আল আকসার ১০ বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানুন



মুফতি উবাইদুল্লাহ তারানগরী, অতিথি লেখক, ইসলাম
আল আকসা কমপ্লেক্স

আল আকসা কমপ্লেক্স

  • Font increase
  • Font Decrease

আল আকসা, বায়তুল মোকাদ্দাস, আল কুদস, মসজিদুল হারাম কিংবা মসজিদুল আকসা- যে নামেই বলি না কেন, তা নিছক কোনো স্থাপনা নয়। বরকতময় একাধিক স্থাপনার মিলন মোহনা। অসংখ্য নবী-রাসুল এবং অলি-আউলিয়াদের ইবাদত-বন্দেগির স্থান। প্রিয় জায়গাটি মুসলমানদের হৃদয়ের খুব গভীরে জায়গা করে নিয়েছে। তাইতো সর্বদা উন্মুখ থাকে বিশ্ব মুসলিম বায়তুল মোকাদ্দাস ও ফিলিস্তিনের বিজয় সংবাদ শোনার জন্য। নিরাপদ ভূমিতে দুই রাকাত নামাজ আদায়ের জন্য। আল আকসার রয়েছে অগণিত ফজিলত, অসংখ্য গুণ-বৈশিষ্ট্য। সেখান থেকে অনন্য ১০টি বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করা হলো-

প্রথম কেবলা
সব নবী-রাসুলই বায়তুল মোকাদ্দাসের দিকে ফিরে নামাজ আদায় করেছেন। নবী কারিম (সা.) মক্কায় থাকাবস্থায় বায়তুল মোকাদ্দাসের দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেছেন। মদিনায় হিজরতের পর ১৬ মাস নামাজ পড়েছেন। ২য় হিজরির শাবান মাসের মাঝামাঝি সময়ে নবীজি সাহাবাদের নিয়ে বনু সালামা গোত্রের মসজিদে জোহর মতান্তরে আসরের নামাজের ২য় বা ৩য় রাকাতে আল্লাহর পক্ষ হতে আদেশ হলে নবীজি সাহাবাদের নিয়ে নামাজেই ঘুরে যান কাবা শরিফের দিকে।

পৃথিবীর দ্বিতীয় মসজিদ
পবিত্র কাবা হলো- পৃথিবীর প্রথম ঘর, প্রথম মসজিদ। এর ৪০ বছর পর নির্মিত হয় বায়তুল মোকাদ্দাস। যা পৃথিবীর ২য় মসজিদ। হজরত আবু জর গিফারি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, বিশ্বের সর্বপ্রথম মসজিদ কোনটি? তিনি বলেন, মসজিদে হারাম। অতপর আমি আরজ করলাম, এরপর কোনটি? তিনি বলেন মসজিদে আকসা। আমি জিজ্ঞেস করলাম, উভয়ের নির্মাণের মধ্যে কত দিনের ব্যবধান রয়েছে? তিনি বলেন ৪০ বছরের। তিনি আরও বলেন, এই হলো মসজিদদ্বয়ের নির্মাণক্রম। কিন্তু আল্লাহতায়ালা পুরো ভূপৃষ্ঠকেই আমাদের জন্য মসজিদ বানিয়ে দিয়েছেন। সুতরাং যেখানেই নামাজের সময় হয় নামাজ পড়ে নাও।

দাজ্জাল প্রবেশ করতে পারবে না আকসায়
কেয়ামতের পূর্বে দাজ্জাল দাপিয়ে বেড়াবে পুরো পৃথিবী। ফেতনা ছড়িয়ে ভূপৃষ্ঠে বিচরণ করবে। কিন্তু চারটি মসজিদ পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে না- ১. মদিনার মসজিদ ২. মক্কার মসজিদ ৩. মসজিদে আকসা ও ৪. মসজিদে তূর। -তাফসিরে মারেফুল কুরআন : ৭৬৬

বরকতময় ও মনোনীত ভূমি
আল্লাহতায়ালা বায়তুল মোকাদ্দাস ও তার আশেপাশের এলাকায় অসংখ্য বরকত রেখেছেন। সুরা বনি ইসরাইলের ১ নম্বর আয়াতের একাংশে বিবৃত হয়েছে, ‘বারাকনা হাওলাহু।’ অর্থাৎ আমি তার আশপাশ বরকতময় করেছি। এখানে হাওল দ্বারা পুরো সিরিয়া উদ্দেশ্য। বরকত দুই ধরনের- ১. ইহলৌকিক ও ২. পারলৌকিক।

ইহলৌকক বরকত হলো- জমি ঊর্বর, ফল-ফসলের সারি সারি উদ্যান, দিগন্তজুড়ে সবুজ বিস্তীর্ণ মাঠ, ঝর্ণা ইত্যাদি।

আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণের নীচে পূর্ব জেরুজালেমের সিলওয়ানের ফিলিস্তিনি পাড়া 

 

পারলৌকিক হলো- সব নবী-রাসুলের কেবলা হওয়া, আগমন ঘটা, পদভারে ধন্য হওয়া, বাসস্থান হওয়া, কবরস্থান হওয়া, পবিত্র প্রাঙ্গণে ইবাদত করে প্রভূত কল্যাণ অর্জন করা ইত্যাদি। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা সেই পবিত্র ভূমিতে প্রবেশ করো, যা আল্লাহ তোমাদের জন্য নির্ধারিত করে দিয়েছেন এবং নিজেদের পেছনের দিকে ফিরে যেয়ো না, তা হলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।’ -সুরা মায়েদা : ২১

সওয়াবের উদ্দেশে আকসা ভ্রমণ জায়েজ
পৃথিবীর কোনো মসজিদে শুধু সওয়াবের উদ্দেশে ভ্রমণ করা জায়েজ নেই তিনটি মসজিদ ব্যতীত। তার অন্যতম বায়তুল মোকাদ্দাস। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, শুধু তিনটি মসজিদ অভিমুখে ইবাদতের নিয়তে সফর করা যাবে। আল মাসজিদুল হারাম, মাসজিদুন নববি ও মাসজিদুল আকসা। -সহিহ বোখারি : ১৮৬৪

আকসার মুসল্লিদের পাপমুক্তির আশ্বাস
বায়তুল মোকাদ্দাসে যারা নামাজ পড়বে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিষ্পাপ শিশুর মতো গোনাহমুক্ত হয়ে যাবে- ইনশাআল্লাহ। নিম্নোক্ত হাদিস দ্বারা এমন আশ্বাসের কথাই বিবৃত হয়েছে।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারিম (সা.) বলেন, হজরত সোলায়মান ইবনে দাঊদ (আ.) বায়তুল মাকদিসের নির্মাণ কাজ শেষ করে আল্লাহর কাছে তিনটি বিষয় প্রার্থনা করেন- আল্লাহর হুকুমমতো সুবিচার, এমন রাজত্ব যা তার পরে আর কাউকে দেওয়া হবে না এবং যে ব্যক্তি বায়তুল মাকদিসে কেবলমাত্র নামাজ পড়ার জন্য আসবে, তার গোনাহ যেন তার থেকে বের হয়ে যায় তার মা তাকে প্রসব করার দিনের মত। এরপর নবী কারিম (সা.) বলেন, প্রথম দুটি তাকে দান করা হয়েছে এবং আমি আশা করি তৃতীয়টিও তাকে দান করা হবে। -ইবনে মাজাহ : ১৪০৮

কেয়ামতের আগে আকসা বিজয়
নবী কারিম (সা.) ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন কেয়ামতের আগে আল আকসা (ফিলিস্তিন) বিজয়ের। হজরত উমর (রা.) জেরুজালেমসহ বায়তুল মোকাদ্দাস জয় করেছিলেন। নানা ঘাত-প্রতিঘাত শেষে সুলতান সালাহউদ্দিন উদ্দীন আইয়ুবি (রহ.) ১১৮৭ সালে তা আবার জয় করেন। পরে মুসলমানদের উদাসীনতায় আবার তা হাতছাড়া হয়ে যায়। তবে মুসলিম উম্মাহ আবারো তা জয়ের দ্বারপ্রান্তে- ইনশাআল্লাহ। এত শহীদ ও নিষ্পাপ রক্ত তারই ইঙ্গিত বহন করছে।

নবী কারিম (সা.) বলেন, কেয়ামতের পূর্বে ছয়টি বস্তু গণনা করো। তার মধ্যে বায়তুল মাকদিস বিজয় অন্যতম। -সহিহ বোখারি

জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ডোম অফ দ্য রকের একটি দৃশ্য 

 

হজরত উমর (রা.)-এর শাসনামলে হিজরি ১৬ সালে বায়তুল মাকদিস বিজয়ের মাধ্যমে নবী কারিম (সা.)-এর এই ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবায়িত হয়েছে।

আল আকসা ইসরা ও মিরাজের জ্বলন্ত সাক্ষী
নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর শ্রেষ্ঠ মুজেজা ইসরা ও মিরাজ। তিনি রাতের সামান্য অংশে মসজিদে হারাম (কাবা প্রান্তর) থেকে মসজিদে আকসায় ভ্রমণ করেছেন অতপর সেখান থেকে ঊর্ধ্বগগনে ভ্রমণ করেছেন। বায়তুল মোকাদ্দাস সেই ইসরা ও মিরাজের স্মৃতি ধারণকারী সাক্ষ্য বহনকারী। আল্লাহতায়ালা বলেন, পবিত্র মহান সে সত্তা, যিনি তার বান্দাকে রাতে নিয়ে গিয়েছেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার আশপাশে আমি বরকত দিয়েছি, যেন আমি তাকে আমার কিছু নিদর্শন দেখাতে পারি। তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। -সুরা বনী ইসরাইল : ১

আকসা হাশরের ময়দান হবে
আল আকসা ফিলিস্তিন এই দেশ ও আশপাশের শহর হবে হাশরের ময়দানের সূচনা। হজরত মাইমুনা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! বায়তুল মোকাদ্দাস সম্পর্কে কিছু বলুন, তিনি বলেন বায়তুল মোকাদ্দাস হলো- হাশরের ময়দান, পুনরুত্থানের জায়গা। তোমরা সেখানে নামাজ আদায় করো। কারণ, বায়তুল মাকদিসের এক রাকাতে অন্য মসজিদের তুলনায় এক হাজার রাকাতের সওয়াব। -মুসনাদে আহমদ

আকসা দখল ও অধিকার গ্রহণ
তিন ধর্মের তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত আল আকসার দখলবাজি যুগ যুগ ধরে চলছে। মুসলমানরা শক্তি সামর্থ্যের গুণ-বৈশিষ্ট্য অর্জন করে আল্লাহর তওফিকে দেরিতে হলেও তা মুক্ত করছে। এ নগরীর মতো রক্তস্নাত, হৃদয়বিদারক, ত্যাগের ইতিহাস আর কোনো ভূখণ্ডে নিয়ে নেই। পবিত্র এই নগরীর স্থাপনাগুলো দুইবার ধংস করা হয়। ৫২ বার আক্রমণ ৪৪ বার উদ্ধার এবং ২৩ বার অধিকৃত হয়। এখনও আল আকসা জায়নবাদি ইসরায়েলি ইহুদিদের দখলে। বিশ্ব মুসলিম অপেক্ষায় মুক্ত আল আকসার।

 

   

অপরূপ প্রকৃতির মাঝে দৃষ্টিনন্দন এক মসজিদ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ, শ্রীমঙ্গল, ছবি : সংগৃহীত

জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ, শ্রীমঙ্গল, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সবুজ বনানী, পাহাড় আর চা বাগানের অপরূপ দৃশ্য মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলকে পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচয় করিয়েছে। পর্যটকদের আনাগোনা থাকে এখানে। শ্রীমঙ্গলে অনেকেই দেখতে আসনে পাহাড়ের মাঝে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ।

শ্রীমঙ্গলের গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্টের বিপরীত পাশের রাস্তা দিয়ে সামনে দিকে গেলেই দেখা মিলবে মসজিদটির। জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদের প্রবেশদ্বার পেরিয়ে প্রথমে খাতায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এর পর সুযোগ মিলবে তা পরিদর্শনের।

শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশ, নেই কোনো কোলাহল। দূর থেকে দেখা যায়, সবুজের মাঝে সিঁড়ির লাল আর সাদা রঙের মিশ্রণ। শতাধিক সিঁড়ি। এই সিঁড়ি বেয়েই আপনাকে ওপরে ওঠতে হবে। চারদিকে সবুজ পাহাড়ঘেরা নৈসর্গিক পরিবেশ। রয়েছে সারি সারি চা বাগান। গুনে গুনে ১৫০ সিঁড়ি পাড়ি দিয়ে তবেই পৌঁছতে হবে মসজিদে।

জান্নাতুল ফেরদৌস নামে পরিচিত মসজিদটির নাম ‘মসজিদুল আউলিয়া খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ.)। ‘মসজিদটি নিয়ে মানুষের আকর্ষণের অন্যতম কারণ হচ্ছে, এর স্থাপত্যশৈলী আর অবস্থান।

প্রায় ১৯ বিঘা জমির ওপর নির্মিত হয় জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদটি। সমতল থেকে প্রায় ৭০-৮০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত মসজিদটি। চারপাশে রয়েছে, নানা রকমের গাছগাছালি। আছে লেবু ও আনারস বাগান। সবুজের সমারোহ চমৎকার পরিবেশ তৈরি হয়েছে মসজিদ ঘিরে। চারদিকে ঝিঁঝি পোকার ডাক আর নাম না-জানা পাখিদের কিচিরমিচির এক অন্যরকম পরিবেশের তৈরি করেছে।

খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ.) ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত এই মসজিদটিতে প্রায় ৮০০ লোক একসঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদের সৌন্দর্যবর্ধনে এর চারপাশে লাগানো হয়েছে নানা জাতের ফুলগাছ। এর গঠনশৈলীও চমৎকার। তুর্কি স্থাপত্যের আদলে নির্মিত মসজিদটির ভেতরে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন এক ঝাড়বাতি, যা আনা হয় সুদূর চীন থেকে।

মসজিদের সামনের অংশ

দর্শনীয় এই মসজিদটি নির্মাণ করেন খাজা টিপু সুলতান। টিপু সুলতান ছিলেন খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ.)-এর সাহেবজাদা। এই খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ.) আবার ছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত আধ্যাত্মিক সুফি-সাধক খাজা ইউনুছ আলী এনায়েতপুরীর (রহ.) উত্তরসূরি।

মসজিদটির প্রাঙ্গণে আছে দুটি গেস্টহাউস এবং একটি চিকিৎসাকেন্দ্র। এই চিকিৎসাকেন্দ্রে সপ্তাহের ছয় দিন গরিব মানুষদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া এখানে আছে একটা হেলিপ্যাড। গেস্টহাউসটি মূলত ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যানের পরিবারের সদস্যদের বিশ্রামের জন্য ব্যবহৃত হয়।

মসজিদের পাশেই রাখা হয়েছে কবরস্থানের জায়গা। শ্রীমঙ্গলে আগত পর্যটকরা একবার হলেও এখানে এসে ঘুরে যায়। এ ছাড়া প্রতিবছর ২৪ নভেম্বর এ মসজিদ ঘিরে আয়োজন করা হয় বার্ষিক ওরস মাহফিলের।

এই সিঁড়ি বেয়েই আপনাকে ওপরে ওঠতে হবে

জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদটি দেখতে প্রথমে আপনাকে আসতে হবে শ্রীমঙ্গল শহরে। গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্টের বিপরীত পাশের রাস্তা দিয়ে আসতে হয় এখানে। সিলেট শহর থেকে কিংবা গ্র্যান্ড সুলতানের সামনে থেকে সিএনজি বা ইজিবাইক রিজার্ভ করে যেতে পারেন। শহর থেকে যাওয়া-আসা ভাড়া প্রায় তিন থেকে চারশ টাকা। গ্র্যান্ড সুলতানের সামনে থেকে গেলে ভাড়া কিছু কম পড়বে। অটোরিকশা দিয়েও যেতে পারেন। চারপাশের মনোরম পরিবেশ দেখতে দেখতে পৌঁছতে পারবেন।

;

পরনিন্দার পাপ থেকে বাঁচতে যা করবেন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
যে উপস্থিত নেই, তাকে নিয়ে কোনো আলোচনা নেই, ছবি : সংগৃহীত

যে উপস্থিত নেই, তাকে নিয়ে কোনো আলোচনা নেই, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘গিবত’ শব্দের আভিধানিক অর্থ পরনিন্দা করা, কুৎসা রটানো, পেছনে সমালোচনা করা, পরচর্চা করা, দোষারোপ করা, কারও অনুপস্থিতিতে তার দোষ অন্যের সামনে তুলে ধরা।

শরিয়তে গিবত হারাম ও কবিরা গোনাহ। হাদিসের বর্ণনা, ‘যারা অগ্র-পশ্চাতে অন্যের দোষ বলে বেড়ায়, তাদের জন্য রয়েছে ধ্বংসের দুঃসংবাদ।’ -সহিহ মুসলিম

পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আর তোমরা অন্যের দোষ খুঁজে বেড়াবে না।’ -সুরা হুজুরাত : ১২

‘দুর্ভোগ তাদের জন্য, যারা পশ্চাতে ও সম্মুখে লোকের নিন্দা করে।...অবশ্যই তারা হুতামাতে (জাহান্নামে) নিক্ষিপ্ত হবে। তুমি কি জানো হুতামা কী? তা আল্লাহর প্রজ্বলিত অগ্নি, যা হৃদয়কে গ্রাস করবে। নিশ্চয় বেষ্টন করে রাখবে, দীর্ঘায়িত স্তম্ভসমূহে।’ -সুরা হুমাজা : ১-৯

গিবত এমনই ভয়াবহ পাপ। এটা থেকে বেঁচে থাকা মুমিন-মুসলমানের একান্ত কর্তব্য। গিবত থেকে বাঁচার কিছু উপায় হলো-

১. কারও বিষয়ে হুটহাট করে কিছু না বলা। ভেবে-চিন্তে কথা বলা। যতটুকু সম্ভব কম কথা বলাই ভালো, কারণ- চুপ থাকাও একটা ইবাদত। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে; নচেৎ চুপ থাকে।’ -সহিহ বোখারি : ৬০১৮

২. যে উপস্থিত নেই, তাকে নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। সুতরাং বন্ধু-বান্ধব কিংবা কাছের কোনো আত্মীয়ের অনুপস্থিতিতে তাদের নামে ভালো কথাও না বলা। কারণ ভালো কথা বলা ফাঁকে শয়তান আপনাকে দিয়ে কখন যে গিবত করিয়ে নেবে; সেটা আপনি টেরই পাবেন না।

৩. অতি প্রয়োজন ছাড়া লোকসমাগম এড়িয়ে চলা। কেননা যেখানে মানুষ বেশি থাকে সেখানে গিবতও বেশি হয়।

৪. আপনার কাছে কেউ গিবত করলে তাকে থামিয়ে দেবেন। সম্ভব হলে বুঝিয়ে বলবেন। কারণ গিবত করা ও গিবত শোনা উভয়টাই হারাম।

নিজেও যখন কথা বলতে বলতে গিবত করে ফেলবেন এবং খেয়াল হবে যে, আরে আমি তো গিবত করে ফেলেছি; সঙ্গে সঙ্গে থেমে যাবেন এবং তওবা করবেন।

৫. অমুক কেমন জানি পোশাক পরে, অমুকের রান্না ভালো না, অমুক মোটা, অমুক কালো, দেখতে একদম ভালো না ইত্যাদি- এ ধরনের কথাও গিবত। তাই এ জাতীয় কথা বা মন্তব্য থেকে বিরত থাকা।

৬. অমুক এই এই কাজগুলো ভালো করেনি। অমুকের এই-এই স্বভাব ভালো না। অমুকের নামে এই-এই বদনাম আছে। ওমুক আমার এই-এই ক্ষতি করছে। এগুলো বলার অর্থ হলো যে, মানুষের দোষ নিয়ে কথা বলা; যেটা গিবতের অন্তর্ভুক্ত।

৭. এর পরও যদি গিবত হয়ে যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আস্তাগফিরুল্লাহ অথবা দুই রাকাত নফল নামাজ পরে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে নেওয়া।

কাউকে নিয়ে কোনো অভিযোগ থাকলে সেটা আমরা আল্লাহর কাছে বলা। পারলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া। মানুষের কাছে এগুলো নিয়ে আলোচনা করে উল্টো নিজের গোনাহ কামানো কোনো বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে না। অন্যের দোষ ঢেকে রাখলে আল্লাহতায়ালাও এ কারণে আমার-আপনার দোষ ঢেকে রাখবেন- ইনশাআল্লাহ!

মনে রাখবেন, গিবত আমাদের নেক আমলগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। আল্লাহতায়ালা সবাইকে সঠিক জ্ঞান দান করুন। আমিন।

;

পথচারীদের ঠাণ্ডা শরবত দিচ্ছে মারকাজুল কোরআন পরিবার



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পথচারীদের ঠাণ্ডা শরবত দিচ্ছে মারকাজুল কোরআন পরিবার, ছবি : সংগৃহীত

পথচারীদের ঠাণ্ডা শরবত দিচ্ছে মারকাজুল কোরআন পরিবার, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলমান তীব্র দাবদাহে রাজধানীর পিপাসার্ত মানুষের মাঝে টানা চার দিন ধরে সুপেয় ঠাণ্ডা শরবত (লাল চিনি, বিট লবণ, লেবু এবং এসএমসির ম্যাংগো ও অরেঞ্জ ফ্লেবার মিশ্রিত) বিতরণ করছে মারকাজুল কোরআন শিক্ষা পরিবার।

রাজধানীর গাবতলী বাসস্ট্যাণ্ড, মিরপুর বাংলা কলেজের সামনে এবং মিরপুর ১ ও ১০-এর বিভিন্ন পয়েণ্টে শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল থেকে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর পর ধারাবাহিকভাবে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে প্রতিদিন ১ হাজার ৫ শ’ লিটার শরবত বিতরণ করা হচ্ছে।

মে দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচিকে সামনে রেখে মারকাজুল কোরআন শিক্ষা পরিবার বুধবার (১ মে) মিরপুর ঈদগাঁহ ময়দান ও টিএসসির মোড়ে শরবত বিতরণ করবে।

পথচারীদের মাঝে ঠাণ্ডা শরবত বিতরণের বিষয়ে মারকাজুল কোরআন শিক্ষা পরিবারের সভাপতি ও মানবসেবায় সাড়া জাগানো প্রতিষ্ঠান তাকওয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান গাজী ইয়াকুব বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ঢাকাসহ সমগ্র দেশবাসী এখন প্রচণ্ড তাপদাহের মধ্যে অবস্থান করছেন। এমন সময় আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তীব্র গরমে আমাদের আশপাশে অবস্থান করা শ্রমজীবী মেহনতি মানুষদের ভুলে গেলে চলবে না। তাই তাদের উদ্দেশ্যেই মূলত এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘গরমের তীব্রতা বেশি থাকলে সামনে আরও বেশ কিছুদিন এমন উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

হিট স্ট্রোকের মারাত্মক এই অবস্থায় রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্পটে ক্লান্ত তৃষ্ণার্ত পথচারীদের বিনামূল্যে এমন উদ্যোগে ভীষণ খুশি সাধারণ মানুষ। তাদের মতে, প্রচণ্ড গরমে রাস্তায় বেরিয়ে সবার প্রাণ যখন উষ্ঠাগত, তখন পথচারীদের ডেকে ডেকে শরবত করাচ্ছেন আলেম-উলামা ও মাদরাসার ছাত্ররা। এর চেয়ে বড় মানবিক কাজ আর হতে পারে না।

;

শ্রমিক-মালিকের সম্পর্ক হবে ভাই ভাই



মাওলানা ফখরুল ইসলাম, অতিথি লেখক, ইসলাম
বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি সব পর্যায়ে মে দিবস গুরুত্বসহকারে পালিত হয়, ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি সব পর্যায়ে মে দিবস গুরুত্বসহকারে পালিত হয়, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শ্রমজীবী মানুষের প্রেরণা ও আবেগের দিন পয়লা মে। ১৮৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমের ন্যায্য দাবি প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আত্মাহুতি দান করেছিলেন শ্রমিকরা। তাদের রক্তাক্ত স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ১৮৯০ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।

বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি সব পর্যায়ে মে দিবস গুরুত্বসহকারে পালিত হয়। মে দিবস এলেই আমাদের সামনে ভেসে ওঠে ঘর্মাক্ত মেহনতি মানুষের প্রতিচ্ছবি। আর এই মেহনতি মানুষের অধিকারের প্রশ্নটিও সঙ্গে সঙ্গে উঠে আসে এই ঐতিহাসিক দিনে।

সময়ের পরিবর্তনে মে দিবস এখন সারা দুনিয়ায় সাড়ম্বরে পালিত হচ্ছে। মে দিবসের ঐতিহাসিক প্রেরণায় কল-কারখানা, অফিস-আদালতসহ সব কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকরা এখন উজ্জীবিত। যে উদ্দেশ্যে শ্রমিকেরা আন্দোলন করে জীবন দিয়েছিলেন সেই কাঙ্ক্ষিত কাজের সময়সূচি এখন প্রায় কর্মক্ষেত্রে অনুসৃত হচ্ছে। তবে মজুরি নির্ধারণের ব্যাপারে নানা আপত্তি রয়েছে। তারপরও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শ্রমিকদের মধ্যে হতাশা যে নেই তা বলা যাবে না।

এমন কথাও বড় করে বলার উপায় নেই যে, ১৮৮৬ সালের পর দীর্ঘ একশত আটত্রিশ বছর পর শ্রমজীবী মানুষের মুক্তি মিলেছে; শ্রমিক তার অধিকার সত্যিকারার্থে ফিরে পেয়েছে এবং তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত মজুরি নিশ্চিত করতে পেরেছে। কর্মক্ষেত্রে ৮ ঘণ্টা শ্রমের প্রতিষ্ঠা হয়েছে, কিন্তু এখনও শ্রমিক নিপীড়ন থামেনি এবং শ্রমিকের প্রকৃত মর্যাদা ও শ্রমের মূল্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অহরহ শ্রমিক বিক্ষোভ থেকে সহজেই এটা অনুধাবন করা যায়।

সুতরাং অনেকটা জোড় গলায় বলা যায় যে, দুনিয়ার কোথাও শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্ক, শ্রমিকের প্রকৃত মজুরি এবং তাদের বাঁচার উন্নত পরিবেশ এখনও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তবে এ ক্ষেত্রে একমাত্র ইসলামই শ্রমিকের মর্যাদা ও অধিকারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এখন থেকে দেড় হাজার বছর আগে।

নবী মুহাম্মদ (সা.) শ্রমিকের মেহনতের কষ্ট বুঝতে পেরেছিলেন। সে জন্য তিনি যে ঐশ্বরিক বিধান চালু করেছিলেন, তাতে শ্রমিক ও শ্রমের মহিমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তার অমোঘ বাণী জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আজও সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে অতুলনীয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। শ্রমিক ও মালিকের সম্পর্ককে ভাই ভাই উল্লেখ করে তিনি তাদের অধিকার ও পাওনার ব্যাপারে যে উক্তি করেছিলেন তা অসাধারণ।

নবী কারিম (সা) বলেছেন, ‘মজুর-শ্রমিক ও ভৃত্যদের যথারীতি থাকা ও পোশাক দিতে হবে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘যারা তোমাদের কাজ করছে তারা তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছেন।’ -সহিহ বোখারি

রাসুলুল্লাহ (সা.) শ্রমিককে আপনজনের সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের আপনজন ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে যেমন ব্যবহার করো, তাদের সঙ্গে অনুরূপ ব্যবহার করবে।’ একই কথা নবী কারিম (সা.) আরেক হাদিসে উল্লেখ করেছেন এভাবে, ‘তোমরা অধীনস্থদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে এবং তাদেরকে কোনোরকম কষ্ট দেবে না। তোমরা কি জানো না, তাদেরও তোমাদের মতো একটি হৃদয় আছে। ব্যথাদানে তারা দুঃখিত হয় এবং কষ্টবোধ করে। আরাম ও শান্তি প্রদান করলে সন্তুষ্ট হয়। তোমাদের কী হয়েছে যে, তোমরা তাদের প্রতি আন্তরিকতা প্রদর্শন করো না।’ -সহিহ বোখারি

শ্রমিকরাও মানুষ। তাদের শক্তি-সামর্থ্য ও মানবিক অধিকারের প্রতি লক্ষ রাখার বিষয়টি উল্লেখ করতে গিয়ে নবী কারিম (সা.) বলেছেন, ‘মজুরদের সাধ্যের অতীত কোনো কাজ করতে তাদের বাধ্য করবে না। অগত্যা যদি তা করাতে হয় তবে নিজে সাহায্য করো।’ -সহিহ বোখারি

শ্রমিকের প্রতি মালিক যাতে সহনশীল থাকে এবং তার ভুলত্রুটি ক্ষমার মতো মহৎ মনের অধিকারী হয়, সেটা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়ে আল্লাহর নবী (সা.) হাদিসে ইরশাদ করেন, ‘মজুর চাকরদের অপরাধ অসংখ্যবার ক্ষমা করা মহত্ত্বের লক্ষণ।’ নবী কারিম (সা.) আরও বলেছেন, ‘অসদাচরণকারী মালিক বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না।’

শ্রমিকের মজুরি আদায়ের ব্যাপারে নবী কারিম (সা.)-এর অতি পরিচিত এবং বিখ্যাত একটি উক্তি সবার জানা। তিনি বলেছেন, ‘মজুরকে তার গায়ের ঘাম শুকাবার আগেই মজুরি পরিশোধ করে দাও।’ শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে নবী কারিম (সা.)-এর এই বাণী শ্রমিকের মর্যাদার বিষয়টিকে আরও বেশি মহীয়ান করেছে।

এভাবে ইসলাম শ্রমিকের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার যে নিশ্চয়তা দিয়েছে, তা দুনিয়ার আর কোনো মতবাদ বা দর্শন দেয়নি। আধুনিক বিশ্বের পুঁজিবাদী ও সমাজবাদী রাষ্ট্র দর্শনের কোনোটাই শ্রমিকের প্রকৃত অধিকার ও মর্যাদার ন্যূনতম সমাধান দিতে পারেনি। ফলে এখনও শ্রমিক-মজুররা নিষ্পেষিত হচ্ছে। মালিকের অসদাচরণ, কম শ্রমমূল্য প্রদান, অনপযুক্ত কর্ম পরিবেশ প্রদানসহ নানা বৈষম্য শ্রমিকের দুর্দশা ও মানবেতর জীবনযাপনের কারণ হয়ে আছে।

মে দিবসের প্রাক্কালে আমরা বলতে চাই, নানা আয়োজনে প্রতি বছর শ্রমিক দিবস পালন করার মধ্যে শ্রমিকের প্রকৃত মুক্তি নেই। যে অধিকারের জন্য শ্রমিকরা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন শিকাগোর রাজপথে, তা বাস্তবে এখনও অর্জিত হয়নি। আজও শ্রমিকেরা পায়নি তাদের কাজের উন্নত পরিবেশ, পায়নি ভালোভাবে বেঁচে থাকার মতো মজুরি কাঠামো এবং স্বাভাবিক ও কাঙ্ক্ষিত জীবনের নিশ্চয়তা। মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে শ্রমিকের প্রতি মালিকের সহনশীল মনোভাব থাকতে হবে। শ্রমিকের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার আলোকে তাকে কাজ দিতে হবে। শ্রমিককে মানুষের মতো বেঁচে থাকার জন্য তার মজুরি সেভাবে নির্ধারণ করতে হবে।

মালিককে অবশ্যই এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, তার নিজের স্বজনরা যে রকম জীবনযাপন করবে, তার অধীনস্থ শ্রমিকরাও সে রকম জীবনের নিশ্চয়তা পাবে। মালিক-শ্রমিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তিতে ইসলাম যে শ্রমনীতি ঘোষণা করেছে, তাকে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা গেলে শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদা অবশ্যই সুরক্ষিত হবে- ইনশাআল্লাহ।

;