উন্মুক্ত করা হলো মদিনার ঐতিহাসিক সালমান ফারসি কূপ
মদিনার ঐতিহাসিক আল ফকির কূপটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এটি সালমান আল ফারসি কূপ নামেও পরিচিত। কূপটি দীর্ঘ ১৪ শতাব্দীকালের স্মৃতিবিজড়িত। এর বিশেষ তাৎপর্য হলো, এটি হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দানশীলতার স্মারক।
কূপটি মদিনার আল-আলিয়া জেলায় অবস্থিত। একটি খেজুরের বাগানে অবস্থিত কূপটি থেকে আরবের ঐতিহ্যবাহী ওয়াটার হুইল ব্যবহার করে তিন-মিটার ব্যাসের কূপ থেকে পানি তোলা হয়েছিল। পরে সেখানে পাম্প প্রতিস্থাপন করা হয়।
বর্তমানে আল-ফকির কূপটি মদিনা অঞ্চল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং অন্যান্য স্থানীয় সংস্থা দ্বারা পরিচালিত। এই সংস্থার অধীনেই কূপটি সংস্কার করা হয়েছে। কূপটি ছাড়া ওই অঞ্চলে একটি পুল এবং জলাধার চ্যানেল রয়েছে। সেগুলোর সাহায্যে আশপাশের বাগানগুলোতে পানি সরবরাহ করা হয়।
সৌদি প্রেস এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, এই কূপটি নথিভুক্ত ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে সংস্কার কাজ করা হয়েছে। মূল কূপটি একটি এক মিটার-উচ্চ লোহার বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। সংস্কার ও উন্নয়ন কাজের অংশ হিসেবে কূপ এবং এর নালাগুলোর চারপাশে লোহার বেড়া স্থাপন করা হয়েছে। বানানো হয়ে জলপথ, সেতু ও প্রধান ফটক। ফটকে মদিনার স্থানীয় পাথর ব্যবহার করা হয়েছে, পুরোনো ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে।
কূপের আশেপাশে বেশ কিছু খেজুর ও তালগাছ রোপণ করার পাশাপাশি হাঁটার রাস্তাগুলো প্রশস্ত করা হয়েছে এবং দর্শনার্থীদের জন্য পাথরের বেঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে। প্রবেশদ্বারে একটি তথ্যমূলক ফলক যুক্ত করা হয়েছে, যেখানে এই ইতিহাস সম্পর্কে বিশদ বিবরণ রয়েছে।
ঐতিহাসিক গবেষক ফুয়াদ আল-মাগামিসি জানিয়েছেন, আল-ফকির কূপটি সাহাবি হজরত সালমান আল-ফারসি (রা.)-এর জীবনের সঙ্গে যুক্ত। তিনি একজন ক্রীতদাস হিসেবে প্রাথমিকভাবে এই অঞ্চলের একটি বাগানে কাজ করতেন। পরে নবী কারিম (সা.) তাকে মুক্ত করার জন্য বাগানের মালিককে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করেন। পরে ওই বাগানের জায়গাটি সালমান আল-ফারসি কূপ নামে পরিচিতি লাভ করে, যদিও এটি এখন সাধারণভাবে আল-ফকির কূপ নামে পরিচিত।