১৪ ঘণ্টায় পুরো কোরআন মুখস্ত শোনালো হাফেজ রেদওয়ান

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

হাফেজ রেদওয়ান আহমদ, ছবি : সংগৃহীত

হাফেজ রেদওয়ান আহমদ, ছবি : সংগৃহীত

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ১৬ বছর বয়সের এক কিশোর হাফেজ টানা ১৪ ঘণ্টায় পুরো কোরআন মাজিদ মুখস্ত শুনিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। মেধাবী ওই হাফেজের নাম রেদওয়ান আহমদ।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) রাতে কমলগঞ্জ পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের বড়গাছ (নছরতপুর) জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ আবদুস সালাম মুঠোফোনে জানান, ‘আমার ছাত্র হাফেজ রেদওয়ান আহমদ ৬ জানুয়ারি সকাল ৭টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত, শুধু নামাজ, খাবার ও অজু-ইস্তেঞ্জার জন্য কিছু সময় ছাড়া একটানা ১৪ ঘন্টায় পবিত্র কোরআন প্রথম পৃষ্ঠা থেকে শেষ পৃষ্ঠা অর্থাৎ পুরো ত্রিশ পারা মুখস্ত শুনিয়েছে। এ সময় দুইটি লোকমা (ভুল) ছাড়া বড় ধরণের কোনো ভুল হয়নি তার। এর আগে সে আমাকে ১৫ দিনে ১ বার, ৭ দিনে ১ বার, ৩ দিনে একবার অর্থাৎ প্রতিদিন দশ পারা করে, ২ দিনে একবার অর্থাৎ প্রতিদিন ১৫ পারা করে মুখস্ত শুনিয়েছে। সর্বশেষ সে টানা ১৪ ঘণ্টা পুরো কোরআন মাজিদ মুখস্থ শোনায়।’

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে বড়গাছ (নছরতপুর) এলাকার বাসিন্দা ও কমলগঞ্জ একতা সমাজকল্যাণ পরিষদের সভাপতি হাফেজ হিফজুর রহমান ফাহাদের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আমার এলাকার সন্তান হিসেবে সে বিস্ময়বালক হাফেজ রেদওয়ানের জন্য দোয়া করি এবং অভিনন্দন জানাই। কারণ কোরআন মাজিদ হেফজ করা সহজ কথা নয়। আর শুধু মেধা থাকলেও সবার কপালে হাফেজ হওয়ার ভাগ্য জুটে না। মহান আল্লাহ যাকে পছন্দ করেন, শুধু তাকেই হাফেজ আলেম ও হওয়ার সৌভাগ্য দান করেন। তেমনি ভাগ্যবানদের মধ্যে রেদওয়ান একজন।

হাফেজ ফাহাদ আরও বলেন, পবিত্র কোরআন হেফজ করা সৌভাগ্যের বিষয় হলেও তা খুব সহজ নয়। তারপরও আমাদের দেশে প্রতি বছর অসংখ্য হাফেজে কোরআন তৈরি হচ্ছে। তারা তাদের অসাধারণ তেলাওয়াত ও মুখস্থ প্রতিভা দিয়ে আমাদের মুগ্ধ করে চলেছেন প্রতিনিয়ত। ঠিক তেমনই এক কঠিন কাজ করলেন হাফেজ রায়হান আহমাদ।

বিজ্ঞাপন

হাফেজ রেদওয়ান আহমদ মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ পৌরসভার নছরতপুর এলাকার মো. আকলুছ মিয়ার কনিষ্ঠ পুত্র। তার মায়ের নাম জহুরা বেগম। সে তিন ভাই ও এক বোনের মাঝে সবার ছোট।

ত্রিশ পারা মুখস্তের বিষয়ে জানতে চাইলে তার শিক্ষক হাফেজ আব্দুস সালাম জানান, ৬ জানুয়ারি শনিবার সকাল ৭টা থেকে রেদওয়ান আহমদ আমাকে পবিত্র কোরআন মুখস্ত শোনানো শুরু করে। নামাজের সময় ও খাবারের সংক্ষিপ্ত বিরতি ছাড়া সে আর কোনো বিরতি নেয়নি। এভাবে টানা ১৪ ঘণ্টায় পুরো কোরআনে কারিম শুনিয়েছে সে। গড়ে প্রতি পারায় ২৫ মিনিট সময় লেগেছে তার। পুরো সময়ের মধ্যে তার দুইটি লুকমা (ভুল) ছাড়া আর কোনো ভুল হয়নি। রেদওয়ান আমাকে বিস্ময় করে দিয়েছে। আমার জীবনের প্রথম ছাত্র, যে পূর্ণ কোরআন দুইটি লোকমা (ভুল) ছাড়া আমাকে শুনিয়েছে। এটা আমার সবচাইতে বড় অর্জন আলহামদুলিল্লাহ! তার এমন অর্জনে এলাকাবাসীরা আনন্দিত যোগ করেন নছরতপুর জামে মসজিদের ইমাম আবাদুস সালাম।

কোরআন হেফজ শেষ করার অনুভূতি চাইলে হাফেজ রেদওয়ান বলেন, প্রথমেই মহান আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করি। তার অশেষ অনুগ্রহ এবং মা-বাবা ও শিক্ষকের প্রচেষ্টায় হাফেজে কোরআন হওয়ার স্বপ্নপূরণ হয়েছে। আল্লাহ যেন আমাকে বড় পরিসরে খেদমতের জন্য কবুল করেন।