মর্যাদা বৃদ্ধি ও আল্লাহর প্রিয় হওয়ার মাধ্যম

  • মুহাম্মদ আবু সালেহ, অতিথি লেখক, ইসলাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামের দৃষ্টিতে বিনয় মুমিনের অন্যতম গুণ

ইসলামের দৃষ্টিতে বিনয় মুমিনের অন্যতম গুণ

বিনয় সৃষ্টিকর্তা দয়াময় আল্লাহর দেওয়া বান্দার অন্যতম এক চারিত্রিক গুণ। এটা মানবজাতির প্রতি ইসলামের নির্দেশও বটে। আচার-আচরণে, উচ্চারণে নিজেকে অন্য যে কারো চেয়ে ক্ষুদ্র মনে করা বিনয়ী হওয়ার লক্ষণ। বিষয়টি মহান আল্লাহর কাছে অতি পছন্দনীয়। আর এটা প্রকাশ পেতে পারে মানুষের ওঠাবসা, চলাফেরা ও কথাবার্তায়। বিনয়ী হওয়ার প্রতি আহ্বান করে আয়াত নাজিল করেছেন আল্লাহতায়ালা। যা এই গুণটির গুরুত্ব ও আবশ্যক হওয়ার প্রমাণ বহন করে।

হজরত ইয়াজ ইবনে হিমার (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘মহান আল্লাহ আমাকে প্রত্যাদেশ করেছেন যে, তোমরা পরস্পরের প্রতি নম্রতা ও বিনয় ভাব প্রদর্শন করো। যাতে কেউ যেন অন্যের প্রতি অত্যাচার না করতে পারে এবং কেউ কারো সামনে গর্ব প্রকাশ না করে।’ -সহিহ মুসলিম : ৭৩৮৯

মহান আল্লাহ তার প্রিয় বান্দা রাসুলকে সম্বোধন করে বিনয়ী হতে বলেন, যেন মানবজাতি এ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে যে, মানুষ যত বড়ই হোক না কেন কোনো অবস্থাতেই কারো সঙ্গে দম্ভ ও অহংকারমূলক আচরণ করা ঠিক নয়। বরং বিনয় ও আত্মবিলাপের আচরণ করবে। যেন কেউ কারো সামনে নিজের বড়ত্ব ও সম্মান জাহির না করে। কারণ দুনিয়াতে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর থেকে কেউ সম্মানী ছিলেন না এবং সামনেও আসবে না। তাকেই যখন বিনয়ী হতে বলা হয়েছে, তখন অন্যদের কথা তো বলাই বাহুল্য।

বিনয় মুমিনের অন্যতম গুণ। তবে যদি কাফের-মুশরিক কখনো মুসলমানদের বিরুদ্ধাচরণ ও দুর্ব্যবহার করে তাহলে তাদের সঙ্গে বিনয় শোভা পায় না। কারণ তা হবে ঈমানি মর্যাদাবোধের পরিপন্থী। যা মুসলমানদের জন্য হারাম। এজন্য কোরআন মাজিদে শুধু মুমিনের সঙ্গে বিনয়ী হওয়ার প্রতি উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ হওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

আল্লাহতায়ালা বিনয়ী হওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করে আরও বলেন, দয়াময় আল্লাহর খাঁটি বান্দা তারা, যারা অহংকারহীনভাবে পথ চলে। -সুরা ফুরকান : ২৫

অহংকার ও দম্ভ পরিহারের ব্যাপারে আল্লাহতায়ালা বলেন, ভূপৃষ্ঠে দম্ভভরে চলো না। তুমিতো পদাঘাতে জমিন চিড়ে ফেলতে পারবে না, আর উচ্চতায় পাহাড়কেউ অতিক্রম করতে পারবে না। -সুরা বনী ইসরাইল : ১৭

আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার জন্য বিনয়ী ও নিরহংকারী হওয়া আবশ্যক। এ সম্পর্কে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ বলেন, কেউ যদি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য বিনয় অবলম্বন করে, তবে আল্লাহ তার মর্যাদাকে বাড়িয়ে দেন।’ -সহিহ মুসলিম : ২৫৮৮

অন্য এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ নিজে বিনয় অবলম্বনকারী, তিনি বিনয়কে ভালোবাসেন এবং বিনয়, নম্রতা অবলম্বনকারীকে এত বেশি দান করেন- যা কঠোরচিত্ত ব্যক্তিকে দান করেন না। -সহিহ বোখারি : ৬৯২৭