পরিকল্পনা করে রমজান কাটানো কেন জরুরি



মুফতি মুহাম্মদ তাসনীম, অতিথি লেখক, ইসলাম
ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম জাভা প্রদেশের গ্রান্ড মসজিদে তারাবির নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা, ছবি : রয়টার্স

ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম জাভা প্রদেশের গ্রান্ড মসজিদে তারাবির নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা, ছবি : রয়টার্স

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র রমজানের জন্য পরিকল্পনা করা, ব্যক্তিগত লক্ষ্য নির্ধারণ করা জরুরি। রমজানে নির্ধারিত লক্ষ্যগুলো হতে হবে সুবিন্যস্ত ও স্পষ্ট। তাহলে রমজান সফল হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে, রমজানের বরকত ও সওয়াব মিলবে। এজন্য কিছু মূলনীতি অনুসরণ করে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে।

অভ্যাস পরিবর্তন কঠিন কিছু নয়
অনেকের ইচ্ছা থাকে, রমজানে নিজের কোনো নেতিবাচক অভ্যাস কিংবা জীবন থেকে নেতিবাচক কিছু ঝেড়ে ফেলার। এটি হতে পারে সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দেওয়ার লক্ষ্য কিংবা খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের লক্ষ্য। এক্ষেত্রে আপনাকে বলব ভিন্ন কথা। রমজানে কোনো অভ্যাস ত্যাগ কিংবা পরিবর্তনের লক্ষ্যের চেয়ে বেশি জোর দেওয়া উচিত- নতুন অভ্যাস গড়ার প্রতি। আপনার মন সেদিকে আকৃষ্ট হবে, যা নিয়ে আপনি চিন্তা করছেন। তাই যখন আপনার লক্ষ্যের কথা আপনি নেতিবাচক ভঙ্গিতে ভাববেন তখন আপনার মন তা করার প্রতিই বেশি আগ্রহী হবে।

সুতরাং ভাববেন না, ‘রমজানে ওজন ২০ কেজি কমাতে হবে।’ বরং ভাবুন, ‘রমজানের শেষে আমার ওজন ৭০ কেজিতে নিয়ে আসতে হবে।’ একইভাবে আপনি যদি ভাবেন, ‘এই রমজানে কোরআন খতম দিতে পারলে দেব, না হলে কী আর করা?’ তাহলে আপনার মনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বরং ভাবুন, ‘এই রমজানে কোরআন মাজিদ খতম করতেই হবে।’

স্ব-প্রণোদিত হয়ে লক্ষ্য নির্ধারণ করা
রমজান নিয়ে আপনার লক্ষ্য হতে হবে প্রাসঙ্গিক। স্ব-প্রণোদিত হয়ে লক্ষ্য নির্ধারণ করবেন। কারও কথায় আকৃষ্ট না হয়ে নিজের তাড়না থেকে লক্ষ্য নির্ধারণ করলে তাতে সফল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে অনেক বেশি।

মানুষ সাধারণত এমন সব লক্ষ্য নির্ধারণ করে, যা পূরণ করা সহজেই সম্ভব। তবে রমজানে এমন করবেন না। একটু কঠিন লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। জীবনে আগে কখনো রমজানের প্রতি রাতে তাহাজ্জুদ পড়েননি, প্রতিদিন এশার নামাজের পর সম্পূর্ণ তারাবির নামাজ পড়েননি, আগে কখনো ইতিকাফ করেননি- তাহলে এবার চেষ্টা করুন। রমজানে কাজগুলো করা সহজ, কারণ শয়তান শিকলবদ্ধ থাকে, চারদিকে প্রবহমান থাকে রমজানের সুশীতল বাতাস। তাছাড়া আমলের ফজিলতও অনেক বেশি। নবী কারিম (সা.) রমজানের শেষ দশকের নিজের কোমরবন্ধ শক্ত করে বেঁধে নিতেন এবং রমজানের আগের বিশ দিন যে পরিমাণ ইবাদত করতেন, শেষ দশ দিন তার পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিতেন। আমাদের এভাবে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার টার্গেট রাখতে হবে।

মনে করুন, রমজানে আপনি একবার সম্পূর্ণ কোরআন তেলাওয়াত করার লক্ষ্য স্থির করলেন। তাহলে, প্রতিদিন এক পারা অর্থাৎ২০ পৃষ্ঠা তেলাওয়াত করতে হবে। তাহলে, আপনি দিনে ১০ পৃষ্ঠা আর রাতে ১০ পৃষ্ঠা তেলাওয়াত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারেন। অথবা প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর ৪ পৃষ্ঠা করে পড়তে পারেন। এভাবে সংখ্যাবাচক লক্ষ্য নির্ধারণ করলে তা পূরণ করা সহজতর হবে।

পর্যালোচনা
রমজানে আপনার লক্ষ্য কতটুকু পূরণ করতে পারছেন, তা প্রতিদিন হিসাব নিতে হবে; আত্মপর্যালোচনা করতে হবে। তাহলে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন, কোথায় সমস্যা হচ্ছে এবং কোথায় আরও বেশি চেষ্টা চালাতে হবে। ইসলামি পরিভাষায় আত্মপর্যালোচনাকে মুহাসাবা বলে। হজরত হাসান (রহ.) বলেন, ‘মুমিন তার নিজের অভিভাবক। সে নিজেই নিজের হিসাব গ্রহণ করে। যারা দুনিয়াতে মুহাসাবা করেছে, আপন কৃতকর্মের হিসাব নিয়েছে, কেয়ামতের দিন তাদের হিসাব সহজ হবে। আর যারা মুহাসাবা ছাড়া জীবনযাপন করেছে, তাদের হিসাব কঠিন হবে।’ -হিলয়াতুল আউলিয়া : ২/১৫৭

নির্দিষ্ট লক্ষ্য
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, লক্ষ্য নির্দিষ্ট হওয়া। যেমন, আপনি রমজানে আপনার চরিত্র সুন্দর করতে চান। তা কীভাবে করবেন? কার সঙ্গে করবেন? চরিত্রের কোন কোন দিকগুলো সুন্দর করবেন? কোন কোন দুর্বলতা কাটিয়ে উঠবেন এ ধরনের নির্দিষ্ট লক্ষ্য রাখতে হবে।

কর্মসূচি
আপনি চাইলে রমজান ১০০ লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারেন। কিন্তু, আপনার হাতে পর্যাপ্ত সময় না থাকলে আপনি এর কোনোটাই পূরণ করতে পারবেন না। তাই এদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। আপনি প্রতিদিন ২০ পৃষ্ঠা কোরআন পড়বেন, ভালো কথা। এখন আপনি হিসাব করুন ১ পৃষ্ঠা তেলাওয়াত করতে কত সময় লাগে। এভাবে পরিকল্পনা করে নিতে হবে, প্রতিদিন তেলাওয়াতে কত সময় দিতে হবে।

লক্ষ্যগুলো লিখে রাখুন
ওপরে সংক্ষিপ্তভাবে যে দিক-নির্দেশনাগুলো দেওয়া হলো- এখন আপনি একটু সময় ব্যয় করে রমজানে আপনার নিজের জন্য ১৫টি লক্ষ্য নির্ধারণ করে তা লিখে রাখুন। তারপর কিভাবে আপনি এই লক্ষ্যগুলো পূরণ করবেন তা নিয়ে চিন্তা-ফিকির করুন।

ব্যক্তিসত্তা
লক্ষ্য সম্পর্কে লেখার সময় নিজের ব্যক্তিসত্তাকে উদ্দেশ্য করে লিখবেন। সম্পূর্ণ বাক্য নিজের লক্ষে লিখবেন এবং সরাসরি নিজেকে উদ্দেশ্য করে লিখবেন। যেমন, ‘প্রতিদিন ৪৫ মিনিট কোরআন পড়া’ না লিখে লিখবেন- ‘আমি প্রতিদিন ৪৫ মিনিট কোরআন তেলাওয়াত করব।’

বর্তমান কাল
এটি হচ্ছে আরেকটি দারুণ কৌশল। লক্ষ্যগুলো ভবিষ্যৎ কালে না লিখে বর্তমান কালে লিখুন। লক্ষ্য সম্পর্কে লেখার সময় ভাবুন যদি সেই লক্ষ্য পূর্ণ হয়ে যেত, তাহলে আপনি কী লিখতেন এবং সেই কথাই লক্ষ্যের জায়গায় লিখে ফেলুন। যেমন, ‘এই রমজানে ১০টি সুরা মুখস্থ করব’ না লিখে আপনি লিখুন; ‘আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর অশেষ রহমতে এই রমজান শেষে আমি ১০টি সুরা মুখস্থ করে ফেলেছি।’ এভাবে লিখলে যতবারই আপনি আপনার লক্ষ্যগুলো পড়বেন ততবার আপনি অনুভব করবেন, এই লক্ষ্য পূরণ করতে পারলে আপনার কত ভালো লাগবে। নিঃসন্দেহে এই কৌশল আপনাকে লক্ষ্য পূরণে অনুপ্রাণিত করবে।

   

রবের প্রিয় বান্দা হওয়ার সহজ উপায়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
রবের প্রিয় বান্দা হওয়ার সহজ উপায়

রবের প্রিয় বান্দা হওয়ার সহজ উপায়

  • Font increase
  • Font Decrease

আল্লাহর তায়ালার প্রিয় বান্দা হওয়ার মাধ্যম হলো তার মহান হুকমগুলো পালন করা। তার হুকুমগুলোর মধ্যে থেকে অন্যতম হুকুম হলো নামাজ। আর এই নামাজের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর প্রিয় হয়ে ওঠে, বিশেষ করে নফল নামাজ বান্দাকে আল্লাহর এতটা প্রিয় করে তোলে যে, সে যখন আল্লাহর কাছে কিছু চাই তখন মহান আল্লাহ তাকে ফিরিয়ে দেন না। বরং তার চাওয়াকে পাওয়াতে রুপান্তরিত করে দেন ।

হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো ওলির সঙ্গে দুশমনি রাখবে, আমি তার সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করব।

আমি যা কিছু আমার বান্দার ওপর ফরজ করেছি, তা দ্বারা কেউ আমার নৈকট্য লাভ করবে না। আমার বান্দা সর্বদা নফল ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকবে। এমনকি অবশেষে আমি তাকে আমার এমন প্রিয় পাত্র বানিয়ে নিই যে আমিই তার কান হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শুনে। আমিই তার চোখ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে দেখে।

আর আমিই তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে। আমিই তার পা হয়ে যাই, যা দ্বারা সে চলে। সে যদি আমার কাছে কিছু চাই, তবে আমি নিশ্চয়ই তাকে তা দান করি। আর যদি সে আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তবে অবশ্যই আমি তাকে আশ্রয় দেই।

আমি কোনো কাজ করতে চাইলে তা করতে কোনো দ্বিধা করি না, যতটা দ্বিধা করি মুমিন বান্দার প্রাণ নিতে। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তার বেঁচে থাকাকে অপছন্দ করি। (বুখারি, হাদিস : ৬৫০২)

তাই যেকোনো সংকটপূর্ণ অবস্থায় কিংবা যেকোনো প্রয়োজনীয় মুহূর্তে নফল নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করা। মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদেরকে নামাজ ও ধৈর্যের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই আমাদের জন্য উচিত হলো, যেকোনো পরিস্থিতিতে তারই কাছে ফেরা। তাতে মহান রবের ভালোবাসা ও সন্তুষ্টি অর্জন হবে ইনশাআল্লাহ ।

খুব গুরুত্ব সহকারে ফরজ ও সুন্নত নামাজের পাশাপাশি নফল নামাজ আদায় করা। আর নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দীর্ঘ (নফল) নামাজ আদায় করাকে সর্বোত্তম আমল বলে আখ্যা দিয়েছেন।

আবদুল্লাহ ইবনু হুবশী আল-খাস’আমী রা. সূত্রে বর্ণিত। একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সর্বোত্তম কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৪৯)

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তাঁর হুকুমগুলো আদায়ের মাধ্যমে, তাঁর প্রিয় বান্দা হওয়ার তৌফিক দান করুন আমিন।

;

হজ ফ্লাইট শুরু ৯ মে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ ফ্লাইট আগামী ৯ মে থেকে শুরু হবে। তবে এখনো চূড়ান্ত হয়নি ফ্লাইট শিডিউল।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান এতথ্য জানান।

তিনি বলেন, আগামী ৯ মে হজ ফ্লাইট শুরু হবে। দ্রুতই যাত্রীদের ফ্লাইট শিডিউল জানানো হবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর এক লাখ ১৯ হাজার ৬৯৫ জন হজযাত্রীকে বহন করার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্স (সৌদিয়া) ও সৌদির বেসরকারি এয়ারলাইন্স ফ্লাইনাস মোট ৩৩৫ হজ ফ্লাইট শিডিউল ঘোষণা করে। চুক্তি অনুযায়ী, মোট হজযাত্রীর অর্ধেক বহন করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং বাকি অর্ধেক বহন করে সৌদিয়া ও ফ্লাইনাস এয়ার। এবারও এই তিন এয়ারলাইনস হজযাত্রীদের বহন করবে।

চলতি বছর বাংলাদেশের জন্য এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮টি কোটা নির্ধারণ করেছিল সৌদি আরব। কিন্তু কয়েক দফা সময় বাড়িয়েও হজের নির্ধারিত কোটা পূরণ হয়নি। এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে গাইড ও মোনাজ্জেমসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ২৫৭ জন।

এদিকে, পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হজ এজেন্সির মালিকেরা। তাই সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে দ্রুত সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এজেন্সি মালিকেরা।

;

দারিদ্র্য বা অভাব দূর করার পরীক্ষিত আমল



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
দারিদ্রতা বা অভাব দূর করার পরীক্ষিত আমল

দারিদ্রতা বা অভাব দূর করার পরীক্ষিত আমল

  • Font increase
  • Font Decrease

একবার একজন সাহাবী রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আরজ করলেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়া আমার প্রতি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছে। ইরশাদ করলেন: তোমার কি ঐ তাসবিহ স্মরণ নেই, যে তাসবিহ ফেরেশতা এবং মাখলুকের, যার বরকতে রুজি প্রদান করা হয়। যখন সুবহে সাদিক উদিত (শুরু) হয় তখন এ তাসবীহ ১০০ বার পাঠ কর:

তাসবিহটি হলো : সুবহানাল্লাহি অ-বিহামদিহি,সুবহানাল্লাহিল আলিয়্যিল আযিম, অ-বিহামদিহি আস্তাগফিরুল্লাহ।

অর্থ: মহাপবিত্র আল্লাহ এবং সকল প্রশংসা তাঁর জন্য; মহাপবিত্র আল্লাহ, যিনি সমুচ্চ, মহান; এবং সকল প্রশংসা তাঁর জন্য, আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।

যদি তুমি এই তাসবিহটি ১০০ বার পড়, তাহলে দুনিয়া তোমার নিকট অপমানিত হয়ে আসবে। ঐ সাহাবী রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু চলে গেলেন। কিছুদিন পর পুনরায় হাজির হয়ে, আরজ করলেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! দুনিয়া আমার নিকট এত বেশি আসছে, আমি হতবাক! কোথায় যাব, কোথায় রাখব! (সূত্র: আল খাছায়িছুল কুবরা, ২য় খন্ড, ২৯৯ পৃষ্ঠা)

এই তাসবিহটি যথাসম্ভব সুবহে সাদিক (শুরু) হওয়ার সাথে সাথে পাঠ করা নতুবা ফজরের, জামাআত যদি শুরু হয়ে যায় তবে জামাআতে শরীক হয়ে যাবে এবং পরে সংখ্যা পূর্ণ করে নিবে। আর যদি নামাযের পূর্বে কোনো কারনে তা পাঠ করতে না পারে বা পাঠ করতে ভুলে যায়,তাহলে সূর্য উদিত হওয়ার আগে আগেই তা পাঠ করে নিতে হবে। (সুত্র: মলফুজাতে আ’লা হযরত, ১২৮ পৃষ্ঠা)

উক্ত তাসবীহ পাঠ করার সাথে সাথে সকাল সন্ধ্যায় তিনবার এই আয়াতটিও পাঠ করতে পারেন।

উচ্চারণ: ওয়া মাই-ইয়াত্তাকিল্লাহা ইয়াজ আল্লাহু মাখরাজা। ওয়া ইয়ারযুকহু মিন হাইসু লা ইয়াহ তাসিব।ওয়া মান ইয়া তা ওয়াক্কাল আলাল্লাহি ফাহু ওয়া হাসবুহু ইন্নাল্লাহা বালিগু আমরিহি কাদযায়াল্লাহু লিকুল্লি শাইয়িন কাদরা।

অর্থ: আর যে আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করে, আল্লাহ তায়ালা তার জন্য (সমস্যা থেকে উদ্ধার পাওয়ার) কোন না কোন পথ বের করে দিবেন। এবং তাকে ওই স্থান থেকে জীবিকা দেবেন, যেখানে তার কল্পনাও থাকে না এবং যে আল্লাহর উপর ভরসা করে, তবে তিনি তার জন্য যথেষ্ট। নিশ্চয় আল্লাহ তার কাজ পরিপূর্ণকারী। নিশ্চয় আল্লাহ তায়াল প্রত্যেক বস্তুর একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ রেখেছেন। (সূরা-ত্বালাক, আয়াত - ১, ২)

দারিদ্রতা দূর করার আরো একটি আমলের কথা হাদিসে উল্লেখ রয়েছে।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন রাতে সূরা ওয়াক্বিয়াহ তেলাওয়াত করবে তাকে কখনো দারিদ্রতা স্পর্শ করবে না। হযরত ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু তাঁর মেয়েদেরকে প্রত্যেক রাতে এ সুরা তেলাওয়াত করার আদেশ করতেন।([বাইহাকি : শুআবুল ঈমান-২৪৯৮)

তবে একটি বিষয় আমাদেরকে অবশ্যই স্মরণ রাখতে হবে, দোয়া কবুল হওয়ার জন্য শর্ত হল হালাল উপার্জন। হালাল উপার্জন ছাড়া দোয়া কবুল হওয়ার আশা করা বোকামি।

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে দারিদ্রতা বা অভাব দূর করে, সচ্ছলতাকে জীবনসঙ্গী বানিয়ে দিন আমিন।

;

রিজিক বৃদ্ধির ৪ আমল



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মুমিন মাত্রই বিশ্বাস করেন যে, তার আয়-উপার্জন, জীবন-মৃত্যু এবং সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য ইত্যাদি র্নিধারণ হয়ে যায়; যখন তিনি মায়ের উদরে থাকেন। আর এসব তিনি লাভ করেন তার জন্য বরাদ্দ উপায়-উপকরণগুলোর মাধ্যমে। তাই আমাদের কর্তব্য হলো- হাত গুটিয়ে বসে না থেকে এর জন্য র্নিধারিত উপায়-উপকরণ সংগ্রহে চেষ্টা করা। যেমন চাষাবাদ, ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিল্প-চারু, চাকরি-বাকরি বা অন্য কিছু।

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তিনিই তো তোমাদের জন্য জমিনকে সুগম করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা এর পথে প্রান্তরে বিচরণ করো এবং তার রিজিক থেকে তোমরা আহার করো। আর তার নিকটই পুনরুত্থান।’ -সুরা আল মুলক : ১৫

কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমল ও উপায়ের কথা বর্ণিত হয়েছে। সেখান থেকে ৪টি আমলের কথা উল্লেখ করা হলো-

তওবা-ইস্তেগফার : তওবা-ইস্তিগফার করার মাধ্যমে বান্দার রিজিক বাড়ে। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তাদের বলেছি, নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল। তিনি আকাশ থেকে তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততিতে উন্নতি দান করবেন এবং তোমাদের বাগবাগিচা এবং নদীনালা দান করবেন।’ -সুরা নুহ : ১০-১২

হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি লাগাতার তওবা-ইস্তেগফার করবে; আল্লাহতায়ালা সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন; সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।’ -সুনানে আবু দাউদ : ১৫১৮

পরহেজগারি অবলম্বন এবং আল্লার ওপর ভরসা : যেসব আমলে রিজিকে প্রবৃদ্ধি ঘটে, তার মধ্যে তাকওয়া-পরহেজগারি অবলম্বন এবং তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর প্রতি ভরসা রাখা অন্যতম। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে আল্লাহর তাকওয়া অর্জন করবে, আল্লাহ তার জন্য উত্তরণের পথ বের করে দেবেন এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দান করবেন, যার কল্পনাও সে করতে পারবে না।’ -সুরা সাদ : ৩৫

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি যথার্থভাবে ভরসা রাখো। তিনি তোমাদের সেভাবে রিজিক দান করবেন, যেভাবে তিনি পাখিদের দান করে থাকেন। পাখিরা সকালে ক্ষুধার্ত অবস্থায় (খালি পেটে) বাসা থেকে বের হয় এবং সন্ধ্যায় উদর পূর্ণ করে বাসায় ফেরে।’ -জামে তিরমিজি : ২৩৪৪

সময়মতো নামাজ আদায় এবং ইবাদতের জন্য নিজেকে মুক্ত করা : সময়মতো দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে রিজিক বাড়ে। নামাজ আদায় করার ফাঁকে ফাঁকে কাজ ও ব্যবসা–বাণিজ্য করতে হবে; কাজ ও ব্যবসা–বাণিজ্য করার ফাঁকে ফাঁকে নামাজ নয়। একই সঙ্গে আল্লাহর ইবাদত পালনে নিজেকে ঝামেলামুক্ত করতে হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আপনি পরিবার-পরিজনকে নামাজ আদায়ের আদেশ দিন এবং নিজেও তার ওপর অটল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো রিজিক চাই না। আমিই আপনাকে রিজিক দিই। আর মুত্তাকিদের জন্যই শুভ পরিণাম।’ -সুরা ত্বহা : ১৩২

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতের জন্য তুমি তোমার অন্তরকে খালি করো। আমি তোমার অন্তরকে অভাবমুক্ত হিসেবে পরিপূর্ণ করে দেব এবং তোমার দরিদ্র্যের পথ দূর করে দেব। আর যদি তা না করো, আমি তোমার হাত (দুনিয়ার) ব্যস্ততায় পূর্ণ করে দেবো এবং তোমার অভাব মেটাব না।’ -জামে তিরমিজি : ২৪৬৬

রিজিক অর্জনের চেষ্টায় থাকা : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে (জমিনে) ছড়িয়ে পড়ো আর আল্লাহর অনুগ্রহ (রিজিক) সন্ধান করো এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ -সুরা জুমা : ১০

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যদি রশি নিয়ে সকালবেলা পাহাড়ের দিকে বের হয়। এরপর লাকড়ি সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে এবং দানও করে। মানুষের কাছে হাত পাতার চেয়ে তার জন্য এটা উত্তম।’ -সহিহ বোখারি : ১৪৮০

;