রাসুলের শাফায়াত লাভের আমল
দরুদ মুমিনের সদাসঙ্গী। হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালোবাসার অন্যতম নিদর্শন হলো, বেশি বেশি তার ওপর দরুদ পাঠ করা। দরুদ পাঠে রয়েছে ইহকাল-পরকালের প্রভূতকল্যাণ। এর কয়েকটি হলো-
প্রয়োজন পূরণ হওয়া
প্রাত্যহিক জীবনে আমরা নানা সঙ্কট ও সমস্যায় পড়ি। সমাধানের জন্য নানা কাজ করি, তদবির করি। তবু সমাধান মেলে না। অথচ দরুদ পড়লে দুনিয়া-আখেরাতের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে আমার ওপর প্রতিদিন একশবার দরুদ পড়বে, আল্লাহতায়ালা তার একশটি প্রয়োজন মিটিয়ে দেবেন। এর মধ্যে আখেরাতে সত্তরটি এবং দুনিয়ায় ত্রিশটি। -তাবারানি
রাসুলের শাফায়াত লাভ
বেশি বেশি দরূদ পাঠের মাধ্যমে নবীজির শাফায়াত লাভে ধন্য হওয়া যায়। আল্লাহর রহমত লাভ করা যায়। জান্নাতে নবীজির নিকটবর্তী হওয়া যাবে। কত বিস্ময়কর ফজিলতময় আমল, কত প্রশান্তিদায়ক এই দরুদ। হজরত রুয়াইফি বিন সাবিত (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি বলবে; হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি দয়া করুন এবং কেয়ামতের দিন আপনার নিকটবর্তী স্থানে জায়গা দিন। এমন ব্যক্তির জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে যাবে। -মুসনাদে আহমদ : ২৮/১৬৯৯১
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, যে ব্যক্তি আমার ওপর সকালে দশবার এবং বিকালে দশবার দরুদ পড়বে; তার ওপর আমার সুপারিশ আবশ্যক হয়ে যাবে। -তাবরানি
রাসুলের নিকটবর্তী হওয়ার কারণ
জুমার দিন অত্যন্ত ফজিলতময়। হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেন, প্রতি জুমায় তোমরা আমার প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো। কেননা প্রত্যেক জুমার দিনে আমার নিকট উম্মতের দরুদ পেশ করা হয়। সুতরাং যে ব্যক্তি সবচেয়ে বেশি দরুদ পাঠ করবে সে সবচেয়ে বেশি আমার নিকটবর্তী হবে। -বায়হাকি : ৩/২৪৯
মর্যাদা বাড়ে, পূণ্য মেলে ও গোনাহ মাফ হয়
দরুদ এমন একটি আমল, যা কবুল হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। পুঁজিহীন অসীম লাভজনক এক ব্যবসা। তাই লেখা ও কাজের ফাঁকে ফাঁকে এ আমল করা যায়। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। নবীজির ওপর একবার দরুদ পাঠ করলে ত্রিশটি সম্পদ দ্বারা আল্লাহ সম্মানিত করেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারিম (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি হৃদয়ের ভক্তি ও নিষ্ঠার সঙ্গে আমার প্রতি একবার দরুদ পড়বে, আল্লাহতায়ালা তার প্রতি দশটি রহমত, (বরকত ও কল্যাণ দান করেন) তার জন্য দশটি মর্যাদা বাড়াবেন। দশটি পূণ্য দান করবেন। এবং দশটি গোনাহ মাফ করবেন। -সুনানে নাসায়ি : ৯৮০৯
ফেরেশতাদের দোয়া লাভ
বেশি বেশি দরুদ পাঠ নবীজির প্রতি ভালোবাসার অন্যতম নিদর্শন। নবীজির নাম শুনলেই দরুদ পড়তে হয়। অধিক দরুদ পাঠের মাধ্যমে ফেরেশতাদের দোয়া মেলে। নবীজি (সা.) বলেন, কোনো মুসলিম ব্যক্তি যখন আমার ওপর দরুদ পাঠ করে, ফেরেশতারা তার জন্য রহমতের দোয়া করতে থাকে। যতক্ষণ সে আমার প্রতি দরুদ পড়তে থাকে। সুতরাং বান্দা চাইলে দরুদ কমও পড়তে পারে চাইলে অধিকও পড়তে পারে। -সুনানে ইবনে মাজা : ৯০৭
দরুদ পাঠ না করার পরিণতি
নবী কারিম (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত। তার ওপর দরুদ পড়লে আমাদেরই লাভ, আমাদেরই কল্যাণ। যে যেখান থেকে নবীজির ওপর দরুদ পড়ে ফেরেশতাদের মাধ্যমে তা নবীজি (সা.)-এর কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। যে নবী কারিম (সা.)-এর নাম শুনেও দরুদ পাঠ করল না, সে কৃপণ। কেয়ামতের দিন দরুদমুক্ত প্রতিটি বৈঠক লাশের দুর্গন্ধের মত হবে এবং আক্ষেপের কারণ হবে।
হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারিম (সা.) ইরশাদ করেন, কৃপণ হলো ওই ব্যক্তি, যার সামনে আমার আলোচনা হলো- অথচ সে আমার ওপর দরূদ পড়ল না। -জামে তিরমিজি : ৩৫৪৬