ইজতেমার ময়দানে বাহারি আপ্যায়ন

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ইজতেমার ময়দানে তাবলিগের সাথীরা খাবার খাচ্ছেন, ছবি : সংগৃহীত

ইজতেমার ময়দানে তাবলিগের সাথীরা খাবার খাচ্ছেন, ছবি : সংগৃহীত

এক প্লেটে একাধিক মুসল্লি খায়। খাবারের সময় সামনে দাঁড়িয়ে থাকে প্লেট ও পানি হাতে কয়েকজন। খাবার শেষে একজনে অনেকের হাত ধুইয়ে দেয়। আরেকজন টিসু এগিয়ে নিয়ে আসে হাসিমুখে।

কারও গায়ে ধাক্কা লাগলে বা কেউ পড়ে গেলে তাকে তুলতে কয়েকজন লুটিয়ে পড়ে। তবে সব ক্ষেত্রে একই স্লোগান, আল্লাহু আকবার। বিশেষ করে রাতের বেলায় ওপরে ঝলমলে আলো, ভেতরে খাবারের উৎসব। অনেকটা নির্ঘুম রাত বলা যায়।

বিজ্ঞাপন

কেউ খাবার খাচ্ছেন, কেউ খাওয়াচ্ছেন আবার কেউ কেউ ইবাদত-বন্দেগি কিংবা কোরআন তেলাওয়াত করছেন। জিকিরে-ফিকিরে ও বাহারি খাবারে প্যান্ডেলগুলোর ভেতরটা যেন মিষ্টি আমেজে ভরপুর। এ যেন ভিন্ন এক উৎসব।

বিশ্ব ইজতেমার দেশি-বিদেশি খিত্তায় গিয়ে দেখা যায়, সযত্ন মেহমানদারি। নতুন কেউ গেলে তাকে আপ্যায়নের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন তাবলিগ জামাতের সদস্যরা। কিছু না খেয়ে কোনো জামাত থেকে কোনো মেহমান যেতে পারেন না। সকালে রুটি, মাংস, দুপুরে খিচুড়ি বা ভাত মাছসহ বাহারি রকমের তরকারি দিয়ে আপ্যায়ন। বিকেলে বিভিন্ন ধরনের ফল মিষ্টি, দই কখনো রসমালাই বা রসগোল্লা। রাতে ভাত, মাছ ও মাংস আরও কত কী বাহারি আয়োজন।

বিজ্ঞাপন

সব মিলিয়ে ইজতেমা ময়দানে তাবলিগের সাথীদের আপ্যায়নে তুষ্ট অতিথিরা।

ইজতেমার ময়দানে এভাবেই রান্না করা হয়, ছবি : সংগৃহীত

 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন জামাতে আপ্যায়নের উৎসব। ছোট বা বড় নেই সবাই সমান। নেই কোনো ভেদাভেদ। অনেক বড় কর্তাদেরও দেখা গেল জামাতের অতিথি হিসেবে। নেতা এমপি আর মন্ত্রী নেই সবার জন্য এক শ্রেণির ব্যবস্থাপনা। মন্ত্রী-এমপিরাও চটে বসে খাবার খাচ্ছেন। কারও মুখে নেই কোনো বিষাদের ছাপ। অবয়বে নেই ক্লান্তির কোনো কালো রেখা। ভালো-মন্দ সব কিছুতেই আলহামদুলিল্লাহ যেন কমন স্লোগান। আর কোনো কারণে অকারণে আল্লাহু আকবারের জবাবও আল্লাহু আকবার দিয়ে দেওয়া হয়। এভাবেই শান্তির ধর্ম ইসলামি শিষ্ঠাচারের প্রতিফলন ঘটছে বিশ্ব ইজতেমায়।

মেহমানদারির কাছে নিয়োজিত জামাতের খাদেম হাজি রেজাউল করিম রেজা জানালেন, মেহমান খেলে কমে না। বিশেষ করে আল্লাহর দিদার (সাক্ষাৎ, সান্নিধ্য) লাভের আশায় আমরা ইজতেমায় আসি। মানব সেবা বড় ধর্ম। মানুষকে ভালোবাসলে আল্লাহকে খুশি করা যায়। তাই আমরা মেহমানদের যত্ন সহকারে আপ্যায়ন করি। মানুষের খেদমত করা তাবলিগ জামাতের বড় কাজ।

তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ ইমানের অংশ। মানুষ মানুষকে ভালোবাসলে আল্লাহকে ভালোবাসা হয়। ইসলামের দাওয়াতে প্রধান বিষয় হলো উৎকৃষ্ট আচরণ। নবী কারিম (সা.) উন্নত আচরণের অধিকারী ছিলেন। কোনো মুসলমানের কাছে কোনো মুসলমান মেহমান হয়ে গেলে তাকে হাসিমুখে বরণ করে আপ্যায়ন করতে হয়, এটা ইসলামের শিক্ষা।

জামাতে আপ্যায়িত হয়ে আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা বললেন, কাছে হলেও তিনি খেতে বাসায় যান না। এখানে সবার সঙ্গে খেতে তার ভালো লাগে। তাই তিনি যতদিন ইজতেমা চলবে ততদিন ডিউটি করে বাসায় যাবেন না, জামাতেই খাবেন।