যে সময় গোনাহ মাফের সুসংবাদ দিয়েছেন নবী কারিম সা.
সৃষ্টিকর্তা দয়াময় আল্লাহর দেওয়া মৌসুমগুলোর মধ্যে অসাধারণ একটি মৌসুম হলো- বসন্তকাল। প্রকৃতিতে বসন্ত এলে চারদিকে সজিবতা ছড়িয়ে যায়। গাছে গাছে ফুলের মেলা বসে। ফুলের সুবাসে মৌ মৌ করে চারদিক। পাখিদের কলতানে মুখরিত হয় বাগান। ঠিক তেমনি আল্লাহতায়ালার দেওয়া ইবাদতের একটি বসন্তকাল রয়েছে, যার নাম রমজান। যাকে আমরা রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস হিসেবে জানি।
আল্লাহতায়ালা তার বান্দার গোনাহ মাফের জন্য এ মাসকে বরাদ্দ করেছেন। যার ফলে পানির মাছ, মাটির পিপীলিকা আর আকাশের পাখিরাও রোজাদারের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করতে থাকে।
রোজাদার ব্যক্তি আল্লাহতায়ালার এতই প্রিয়ভাজন যে, রোজাদারের ঘুম, শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করাকেও জিকির বলে গণ্য করে তাকে তার সওয়াব দেওয়া হয়। এ ছাড়া রোজাদার ব্যক্তির দোয়া আল্লাহতায়ালা কবুল করে থাকেন।
ধরে নিন, আল্লাহর কোনো প্রিয় বান্দা বললেন, এইমাত্র আমাকে স্বপ্নের মাধ্যমে জানানো হয়েছে যে, এখন দোয়া কবুলের সময়। যে যা চাইবে তাকে তাই দেওয়া হবে। সেই বুজুর্গের কথা শুনে নিশ্চয়ই কাঙালের মতো কেঁদে কেঁদে সব চাওয়া আল্লাহর কাছে পেশ করবেন। আর এটাই স্বাভাবিক, কেননা অন্তরে তো এই কথার বিশ্বাস রয়েছে যে, আল্লাহর এক খাস অলি এই কথার সুসংবাদ দিয়েছেন।
আল্লাহর অলির মুখে দোয়া কবুলের কথা শুনে এতই ব্যাকুল হয়ে পড়েছেন। তাহলে তো এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, দোজাহানের বাদশাহ আল্লাহর প্রিয় হাবিব মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে সুসংবাদ দিয়েছেন ইফতারের সময় রোজাদরের দোয়া কবুল করেন।
তাহলে রাসুলের পক্ষ থেকে এই সংবাদ শোনার পর আমাদের কী পরিমাণ আগ্রহ ও আশা নিয়ে দোয়া করা উচিত তা সহজেই বুঝতে পারি।
একটু ভাবুন! আপনি কোনো দিনমজুরকে ঘর নির্মাণের কাজে নিয়োগ দিলেন, সে যখন সারাদিন কাজ করে দিনশেষে আপনার কাছে মজুরি চায় তখন কি তার মজুরি আটকে রাখেন? না দিয়ে দেন?
অন্তরে যদিও আমাদের অহংকার, হিংসা, কৃপণতার মতো অনেক ব্যধি রয়েছে, তারপরও কি একজন দিনমজুরের সারাদিনের পরিশ্রমকে শেষবেলায় নষ্ট করে দেই? তা কখন করি না, কেননা প্রত্যেক মানুষের হৃদয়ে সামান্য হলেও অনুগ্রহ ও দয়া রয়েছে।
তাই কোনো ব্যক্তি চায় না, দিনমজুরকে তার পাওনা থেকে বঞ্চিত করতে। ঠিক তেমনি একজন রোজাদার ব্যক্তি সারাদিন না খেয়ে ক্ষুধা আর পিপাসা নিয়ে ইফতারের আগ মুহূর্তে যখন দয়াময় রবের কাছে মজুরি নেওয়ার প্রত্যাশা করে, তখন রব কি তার বান্দার সারাদিনের পরিশ্রমকে নষ্ট করে সওয়াব থেকে বঞ্চিত করবেন?
তা কখনোই না, বরং তাকে তার পাপ্য দিয়ে খুশি করে দেন। আল্লাহতায়ালা হাদিসে কুদসিতে বলেন, ‘রোজা আমার জন্য, আর আমি নিজেই তার প্রতিদান দেব।’ -সহিহ মুসলিম : ২৭৬০