মানবকল্যাণে করা সব কাজই ইবাদত



মাওলানা ফখরুল ইসলাম, অতিথি লেখক, ইসলাম
মানবকল্যাণে করা সব কাজ ইসলামে ইবাদত হিসেবে গণ্য, ছবি : সংগৃহীত

মানবকল্যাণে করা সব কাজ ইসলামে ইবাদত হিসেবে গণ্য, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলাম সমাজকল্যাণমূলক ধর্ম। মানব ও সমাজকল্যাণ ইসলামের অন্যতম লক্ষ্য। ইসলাম ও সমাজকল্যাণ একটির সঙ্গে অন্যটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মানবকল্যাণে করা সব কাজ ইসলামে ইবাদত হিসেবে গণ্য। শর্ত হলো, তা নিঃস্বার্থ মানবসেবা হতে হবে। সেবক বিশ্বাস করবে, এর মাধ্যমে দয়াময় আল্লাহতায়ালার নৈকট্য লাভ করব। তার কাছ থেকেই প্রতিদান পাব। কোনো ধরনের সুনাম ও সুখ্যাতির আশা আমার নেই। প্রতিটি এমন কাজ- যা চিন্তিত ব্যক্তির চিন্তা, বিপদগ্রস্তের বিপদ, আহতের ক্ষত, বঞ্চিতের অধিকার, মজলুমের জুলুম, পরাভূত ব্যক্তির পরাজয় দূর করার উদ্দেশ্যে হয়- তাই ইবাদত।

পৃথিবীতে কল্যাণ ও হিতকর একটি কাজ সেবা। সেবার বিভিন্ন খাত থাকলেও সমাজসেবা অন্যতম। মানবজীবনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই সমাজসেবা সীমাহীন গুরুত্বের দাবিদার। সাধারণত সমাজের অসুবিধাগ্রস্ত নিম্নশ্রেণির মানুষের কল্যাণে গৃহীত সেবামূলক কার্যক্রমকে সমাজসেবা বলা হলেও আধুনিক ধারণামতে, সমাজসেবা হচ্ছে- সমাজে মানুষের নিরাপত্তা ও মঙ্গলার্থে গৃহীত যাবতীয় কার্যক্রমের সমষ্টি।

ইসলামে সমাজসেবার পরিধি আরও ব্যাপক। শুধু তা-ই নয়, সমাজসেবা হচ্ছে- ইসলামি দাওয়াতের ভূমিকাস্বরূপ। হজরত রাসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমাজসেবার মাধ্যমে আরবের জনমানুষের হৃদয় ও মন জয় করেছিলেন- যা নবুওয়তপ্রাপ্তির পর দাওয়াতি কাজে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল।

‘হিলফুল ফুজুল’ নামে কল্যাণ সংস্থার সেবাকর্ম দ্বারা নবী কারিম (সা.) এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিলেন, লোকেরা তাকে ‘আল আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেছিল। নবীর সেবাধর্মী চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে উম্মুল মুমিনিন হজরত খাদিজাতুল কুবরা (রা.) সাক্ষ্য দিয়ে বলেন, ‘আল্লাহর কসম! আল্লাহ আপনাকে কখনোই অপমানিত করবেন না। আপনি তো আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করেন, অসহায়-দুর্বলের দায়িত্ব বহন করেন, নিঃস্বকে সাহায্য করেন। মেহমানের সমাদর করেন এবং দুর্দশাগ্রস্তকে সাহায্য করেন।’ –সহিহ বোখারি

তবে শর্ত একটাই, মানবসেবা হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আদর্শকে সামনে রেখে চালিয়ে যেতে হবে। বান্দার হক তথা আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও গরিব-দুঃখী মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসা এবং আর্তমানবতার সেবা, সামাজিক সমস্যা দূরীকরণ ও সমাজসেবামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে হবে। আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, দরিদ্র, নিঃস্ব, এতিম, নিরাশ্রয়, রোগী ও বিপদগ্রস্ত মানুষকে যথাযথ সেবা করা খুবই সওয়াবের কাজ। আর এতে অমনোযোগী হওয়া আল্লাহর অসন্তুষ্টি ও গোনাহর কাজ। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে গুরুত্ব সহকারে তাকিদ দেওয়া হয়েছে।

কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা আল্লাহর ইবাদত করবে ও কোনো কিছুকে তার সঙ্গে শরিক করবে না এবং বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্ত, নিকট প্রতিবেশী, দূর প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথি, পথচারী এবং তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করবে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ দাম্ভিক ও অহঙ্কারীকে পছন্দ করেন না- যারা কৃপণতা করে, মানুষকে কৃপণতার নির্দেশ দেয় এবং আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের যা দিয়েছেন, তা গোপন করে।’ -সুরা নিসা : ৩৬-৩৭

বৃক্ষরোপণও একটি উত্তম সেবা, সওয়াবের কাজ

ইহকালের শান্তি ও পরকালে মুক্তির জন্য প্রত্যেকেরই সাধ্যমতো সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে হবে। সমাজসেবায় যেসব কাজ করা যেতে পারে-

দানবীর ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে জাকাত, ওসর, ফেতরা, কোরবানির চামড়া ও ত্রাণসামগ্রী কিংবা আপদকালীন ব্যয় বাবদ অর্থ আদায় করে বিশেষ তহবিলে জমা করে প্রয়োজনমতো খরচ করা।

জনগণের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ- শরিয়তসম্মত উপায়ে সমাজসেবামূলক কাজে ব্যয় করা। পাশাপাশি আইন সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করে এর মাধ্যমে ন্যায্য অধিকার রক্ষায় বিচারপ্রার্থীকে আইনি সহায়তা দেওয়া।

মানবসেবায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করা যেতে পারে। নিরক্ষর লোকদের অক্ষরজ্ঞান ও সহিহ-শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত শেখানো ও দৈনন্দিন জীবনের জরুরি মাসায়ালা-মাসায়েল শেখানোর ব্যবস্থা করা।

গ্রামগঞ্জের মানুষের সবসময় কাজ থাকে না। এমন একটি মাস বেছে নিয়ে কোনো মসজিদে মাসব্যাপী বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন করা। মাগরিব বা এশার নামাজের পরে সম্ভব হলে সপ্তাহে, প্রতিদিন অথবা অন্তত তিন বা চার দিন ক্লাস নেওয়া যেতে পারে। নিজেদের মধ্য থেকে অভিজ্ঞ কোনো দায়িত্বশীল ক্লাস নেবেন অথবা অন্যকোনো উপযুক্ত ব্যক্তিকে দিয়েও ক্লাস নেওয়া যেতে পারে।

সমাজের মানুষের উপকারের নিয়তে দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা করে অসহায় রোগীদের মধ্যে ফ্রি চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা করা যেতে পারে। স্বল্প খরচে হোমিওপ্যাথি ওষুধপথ্যের সাহায্যে দাতব্য চিকি‍ৎসালয় স্থাপন করা যায়। তাছাড়া রোগীদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানোসহ চিকিৎসকরা ফ্রি-ফ্রাইডে ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সহজেই এ কাজ করা সম্ভব।

এমনকি বৃক্ষরোপণও একটি উত্তম সেবা, সওয়াবের কাজ। রাস্তার পাশে ও পতিত জমিতে গাছ লাগিয়ে সৃষ্টিকুলের খেদমত করা যায়।

আগেই বলা হয়েছে, সমাজসেবা একটি ইবাদত। এ সেবার মাধ্যমে সমাজে হিংসা-বিদ্বেষের মতো অধঃপতিত কাজ থেকে বেঁচে থাকা যায়। তাছাড়া এ সেবা কার্যক্রম প্রত্যেকেই চালিয়ে যেতে পারে। আইনজীবীরা আইন মারফত মজলুমের সাহায্য করে, তাদের মামলা-মোকদ্দমায় বিনা পারিশ্রমিকে সহায়তা করতে পারে। ডাক্তাররা প্রাথমিক ওষুধপথ্যের মাধ্যমে এবং ফ্রি চিকিৎসা ও অতিরিক্ত ফি না নিয়ে তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে পারে। এ রকম প্রতিটি সেক্টর থেকেই নিজ নিজ পরিসরে এ মহান সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব।

   

মসজিদে হারামে আগতদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মসজিদে হারামে আগতদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা, ছবি : সংগৃহীত

মসজিদে হারামে আগতদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মক্কার মসজিদে হারাম ও মদিনার মসজিদে নববির পরিচালনা কর্তৃপক্ষ আসন্ন হজসহ বিভিন্ন ওয়াক্ত এবং জুমার নামাজে আগতদের জন্য প্রশান্তিদায়ক পরিবেশের নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

সৌদি বার্তা সংস্থা এসপিএ জানায়, মসজিদে হারামে আসা উমরাপালনকারী ও আগত নামাজ আদায়কারীদের সুবিধার্থে ‘বিশেষ পরিকল্পনা’ গ্রহণ করেছে। ‘তানাকুল’ অ্যাপের মাধ্যমে উমরা পালনকারীদের জন্য প্রায় পাঁচ হাজার ইলেকট্রিক ও সাধারণ হুইল চেয়ারের সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ইলেকট্রিক ও সাধারণ হুইল চেয়ার বুকিং করার সুবিধা মিলবে।

হারামাইন পরিচালনা কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, মসজিদে হারাম এবং মসজিদে নববির প্রবেশদ্বারসহ বিভিন্ন স্থানে নিযুক্ত কর্মকর্তারা দর্শনার্থীদের বিভিন্ন জিজ্ঞাসার উত্তর দিচ্ছেন। এছাড়া ধর্মীয় কোনো বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য, উভয় মসজিদের বিভিন্ন স্থানে ডিজিটাল স্ক্রিন স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে যেকোনো বিষয়ে জানার সুযোগ রয়েছে।

কর্তৃপক্ষ বলছেন, ল্যান্ডলাইন বা মোবাইল ফোনে ২৪ ঘণ্টা প্রশ্ন এবং দর্শনার্থীদের দিক-নির্দেশনা ও বিভিন্ন শরিয়া বিষয়ক প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য দুটি টোল-ফ্রি নম্বর বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইল ফোনের স্মার্ট অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাষায় জুমার খুতবা দ্রুত অনুবাদের সুবিধাও দেওয়া হচ্ছে। আরও থাকছে প্রতিদিন হারামাইন শরিফাইনের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় আলোচনার ব্যবস্থা।

মসজিদে হারামে আগতদের জন্য হুইল চেয়ার, ছবি : সংগৃহীত

করোনা পরবর্তী সময়ে মসজিদে হারামসহ মসজিদের নববিতে প্রতিদিন কয়েকবার করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার পাশাপাশি সুগন্ধি দেওয়া হয়। বিশেষ ব্যবস্থাপনায় পুরো মসজিদ প্রাঙ্গণকে স্যানিটাইজ করা হয় আশপাশের পরিবেশকে দুর্গন্ধহীন করা হয়।

এছাড়া নামাজ আদায়কারী ও উমরাপালনকারীদের জন্য রাখা আছে ঠান্ডা পানি ও জমজমের পবিত্র পানি। এর বাইরে নির্দিষ্ট লোক রয়েছে, যারা মসজিদে হারামের দর্শনার্থীদের মাঝে জমজমের বোতল ও পানি সরবরাহ করেন।

সুশৃঙ্খলভাবে চলাচলের জন্য মসজিদে হারামের বিভিন্ন স্থানে প্রচুর নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন রয়েছে, যারা দর্শনার্থীদের চলাচল সুশৃঙ্খল রাখতে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে পথ হারিয়ে যাওয়াদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার মতো কাজটিও আন্তরিকভাবে করছেন।

উর্দু নিউজ অবলম্বনে মুফতি উমর ফারুক আশিকী

;

হজ ভিসা আবেদনের সময় বাড়ল ৪ দিন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আরাফাতের ময়দানে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল হজপালনকারীরা, ছবি : সংগৃহীত

আরাফাতের ময়দানে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল হজপালনকারীরা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২০২৪ সালের হজে বাংলাদেশ থেকে ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজযাত্রী হজপালন করবেন। ৯ মে থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র ৩৫ হাজারের মতো হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়েছে। এখনও ৫০ হাজার হজযাত্রীর ভিসা হয়নি, এমতাবস্থায় হজ ভিসার জন্য আবেদনের সময় আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। বর্ধিত সময় অনুযায়ী আগামী ১১ মে পর্যন্ত হাজিরা ভিসা আবেদন করতে পারবেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসেন তসলিম। তিনি জানান, সৌদি হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় হাজিদের জন্য ভিসা আবেদনের সময় ১১ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে।

গত ২৯ এপ্রিল ছিল হজ ভিসা আবেদনের শেষ সময়। কাঙ্ক্ষিত ভিসা আবেদন না হওয়ায় প্রথম দফায় ৭ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এই সময়ের মধ্যে সবাইকে ভিসার আবেদন করার জন্য অনুরোধ করা হলেও দ্বিতীয় দফায় ফের সময় বাড়ানো হলো।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। ২০২৪ সালের হজে বাংলাদেশ থেকে ৮৩ হাজারের বেশি হাজি হজপালন করবেন।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হবে। বুধবার হজ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চলতি বছর ৮৩ হাজার হজযাত্রীকে বহন করার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্স (সৌদিয়া) ও সৌদির বেসরকারি এয়ারলাইন্স ফ্লাইনাস মোট ২২৮ হজ ফ্লাইট পরিচালনা করবে। সে অনুযায়ী শিডিউল ঘোষণা করেছে এয়ারলাইন্সগুলো। চুক্তি অনুযায়ী, মোট হজযাত্রীর অর্ধেক বহন করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং বাকি অর্ধেক বহন করে সৌদিয়া ও ফ্লাইনাস এয়ার।

চুক্তি অনুযায়ী, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স মোট ১১৮টি ফ্লাইটে ৪৮ হাজার ৮৩৫ জন হজযাত্রী বহন করবে। সৌদি এয়ারলাইন্স এবং ফ্লাইনাস এয়ার বাকি হজযাত্রী বহন করবে।

;

লন্ডনের প্রথম মুসলিম মেয়রের রেকর্ড



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সাদিক খান, ছবি : সংগৃহীত

সাদিক খান, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সাদিক খান হচ্ছেন লন্ডনের প্রথম মুসলিম মেয়র। যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের মেয়র পদে টানা তিনবার নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন লেবার পার্টির প্রার্থী সাদিক খান। লন্ডনের মেয়র হিসেবে তার যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে। তখন থেকেই পদটি ধরে রেখেছেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মুসলিম এই রাজনীতিক।

সাদিক খানের জন্ম লন্ডনে, ১৯৭০ সালের ৮ অক্টোবর। এর দুই বছর আগে ১৯৬৮ সালে তার মা-বাবা পাকিস্তান থেকে যুক্তরাজ্যের অভিবাসী হিসেবে পাড়ি জমান। বাবা আমানউল্লাহ ছিলেন বাসচালক। মা শেহরুন করতেন দরজির কাজ। সাত ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাদিক পঞ্চম। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় তার দাদা-দাদি ভারত থেকে পাকিস্তানে পাড়ি জমিয়েছিলেন।

সাদিক খানের পড়ালেখা ইউনিভার্সিটি অব নর্থ লন্ডন থেকে। বিষয় ছিল আইন। পড়াশোনা শেষে মানবাধিকার-বিষয়ক আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। কম বয়সেই তিনি যোগ দিয়েছিলেন লেবার পার্টির রাজনীতিতে।

১৯৯৪ সালে লেবার পার্টির হয়ে লন্ডনের ওয়ান্ডসওর্থ বারার কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হন সাদিক খান। তখন তার বয়স মাত্র ২৪ বছর। ২০০৬ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২০০৫ সালে যুক্তরাজ্যের জাতীয় নির্বাচনে দক্ষিণ লন্ডনের টুটিং আসন থেকে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন।

২০০৮ সালে গর্ডন ব্রাউন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন স্থানীয় সরকারের পার্লামেন্টারি আন্ডার সেক্রেটারি এবং পরবর্তীতে যোগাযোগ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন সাদিক খান। ২০১০ সালে লেবার পার্টি বিরোধী দলে গেলে তিনি ছায়া মন্ত্রিসভায় বিচার বিষয়ক ছায়া মন্ত্রী, লর্ড চ্যান্সেলর (ছায়া অর্থমন্ত্রী) ও লন্ডন-বিষয়ক ছায়া মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৬ সালে লন্ডনের মেয়র পদে নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করেন সাদিক খান। সে বছরের ৯ মে কনজারভেটিভ পার্টির জেক গোল্ডস্মিথকে হারিয়ে প্রথমবার লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর ২০২১ সালে কনজারভেটিভ পার্টির সোন বেইলিকে পরাজিত করে মেয়র পদ ধরে রাখেন সাদিক।

এবার তৃতীয় দফায় সাদিক খানের জয় আগামী জাতীয় নির্বাচনে লেবার পার্টির মনোবল আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

ব্যক্তিগত জীবনে সাদিক খানের দুই সন্তান রয়েছে। রাজনীতির পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতিও আগ্রহ রয়েছে তার। সাদিক খানের পছন্দের খেলা ফুটবল, ক্রিকেট ও বক্সিং। ২০১৪ সালে লন্ডন ম্যারাথনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে জনপ্রিয় সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিনে বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় জায়গা করে নেন সাদিক খান।

;

রেকর্ড সংখ্যক হজযাত্রীর অপেক্ষায় সৌদি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আরাফাতের ময়দানে যাচ্ছেন হাজিরা, ছবি : সংগৃহীত

আরাফাতের ময়দানে যাচ্ছেন হাজিরা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আগামী ৯ মে বাংলাদেশ থেকে শুরু হচ্ছে চলতি মৌসুমের হজ ফ্লাইট। হজযাত্রীদের নিয়ে ওইদিন প্রথম ফ্লাইট সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা দেবে। এর পরের দিন ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও ভারত থেকে হজযাত্রীরা সৌদি আরব যাওয়া শুরু করবেন।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এ বছর ১৪ জুন থেকে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই মক্কায় ভিড় জমানো শুরু করবেন হজযাত্রীরা। এই সময়ে কোনো উমরাযাত্রী গ্রহণ করবে না দেশটি।

এ বছর মক্কায় রেকর্ড সংখ্যক হজযাত্রীর সমাগম হতে পারে, এমন ধারণা নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেছে সৌদি আরব।

সুন্দর ও আরামদায়কভাবে যেন হাজিরা হজ সম্পন্ন করতে পারেন সে বিষয়টি মাথায় রেখে সৌদির সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যৌথভাবে কাজ করছে।

হজ সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলো ধারণা করছে, এবারের রমজান মাসে রেকর্ড সংখ্যক ৩ কোটি মানুষ উমরা পালন করার পর- হজেও মুসল্লিদের ঢল নামবে।

সদ্য বিদায় নেওয়া রমজান মাসে মদিনার মসজিদে নববিতে ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষ নামাজ আদায় করেছেন। রমজানে প্রিন্স মোহাম্মদ বিন আব্দুল আজিজ বিমানবন্দর দিয়ে ৯০ লাখ মানুষ মদিনায় আসেন। হজের আগে ও পরে অনেক মানুষ মদিনায় যান।

গত বছর হজপালন করেছিলেন ১৮ লাখ ৪৫ হাজার ৪৫ জন পুরুষ ও নারী। যার মধ্যে বিদেশির সংখ্যা ১৬ লাখ ৬০ হাজার ৯১৫ ও সৌদি আরবের হাজির সংখ্যা ১ লাখ ৮৪ হাজার ১৩০ জন। করোনা মহামারির কারণে এর আগের তিন বছর নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষকে হজ করার সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু গত বছর সব বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হয়।

হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ধারণা, এবার হজে ২৫ লাখ মুসল্লির সমাগম ঘটবে। তাদের প্রত্যাশা এবার গতবারের তুলনায় আরও বেশি মানুষ হজ করতে আসবেন। তাই হজের প্রস্তুতি অনেক আগে থেকেই নেওয়া শুরু হয়েছে।

এবার বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজপালন করতে যাবেন ৮৩ হাজার ২০২ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন ৪ হাজার ৩০৭ জন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন ৭৮ হাজার ৮৯৫ জন।

;