কানাডার হ্যামিলটনে ইসলামোফোবিয়া বিরোধী প্রচারণা
কানাডায় অক্টোবর মাস ইসলামি ঐতিহ্যের মাস হিসেবে স্বীকৃত। দেশটির হ্যামিলটন শহরে ইসলামি ঐতিহ্যের মাস উদযাপনের অংশ হিসেবে এবারই প্রথম ইসলামোফোবিয়া প্রতিরোধে প্রচারণা শুরু হয়।
স্থানীয় মুসলিমদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান তুলে ধরতে গত ৩ অক্টোবর ‘সালাম হ্যামিলটন’ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে। মূলত বর্ণবাদ ও ঘৃণা মোকাবেলায় শিক্ষামূলক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে মুসলিম বাসিন্দাদের প্রাত্যহিক জীবনে ইসলামোফোবিয়ার প্রভাব প্রশমিত করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে হ্যামিলটন মেয়র আন্দ্রেয়া হরওয়াথ বলেন, ‘আজ হ্যামিলটন সিটির মুসলিম সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমরা খুবই সম্মানিত। আমরা এবারই প্রথম হ্যামিলটন সিটিতে ইসলামোফোবিয়াবিরোধী প্রচারণা শুরু করেছি। মুসলিম সম্প্রদায়ের সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্য উদযাপন করার পাশাপাশি সবার মধ্যে ঘৃণা ও সহনশীলতা বিষয়ক সচেতনতা বাড়ানো এই প্রচারণার লক্ষ্য।’
কানাডায় ১৭ বছর ধরে মুসলিমদের সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে অক্টোবর মাসজুড়ে ইসলামের ইতিহাসের মাস (আইএইচএম) উদযাপিত হয়।
তবে এবারই প্রথম ইসলামোফোবিয়া প্রতিরোধবিষয়ক দেশটির বিশেষ প্রতিনিধি আমিরা আল গাওয়াবি ঐতিহ্যের মাসটি উদযাপনে অংশ নেন। এবারের প্রতিপাদ্য শিল্পকলা ও বিজ্ঞানে মুসলিম নারীদের অবদান। হ্যামিলটন শহরের মুসলিম সংগঠন সালাম হ্যামিলটন শিক্ষা ও সামাজিক কার্যক্রমের মাধ্যমে ইসলামের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের মাস উদযাপন করছে।
পাবলিক স্কুলের ট্রাস্টি সাবরিনা দাহাব বলেন, ‘এই দেশের একজন নাগরিক হিসেবে এবং একজন সক্রিয় মুসলিম হিসেবে আমাদের কিছু কর্তব্য রয়েছে। বিশেষত ইসলামোফোবিয়া প্রতিরোধে সবার সঙ্গে লড়াইয়ে অংশ নিতে একের প্রতি অন্যের কিছু দায়িত্ব রয়েছে। অন্যের প্রতি ঘৃণা ও ভীতি প্রতিরোধে আজকের আয়োজনে অংশ নিতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।’
মুসলিম কাউন্সিল অব গ্রেটার হ্যামিলটনের প্রেসিডেন্ট ড. আলি গাউস বলেন, ‘গত মে মাসে অনেক সংগঠন এই প্রচারণার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে। এর জন্য তারা ‘সালাম’ শব্দটি নির্বাচন করে, কারণ এর অর্থ শান্তি। তা ইসলামি সংস্কৃতিতে একটি বহুল প্রচলিত শব্দ।
সারাবিশ্বের মুসলিমরা তা বুঝতে পারে। ইসলামের ইতিহাস ও ঐতিহ্য উদযাপন করা এবং মুসলিমদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এই প্রচারণার প্রধান লক্ষ্য। আমরা শান্তিপ্রিয় এবং হ্যামিলটনবাসীর জীবনযাত্রা সহজ করতে নানাভাবে কাজ করছি। বিশেষত দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছি। বিভিন্ন গ্রন্থাগার ও কমিউনিটি সেন্টারগুলোতে পোস্টারের মাধ্যমে এই প্রচারণার কার্যক্রম চলছে।’
কানাডার ইসলামোফোবিয়া প্রতিরোধ বিষয়ক প্রথম প্রতিনিধি আমিরা আল গাওয়াবি বলেন, ‘আগে এ মাসের উদযাপন অপ্রয়োজনীয় বা নিষ্ক্রিয় মনে করা হতো। কিন্তু বর্তমানে সেই পরিস্থিতি অনেক বদলে গেছে। কারণ সম্প্রতি কানাডায় মুসলিম বিরোধী অনেক সহিংসতার ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে।’