতায়ালা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। এসব স্থানে শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে-

বিজ্ঞাপন

মানুষের শত্রু: শয়তান মানুষের শত্রু, সে মানুষের অনিষ্ট চায়। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ -সুরা আনআম : ১৪২

অসৎ জীবনের পথ দেখায়: মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মানবজাতি, পৃথিবীতে যা কিছু বৈধ ও পবিত্র খাদ্যবস্তু রয়েছে তা থেকে তোমরা আহার করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ -সুরা বাকারা : ১৬৮

আল্লাহর আনুগত্যে বাধা দেয়: শয়তান মানুষকে আল্লাহর আনুগত্য করতে এবং তার কাছে সর্বাত্মক আত্মসমর্পণ করতে নিষেধ করে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমরা সর্বাত্মকভাবে ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ -সুরা বাকারা : ২০৮

অশ্লীলতা ও মন্দ কাজের নির্দেশ দেয়: পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। কেউ শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করলে, শয়তান তো অশ্লীলতা ও মন্দ কাজের নির্দেশ দেয়।’ -সুরা নুর : ২১

শয়তান মানুষকে নানাভাবে প্রতারণা করে। ফলে সে তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে। পবিত্র কোরআনে শয়তানের প্রতারণা করার নানা কৌশল বর্ণিত হয়েছে। তার কয়েকটি হলো-

মিথ্যা আশা: শয়তান মানুষের মনে মিথ্যা আশা সৃষ্টি করে প্রতারিত করে। আল্লাহ বলেন, ‘সে প্রতিশ্রুতি দেয় এবং মানুষের মনে মিথ্যা বাসনার সৃষ্টি করে। আসলে শয়তান তাদের যে প্রতিশ্রুতি দেয়, তা ছলনা ছাড়া আর কিছুই নয়।’ -সুরা নিসা : ১২০

মন্দ কাজকে শোভনীয় করে তোলে: শয়তান মানুষের মন্দ কাজকে সুন্দর ও শোভনীয় করে তোলে। ফলে মানুষ তা করতে দ্বিধা করে না। ইরশাদ হয়েছে, ‘শয়তান মন্দ কাজগুলো তাদের দৃষ্টিতে চমৎকার ও মনোহর করে তোলে। এভাবে তাদের সরল-সঠিক পথ অবলম্বনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।’ -সুরা আনকাবুত : ৩৮

মনে ভয় সৃষ্টি করে: শয়তান মানুষের মনে ভয় সৃষ্টি করে। ফলে সে ভালো কাজে অগ্রগামী হতে পারে না। আল্লাহ বলেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় ও কৃপণতার আদেশ করে।’ -সুরা বাকারা : ২৬৮

নেশা ও মোহগ্রস্ত করে: শয়তান মানুষকে মাদক, জুয়া ও ভাগ্য নির্ণয়ের মতো পাপের প্রতি মোহগ্রস্ত করে তোলে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, জেনে রেখো, মদ, জুয়া, পূজার বেদি, ভাগ্য নির্ণয়ের শর- এসবই শয়তানের নোংরা কাজ। সুতরাং তোমরা এগুলো বর্জন করো, যাতে তোমরা সফল হতে পারো।’ -সুরা মায়িদা : ৯০

লোভ দেখায়: লাভের আশা বা লোভ দেখিয়ে শয়তান মানুষকে অবৈধ উপার্জনে লিপ্ত করে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা সুদ খায় তারা অবশ্যই ওই ব্যক্তির মতো (কেয়ামতের দিন) দাঁড়াবে, যাকে শয়তান তার স্পর্শ দ্বারা সুস্থ জ্ঞান-বুদ্ধি শূন্য করে দিয়েছে।’ -সুরা বাকারা : ২৭৫