সোম ও বৃহস্পতিবারের নফল রোজায় গোনাহ মাফ হয়

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবারের রোজার ফজিলত অনেক

সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবারের রোজার ফজিলত অনেক

আমাদের গোনাহ যত ব্যাপক, দয়াময় আল্লাহতায়ালার ক্ষমার দুয়ার বা ক্ষমার বাহানা ও উপলক্ষ্য তার চেয়ে অনেক অনেক বেশি ও বিস্তৃত। প্রয়োজন শুধু বান্দার আল্লাহমুখী হওয়া, ফিরে আসা; দয়াময় আল্লাহর ক্ষমা ও রহমতের দরিয়ায় অবগাহন করা।

তেমনি একটি উপলক্ষ্য হলো- সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবারের রোজা। সপ্তাহের দিনগুলোর মধ্যে সোম ও বৃহস্পতিবার গুরুত্বপূর্ণ। আমলের মাধ্যমে কল্যাণ লাভের বিচারে সপ্তাহের সব দিনই গুরুত্বপূর্ণ, তবে কিছু দিবস একটু বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার তো বিভিন্ন দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ, যার মাধ্যমে আমরা আমাদের রবকে চিনেছি, যার মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের হেদায়েত দিয়েছেন, যার মাধ্যমে আমরা অহির আলোর সন্ধান পেয়েছি তিনি হলেন- সরকারে দো আলম, সায়্যিদুল মুরসালিন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি এ দিনেই জন্মগ্রহণ করেছেন।

যে কিতাবের (কোরআন মাজিদ) মাধ্যমে আমরা রবের কালাম লাভ করেছি, আসমানি নূরে স্নাত হয়েছি, হেদায়েতের বাণী লাভ করেছি- সেই কিতাবও নাজিল হয়েছে সোমবারে। হজরত আবু কাতাদা আনসারি (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সোমবারের রোজা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল। (এ দিনের রোজার ফজিলত কী? বা কেন আপনি গুরুত্বের সঙ্গে এদিন রোজা রাখেন?) তিনি তখন উত্তরে বললেন, এ দিনেই আমি জন্মলাভ করেছি এবং এ দিনেই আমার ওপর অহি নাজিল হয়েছে। -সহিহ মুসলিম : ১১৬২

বিজ্ঞাপন

এ ছাড়া আরো কারণ রয়েছে। নবীজীর প্রিয় সাহাবি হজরত উসামা বিন যায়েদ (রা.) একবার নবীজীকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনাকে অনেক গুরুত্বের সঙ্গে দুই দিন রোজা রাখতে দেখি! নবীজী তখন জিজ্ঞেস করলেন, কোন্ দুই দিনের কথা বলছো- উসামা!
তিনি বললেন, সোম ও বৃহস্পতিবার।

তখন নবীজী বললেন, এ দুই দিন রাব্বুল আলামিনের সামনে বান্দার আমলসমূহ পেশ করা হয়; ফলে আমি চাই- আমার আমল পেশ করার সময় আমি রোজা অবস্থায় থাকি। -সুনানে নাসায়ি : ২৩৫৮

আর কেমন গুরুত্বের সঙ্গে নবী কারিম (সা.) সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন! হজরত আয়েশা রা. বলেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গুরুত্বের সঙ্গে খোঁজ রেখে রেখে সোম ও বৃহস্পতিবারের রোজা রাখতেন! -জামে তিরমিজি : ৭৪৫

আর এ দুই দিনের রোজার সবচেয়ে বড় ফজিলত হলো, এর মাধ্যমে আল্লাহতায়ালা গোনাহ মাফ করেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (গুরুত্বের সঙ্গে) সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন। ফলে নবীজীকে জিজ্ঞাসা করা হলো- আল্লাহর রাসুল! আপনি (গুরুত্বের সঙ্গে) সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখেন! (এর কারণ কী?)।

তখন নবীজী (সা.) বললেন, সোম ও বৃহস্পতিবারে আল্লাহ সকল মুসলিমকে ক্ষমা করে দেন। তবে ওই দুই ব্যক্তি ছাড়া, যারা একে অপরকে বর্জন করেছে। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘তারা পরস্পর মিলে যাওয়া পর্যন্ত এদেরকে আপন অবস্থায় ছেড়ে দাও।’ -সুনানে ইবনে মাজাহ : ১৭৪০

আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার তওফিক দান করুন। সব ধরনের হিংসা-বিবাদ-বিদ্বেষ থেকে রক্ষা করুন এবং আমাদের গোনাহগুলো ক্ষমা করুন। আমিন।